E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ওয়ালটনের অন্যরকম পিকনিক আয়োজন

২০১৬ ফেব্রুয়ারি ০৩ ১৫:৩৯:৪৯
ওয়ালটনের অন্যরকম পিকনিক আয়োজন

নিউজ ডেস্ক : রহিমা বেগম। বয়স ৬০ বছরের বেশি। বিধবা। সংসারের উপার্জন খুব সামান্য। কোনোরকমে দিন চলে। টানাটানির সংসারে প্রায় সব সাধই থেকে যায় অপূর্ণ। এই বয়সে দেখেছেন কত মানুষ বেড়াতে যায়, বনভোজনে যায়। রহিমা বেগমের মতো অভাবী মানুষের কাছে সেসব অধরাই থেকে যায়।

গ্রামের মানুষদের কাছে আরেক যন্ত্রণার নাম শীত। যেখানে নুন আনতে পান্তা ফুরোয়, সেখানে সুন্দর একটা শীতের কাপড় যোগাড় একটু কঠিনই।

আমরা প্রতিনিয়ত চারপাশের নিম্ন আয়ের মানুষদের এইসব অভাবের দৃশ্য দেখে অভ্যস্ত। খুব কম মানুষই এসব কষ্ট সহমর্মিতার সঙ্গে দেখেন। কিছুটা হলেও সমাধানের চেষ্টা করেন। সাধ্য আর সাধের সমন্বয় ঘটিয়ে এগিয়ে আসার চেষ্টা করেন। বয়স্ক এবং নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষের মুখে এক টুকরো হাসি দেখার জন্য এরকম এগিয়ে আসার আরেক গল্প লিখলেন এসএম নুরুল আলম রেজভি। তিনি ওয়ালটন গ্রুপের চেয়ারম্যান।

বলছি টাঙ্গাইলের গোসাইর জোয়াইর গ্রামের কথা। এই গ্রামেই বাড়ি এসএম নুরুল আলম রেজভির। এই মানুষটি সব সময়ই চেষ্টা করেন বিশেষ করে বয়ষ্ক এবং পিছিয়ে থাকা নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য কিছু একটা করতে। বয়স্কদের জন্য খেলাধুলার ব্যবস্থা করেছেন নিজ উদ্যোগে। তাদের সঙ্গে খেলায় অংশ নেন নিজেও। উদ্দেশ্য- বয়স্কদের বিনোদনের ব্যবস্থা করা এবং এই বোধ তাদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে যে, সমাজে সবাই সমান।

অতি সম্প্রতি তিনি নিয়েছেন আরেক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। জোয়াইর ও তার আশপাশের কয়েকটি গ্রাম মিলে রহিমা বেগমের মতো প্রায় শ’খানেক বয়স্ক মহিলা ও পুরুষকে নিয়ে আয়োজন করলেন পিকনিকের। তার আগে তাঁদের সবার গায়ে জড়িয়ে দিয়েছেন শীতের কাপড়।

ওয়ালটন গ্রুপের সমাজকল্যাণ কর্মকর্তা সাফায়েত হুদা’র নেতৃত্বে ৩৫ জন বয়স্ক মহিলা এবং ৫৮ জন পুরুষসহ মোট ৯৩ জনকে নিয়ে শুরু হয় বনভোজন বা পিকনিক যাত্রা। দুটি বড় বাসে তাঁরা উঠে বসেন। উদ্দেশ্য বঙ্গবন্ধু সেতু এবং বগুড়ার মহাস্থানগড়। ভ্রমণের সময় তাদেরকে দেয়া হয় উন্নত মানের নাস্তা, দুপুরের খাবার, বিকেলের নাস্তাসহ ঐতিহ্যবাহী বগুড়ার দই।

বঙ্গবন্ধু সেতু দেখে তারা অবাক হন। প্রমত্ত যমুনার উপর এতো বড় ব্রিজ! অনেকে আবার যমুনাই দেখেন নি কখনো। বড় নদী, বড় সেতু দেখে তারা বিস্মিত হন। অনেকে শুধু শুনেছেন, এবার তারা নিজ চোখে দেখলেন। বগুড়ায় মহাস্থানগড় জাদুঘর ও এর আশেপাশের ঐতিহাসিক স্থানগুলো তারা ঘুরে দেখেন। পোশাক, ভালো খাবার দাবার ছাড়াও ভ্রমনকরীদের জরুরী চিকিৎসার জন্য সার্বক্ষণিক নিয়োজিত ছিলেন একজন চিকিৎসক।

স্বাভাবিকভাবেই পিকনিক শেষে একটি আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। অনেকে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন। দুঃখের জীবনে এ এক আনন্দ অশ্রু। আমরা অনেকেই পারি ব্যতিক্রমী এরকম কিছু উদ্যোগ নিয়ে আমাদের চারপাশের মানুষগুলোর মুখে হাসি ফুটাতে।

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test