রুশ ইতিহাসের রহস্যঃ জালিয়াত দামিত্রির মুখোশ
পরিতোষ বড়ুয়া লিমনঃ চিরকাল সব জাতির মানুষের মধ্যে যে কোনো মূল্যে ক্ষমতায় আসীন হতে উত্গ্রীব লোক কম ছিল না। অনুগামীদের আকৃষ্ট করে এই সব লোক সিংহাসনের ন্যায্য উত্তরাধিকার বলে দাবী জানাতো। অধিকাংশ নাম ভাড়ানো মিথ্যুকরা ধরা পড়েছে, তবে কেউ কেউ সিংহাসনে আসীন হতে পেরেছে। সপ্তদশ শতকের সূচনাকে রাশিয়ায় মাত্স্যন্যায় বলে অভিহিত করা হয়ে থাকে।
চিরকাল সব জাতির মানুষের মধ্যে যে কোনো মূল্যে ক্ষমতায় আসীন হতে উত্গ্রীব লোক কম ছিল না। অনুগামীদের আকৃষ্ট করে এই সব লোক সিংহাসনের ন্যায্য উত্তরাধিকার বলে দাবী জানাতো। অধিকাংশ নাম ভাড়ানো মিথ্যুকরা ধরা পড়েছে, তবে কেউ কেউ সিংহাসনে আসীন হতে পেরেছে।
সপ্তদশ শতকের সূচনাকে রাশিয়ায় মাত্স্যন্যায় বলে অভিহিত করা হয়ে থাকে। ইভান দ্য টেরিবলের পুত্র নিঃসন্তান ফেওদরের মৃত্যুর পরে নাইট রিউরিকদের সাম্রাজ্যের অবসান ঘটেছিল। সিংহাসন তার পরে অধিকার করেন পারিষদ বরিস গদুনোভ। তার তেমন জনপ্রিয়তা ছিল না। উপরন্তু জনশ্রুতি ছিল, যে গদুনোভই অল্পবয়সে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী রাজপুত্র দমিত্রিকে হত্যার জন্য দায়ী। গদুনোভ অসন্তুষ্টদের কড়া শাস্তি দিত, কিন্তু জারের প্রতি ঘৃণা তাতে বেড়েই চললো। যখন ১৬০১ সালে রাশিয়ায় দুর্ভিক্ষ ঘটলো, তখন জনতা জারকেই তার জন্য দায়ী করলো।
এদিকে সিগিজমুন্ডের রাজত্বে পোল্যান্ডের রাজসভায় আবির্ভাব হয়েছিল এক তরুনের, যে নিজের পরিচয় দিয়েছিল অকল্পনীয় সৌভাগ্যবশতঃ বেঁচে যাওয়া রাজপুত্র দমিত্রি বলে। সে পোল্যান্ডের রাজাকে অনুরোধ করেছিল ক্ষমতা কুক্ষিগত করা গদুনোভকে উত্খাত করতে সাহায্য করার জন্য। আধুনিক ঐতিহাসিকরা এখনো তর্ক করেন, যে ঐ লোকটা আদপে কে ছিল। অধিকাংশই সমর্থন করে বরিস গদুনোভের বক্তব্য, যে সে আসলে ছিল গ্রিগোরি নামের পলাতক এক সন্ন্যাসী। অন্যরা জোর দিয়ে বলে, যে নামভাড়ানো দমিত্রি আসলে ছিল পোল্যান্ডের একজন রাজার জারজ পুত্র। সিগিজমুন্ড ও তার পারিষদদের বয়েই গেছিল রাশিয়ায় কি নামের জার সিংহাসনে আসীন হবে। তাদের দরকার ছিল রাশিয়ায় অরাজকতা, যাতে সেই সুযোগে নিজেদের আখের গোছানো যায়। নামভাড়ানো লোকটি প্রতিশ্রুতি দিতে কার্পণ্য করেনি। রাজা সিগিজমুন্ডকে সে রাশিয়ার সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলি দান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। ক্যাথলিক পোপের কাছে অঙ্গীকার করেছিল অর্থোডক্স খ্রীষ্টান রাশিয়াকে ক্যাথলিক ধর্মবিশ্বাসীতে পরিণত করার। সুতরাং ঐ জালিয়াত বিভিন্ন পক্ষ থেকে পুরো সমর্থন পেয়েছিল।
ছোট একটা ফৌজ নিয়ে জালিয়াত দমিত্রি এসেছিল রাশিয়ার সীমান্তে। মনে হয়েছিল, যে বরিস গদুনোভের বিশাল সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে তার জেতার কোনোই সম্ভাবনা নেই। কিন্তু এখানে কাজ করলো জনসাধারনের জার বরিসের প্রতি ঘৃণা। রুশী সেনারা দলবদল করে যোগ দিতে লাগলো জালিয়াত দমিত্রির ফৌজে, নগরবাসীরা তাদের দূর্গের দুয়ার উন্মুক্ত করে দমিত্রিকে অভ্যর্থনা জানাতে লাগলো। পরাজয়ে শিহরিত হয়ে বরিস গদুনোভ শীঘ্রই মারা যান। লোকে বলতো, যে তিনি নাকি বিষপান করে মৃত্যুবরণ করেছিলেন। ১৬০৫ সালে সমস্ত গীর্জায় ঘন্টাধ্বনির সাথেসাথে জালিয়াত দমিত্রি প্রবেশ করলো মস্কোয়।
কিন্তু জালিয়াত একটা গুরুতর সমস্যার কথা ভুলে যায়নি। জনগণের কাছে তার ক্ষমতায় অধিষ্ঠানের আইনানুগতা প্রমাণ করার জন্য প্রয়োজন ছিল রাজমাতা মারিয়ার সমর্থন, যিনি ছিলেন সত্যিকারের দমিত্রির মাতা। তাদের দেখা হয়েছিল কোনো সাক্ষী ছাড়া। আমরা কোনোদিন জানতে পারবো না, যে পুত্রহারা রাজমাতা ও তার পুত্রের মুখোশধারী লোকটির মধ্যে কি কথাবার্তা হয়েছিল। কিন্তু ফলশ্রুতিতে রাজমাতা জনগণের কাছে ঘোষনা করেছিলেন, যে নতুন জারই আসল রাজপুত্র দমিত্রি। জালিয়াত রাশিয়ার সিংহাসনে আসীন হল। জনগণ আনন্দে মেতে উঠলো।
সবচেয়ে আকাঙ্খিত স্বপ্ন সার্থক হল। এই তো আরাধ্য ক্ষমতা। কিন্তু হিসাব মেটানোরও সময় হল – পোল্যান্ডের রাজার, ক্যাথলিক পোপের, পারিষদদের, ভাড়া করা সৈনিকদের। জালিয়াত দমিত্রির সাথে মস্কোয় আসা পোলিশরা এমন আচরন করতে শুরু করলো, যেন তারা জয় করা নগরীতে। হিংসা ও অরাজকতা ছড়ালো তারা। জালিয়াত দমিত্রি নিজেও মস্কোবাসীদের ভালোমন্দকে গুরুত্ব দিত নাঃ রাজদরবারে বিভিন্ন পোলিশ ঐতিহ্য প্রতিষ্ঠা করলো, অর্থোডক্স রীতিনীতি মানতো না, পারিষদদের প্রকাশ্যে ব্যাঙ্গ করতো। জনগণের উল্লাস পরিণত হল প্রথমে মোহভঙ্গে, তারপরে ক্ষোভে। এ কি সত্যিকারের জার? সহ্যক্ষমতার শেষবিন্দুটি ভরে গেল, যখন জালিয়াত দমিত্রি ক্যাথলিক ধর্মবিশ্বাসী পোলিশ মেয়ে মারিনা ম্নিশেককে বিবাহ করলো ও তাকে অর্থোডক্স রাশিয়ার সম্রাজ্ঞী বলে ঘোষনা করলো। পারিষদবর্গ দ্বারা উদ্দীপ্ত দেশের জনগণ অভ্যুত্থান ঘটালো। জালিয়াত দমিত্রি খুন হল। তাকে পুত্র বলে স্বীকার করা মারিয়া জালিয়াতকে আর স্বীকার করলেন না, এই বলে, যে সে ভয় দেখিয়ে তাকে মিথ্যা কথা বলতে বাধ্য করেছিল। মৃত জালিয়াতের মুখে কেউ একজন ভাঁড়ের মুখোশ পরিয়ে দিল। ভাগ্যের কৌতুকঃ যে জীবতকালে জারের মুখোশ পরে ছিল, মরণোত্তরকালে তার পুরস্কার জুটলো ভাঁড়ের মুখোশ। কিন্তু সত্যিই কে ছিল ঐ লোকটা? সে রহস্য এখনো উন্মোচিত হয়নি।
রাশিয়া, রাশিয়ার মুখ, ধর্ম, গণ অভ্যুত্থান, রুশী ইতিহাসের রহস্য, সমাজ জীবন
(এলপিবি/জুলাই ১২, ২০১৫)
পাঠকের মতামত:
- ফরিদপুরে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
- মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে হুমকির ঘটনায় থানায় জিডি, অভিযোগের তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি
- নাগরপুরে প্রবাসীকে কুপিয়ে হত্যা, গ্রেফতার ২
- আবারও কমলো স্বর্ণের দাম
- কাপাসিয়ায় সর্বজনীন পেনশন স্কিম নিয়ে অবহিতকরণ সভা
- দেওয়ানগঞ্জে সিডস কর্মসূচির অবহিতকরণ সভা
- 'উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে'
- বৃষ্টির জন্য কুষ্টিয়ায় সালাতুল ইস্তিকার নামাজ আদায়
- সজিনা পাড়তে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু
- শৈলকূপায় ওয়ান শুটারগানসহ যুবক গ্রেপ্তার
- সাংবাদিকের বিরুদ্ধে জাল সনদে প্রাইমারি স্কুলের সভাপতি হওয়ার অভিযোগ
- নড়াইলে খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে বিশুদ্ধ পানি, স্যালাইন ও বিস্কুট বিতরণ বিএনপির
- ‘দলের নির্দেশ অমান্য করে প্রভাব বিস্তার করার ঘটনা ইসির বোধগম্য নয়’
- ‘মাশরাফি যা চাইবে, আমি সেটা করে দেব’
- এমপি শাজাহান খানের বিরুদ্ধে চেয়ারম্যান প্রার্থী শফিক খানের নানা অভিযোগ
- তীব্র তাপদাহে ফরিদপুরে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের শরবত বিতরণ
- ফুলবাড়ীতে ৫৮০ কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে সার বীজ বিতরণ
- বিএনপির নিজেকে প্রশ্ন করা জরুরি- তারা কি পাকিস্তানের চেয়েও বড় বিরোধীতাকারী?
- গাজীপুরে স্কুলছাত্র হত্যায় ৭ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
- মাদারগঞ্জে দলীয় প্রার্থীর প্রত্যাহার চান ৫ চেয়ারম্যান প্রার্থী
- আদরকে বাঁচাতে চায় পরিবার, প্রয়োজন ৫০ লাখ টাকা
- দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস
- গোপালপুর ইউনিয়নে লিটন মোল্লা চেয়ারম্যান নির্বাচিত
- ছাড় পাচ্ছেন না স্বজনকে প্রার্থী করানো মন্ত্রী-এমপিরাও
- লক্ষ্মীপুরের ৫ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান হলেন যারা
- ‘দেশে মুসলিম-হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সবাই মিলেমিশে থাকে’
- নাগরপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমানের দাফন সম্পন্ন
- টাঙ্গাইল পৌরসভায় ১৩৭ বছরেও গড়ে উঠেনি আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা
- সুবর্ণচরে সর্বজনীন পেনশন মেলার উদ্ধোধন
- দিনাজপুরে তীব্র তাপদাহে গ্রীষ্মকালীন টমেটো নিয়ে বিপাকে কৃষক
- ইতালী প্রবাসীর মৃত্যুর ৩ বছর পর রহস্য উদঘাটন
- মেলান্দহে ১১ কেজি গাঁজাসহ ৩ মাদক কারবারি আটক
- ‘নির্বাচন কমিশনের প্রতি মানুষের আস্থা ফিরেছে’
- নড়াইলের পথে-প্রান্তরে কৃষ্ণচূড়ার অপার সৌন্দর্য
- ফরিদপুরে ২ সমবায় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ
- দিনাজপুরে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ভাঙচুর ও মারধরের ঘটনায় মামলা
- নিখোঁজের ৭ দিন পর যুবকের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার
- দিনাজপুরে পুলিশের গুলিতে একজনের মৃত্যু, আহত ১২
- নড়াইলে প্রচণ্ড গরমে ৭ শিক্ষার্থী অসুস্থ, স্কুল ছুটি ঘোষণা
- নড়াইলে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী গ্রেফতার
- গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু ধানের ফসল কর্তন উৎসব
- হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে উড়ল ফিলিস্তিনি পতাকা
- ইসলামপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে কৃষকের মৃত্যু
- ৫১৬৬ জন সংগীত ও শারীরিক শিক্ষক পাচ্ছে প্রাথমিক বিদ্যালয়
- ২১ বছর পর হত্যা মামলার রায়, ১৯ জনের যাবজ্জীবন
- ওষুধের মূল্য বৃদ্ধি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টের নির্দেশ
- রিকশাচালকদের আধা লিটার পানির বোতল দিচ্ছে ডিএনসিসি
- বাঁচুন নিজের মতো করে
- টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে উইলিয়ামসনের নেতৃত্বেই খেলবে নিউজিল্যান্ড
- রাত ১১টার পর চা-সিগারেটের দোকান বন্ধে ডিএমপির নির্দেশ
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- সিলেটের ভ্রমণ কাহিনী
- শুধু প্রভাবশালীদের পক্ষেই আইন!
- অম্ল-মধুর যন্ত্রণায় অপু বিশ্বাস
- লাইন ধরে খেতে হয় লিখনের জগা খিচুড়ি !
- আমার বোন শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি : চিনে নিন কে এই বরকত!
- 'ইতিহাসের ইতিহাস'
- ধনী হওয়ার আট কার্যকর উপায়
- মেয়ে পটানোর কৌশল!
- লক্ষাধিক রাখাইন জনগোষ্ঠী আড়াই হাজারে নেমে এসেছে
- উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের নতুন যাত্রা ১ বৈশাখ
- লোভী মানুষ চেনার সহজ উপায়
- আমায় ক্ষমা কর পিতা : পর্ব ১৪'তোমার সহজাত উদারতা তোমাকে আকাশের সীমানায় উন্নীত করলেও তোমার ঘনিষ্ঠ অনেকের প্রশ্নবিদ্ধ আচরণ তোমার নৃশংস মৃত্যুর পথে কোনই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি'
- বাংলা বই পড়ার ওয়েবসাইট
- শাকিবের নায়িকা শ্রাবন্তী, অপুর নায়ক জিৎ
- মঠবাড়িয়ায় ৯ বছরের শিশুকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা
- হুমায়ূনের মৃত্যুর কারণ মদের পার্টি !
- দেশে ফিরছেন তারেকস্ত্রী জোবায়দা রহমান
- বোরকা পরা মেয়ের গণধর্ষণের ভিডিও নিয়ে সিলেটে তোলপাড়
- ইউটিউবে নায়লার আত্মপ্রকাশ
- নেপালের ভূমিকম্প প্রাকৃতিক নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্টি !
- বিএনপির আন্দোলন হচ্ছে দলের অভ্যন্তরে !