E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

তুতানখামেনের মমির রহস্য ভেদের অভিযান

২০১৭ ফেব্রুয়ারি ১৮ ১৫:০৩:৪০
তুতানখামেনের মমির রহস্য ভেদের অভিযান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পৃথিবীর অনেক দেশের মানুষ বিশ্বাস করে তুতানখামেনের মমিকে যারা বিরক্ত করবে, তাদের কষ্টদায়ক মৃত্যু অনিবার্য। কোন ভাবেই আর তাদের রক্ষা করা যাবেনা। এই বিশ্বাসটা তৈরি হয়েছিল প্রথম মিশরে যখন ১৯২২ সালে তুতানখামেনের মমি আবিষ্কার হয়েছিল। খনন কাজে ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ হোয়ার্ড কাটারে সাথে আরো ২১ জন ছিল। তাদের প্রত্যেকের মৃত্যু হয়েছিল অস্বাভাবিক। কিন্তু বিজ্ঞানের চোখে তা শুধু কুসংস্কার ছাড়া আর কিছু না। সেই একই কাজ করছেন এবার আরো এক ব্রিটিশ নাগরিক। পেশায় তিনিও প্রত্নতত্ত্ববিদ। নাম নিকোলাস রিভোস। প্রায় ৩৩০০ বছর লুকিয়ে থাকা রহস্যের দ্বারপ্রান্তে তিনি। তুতানখামেনের সমাধির মধ্যে লুকিয়ে থাকা রহস্য ভেদ করতে তার এই অভিযান।

তুতানখামেনের এই রহস্য নিয়ে নিকোলাস রিভোস যে অনুসন্ধান চালিয়েছেন, সেখানে একটি গুপ্ত পতেরও সন্ধান পেয়েছেন। তিনি যে সব তথ্য পেয়েছেন তার উপর ভিত্তি করে তিনি প্রায় ৯০% নিশ্চিত যে এখানে আরো নতুন কিছু অপেক্ষা করছে। থাকতে পারে রানী নেফাতিতির সমাধিও। তাছাড়া আরো দুটি গোপন কক্ষ আছে।

নিকোলাসের সাথে আরা আছেন ইতালির তুরিনের একটি পলিটেকনিকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু গবেষক। তুরিনের পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর পরসেলি জানান, আধুনিকভাবে এই গবেষণা পরিচালনা করা হবে। এমনকি আমাদের কাছে মাটির তলায় ৩২ ফুট গভীরেও স্ক্যান করার মত মেশিন আছে। মিশরের সাবেক পুরাতত্ত্ব মন্ত্রী মামদৌহ এলদামাতি বলেন , এই শতাব্দীর সবচেয়ে বড় আবিষ্কার হতে চলেছে এই গবেষণা।

তুতনখামেন ছিলেন মিশরের সবচেয়ে কনিষ্ঠ ফ্যারাও, খ্রিষ্টপূর্ব ১২৩২ থেকে ১৩২৩ সাল পর্যন্ত রাজত্বকাল ছিল। তবে তার মৃত্যু নিয়ে আছে নানান ধরনের মতামত, কেউ বলেন ম্যালেরিয়াতে মারা গিয়েছিলেন আবার কেউ কেউ বলেন সাপের কামড়ে মারা গিয়েছিলেন। এই সব নিয়ে আছে প্রত্নতত্ত্ববিদদের মধ্যেও রেশারেশি।


তুতানখামেনের মৃত্যু ঘিরে নানা ধোঁয়াশা তৈরি হলেও মমি আবিষ্কারের পর তাঁকে নিয়ে আম জনতার মনে কৌতূহল বেড়েছে আরও। কারণ, ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ হোয়ার্ড কার্টারের নেতৃত্ব তুতানখামেনের যখন মমি আবিষ্কারের সময় তাঁর সমাধি প্রায় অক্ষত অবস্থায় ছিল। মিশরের বেশির ভাগ পিরামিডে থাকা মূল্যবান সম্পত্তি লুট হয়ে গেলেও তুতেনখামেনের সমাধিতে পাওয়া গিয়েছিল বিপুল সম্পত্তি। নানা গুরুত্বপূর্ণ নথি। মিশর সভ্যতার ইতিহাসে নয়া মোড় ঘুরে যায় তুতানখামেনের মমি আবষ্কারের পর।

এবারও সেই রকমই চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসতে পারে বলে ধারণা ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ নিকোলাস রিভেসের। রানি নেফাতিতির সমাধির খোঁজ মিলতে পারে বলে দাবি তাঁর। খ্রিস্টপূর্ব ১৩৫১ থেকে ১৩৩৪ সাল পর্যন্ত নেফাতিতি মিশরে রাজত্ব করেছিলেন।

তবে নীল নদের দেশের মানুষের মধ্যে এক প্রকার ভয় করছে, যারা বিশ্বাস করে থাকে তুতানখামেনের সমাধি স্থলে ঢোকায় পাপ। কারণ এই সমাধিতে কারো প্রবেশের মাধ্যমে আবার না ১৯২২ সালের মত অভিশাপ নেমে আসে। তবে বিজ্ঞানীরা এই সকল কুসংস্কারকে তোয়াক্কা না করে সঠিক রহস্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং মানব সভ্যতার ইতিহাসের অংশকে তুলে ধরার চেষ্টা করছে।

(ওএস/এসএস/এএস/ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test