ঝিনাইদহে নীল চাষ ও নীল বিদ্রোহ !
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহ তৎকালে ইংরেজদের দৃষ্টিতে পড়ে অত্র এলাকার উর্বর মাটির কারণে। এই মাটি নীল চাষের জন্য তৎকালে সর্বদিক দিয়ে উপযুক্ত ছিল। আর এ কারণে এখানে আগমন ঘটে ইংরেজদের, গড়ে উঠে নীলকুঠি। আজও নীল চাষের সাক্ষ্য বহন করছে। এনেতপুর, নগরবাথান, ঝিনাইদহ, মধুপুর, হাজরাতলা, কলমণখালী, শিকারপুর, কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুরের বিভিন্ন এলাকা, শৈলকুপার বিজলিয়া, হরিণাকুন্ডর জোড়াদহ, ধুলিয়া, ভায়না ও সোনাতনপুর প্রভৃতি এলাকা নীল চাষের জন্য বিখ্যাত ছিল। মহেশপুরে নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলি দিয়ে নীল চাষ হতো। নীলকর সাহেবদের মধ্যে যাদের নাম জানা যায় তাদের মধ্যে ব্রিজবেন, ডাম্বল, নিউহাউজ ও টুইডি সাহেবের নাম উল্লেখযোগ্য। জানা যায়, নীল চাষের শেষ দিকে টুইডি সাহেব নীল চাষ ছাড়াও জমিদারী শুরু করে।
নীল চাষের সুবিধার্থে ইংরেজরা অত্র এলাকার রাস্তাঘাটের উন্নতি সাধন ও নির্মাণ করে। কলকাতা থেকে ট্রেনে তারা চুয়াডাঙ্গা এসে নামতো। ঝিনাইদহ পর্যন্ত রেল যোগাযোগ না থাকায় চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ সড়কটি পাকা করে। তৎকালে কলকাতার সাথে যোগাযোগ রক্ষার একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি দু’পার্শ্বে কড়াই গাছ লাগানো হয় রৌদ্র ও বৃষ্টি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য। যেহেতু কোটচাঁদপুর, মহেশপুর ও মধুপুরে নীল চাষ হতো তাই কোটচাঁদপুর ও মাগুরার দিকে মধুপুর পর্যন্ত রাস্তার দু’পার্শ্বে কড়াই গাছ লাগানো হয় ঘন করে। নীলকর সাহেবরা বেশীর ভাগ সময়ে ঘোড়ার গাড়ীতে যাতায়াত এবং চলাফেরা করতো। বলতে গেলে তখন স্থানীয়ভাবে যোগাযোগের অন্যতম বাহন ছিল ঘোড়ারগাড়ী। ঘোড়ারগাড়ী চালাতো কোচওয়ানরা; স্থানীয়ভাবে তাদের সহিস বলা হতো। এইসব সহিসরা তখন বাস করতো বর্তমান শিশু পার্কের পশ্চিম পার্শ্বে ও ভ্যারাইটি স্টোরের পিছনের স্থানটিতে। আর কিছু সহিস থাকতো বর্তমানে যেখানে আজাদ রেস্ট হাউস অবস্থিত ঠিক তার সামনের স্থানটিতে। এখনও কয়েক ঘর সহিস এখানে বাস করে। তখন চুয়াডাঙ্গা হতে ঘোড়ার গাড়ীতে করে ডাক আনা-নেয়া হতো। একজন উড়িষ্যাবাসী এই ডাক আনা-নেয়ার কাজে নিয়োজিত ছিল।
১৮৬০ সালের দিকে এ অঞ্চলে নীল চাষের বিরুদ্ধে নির্যাতিত কৃষকরা বিদ্রোহ শুরু করে। এ সময়ে একবার বাংলাদেশের ছোট লাট গ্রান্ট সাহেব কুমার ও কালীগঙ্গা নদীতে মোটর লঞ্চযোগে সফরে আসেন। ছোট লাটের এই সফর ছিল গোপন ব্যাপার। কিন্তু তিনি কুমার নদী দিয়ে যাওয়ার সময় হাজার হাজার কৃষকের সমাবেশের সম্মুখীন হন। কৃষকরা লঞ্চ তীরে ভেড়াবার দাবি জানায়; কিন্তু তা অগ্রাহ্য হয়। ফলে কৃষকরা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়তে থাকে। অবস্থা বেগতিক দেখে ছোট লাট তীরে লঞ্চ ভেড়াতে বাধ্য হন। কৃষকরা তাকে ঘেরাও করে নীল চাষ বন্ধের প্রতিশ্রুতি আদায় করে নেয়। নীল বিদ্রোহ এমন আকার ধারণ করে যে, সরকার ১৮৬০ সালে নীল কমিশন গঠন করতে বাধ্য হন। ফলে চাষীদের বিজয় সূচিত হয় এবং নীলকররা অত্যাচারের মাত্রা কমিয়ে দেয়। কিন্তু কয়েক বছর যেতে না যেতেই নীলকররা আবার স্বরূপ আত্মপ্রকাশ শুরু করে। ১৮৮৯ সালে শৈলকূপা উপজেলার বিজলিয়া কুঠির আশেপাশের ৪৮টি গ্রামের কৃষক একত্র হয়ে নীল চাষ বন্ধ করে দেয় এবং নীলকুঠি আক্রমণ করে। এ সময়ে বিজলিয়া কুঠির অধ্যক্ষ ছিলেন ডাম্বেল সাহেব। বিভিন্ন সময়ে বিজলিয়া নীলকুঠি আক্রমণে অনেক ছোট জমিদার ও জোতদার কৃষকদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল। এদের মধ্যে বঙ্কুবিহারী, বসন্ত কুমার ও সর্দার সাখাওয়াতুল্লা ওরফে ছফাতুল্লা- এর নাম উল্লেখযোগ্য। ছফাতুল্লার বাড়ী বিজলিয়ার পার্শ্বে খোদবাড়ীয়া গ্রামে। নীল বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য নীলকররা ছফাতুল্লাকে ঘোড়ার জিনের সাথে বেঁধে টেনে হিঁচড়ে নীলকুঠিতে নিয়ে যায় এবং ৭দিন নীলকুঠির অন্ধকার প্রকোষ্ঠে আটক করে রাখে। পরে কৃষকরা আবার কুঠি আক্রমণের প্রস্তুতি নিলে নীলকররা ছফাতুল্লাকে ছেড়ে দেয়।
নীলকুঠি আক্রমণের সময় কৃষকরা ব্যবহার করতো দেশী অস্ত্র। এর মধ্যে একটি অস্ত্র হচ্ছে ‘চেঙ্গা’। বাঁশ কেটে ছোট সাইজ করে দু’মুখ ছুঁচালো করে লোহার পাত লাগিয়ে দেয়া হতো। এই চেঙ্গা জোরে ছুঁড়ে দেয়া হতো শত্রুপক্ষের দিকে। উদ্দেশ্য দুই দিকের যে কোন একদিক লেগে যাতে শত্রু পক্ষ ঘায়েল হয়। কখনও কখনও চেঙ্গার মাথায় কাপড় ছড়িয়ে কেরোসিন তেল দিয়ে আগুন ধরিয়ে তা ধনুকের সাহায্যে ছুঁড়ে দেয়া হতো।
কৃষকদের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বিজলিয়া কুঠির নীলকরেরা মির্জাপুরের উত্তর থেকে, বেনীপুরের মধ্য থেকে কালীগঙ্গা পর্যন্ত একটি খাল খনন করে তার নাম দেয় ‘ডাকুয়াল খাল’। নীলকররা নীলকুঠি আক্রমণকারীদের ডাকাত হিসেবে ভাবতো। আর এ জন্য এ ধরণের নামকরণ হয় খালের। কেহ কেহ অবশ্য ডাকুয়াকে খাল না বলে নদী বলে। নীল চাষের জন্য নীলকর সাহেবরা অনেকগুলো যৌথ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছিল। এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে বলা হতো কনসার্ন। হাজরাপুর বা পোড়াহাটি কনসার্নের অধীনস্থ ১৪টি নীলকুঠির অধিকারে ভূমির পরিমান ছিল ষোল হাজার বিঘা; আর জোড়াদহ কনসার্নের অধীনস্থ আটটি কুঠির অধিকারভুক্ত জমির পরিমান ছিল ৯,৪০০ বিঘা। জোড়াদহ কুঠির ম্যানেজার ছিল মাকুলোয়ার।
(জেআর/পিবি/ফেব্রুয়ারি ২১,২০১৫)
পাঠকের মতামত:
- ডিএমপির মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার ৩০
- আইপিএলে অনন্য রেকর্ড গড়লেন চাহাল
- ডার্বি জিতে পাঁচ ম্যাচ আগেই ইন্টার মিলান চ্যাম্পিয়ন
- তাপপ্রবাহে পুলিশ সদস্যদের প্রতি ১১ নির্দেশনা
- বাংলাদেশ-কাতার ১০ চুক্তি সই
- দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন
- ‘আরেকটি আগ্রাসনের চেষ্টা করলে শক্তিশালী জবাব দেওয়া হবে’
- প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে কাতারের আমির
- মালয়েশিয়ায় মাঝ আকাশে দুই হেলিকপ্টারের সংঘর্ষ, নিহত ১০
- ‘পাকবাহিনী নজিরবিহীন নারকীয় হত্যাকাণ্ডে মেতে ওঠে’
- কৃষি জমিতে পুকুর খননে সাংবাদিকদের প্রতিবাদ, ইউএনওর জরিমানা
- কালুখালী টিসিইউ’র নিজেস্ব নির্মানাধীন ভবন পরিদর্শন
- বরকত-রুবেলসহ ৪৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট, অব্যাহতি ৫
- মধুপুরে কৃষকের নামে বরাদ্দ কৃষিযন্ত্র বিক্রি করে কৃষি কর্মকর্তা কোটিপতি!
- বাগেরহাট সদরে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী
- 'স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে শিক্ষার্থীরাই হবে উন্নয়নের হাতিয়ার'
- কেন্দুয়া সরকারি কলেজের সম্ভাব্য ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা ঝড়
- ‘পেনশন ব্যবস্থায় যুক্ত হলে শেষ বয়সে টেনশনে থাকতে হবে না’
- তদন্ত প্রতিবেদন: ৪ কারণে ফরিদপুরের সড়কে ঝরেছে ১৫ প্রাণ
- সারাদেশে ৫০ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে : কৃষিমন্ত্রী
- তাপপ্রবাহ থেকে বাঁচতে যে পরামর্শ দিলেন হিট অফিসার বুশরা আফরিন
- শতবর্ষী গাছ রক্ষায় মানববন্ধন
- সুবর্ণচরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় কিশোরের মৃত্যু
- তাপদাহে টঙ্গীবাড়ীতে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে
- পাংশা ও কালুখালীতে ভোট যুদ্ধে ২১ প্রার্থী, প্রতীক বরাদ্দ কাল
- ফরিদপুরের সেই ঘাতক বাস চালককে গ্রেফতার করেছে র্যাব
- চাষে বিপ্লব এনেছে হাইব্রিড হীরা ধান
- হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে খাবার স্যালাইন বিতরণ
- সাতক্ষীরায় বেসিক ট্রেড স্কীল ডেভেলপমেন্ট ফোরামের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি পেশ
- গোপালগঞ্জে চাঁদা দাবিকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নারীসহ আহত ৭
- সৌদি আরবে ভারী বৃষ্টি, ডুবে গেছে রাস্তা-ঘাট
- শিল্প-কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের শর্ত শিথিল হচ্ছে
- ঢাকায় কাতারের আমির
- নোয়াখালীতে আনসার উল্যাহ বাংলা টিমের সদস্য গ্রেপ্তার
- বিয়ের গেট থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু
- মামলার জালে ঝিনাইদহের কৃষকরা
- ফুলপুরে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ঘুরছেন অধ্যাপক হাবিব
- তিস্তাসহ ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবি
- ‘বেলকুচির সুষম উন্নয়ন ও মানব কল্যাণই আমার মূল লক্ষ্য’
- পুঁজিবাজারে সূচকের উত্থানে ডিএসইর লেনদেন বাড়ল
- মুক্তিযুদ্ধ ও মুজিবনগর সরকার নিয়ে গবেষণার আহ্বান
- রেলস্টেশনে বসেছে ভেন্ডিং মেশিন, যাত্রীরাই কাটবেন নিজের টিকিট
- গ্রাহকের ২ লাখ টাকার ফ্যামিলি ট্রিপের স্বপ্ন পূরণ করলো রিয়েলমি
- ৭ বছর পর সিরাজগঞ্জে চাঞ্চল্যকর শিশু ধর্ষণ ও হত্যার রহস্য উদঘাটন, আসামি গ্রেফতার
- আনু মুহাম্মদের চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
- বেনজীর ও তার পরিবারের দুর্নীতি তদন্তে দুদকের কমিটি
- থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী, সই হবে ৫ চুক্তি ও সমঝোতা
- নিষেধাজ্ঞা এলে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে লড়বো: নেতানিয়াহু
- ধামরাইয়ে মাধব মন্দিরে সপ্তাহ ব্যাপী বার্ষিক ধর্মীয় উৎসব
- কিডনি বিক্রি করতে না পেরে বুথ লুটের চেষ্টা, নিরাপত্তাকর্মীকে খুন
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- সিলেটের ভ্রমণ কাহিনী
- শুধু প্রভাবশালীদের পক্ষেই আইন!
- অম্ল-মধুর যন্ত্রণায় অপু বিশ্বাস
- লাইন ধরে খেতে হয় লিখনের জগা খিচুড়ি !
- আমার বোন শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি : চিনে নিন কে এই বরকত!
- 'ইতিহাসের ইতিহাস'
- ধনী হওয়ার আট কার্যকর উপায়
- মেয়ে পটানোর কৌশল!
- লক্ষাধিক রাখাইন জনগোষ্ঠী আড়াই হাজারে নেমে এসেছে
- উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের নতুন যাত্রা ১ বৈশাখ
- লোভী মানুষ চেনার সহজ উপায়
- আমায় ক্ষমা কর পিতা : পর্ব ১৪'তোমার সহজাত উদারতা তোমাকে আকাশের সীমানায় উন্নীত করলেও তোমার ঘনিষ্ঠ অনেকের প্রশ্নবিদ্ধ আচরণ তোমার নৃশংস মৃত্যুর পথে কোনই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি'
- বাংলা বই পড়ার ওয়েবসাইট
- শাকিবের নায়িকা শ্রাবন্তী, অপুর নায়ক জিৎ
- মঠবাড়িয়ায় ৯ বছরের শিশুকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা
- হুমায়ূনের মৃত্যুর কারণ মদের পার্টি !
- দেশে ফিরছেন তারেকস্ত্রী জোবায়দা রহমান
- বোরকা পরা মেয়ের গণধর্ষণের ভিডিও নিয়ে সিলেটে তোলপাড়
- ইউটিউবে নায়লার আত্মপ্রকাশ
- নেপালের ভূমিকম্প প্রাকৃতিক নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্টি !
- বিএনপির আন্দোলন হচ্ছে দলের অভ্যন্তরে !