E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বাগেরহাট শহরে পাখিদের অভয়াশ্রম

২০১৫ সেপ্টেম্বর ০১ ২০:০৮:২০
বাগেরহাট শহরে পাখিদের অভয়াশ্রম

বাগেরহাট প্রতিনিধি: হযরত খানজাহান আলী (র:) পন্যভুমি বাগেরহাট শহরের রয়েছে বিলুপ্ত প্রায় বিভিন্ন প্রজাতির পাখিদের অভয়াশ্রম।

এখানে হাজার হাজার পাখি দেখতে প্রতি দিন আসেন দেশ-বিদেশের পর্যটকরা। এই পাখি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি পর্যটকদের আকর্ষণ করছে। অনেক পর্যটক আবার এই পাখির অভয়াশ্রম দেখে এবং ছবি তুলে আনন্দ উপভোগ করেছেন।

বাগেরহাট শহরের প্রাণকেন্দ্রে জেলা প্রশাসকের বাসভবন, পুরাতন আদালত চত্তর, ট্রেজারি ও সাংস্কৃতি ফাউন্ডেশন অঙ্গনের বিশাল জুড়ে রয়েছে বিলুপ্ত প্রায় বিভিন্ন প্রজাতির পাখিদের অভয়াশ্রম। এখানে অসংখ্য গাছে এসব পাখিদের বসাবস। চারিদিকে নিরাপত্তার কারণে প্রায় ৩০-৩৫ বছর ধরে সাদা বক, কালকুচ, হাঁস পাখি ও পানকৌড়ি পাখি এখানে আবাস্থল গড়ে তুলেছে। এখন পাখিদের অভয়াশ্রম হিসাবে পরিচিতি পেয়েছে এই এলাকাটি। দক্ষিনাঞ্চলের গ্রাম-গঞ্জের হারিয়ে যাওয়া পাখিদের অভয়াশ্রম বাগেরহাট শহরে দেশী-বিদেশী পর্যটরা পাখি দেখতে আসেন। স্থানীয়রা বলছেন বাগেরহাটের পাখিদের অভয়াশ্রম সকলের কাছে সুনাম অর্জন করেছে।

এই অভয়াশ্রমের পাখি দেখতে আসা অনেকের মধ্যে সুন্দরবন বিশেষঞ্জ ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘গ্রাম থেকে হারিয়ে যাওয়া বিভিন্ন প্রজাতির পাখির মধ্যে এখানে ৩-৪ প্রজাতির বসাবস করছে। তাই পাখির এই অভয়াশ্রম দেখে খুব ভাল লাগছে। আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করছে এসব পাখি। তবে প্রতিটি গাছে সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে কয়েক শ’ করে হাঁড়ি বেধে দিলে পাখিরা আর মনুষের গায়ে মল ত্যাগ করতে পারবে না। পাখিরা বাসা বাঁধবে হাড়ির মধ্যে। এ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে কর্তৃপক্ষকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

বাগেরহাট সাংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মীর ফজলে সাঈদ ডাবলু বলেন, ‘মায়েরা যেমন তার সন্তানকে আগলে রাখে, আমরাও তেমনি এখানের পাখিদের আগলে রাখছি। এখানে যথেষ্ট নিরাপত্তা থাকায় পাখিরা তাদের বংশ বিস্তার করে পাখির ছানাদের লালন পালন করে চলেছে। সাংস্কৃতি অঙ্গন জুড়ে প্রতিনিয়িত নানা অনুষ্ঠানের সময় পাখিদের বিষ্টায় লোকজন নানা বিড়ম্ববনায় পড়লেও তারা এটা স্বাভাবিক ভাবে মানিয়ে নেয়। এ কারণে কেউ তাদের ক্ষতি করে না বাগেরহাট চিংড়ি ও মৎস্য ঘেরসহ খাল-বিলে যথেষ্ট পরিমানে মাছ থাকায় পাখিদের খাবারে কখনও সমস্যা হয় না। নিরাপদ আশ্রয়স্থল মনে করে এখানে বছরের পর বছর ধরে পাখি বসাবস করছে।

পাখিদের এই অভয়াশ্রম দেখতে আসা আমেরিকান পর্যটক মাইকের ওয়েনার বলেন, তিনি এখানে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি দেখে অবিভুব। তাঁর দেশের শহরগুলোর মধ্যেও পাখিদের এমন অভয়াশ্রম নেই বলে জানান। পাখিদের এই অভয়াশ্রম জন্য তিনি বাগেরহাট শহরবাসী ও প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান।

বাগেরহাট সুন্দরবন ট্যূরিষ্ট ক্লাব নির্বাহী পরিচালক আব্দুল্লাহ বনি বলেন, ‘শহরের প্রাণ কেন্দ্রে নিরাপত্তার কারণে এখানে একাধিক গাছে পাখিদের বসবাস। এ কারণে পাখিরা তাদের বংশ বিস্তার করে চলেছে। চারিদিকে নিরাপত্তা থাকায় দেশী-বিদেশী পর্যটরা পাখি দেখতে আসেছে। আমরা এটিকে পাখির অভয়াশ্রম হিসাবে ধরে রাখতে চাই।

বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মো. জাহাংগীর আলম বলেন, ‘সকলের সহশীল হতে এই অভয়াশ্রমের পাখি রক্ষা হবে। আমাদের দেশের অসংখ্য প্রজাতির পাখি প্রায় বিলুপ্তির পথে। তাই এসব পাখি বাগেরহাটের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ভূমিকা পালন করছে। বর্তমানে এই সময়টি পাখির বংশ বিস্তরের। এখানের পাখির সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

(একে/এলপিবি/আগস্ট ১, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

৩০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test