E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় বিপন্ন ‘হলুদ পাহাড়ি কচ্ছপ’

২০২২ মে ২৩ ১৫:৩৫:৪১
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় বিপন্ন ‘হলুদ পাহাড়ি কচ্ছপ’

জে.জাহেদ, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ২২ বর্গফুটের খাঁচার ভেতর ছোট্ট ‘হলুদ পাহাড়ি কচ্ছপ’পরিবার। যদিও আট জনের এই পরিবারে গত আট বছর ধরে কোনো নতুন সদস্য আসেনি। আসবেই বা কেমন করে আট বছর ধরে যে ডিম দেয়নি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) লাল তালিকাভুক্ত অতি বিপন্ন এই ‘হলুদ পাহাড়ি কচ্ছপ’গুলো। তবে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ আশা করছে আগামী বছর ডিম দিতে পারে অতি বিপন্ন এই প্রাণীগুলো।

এছাড়াও হলুদ পাহাড়ি কচ্ছপ শাকসবজি, পাতা, ফলমূল, খোলস ছাড়া শামুক, মাংস, ডিম, পোকামাকড় আর ছত্রাক খায়। প্রাপ্তবয়স্ক হলুদ পাহাড়ি কচ্ছপ তিন থেকে চার কেজি ওজনের হয়। সদ্য ফোটা বাচ্চারা চার সেন্টিমিটার লম্বা আর ওজন হয় ৩৫ গ্রামের মতো হয়। তবে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় থাকা ছোট কচ্ছপগুলো এক কেজিরও বেশি। সাধারণত এদের প্রজননকাল মে থেকে অক্টোবর। স্ত্রী কচ্ছপ প্রতিবারে দুই থেকে চারটি ডিম দেয়। ১৩০ থেকে ১৯০ দিন পর ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। পুরুষ কচ্ছপ চার বছরে আর স্ত্রী কাছিম ছয়-আট বছরে বয়োঃপ্রাপ্ত হয়।

আট বছর ধরে ডিম না দেওয়ার কারণ বর্ণনা করে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ বলেন, ‘এই কচ্ছপদের জন্য দুই থেকে তিন মাস আগে এই বড় খাঁচাটা তৈরি করা হয়েছে। আগে ওদের ঘরটা ছোট ছিল। লুকানোর জায়গাটা কম ছিল মানে যেখানে সে নিরিবিলিতে ডিম পারবে। এখন ওদের পরিবেশ উপযোগী করে যে খাঁচাটা বানানো হয়েছে সেখানে একপাশে নিরিবিলি ভাবে থাকার একটা সুযোগ আছে যেটা আগে ছিল না।'

তিনি আরও বলেন, ‘সবে মাত্র দুই-তিন মাস আগে নতুন খাঁচায় তাদের নেওয়া হয়েছে। সেখানে মানিয়ে নেওয়ারও একটা বিষয় আছে। অর্থাৎ নতুন খাঁচায় তার (কচ্ছপ) মানিয়ে নিতে সময় লাগবে। সে কোথায় ডিম দিবে, সেখানের সিকিউরিটি (নিরাপত্তা) কেমন হবে এসব তাদেরকে ভীষণ ভাবায়। এই নতুন ঘরটাতে তারা মানিয়ে নেওয়া শুরু করলে আমরা আশা করছি আগামী প্রজননের সময় তারা ডিম পারবে। তখন এদের সংখ্যাটা বাড়বে।’

এর সঙ্গে যোগ করে তিনি বলেন, ‘এগুলো যেহেতু পাহাড়ি কচ্ছপ আর পার্বত্য অঞ্চল চট্টগ্রাম সিলেটে এদের আনাগোনা আছে তাই আমাদের একটা পরিকল্পনা আছে যদি এদের সংখ্যাটা বাড়ে আর একটা নিরাপদ জায়গা যদি নিশ্চিত হয়, তবে ডিসি স্যারের অনুমতি নিয়ে তাদের ন্যাচারে (প্রকৃতিতে) ছেড়ে দেওয়ার ইচ্ছে আছে।’

একই প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. ফরিদ আহসান বলেন, ‘আগে এই হলুদ পাহাড়ি কচ্ছপ ক্যাম্পাসে দেখা যেত কিন্তু এখন তেমন আর চোখে পড়ে না। অনেকসময় দেখা যায় মাংস খাওয়ার জন্য এগুলো বিক্রি করা হয়। তাছাড়া তাদের জন্য যে খাবার আর পরিবেশ দরকার (প্রজননকাল) তা হয়তো ওরা পাচ্ছে না। যে কারণে হয়তো এতো বছর ওরা ডিম দেয়নি।’

উল্লেখ্য, আজ ২৩ মে বিশ্ব কচ্ছপ দিবস। ২০০০ সাল থেকে আমেরিকান টরটয়েজ রেসকিউ নামক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা দিবসটি পালনে উদ্যোগী ভূমিকা নিয়েছিল। সেই থেকেই দিবসটি সারাবিশ্বে উদযাপিত হচ্ছে।

পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন জীব কচ্ছপ সম্পর্কে মানুষকে অবগত করতে এবং প্রকৃতির অন্যান্য জীবের পাশাপাশি এই জীবের প্রতি সম্মান দেখানো এবং এদের সম্পর্কে জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য এই দিবসটি পালিত হয়ে থাকে।

(জেজে/এসপি/মে ২৩, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test