E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গরু যেন চরবাসীর আশির্বাদ

২০২২ আগস্ট ০২ ১৪:৫৬:২৮
গরু যেন চরবাসীর আশির্বাদ

ছাদেকুল ইসলাম রুবেল, গাইবান্ধা : গাইবান্ধার জনপদে বিস্তৃত হয়ে মিশে তিস্তা-ব্রহ্মপুত্রসহ বেশ কিছু নদ-নদী। এসব নদীর বুকে জেগে ওঠেছে অসংখ্য বালুচর। এখানে বসবাস করা লক্ষাধিক মানুষের মধ্যে অধিকাংশ পরিবারকে দরিদ্র। কিছু সংখ্যাক মানুষ ফসল উৎপাদন করলেও বেশিরভাগ পরিবারই গরু লালন পালনের ওপর নির্ভরশীল। আর এই গরুই যেন আশির্বাদ হয়েছে তাদের।

সম্প্রতি গাইবান্ধা সদর ও ফুলছড়ি উপজেলার চরাঞ্চল ঘুরে বাড়ি বাড়ি গরু পালনের চিত্র দেখা গেছে। বালুচরে গজিয়ে ওঠা সবুজ ঘাসের মাঠে গরুকে ঘাস খাওয়াচ্ছেন গৃহস্থালীরা। তারা গরু-বাছুর ছেড়ে দিয়ে ছাতা মাথায় বসে রয়েছেন মাঠে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই এসব গরু ফেরানো হয় গোয়ালে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নদীমাতৃক গাইবান্ধার চরাঞ্চলের সিংহভাগ মানুষের জীবন আর নদী যেন ছুটে চলে সমস্রোতে। নদীর একূল ভাঙে ওকূল গড়ে। সেখানেই ওঠতে হয় চরবাসীদের। কখনও বন্যায় ভাসায় আবার কখনও খরায় শুকিয়ে মাইলের পর মাইল হাঁটতে হয় ওপারে। দুর্ভোগের অন্ত নেই এখানকার মানুষদের। তবুও প্রকৃতির নিয়ম মেনে চলতে হয় জীবনের ঝুঁকিতে। এভাবে যুগ যুগ ধরে চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের রাক্ষুসে নদীর সঙ্গে জীবন সংগ্রাম চলেছে।


নদীমাতৃক গাইবান্ধার চরাঞ্চল
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে চরাঞ্চলের কতিপয় লোক তাদের নিজস্ব ভূমিতে ফসল ফলিয়ে জীবিকা নির্বাহ করলেও অধিকাংশ পরিবারের দরিদ্র সীমার ‍নিচে বসবাস। এই দরিদ্র অসহায় মানুষেরা অন্যের বাড়িতে শ্রম বিক্রির পাশাপাশি পালন করছে গরু-বাছুর। এসব গরু থেকে জীবন মানোন্নয়নের স্বপ্ন দেখেন তারা। চরবাসীদের এমন কোনো বাড়ি নেই সেখানে ৫-১০টি গরুর দেখা মেলে না।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চরাঞ্চলে রয়েছে অসংখ্য কাঁশবনসহ পরিত্যক্ত ভূমি। এ ভূমিতে গরুকে ঘাস-লতা-পাতা খাওয়াতে পারেন তারা। এতে অল্প খরচে প্রতি বছর গরু বিক্রি করে লাখ টাকা আয় করেন। এখানকার প্রত্যেকটি বাড়িতে রয়েছে ৫ থেকে ১২টি গরু-বাছুর। এসব গৃহপালিত পশু যেন তাদের আর্শিবাদ স্বরূপ।


নদীমাতৃক গাইবান্ধার চরাঞ্চল
রসুলপুর চরের আব্দুস ছাত্তার ব্যাপারী বলেন, ‘আমার বাড়িতে ৯টি গরু রয়েছে। এর মধ্য গাভীর দুধ বাজারে বিক্রি ও অন্যসব গরুগুলো মোটাতাজা করে বিক্রি করা হয়। এতে করে ধীরে ধীরে স্বাবলম্বী হচ্ছি।’

এরেণ্ডাবাড়ি চরের বাসিন্দা সবুজ মিয়া জানান, বর্তমান তার বাড়িতে বাছুরসহ ১১টি গরু রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ৫টি গাভী। এসব গাভীর প্রজনন থেকে বাড়তে থাকে তার গরুর সংখ্যা। দুধ বিক্রি ও গরু বিক্রি করে বছরে প্রায় লক্ষাধিক টাকা লাভ হয় তার। এটি তার প্রধান আয়ের উৎস।

গাইবান্ধা জেলা প্রাণিসম্পদ কমকর্তা মাসুদুর রহমান সরকার বলেন, আগের তুলনায় চরের মানুষদের অনেকটাই স্বচ্ছলতা ফিরেছে। গবাদী পশু লালন-পালন করে স্বাবলম্বী হচ্ছে সবাই। তাদের আরও লাভবান করতে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে।

(এসআইআর/এএস/আগস্ট ০২, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

১৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test