E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

খেজুরের রস সংগ্রহ ও  গুড় তৈরিতে ব্যস্ত ঈশ্বরদীর গাছিরা

২০২২ নভেম্বর ১৪ ১৪:২০:৪৬
খেজুরের রস সংগ্রহ ও  গুড় তৈরিতে ব্যস্ত ঈশ্বরদীর গাছিরা

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : খেজুরের রস সংগ্রহ ও রস জ্বালিয়ে গুড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঈশ্বরদীর গাছিরা। শীতের শুরুতেই বেড়েছে রসের চাহিদা। পাশাপাশি রস জ্বালিয়ে তৈরি করা গুড়ের চাহিদাও অনেক।

শীত মৌসুমে আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য গ্রামাঞ্চলের ঘরে ঘরে খেজুরের রস দিয়ে তৈরি হয় হরেক রকমের পিঠা ও পায়েস। পাশাপাশি গুড় দিয়ে তৈরি হয় নানান পিঠাপুলি। বাণিজ্যিকভাবে খেজুরের রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে গাছিদের। গাছিরা রস সংগ্রহের জন্য গাছ কাটা শুরু করেছেন। তবে আহরিত রসের পরিমাণ এখন খুনই কম। সুস্বাদু এই খেজুরের রস আগুনে জ্বালিয়ে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন রকমের পাটালি ও লালি গুড়। খেজুর ও রস বিক্রি করেও আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন এখানকার গাছিরা।

সকালে সূর্য মিটমিট করে আলো ছড়াানোর আগেই রস জ্বালিয়ে গুড় তৈরির হচ্ছে। খেজুরের রস আহরণ শেষে হাঁড়িতে সংগৃহীত রস নিয়ে বড় চুলার কাছে ছুটে আসেন গাছিরা। এসব রস শুকিয়ে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টার ব্যাবধানে জ্বালানোর পর তৈরি হয় লাল গুড়।

গাছিরা জানান, শীত মৌসুমের শুরু থেকেই খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করা হয়। শীতের প্রায় চার মাস রস সংগ্রহ করা যায়। রস থেকে বিভিন্ন রকমের পাটালি ও লালি গুড় তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে আমরা সংসার চালাই। তিনি আরও বলেন, শীতের পিঠা ও পায়েসের জন্য খেজুরের রস ও গুড়ের বাড়তি চাহিদা রয়েছে। প্রতিদিন বিকেল থেকে সন্ধ্যার মধ্যেই খেজুর গাছের সাদা অংশ পরিষ্কার করে ছোট-বড় মাটির কলস বেঁধে রাখা হয় রসের জন্য। এরপর ভোর থেকেই ওইসব গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা হয়। তবে শীত এখনও জেঁকে না বসায় রস আহরণের পরিমাণ খুবই কম।

গাছি রওশন বলেন, প্রায় বিশ বছর ধরে এভাবে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করি। এরপর এসব রস দিয়ে পাটালি ও লালি গুড় তৈরি করি। চার মাসের জন্য গাছ লিজ নিয়ে রস সংগ্রহ করি।

তবে ভেজালের ভিড়ে আসল খেজুরের গুড় পাওয়ায় যেন দায় হয়ে পড়েছে। বাজারে বেশীরভাগ খেজুরের গুড়ই চিনি মিশ্রিত। খাঁটি গুড়ের সন্ধান মেলে কেবল গাছিদের কাছে। গুড় ক্রেতা ইকবাল জানান, খাঁটি গুড় পাওয়ার আশায় বাজারে আসলাম। কিন্তু গন্ধ ও স্বাদ কিছুই পাচ্ছি না। দামও দুশো টাকার ওপরে। আসলে ভেজালের কারনে খাঁটি জিনিসের প্রাপ্যতা একটু মুশকিল হয়ে গেছে।

কলেজ শিক্ষক আলমাস আলী জানান, খেজুরের বহুল ব্যবহার নিয়ে বর্ণনার শেষ নেই। রস দিয়ে নানা রকম পিঠা, পায়েস, গুড়, কুটির শিল্প, আয় ও কর্মসংস্থান হয়। কিন্তু খাঁটি গুড় পাব কোথায়।

পাবনা দই ঘরের শ্যামল জানান, খেজুরের গুড়ের সন্দেশ তৈরী করে ৪০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছি। তবে এখনও গুড়ের সেই গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে না। সরাসরি গাছিদের কাছ থেকে ২৬০ টাকা কেজিতে খেজুরের গুড় কিনছি। শীত যতো বেশী হবে, রসও বেশী আহরণ হবে। তখন হয়তো ভেজালের মাত্রা কমে যাবে বলে জানান তিনি।

(এসকেকে/এএস/নভেম্বর ১৪, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

১৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test