পরিযায়ী পাখিদের কলকাকলিতে মুখর নীলসাগর
ওয়াজেদুর রহমান কনক, নীলফামারী
নীল জল নয়, সাগর তো নয়ই, এমনকি সাগরকে কখনও ছুঁতেও পারেনি সে, তবু নীলসাগর নাম। উপরে আদিগন্ত নীলআকাশ, যার ছায়া পরেছে নীলসাগরের মায়াভরা স্বচ্ছ-শান্ত-স্নিগ্ধ জলে। সেই জলে আবার মেঘের নাচন কাঁপন ধরায় যুগল হৃদয়ে! ঐ দূর আকাশের পূর্ণিমার রুপালী চাঁদ যখন এসে ধরা দেয় দীঘির জলে, চাঁদটা ছুঁতে ব্যাকুল হয়ে উঠতে পারে হৃদয়।
নীলফামারী জেলার অদ্বিতীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যভূমি নীলসাগরের চারপাশটা ঢেউ খেলানো সবুজে ঘেরা। দেখে যে কারও মনে হবে, যেন সবুজের শাড়িতে সুসজ্জিত স্বলজ্জ বধুর ন্যায় পাখির অভয়ারণ্য খ্যাত এই নীলসাগর। এর উদার-উচ্ছল পরিবেশ যেকোনো প্রকৃতিপ্রেমীর উদাস মন নিমেষেই অজানা-অপ্রত্যাশিত প্রশান্তিতে ভরিয়ে দিতে পারে। নীলসাগর পাড়ে দাড়িয়ে রয়েছে নারকেল, বনবাবুল, আকাশমণি, মেহগনি, শিশুসহ অজানা-অচেনা হরেকরকম ফুল ও ফলের সারি সারি বৃক্ষরাজি, যেন তাকে অনবরত প্রদান করছে গার্ড অব অনার। এর পাড় ঘেঁষে রয়েছে অসংখ্য জবা ফুলের গাছ। তাতে লাল টুকটুকে ফুলও ফুটেছে। বড্ড লোভ হল কাছ থেকে ফুলগুলোর সৌন্দর্য দেখি। ওমা! একি!! প্রতিটি ফুলেই একটি করে ছোট্ট প্রজাপতি! বসে আছে চুপটি করে। বোধ হয় চুম্বনপর্ব চলছে কিংবা প্রজাপতি মধু আরোহণে ব্যস্ত ফুলের গর্ভ হতে। ওদের ডিস্টার্ব না দিয়ে সন্তর্পণে ক্লিক ক্লিক ছবি তুললাম ক'খানা। মজার ব্যাপার কি জানেন? কোন ফুল নিঃসঙ্গও নেই এমনকি কোন ফুলে একাধিক প্রজাপতিও নেই। বিধাতা তাদের জন্য কী সুনিপুণ ব্যাবস্থাই না করে দিয়েছে!
এখন শীতকাল। এইসময়ে মনোহারিণী নীলসাগরে সুদূর সাইবেরিয়া বা তিব্বতের মত হিমশীতল সফেদ তুষার রাজ্য থেকে হাজার মাইল পেড়িয়ে একটু উষ্ণতার জন্য ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে আসে বিচিত্র সব পরিযায়ী পাখি। এখানকার প্রকৃতিকে আর মানুষগুলোকে হরদম সুরে-বেসুরে, জলকেলি-কলকাকলীতে মোহাচ্ছন্ন-সুরমগ্ন করে রাখে এইসব রঙবেরঙের অতিথি। রাজহাঁস, মার্গেঞ্জার, মাছরাঙা, ভুবনচিল, সবুজ চান্দি ফুটকি, বাচাল নীল ফুটকি ইত্যাদি বিচিত্র সব নাম এদের। পুরো শীতকাল জুড়েই এদের অবাধ বিচরণ নীলসাগরে। পাখির জন্য ভালোবাসা থেকেই ১৯৯৮ সালে নীলসাগরকে ঘোষণা করা হয় পাখির অভয়ারণ্য হিশেবে। আর ১৯৯৯ সালে "পাখির অভয়ারণ্য প্রকল্প" উদ্বোধন করেন তৎকালীন ভূমি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব রাশেদ মোশারফ। ভূমি মন্ত্রণালয়ের আর্থিক সহায়তায় আনুমানিক ৫৩.৯ একর জমির চারিদিকে কাঁটাতারের বেড়া ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হয়। পর্যটকদের থাকার জন্য নির্মাণ করা হয় নীলসাগর রেষ্ট হাউস। চাইলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে এখানে রাত্রিযাপনও করতে পারেন।
পূণ্যার্থী-দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে মসজিদ ও মন্দির। প্রতি বছর চৈত্রসংক্রান্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হয় সনাতন (হিন্দু) সম্প্রদায়ের বারুণী স্নান। হাজার হাজার পূণ্যার্থীর উপচে পরা ভিড়ে ছলাৎ-ছলাৎ হেসে ওঠে নীলসাগরের জল। এ উপলক্ষে দু'দিনব্যাপী মেলাও বসে এখানে। রয়েছে শিশুদের বিনোদনের জন্য নাগরদোলা, দোলনাসহ নানারকম খেলনা সামগ্রী ও ছোট-বড় সকলের চিত্তবিনোদনের সুব্যাবস্থা। দীঘির চারিপাশ ঘিরে প্রিয়জনের হাত ধরে হেঁটে বেড়ানোর জন্য সুপ্রশস্ত পিচঢালা পথও রয়েছে এখানে। এছাড়াও রয়েছে কনক্রিটের তৈরি ছাতা, বেঞ্চ, বিশ্রামাগার ইত্যাদি। সারা বছরই এখানে দর্শনার্থীদের আনাগোনা লক্ষ করা যায়। পিকনিক স্পট হিশেবে ইতিমধ্যেই ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে নীলসাগর।
আপনি যদি শৌখিন পাখি শিকারি হন তাহলে আপনার জন্য দুঃসংবাদ। পাখিরা এখানে নির্বিঘ্নে নেচে বেড়ায়, জলের ওপর নিজের ছায়া দেখে উল্লাসে গান গায়। এখানে তাই পাখি শিকার নিষিদ্ধ। তবে আপনি শৌখিন মৎস্যশিকারি হলে আপনার জন্য খুশির সংবাদ। নির্দ্বিধায় নীলসাগরের জলে মাছেদের সাথে খেলা করে ক'টা বেলা কাটিয়ে দিতে পারেন। চাইলে স্নানটাও সেরে নিতে পারেন এখানে। রয়েছে শান বাঁধানো পাড়। তবে সাবধান! সাঁতার না জানলে বাহাদুরি দেখাতে যাবেন না যেন! নীলসাগরের গভীরতা কমছে কম ২০/২৫ ফিট তো হবেই!
লোকে একে ‘বিরাট দীঘি’ও বলে আবার 'বিন্না দীঘি'ও বলে। জনশ্রুতি আছে, ঐতিহাসিক বৈদিক রাজা বিরাট নির্বাসিত পাণ্ডবদের তৃষ্ণা মেটাতে এ বিরাট দীঘিটি খনন করিয়েছিলেন। আবার কেউ কেউ বলেন, বিরাট রাজার বিশাল গরুর পালের জন্য পানির ব্যবস্থা করতে এটি খনন করা হয়েছিল এবং তিনি রাজকন্যা বিন্না'র নামে এর নামকরন করেন বিন্না দীঘি। পরবর্তীতে ১৯৭৮-৭৯ সালে নীলফামারীর তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক ও অবসর প্রাপ্ত সচিব এম.এ জববার নীলফামারীর নামানুসারে বিন্নাদীঘির নামকরণ করেন ‘নীলসাগর’। নীলফামারী শহর থেকে উত্তর-পশ্চিম কোণে ১৫ কিলোমিটার দূরে গোড়গ্রাম ইউনিয়নে এর অবস্থান। বর্তমানে নীলসাগরের তত্ত্বাবধানে রয়েছে নীলফামারী জেলা প্রশাসন।
নীলসাগরের স্থানীয় বাসিন্দা এবং পর্যটকেরা বললেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অদূরদর্শিতার দরুন এটি এখনও পুরোপুরি পর্যটন শিল্পকেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠতে পারেনি। মোহনীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর দেশি-বিদেশি পাখির অভয়ারণ্য এই নীলসাগর আধুনিক-আকর্ষণীয় পিকনিক স্পট ও পর্যটন শিল্পকেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠুক।
(ওআরকে/এএস/নভেম্বর ২০, ২০২৩)
পাঠকের মতামত:
- প্রধানমন্ত্রী সুষ্ঠু নির্বাচনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, জাতিসংঘকে জানাল বাংলাদেশ
- ফরিদপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী শামীম হকের প্রার্থীতা বাতিলে এ কে আজাদের আপিল
- শিক্ষা জোর করে চাপিয়ে দেয়া না হলেই সৃজনশীলতা তৈরী হবে
- নিজের অধিকারের প্রশ্নে হতে হবে আপোষহীণ
- নির্বাচনে না গিয়ে ২০১৪ সালের মতো আবারও ভুল করল বিএনপি
- হযরত খানজাহানের (রহ:) ৫৭৭তম ওফাত দিবসে দুই দিনব্যাপী পবিত্র ওরশ
- প্রোটোকল ছাড়াই ব্যক্তিগত গাড়িতে কোটালিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী
- তদন্তে অভিযোগ প্রমাণ হলেও শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি
- টাঙ্গাইলে প্রবাসী ছেলের ছুরিকাঘাতে বাবা খুন
- হলফনামায় পেশা বদলে রাজনীতি উল্লেখ করেছেন কাজী জাফর উল্যাহ
- কালিয়াকৈরে ভেজাল ঘি তৈরির অভিযোগ
- রাস্তা পারাপারের সময় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বৃদ্ধা নিহত
- আগৈলঝাড়ায় আওয়ামী লীগের বিশেষ সাংগঠনিক সভা
- ফরিদপুর জেলায় বদলি হলো ৮ থানার ওসি
- ১০ বছরে ‘অঢেল সম্পদের’ মালিক হয়েছেন নিক্সন চৌধুরী
- ঢাকা-৬ আসনের জনগণ স্মার্ট নৌকার সঙ্গী হতে চান: সাঈদ খোকন
- স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সমর্থনই তাদের অন্যায়!
- আনচেলত্তির ব্রাজিল কোচ হওয়া পড়ে গেলো শঙ্কায়
- রাজবাড়ীর খানখানাপুর রেল স্টেশনে ট্রেন থামানোর দাবিতে মানববন্ধন
- বিজিপিএস '৮৯ ফাউন্ডেশন’র শিক্ষাবৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
- ভাঙ্গায় ব্রিজের নিচ থেকে কলেজ শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
- ‘ফখরুলকে জামিন দেয় না আর বিএনপি বসে বসে আঙুল চুষে’
- মৌলভীবাজার হানাদার মুক্ত দিবসে লাল-সবুজের বিজয় মিছিল
- এলজিইডির 'টাঙ্গাইল প্রজেক্ট’ গ্রামীণ জনজীবনে আশীর্বাদ স্বরূপ
- জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবিলায় ৪০ কোটি ডলার দেবে এডিবি
- সিদ্ধিরগঞ্জে গলায় ফাঁস দিয়ে এক ব্যক্তির আত্মহত্যা
- ২ দিনের টানা বৃষ্টিতে সালথায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা
- নড়াইলে একসঙ্গে ৪ থানার ওসি বদলি
- ঈশ্বরগঞ্জে অনুকূলচন্দ্রের জন্ম মহা-মহোৎসব উদযাপিত
- ভাঙ্গা ব্রিজে ৭ মাস পার, ভরসা কাঠের সেতু
- বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে জিপিএ-৫ পাওয়াদের মধ্যে বিষণ্নতার হার বেশি
- ফরিদপুরে ফুটপাতে জমে উঠেছে শীত বস্ত্রের বেচাকেনা
- জাতীয় পার্টি জাতির জন্য একটা বিষফোড়া: ইসলামী আন্দোলন
- ৩ ডিগ্রি পর্যন্ত কমবে রাতের তাপমাত্রা, বাড়বে দিনের
- ‘ভারতের সাথে বাংলাদেশের বন্ধুত্বের বন্ধন কোনদিনও ছিন্ন হবার নয়’
- নৈতিকতার অভাবই দুর্নীতি বিস্তারের প্রধান কারণ, চাই পারিবারিক শিক্ষা
- যাদবপুর থেকে কবি সম্মাননা পেলেন বাংলাদেশের জাকিয়া সুলতানা শিল্পী
- বড়াইগ্রামের সফল ইউটিউবার শাহেদ, বছরে আয় ৩০ লক্ষ টাকা
- ‘যেভাবেই হোক তারা দুর্ভিক্ষ ঘটাবে’
- মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করলো ভারত
- পার্লামেন্টে হামলার হুমকি, দিল্লিজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা
- অভাবের তাড়নায় নবজাতক বিক্রি
- ইসরায়েল-ইউক্রেন সহায়তা তহবিল আটকে দিলো মার্কিন সিনেট
- মারকুটে ফিলিপস পথ দেখাচ্ছেন কিউইদের
- জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় শিশুদের অভিনয়ে নাটক “মানুষের দোষে প্রকৃতি রোষে” মঞ্চায়ন
- ওসমানী বিমানবন্দরে ৩৪ কেজি সোনাসহ আটক ৪
- মেথি খেলে দ্রুত ওজন কমে?
- একজন জনপ্রিয় ‘মানবিক ইউএনও’র বিদায়
- চলে গেলেন বলিউড কৌতুক অভিনেতা
- কোটালীপাড়ায় পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- সিলেটের ভ্রমণ কাহিনী
- শুধু প্রভাবশালীদের পক্ষেই আইন!
- অম্ল-মধুর যন্ত্রণায় অপু বিশ্বাস
- লাইন ধরে খেতে হয় লিখনের জগা খিচুড়ি !
- আমার বোন শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি : চিনে নিন কে এই বরকত!
- 'ইতিহাসের ইতিহাস'
- ধনী হওয়ার আট কার্যকর উপায়
- মেয়ে পটানোর কৌশল!
- লক্ষাধিক রাখাইন জনগোষ্ঠী আড়াই হাজারে নেমে এসেছে
- আমায় ক্ষমা কর পিতা : পর্ব ১৪'তোমার সহজাত উদারতা তোমাকে আকাশের সীমানায় উন্নীত করলেও তোমার ঘনিষ্ঠ অনেকের প্রশ্নবিদ্ধ আচরণ তোমার নৃশংস মৃত্যুর পথে কোনই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি'
- উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের নতুন যাত্রা ১ বৈশাখ
- লোভী মানুষ চেনার সহজ উপায়
- বাংলা বই পড়ার ওয়েবসাইট
- হুমায়ূনের মৃত্যুর কারণ মদের পার্টি !
- শাকিবের নায়িকা শ্রাবন্তী, অপুর নায়ক জিৎ
- মঠবাড়িয়ায় ৯ বছরের শিশুকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা
- দেশে ফিরছেন তারেকস্ত্রী জোবায়দা রহমান
- বোরকা পরা মেয়ের গণধর্ষণের ভিডিও নিয়ে সিলেটে তোলপাড়
- ইউটিউবে নায়লার আত্মপ্রকাশ
- নেপালের ভূমিকম্প প্রাকৃতিক নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্টি !
- বিএনপির আন্দোলন হচ্ছে দলের অভ্যন্তরে !