E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বিলুপ্ত প্রায় নওগাঁর মৃৎশিল্প

২০২২ জুলাই ৩০ ১৭:০২:৪৯
বিলুপ্ত প্রায় নওগাঁর মৃৎশিল্প

নওগাঁ প্রতিনিধি : প্রয়োজনীয় অর্থ ও উপকরণের অভাবে নওগাঁর মৃৎশিল্প তার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। মৃৎশিল্পীরা নিজ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় আত্মনিয়োগ করছে। কালের বিবর্তন, প্রতিকূলতা আর প্রযুক্তির যুগে মেলামাইন শিল্পের বিকাশে মৃৎশিল্প বিলুপ্তপ্রায়। এখনকার মৃৎশিল্পীদের হাতের তৈরী মাটির হাঁড়ি পাতিল ও তৈজসপত্রের প্রশংসা ছিল পুরো রাজশাহী বিভাগ জুড়ে।

স্থানীয় কুমারদের হাতে তৈরী মাটির হাড়ি পাতিল, কলস, প্রদিপ, খেলনার তৈজসপত্র আর ঘর ছাওনির টালি ছিল মানুষের নজর কাড়া। শহর অঞ্চলে মাটির তৈরী তৈজসপত্রের ব্যবহার না থাকলেও এক সময় গ্রামঞ্চলে এগুলোর ব্যবহার ও চাহিদা ছিল প্রচুর। গ্রামে বসবাসকারি বিভিন্ন পরিবারের মেয়েদের পয়সা সংগ্রহের জন্য মাটির তৈরী ব্যাংকের কথা সবার জানা। বিদ্যুৎ চলে গেলে গ্রামের বাড়িতে মাটির প্রদিপের চাহিদাও ছিল। যা বর্তনমানে বিরল। তবে বিভিন্ন রোগ বালাই সারতে এখনও গ্রামের মানুষরা ব্যবহার করে আসছে পিঠা তৈরীর বাসন, মাটির কলস, হাড়ি ইত্যাদি। আর একারনে পোরশা উপজেলার নিতপুর কুমার পল্লীতে এখনও চাকা ঘুরছে। কিন্তু আগের মত জাঁকজমক আর নেই। দুর্দিন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, কষ্ট হতাশায় যেন সবকিছু স্থবির হয়ে পড়েছে।

এ উপজেলার নন্দিত মৃৎশিল্প বিলুপ্তির পেছনে নানাবিধ সমস্যা বিরাজ করছে। কুমারদের শ্রমের মজুরি খুবই কম। প্রয়োজনীয় মাটি ও জালানীর অভাব। সমস্যা বাজারজাতকরনেও। সর্বোপরি আধুনিক মেলামাইন শিল্পের বিকাশের জন্য মৃৎশিল্প হারিয়ে যেতে বসেছে। মৃৎশিল্পের সাথে জড়িত উপজেলা সদর নিতপুর পালপাড়ায় গিয়ে কথা হয় শ্রী লাল বিহারী পাল, শ্রী সাধন পাল ও মনি পালের সাথে।

তারা জানান, মাটির তৈরী জিনিসপত্রের চাহিদা কমে গেছে অনেকাংশে। প্রয়োজনীয় মাটির অভাব, দ্রব্যমূল্য সহ বিভিন্ন কারনে তারা তাদের পুরাতন ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারছেনা। তাদের এ পাড়ায় এক সময় ৩৬৫ পরিবার ছিল, এর মধ্যে সব পরিবার ভারতে চলে গেছে। বর্তমানে ২০টি পরিবার রয়েছে। তারাই একমাত্র মৃৎশিল্পের সাথে জড়িত।

তারা অভিযোগের সুরে বলেন, বিভিন্ন সময় জনপ্রতিনিধিরা আসেন কিন্তু তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়না। সরকারী কোন সুযোগ সুবিধাও তারা পাননা বলে জানান। তারা অন্যের কাছে হাত পাততে পারেন না। বর্তমান সময়ে মৃত শিল্পের কাজ মানে ভুতের বেগার খাটাও বলে তারা জানান। তবে সরকার তাদের এই শিল্পের উন্নয়নের জন্য পদক্ষেপ গ্রহন করলে তাদের পারিবারিক এবং এ শিল্পের চাহিদা আবারো ফিরে আসবে বলে তারা মনে করছেন।

(বিএস/এসপি/জুলাই ৩০, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test