E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বাবা তুহীন ফিরে আয়...

২০১৬ আগস্ট ০৪ ১৮:১৫:২০
বাবা তুহীন ফিরে আয়...

রাজীবুল হাসান, গাজীপুর : বাবা তুমি কয়? মায়ের কথা কী তোর একবারও মনে পড়ে না। প্রতি রাতে ফোন দিয়ে বলতি- আব্বার জন্য দোয়া কইরো, নামাজ পড়ো, এ পৃথিবীতে কেউ চিরদিন থাকতে পারে না, আমরাও থাকবো না। প্রায় দেড় বছর আগে সর্বশেষ ফোনে মাকে কথাগুলো বলছিল রিদওয়ান ইসলাম তুহীন। তারপর থেকেই তুহীন নিখোঁজ।

মাকে আর ফোনও করেনি। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা চৌরাস্তা এলাকার মৃত তৌহিদুল ইসলামের ছেলে কমপিউটার ইঞ্জিনিয়ার জঙ্গি তুহীন কি বেঁচে আছেন? নাকি মারা গেছেন ? সে সম্পর্কে স্পষ্ট করে কিছুই বলতে পারছে না তার পরিবার। তবে তুহীনের মা কুলসুম আক্তার জানালেন-‘ গত দশ বছরের মধ্যে একদিনও সে রাতে ঘুমায়নি আমার সাথে ফোনে কথা বলা ছাড়া। তুহীন যদি বেঁচে থাকতো, আমার সাথে ফোনে কথা বলতো। আমার ছেলে বোধ হয় আর নেই, বাবা তুহীন তুই ফিরে অ্যায়। তুই আমার কলিজার ধন।

পরিবার ও এলাকাবাসী জানায়, ছোট বেলা থেকেই তুহীন মেধাবী ছিল। উপজেলার মাওনা চৌরাস্তার বর্ণমালা কিন্ডার গার্টেন থেকে পঞ্চম শ্রেণী পাস করার পর উত্তরা রাজউক স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তি হয়। রাজউক থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করার পর ২০০৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কমপিউটার সাইন্সে ভর্তি হন। এ বছরই সড়ক দুর্ঘটনায় উপার্জনক্ষম তার বাবা তৌহিদুল ইসলাম মারা যান। তৌহিদ-কুলসুম দম্পতির ৩ সন্তানের মধ্যে তুহীন ছিলেন সবার বড়।

অনার্স শেষ করে বেসরকারি একটি মোবাইল কোম্পানীতে ৫০ হাজার টাকা বেতনে চাকরি নেন তুহীন। তার মা কুলসুম আক্তার জানান, মূলত এ সময়টাতেই তুহীন বিপথে পা বাড়ায়। হঠাৎ করে নামাজ পড়তে শুরু করে। মাঝে মাঝে তাকে তাহাজ্জতের নামাজ পড়তেও দেখেছি।’

প্রতিবেশিরা বলেন, খুবই নিরীহ প্রকৃতির ছেলে ছিল তুহীন। সেই সাথে মেধাবীও। কিন্তু হঠাৎ করেই সে কীভাবে পথভ্রষ্ট হয়ে গেলো। ধীরে ধীরে সে এমন জঙ্গি হয়ে উঠেছিল-বিশ্বাসও করতে পারে না গ্রামের লোকজন।

জীবনের বেশির ভাগ সময় তার ঢাকাতেই কেটেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ফুটবল খেলতে গিয়ে ডান পায়ে প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছিল তুহীন। এরপর থেকে তিনি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতো বলে জানান কুলসুম আক্তার। ২০১৫ সালের জানুয়ারির শেষ দিন রাতে মাকে সর্বশেষ ফোন করেছিলেন তুহীন। এরপর থেকেই তিনি নিখোঁজ। কোথাও খুঁজে না পেয়ে ৪ ফেব্রুয়ারি কলাবাগান থানায় তার ছোট তৌছিফ ইসলাম একটি সাধারণ ডায়েরি (নং ১৮২, তারিখ ৪/২/ ২০১৫) করেন।

(আরএইচ/এএস/আগস্ট ০৪, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test