E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

পকেটকাটা পেশায় জড়িত ৪ বোন, হয়েছেন কোটিপতি!

২০১৭ জুলাই ০১ ১৩:২৯:২৬
পকেটকাটা পেশায় জড়িত ৪ বোন, হয়েছেন কোটিপতি!

নিউজ ডেস্ক : যে কোনো পেশার মানুষ যদি নিবেদিত হয়, পেশার প্রতি অবহেলা না করে তাহলে তারা এক সময় প্রতিষ্ঠিত হবেই। এটাই স্বাভাবিক। পকেটকাটা পেশায় এরকম দৃষ্টান্ত রাখলেন বগুড়ার সেই পকেটমার পল্লীর আপন চার বোন। শহরের উত্তর চেলোপাড়ার তাজের মেয়ে বললেই সেখানকার মাটিসুদ্ধ তাদের চেনে। দুলি বেগম, রেখা বেগম, সূর্য বেগম এবং রাজ কুমারী।

একসময় তারা যাযাবর জীবনযাপন করলেও বর্তমানে তারা কোটি কোটি টাকার মালিক। জায়গাজমি বিল্ডিংবাড়িও আছে। উত্তর চেলোপাড়ায় চার বোনের জায়গা জমি এবং বিল্ডিংবাড়ি এক সঙ্গেই। এদের মধ্যে দুলি বেগমের বাড়ি দুটি। বাকিগুলোর একটি করে হলেও নিজ এরিয়ায় একাধিক জায়গা কেনা আছে তাদের। সুযোগমতো সে জায়গাগুলোতেও হয়তো বিল্ডিংবাড়ি উঠে যাবে। বর্তমানে এই চার বোনের রাজত্ব চলছে উত্তর চেলোপাড়া জুড়ে। এই চার বোনের বয়স ২৫ থেকে ৩৪ বছরের মধ্যে। ছোট থেকেই পকেটকাটা পেশার সঙ্গে যুক্ত হয় তারা। এক সময় হয়ে উঠে এই পেশার অন্যতম পরিচিত জন হিসেবে।

বিয়ে হয় পর্যায় ক্রমে নান্টু, রশিদ, মজনু এবং পাতারুর সাথে। এরা দেশ বিখ্যাত পকেটমার। এদের মধ্যে নান্টু এবং পাতারু বেশি অভিজ্ঞ। এরা বেশির ভাগ সময় দেশের বাইরে ভারতে পকেটমারের কাজ করে। তিন চার মাস পরপর এলাকায় আসে সংক্ষিপ্ত সফরে। দুলি বেগমরা বর্তমানে পকেটমারের সঙ্গে জড়িত না থাকলেও নেতৃত্ব দিচ্ছে বলে জানা গেছে। এর পাশাপাশি এরা বর্তমানে দাদন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।

এই দাদন ব্যবসাই রাতারাতি এই চার বোনকে রাজত্ব এনে দিয়েছে। আগের পর্বে উল্লেখ করেছিলাম এই পল্লীর নারীরা মাথায় করে বাড়ি বাড়ি ফেরি করে চুরি ফিতাসহ মেয়েদের প্রসাধনী বিক্রি করে থাকে। এই সব ব্যবসায়ী নারীদের তারা চড়া সুদে টাকা লোন দিয়ে থাকে। নিম্ন শ্রেণির এই সব মানুষের পাশাপাশি সাধারণ অনেক মানুষও এই চার বোনের সুদের টাকার কাছে হার মেনেছে।

স্থানীয় কিছু মানুষের সাথে কৌশলে কথা বলে জানা যায়, যেসব ব্যক্তি সুদের টাকা নিয়ে তাদের ফেরত দিতে পারেনি এক সময় আসল এবং সুদ মিলে মোটা অঙ্কের টাকা ঋণ হয়ে যায় তখন জোর করে তাদের জায়গা জমি দলিল করে নেয়। টাকা দিতে না পেরে এই সব মানুষ বাধ্য হয়েই তাদের কাছে জমি দলিল করে দেন। দুলি বেগমের নির্মাণাধীন নতুন বাড়ির জায়গাটিও এভাবেই দলিল করে নেয়া।

দুলি বেগমেরা চার বোন ছাড়াও এদের মতো আরো বেশ কিছু পকেটমার পরিবার এখানে জায়গা জমি কিনে ইটের বাড়ি করেছে। আয়ের অন্য কোনো পথ না থাকলেও এখানকার সেই পকেটমাররা রাজার হালেই চলছে। এদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপরাধের শতশত অভিযোগ থাকলেও প্রশাসন স্থানীয় বাসিন্দরা কেউ তাদের সঙ্গে পেরে উঠতে পারছেন না। সাধারণ মানুষ অনেকটাই জিম্মি হয়ে পড়েছে তাদের কাছে।

বগুড়া সদরের নারুলী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম জানান, ওই চার বোন এক সময় বগুড়ার কুখ্যাত পকেটমার ছিল। এখন তারা সরাসরি এই পেশায় জড়িত না থাকলেও দাদন ব্যবসা করে তারা কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। উত্তর চেলোপাড়ায় তারা বিল্ডিংবাড়িও তৈরি করেছে।

(ওএস/এসপি/জুলাই ০১, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test