এ বঙ্গে অনুষ্ঠিত হলো ‘মহালয়া’
প্রসেনজিৎ বিশ্বাস : 'মহালয়' শব্দটির অর্থ- মহান যে আলয় বা আশ্রয়। কিন্তু 'মহালয়া' শব্দটিকে স্ত্রীলিঙ্গবাচক শব্দ হিসেবে ব্যবহার করা হয় কারণ এই দিনেই পিতৃপক্ষের অবসান হয় এবং অমাবস্যার অন্ধকার দূর হয়ে আলােকময় দেবীপক্ষের শুভারম্ভ হয়। এখানে দেবী দুর্গাই হলেন সেই মহান আলয় বা আশ্রয়। হিন্দুদের বিশ্বাস যে এই দিন পিতৃপক্ষের অবসান হয়ে দেবীপক্ষের সূচনা ঘটে। এই মহালয়া সম্পর্কে অনেকগুলি পৌরাণিক কাহিনী প্রচলিত রয়েছে। শ্রীশ্রী চণ্ডী গ্রন্থে বর্ণিত কাহিনী অনুসারে জানা যায়, মহাপ্রলয়ের সময় সমগ্র পৃথিবীকে কারণ-সমুদ্রে রূপান্তরিত করে দেবতা শ্রীবিষ্ণু সমুদ্রে অনন্তনাগের উপরে যােগনিদ্রায় ধ্যানস্থ হন। ঠিক এই সময়েই বিষ্ণুর কানের ময়লা থেকে মধু আর কৈটভ নামের দুটি দৈত্যের জন্ম হয়। তারা বিষ্ণুর নাভিপদ্মে অবস্থানকারী ব্রহ্মাকে হত্যা করতে উদ্যত হলে ব্রহ্মা বিষ্ণুকে জাগিয়ে তােলেন এবং পাঁচ সহস্র বছর ধরে তিনি ঐ দুটি দৈত্যের সঙ্গে যুদ্ধ করেন।।
এই মহালয়ার দিনেই দেবী দুর্গার বোধন হয়। বোধন মানে জাগরণ। মনে করা হয় বাংলার শ্রাবণ মাস থেকে পৌষ মাস পর্যন্ত দক্ষিণায়ন কালে দেবতারা নিদ্রা যান আর উত্তরায়ণের সময় দেবতারা আবার জেগে ওঠেন। পুরাণ মতে, ব্রহ্মার নির্দেশমতে পিতৃপক্ষের অবসানে টানা পনেরােদিন ধরে স্বর্গীয় পিতৃপুরুষেরা মর্ত্যের কাছাকাছি আসেন আর তাই এই সময় তাঁদের উদ্দেশ্য কিছু অর্পণ করলে তাঁরা তুষ্ট হন। এই মহালয়ার দিনেই দেবী দুর্গা মহিষাসুরকে বধ করার দায়িত্ব পান ব্রহ্মার কাছ থেকে। ব্রহ্মার বরেই সেই মহিষাসুর মানুষ ও দেবতাদের কাছে অপরাজেয় হয়ে উঠেছিল। ফলে তাকে পরাস্ত করার জন্য ব্রহ্মা, বিষ্ণু আর মহেশ্বর একত্রিত হয়ে মহামায়ারূপী যে নারীশক্তি তৈরি করেন, তিনিই হলেন দেবী দুর্গা। দশ অস্ত্রে বলীয়ান হয়ে দশভূজা দেবী দুর্গা টানা নয় দিন যুদ্ধ করে মহিষাসুরকে বধ করেন। হিন্দুদের বিশ্বাস অনুযায়ী এই দিনের পরেই অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটিয়েছিলেন দেবী দুর্গা আর তাই হিন্দুদের মধ্যে শুভ শক্তির আরাধনায় মহালয়া তিথির গুরুত্ব অপরিসীম।
লােককথায় রয়েছে, এই মহালয়ার দিনেই কৈলাস পর্বত থেকে মর্ত্যধামে তথা হিমালয়ের কাছে বাপের বাড়িতে যাত্রা শুরু করে উমা তথা দেবী দুর্গা। স্বামীগৃহ ছেড়ে পিতৃগৃহে রওনা দেয় উমা আর তার সঙ্গে থাকে তার সন্তানেরা -গণেশ, কার্তিক, লক্ষ্মী আর সরস্বতী। এই সময় বিভিন্ন বাহনে চড়ে উমা আসেন পিতৃগৃহে। লােকবিশ্বাস এবং পঞ্জিকাদি অনুসরণ করলে দেখা যায় দেবীর মর্ত্যে আগমনের বাহন বিচার করে আগামী বছরের শুভাশুভ আন্দাজ করা যায়। যেমন কথায় আছে দোলায় আগমন ঘটলে বন্যা হবে, গজে গমন ঘটলে পুণ্য-সমৃদ্ধি হবে ইত্যাদি। দেবীর এই বাহন মূলত চার রকমের হয়ে থাকে- পালকি, নৌকা, হাতি এবং ঘােড়া। শাক্তপদাবলীতে উমার আগমন এবং প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে রচিত হয়েছে বহু লােকপ্রিয় গান।
মহালয়ার দিন যে পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে তর্পণ করা হয় সেই তর্পণের প্রথার একটা পৌরাণিক ব্যাখ্যা রয়েছে। রামায়ণে দেখা যায় ত্রেতা যুগে শ্রী রামচন্দ্র লঙ্কা জয় করে দেবী সীতাকে উদ্ধারের জন্য, দেবী দুর্গার আরাধনা করেছিলেন বসন্তকালে। যে কোনাে শুভ কাজের সূচনায় পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে অঞ্জলি দেওয়ার শাস্ত্রীয় রেওয়াজ রয়েছে আর সেটাই করেছিলেন রামচন্দ্র। মনে করা হয় তখন থেকেই তর্পণ প্রথার জন্ম। তবে মহাভারত পড়লে জানা যাবে, পরলােকে গিয়ে কর্ণকে খাবার হিসেবে সােনা আর নানাবিধ রত্ন দেওয়া হলে ইন্দ্রের কাছে কর্ণ এর কারণ জানতে চান। তখন ইন্দ্র বলেন যে দাতা কর্ণ আজীবন সােনা- রত্ন-মানিক্য সকলকে দান করে এসেছেন বটে, কিন্তু পিতৃপুরুষকে উৎসর্গ করে তিনি কখনােই খাবার বা জল দান করেননি। এইজন্যে কর্ণকে দেবরাজ ইন্দ্র মর্তে ফিরে ষােলাে দিনের জন্য পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে অন্ন-জল দান করার নির্দেশ দেন। এই সময়কেই বলা হয় পিতৃপক্ষ। যদিও মহালয়া তিথি লােকমুখে ষােলাশ্রাদ্ধ, অমরপক্ষ ইত্যাদি নামেও পরিচিত।
মহালয়ার দিন গঙ্গার ঘাটে ঘাটে তর্পণের ভিড় দেখা যায়। এই তর্পণ শুধুই পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে করা হয় না, অনেকরকম তর্পণ প্রচলিত আছে। দেব-তর্পণ, ঋষি-তর্পণ, দিব্য-পিতৃ তর্পণ ইত্যাদির পাশাপাশি রাম তর্পণ আর লক্ষ্মণ তর্পণের মাধ্যমে পৃথিবীতে সকল মৃত ব্যক্তির উদ্দেশে জল দান করা হয়। প্রয়াতদের আত্মার তৃপ্তি দানের জন্য তর্পণকর্তাকে স্নান করে শুদ্ধ হয়ে আচারে বসতে হয়। এই সময় পােশাক হিসেবে ধুতি পড়া বাঞ্ছনীয়। জল আর তিল নিয়ে অঞ্জলি দিতে হয় তর্পণের সময়। এ জন্য ব্যবহার করা হয় কুশ আর কালাে তিল। নিয়ম হল, ছয়টা কুশ জলে ভিজিয়ে নিতে হয় প্রথমে আর তারপর তার মধ্যে থেকে তিনটে করে কুশ দুই হাতের অনামিকা আঙুলে পরে নিয়ে তর্পণ করতে হয়। একে বলা হয় কুশাঙ্গুরীয়। এই বিশেষ দিনে মানুষেরা তাদের প্রয়াত পিতা-মাতার উদ্দেশ্যে পিণ্ডদানও করে থাকেন। বাঙালি জীবনে দুর্গাপূজার সুর লহরি বেঁধে দেয় এই মহালয়া। আর এই মহালয়ার সুরটি বেঁধে দেন নিয়ম করে অর্ধশতাব্দী ধরে যিনি তিনি বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র। তার অননুকরণীয় ভঙ্গিমায় আকাশবাণী প্রচারিত ‘মহিষাসুরমর্দিনী' অনুষ্ঠানটি বাঙালিদের জীবনে পরম্পরাবাহিত ঐতিহ্যের মতাে।
(পিবি/এএস/সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২২)
পাঠকের মতামত:
- মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ দিবস আজ
- ‘পথশিশুদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে’
- ‘নির্বাচন ছাড়া কাউকে ক্ষমতায় বসানো সম্ভব নয়’
- কন্যা সন্তানের মা হলেন লিজা
- ‘চাইম’ ব্যান্ডের ভোকালিস্ট খালিদ আর নেই
- হলমার্ক কেলেঙ্কারিতে তানভীর-জেসমিনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
- নাগরপুরে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
- ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের ভেতরে গাঁজা বাগান!
- ফরিদপুরে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিলেন সংসদ সদস্য এ কে আজাদ
- ‘স্বাস্থ্যখাতে এখন থেকে কথা কম, কাজ বেশি হবে’
- ঋণের অতিরিক্ত সুপারভিশন চার্জ ফেরত দেওয়ার নির্দেশ
- চেন্নাইয়ের পথে উড়াল দিয়েছেন মুস্তাফিজ
- দুর্ভিক্ষের কারণে মৃত্যুর ঝুঁকিতে ৩ লাখ ফিলিস্তিনি
- খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত আজ
- সুইডেনের রাজকন্যা এখন খুলনায়
- সমরেশ মজুমদার সাহিত্য পুরস্কার পেলেন সেলিনা হোসেন
- বিএনপির তিন নেতার পদোন্নতি
- ম্যালেরিয়া নির্মূলে বান্দরবানে গবেষণা শুরু, দেওয়া হবে টিকা
- ইইউ’র পরিবেশ নীতির বিরুদ্ধে স্পেনে কৃষকদের বিক্ষোভ
- গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলা, ২০ ফিলিস্তিনি নিহত
- জয়দেবপুর শহরে অনির্দিষ্টকালের জন্য সান্ধ্য আইন জারি
- সিলেটে সরকারি গাছ কাটার মামলা নিয়ে পুলিশের গড়িমসি
- মাইকে গান বাজিয়ে ১০-১৫ টাকায় লাউ বিক্রি
- 'জায়গা বরাদ্দ পেলেই ফরিদপুরকে স্পেশাল ইকোনমিক জোন হিসেবে গড়ে তোলার কাজ শুরু করবো'
- সাতক্ষীরায় আত্মহত্যার চেষ্টা করা স্ত্রীকে বাঁচিয়ে স্বামীর আত্মহত্যা
- টাঙ্গাইলের হাতে ভাজা মুড়ির কদর বেড়েছে সারাদেশে
- যশোর নিউ মার্কেটে স্বর্ণের বারসহ দুই যুবক আটক
- সুলভ মূল্যে মাছ-মাংস-ডিম, জনমনে স্বস্তি
- যে কারণে ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
- চুয়াডাঙ্গা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক কমিটি গঠন
- কাপাসিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুলশিক্ষার্থীর মৃত্যু
- মামলা করায় বনবিভাগের কর্মকর্তাকে হত্যার হুমকি
- টাকার বিনিময়ে রেল কেটে ক্ষমতায় যাওয়া যায় না : রেলমন্ত্রী
- ফরিদপুরে জেলা প্রশাসনের চারটি প্রকাশনা বইয়ের মোড়ক উন্মোচন
- সাতক্ষীরার হতদরিদ্র সুজিত হালদারের লেখা চতুর্দশপদী কবিতা মন কেড়েছে মানুষের
- শ্রীমঙ্গলে মসজিদের নামের পানির পাম্প যুবলীগ নেতার বাড়িতে
- বাগেরহাটে ৭ কেজি গাঁজাসহ মাদক কারবারি আটক
- বাগেরহাটে নাশকতা মামলায় যুবদলের ১৩ নেতাকর্মী কারাগারে
- সোনারগাঁয়ে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনি, নিহত ৪
- পলাশবাড়ীতে দোকান বন্ধ রেখে ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন
- ওয়ালটন ফ্রিজ কিনে ৩২তম মিলিয়নিয়ার হলেন কুমিল্লার ভ্যানচালক হুমায়ুন
- ই-ভিসা প্রকল্প: বেশি খরচে বিদেশি কোম্পানিকে কাজ দেওয়ার পাঁয়তারা
- মহম্মদপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল আওয়ালের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন
- ত্রিশালে ৩ পুলিশ কর্মকর্তাকে কুপিয়ে আসামি ছিনতাই
- এক্সিম-পদ্মা একীভূত, যেভাবে চলবে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ
- আলোচি আরবিটেটর প্রত্যাহার সংক্রান্ত আপিল হাইকোর্টে খারিজ
- সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ
- সাভারে সাংবাদিক পুত্রকে হত্যার চেষ্টা, নেপথ্যে কিশোর গ্যাং
- ভাষা সৈনিক কাজী গোলাম মাহবুব’র মৃত্যুবার্ষিকী মঙ্গলবার
- গৌরনদীতে ৪ ওষুধ ব্যবসায়ীকে জরিমানা
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- সিলেটের ভ্রমণ কাহিনী
- শুধু প্রভাবশালীদের পক্ষেই আইন!
- অম্ল-মধুর যন্ত্রণায় অপু বিশ্বাস
- লাইন ধরে খেতে হয় লিখনের জগা খিচুড়ি !
- আমার বোন শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি : চিনে নিন কে এই বরকত!
- 'ইতিহাসের ইতিহাস'
- ধনী হওয়ার আট কার্যকর উপায়
- মেয়ে পটানোর কৌশল!
- লক্ষাধিক রাখাইন জনগোষ্ঠী আড়াই হাজারে নেমে এসেছে
- উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের নতুন যাত্রা ১ বৈশাখ
- লোভী মানুষ চেনার সহজ উপায়
- আমায় ক্ষমা কর পিতা : পর্ব ১৪'তোমার সহজাত উদারতা তোমাকে আকাশের সীমানায় উন্নীত করলেও তোমার ঘনিষ্ঠ অনেকের প্রশ্নবিদ্ধ আচরণ তোমার নৃশংস মৃত্যুর পথে কোনই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি'
- বাংলা বই পড়ার ওয়েবসাইট
- মঠবাড়িয়ায় ৯ বছরের শিশুকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা
- হুমায়ূনের মৃত্যুর কারণ মদের পার্টি !
- শাকিবের নায়িকা শ্রাবন্তী, অপুর নায়ক জিৎ
- দেশে ফিরছেন তারেকস্ত্রী জোবায়দা রহমান
- বোরকা পরা মেয়ের গণধর্ষণের ভিডিও নিয়ে সিলেটে তোলপাড়
- ইউটিউবে নায়লার আত্মপ্রকাশ
- নেপালের ভূমিকম্প প্রাকৃতিক নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্টি !
- বিএনপির আন্দোলন হচ্ছে দলের অভ্যন্তরে !