E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘স্যার আমাকে বাঁচান’

২০১৭ আগস্ট ২৮ ১৫:৩৯:১৭
‘স্যার আমাকে বাঁচান’

নিউজ ডেস্ক : ৮তম বার রিও–রিসার্চ এন্ড আম্পাউয়ারমেন্ট অর্গানাজেশন  এসেছে পারনা বালার বাড়ি মানে ধন্যরামের বাড়িতে। ধন্যরাম রায় ২ জুন শুক্রবার শাহজাহান আলী (৩৪) তার ভাই (২) আবুল কালাম(৪৩), (৩) জব্বার (৪৮), (৪)আবুল বাশার(৩৮) এবং শাহজাহানের মামা (৫)তাজুল ইসলাম(৫৫) ও তার মামাত ভাই (৬) আনু(৩০) কে সঙ্গে নিয়ে দল বেধে মৃত নন্দীরাম রায়ের ও স্বামীহারা পারনা বালা রায়ের একমাত্র পুত্র ধন্যরামকে হত্যা করে। রিও জেলা প্রতিনিধিরা মানববন্ধন সহ বিভিন্ন কর্মসুচী নেওয়ায় বিষয়টি সবার নজরে আসে।

আমরা অনেকে হয়ত ভুলেই গেছি এত ঘটনার ভিড়ে কিন্তু রিও নাছোরবান্দা। রিসার্চ এন্ড আম্পাউয়ারমেন্ট অর্গানাজেশন পারনা বালার সাথেই।

অনেক মহারথীরা সেলফি তুলতে এসেছিলেন, তুলেছেন আবার চলেও গিয়েছেন। নিম ভৌমিক থেকে শুরু করে ভারতীয় হাই কমিশনার সহকারী অজয় কুমার মিত্র সহ অনেকে । এদের কারনে সেলফির কাটতি বেশছিল কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। কারণ, ছয় আসামীর মধ্যে ধরা পড়েছে তিনজন। কেউ না জানলেই আমরা জানি বাকিরা পলাতক।

এই মহারথীরা যদি সেলফির পিছনে না থেকে এক/দুই বার আইন শৃক্ষলা বাহিনীকে একটু তাগাদা দিতেন কাজের কাজ হতো অথবা পারনা বালার থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করে আসতেন কাজ হতো।

২৫শে আগস্ট দিনাজপুরের বিভিন্ন জায়গায় ত্রানের কাজ শেষ করে রিও টিম পারনা বালার বাড়িতে। উত্তম পারনা বালাকে বললেন –উনিও আমাদের চন্দন স্যার যিনি আমাদেরকে আপনার খোঁজ খবর নিতে বারে বারে আপনার কাছে পাঠাতেন। উনার মাধ্যেমে বিদেশ থেকে BMRA- Bangladesh Minority Rights Alliance, Canada এক অর্গানাইজেশন আপনাকে ২৫,০০০ টাকা দিয়েছিল।

আমি বোকার মত তাকে জিজ্ঞাসা করলাম-আপনি কেমন আছেন? তিনি কি যেন বলার চেষ্টা করলেন যা আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না। আমি কিছু আবার বলতে যাব হঠাৎ পারনা বালা আমার পা জড়িয়ে ধরলেন, আমি কিং কর্তব্য বিমূড়। জীবনে আমি এই রকম পরিস্থিতির মধ্যে পরিনি, যাইহোক কোন মতে নিজেকে সামলে নিলাম।

সে কাঁদতে ছিল এবং বলছিলেন, আমি বাড়িতে থাকতে পারি না, আমাকে কে দেখবে কে বাঁচাবে ? কেউ নেই। এখান কার বাতাস আমার কাছে ভারী, আমার দম বন্ধ হয়ে আসে। স্যার আমাকে আপনি বাঁচান।
গ্রামের কয়েক জন মহিলা আমাদের নিয়ে আসলেন পারনা রানীর ভাজ্ঞা চোরা বাড়িতে, ঘরের দেয়াল অনেক কষ্টে পাকা করেছিলেন, একমাত্র ছেলেকে নিয়ে ভালোভাবে থাকবে বলে।

বাড়তে ঢুকেই দেখলাম ধন্যরামের প্রিয় ছাগল–এতো লোক দেখেও তার কোন ভয় নেই। এত লোকের মধ্যেও সে তার প্রিয় মালিককে খোঁজার চেষ্টা করছিল।

তুলসী গাছের গোড়ায় দেখলাম আমের পাতার মধ্যে কয়েক শেফালী ফুল দিয়ে পুঁজা দেওয়া হয়েছে।

গ্রামের মহিলাটি আমাকে বললেন “রাতে পারনা বালা আমার সাথে ঘুমায় বাড়িতে থাকতে পারে না–আমরাই তাকে খাওয়াই”। আরও কিছু একটা বলতেন চোখে মুখে দেখলাম এক অজানা আতংক। বাড়িতে থেকে বেড়িয়ে আসার পথে পারনা বালাকে বললাম, আপনার কোন অশুবিধা হলে আমাদের জানাবেন।
আমরা অবশ্যই আপনার দ্বায়িত্ব নেব। বলতে চেয়েছিলাম আমরা সেলফি বাজ বা নেতা নই।মনে হলো আমি যে অর্থে সেলফি ব্যবহার করি সেটা পারনা বালা বুঝবে না।

তবে হ্যা রিও যেটা বলে সেটা করে। নেতাদের মতো মিথ্যা আশ্বাস নয় “সেটা কমিটমেন্ট” আর রিও তার কমিটমেন্ট রক্ষা করতে সব কিছু করে।আমরা কারও মাথায় হাত বুঝে শুনেই দেই, খালি হাতে নয় এটাই আমাদের সাথে অন্যদের তফাৎ।

আজ ২৭ তারিখ পারনা বালার ফোন–তিনি আমাদের জানালেন তিনি আশ্রমে থাকতে চান-তিনি আবারও সেই একই আকুতি জানালেন “আমাকে আপানি বাঁচান”

আমরা চাই আপনারাও এই যুদ্ধে সামিল হউন। আসুন আমরা একজন পারনা বালাকে বাঁচাই। হাজার হাজার সেলফি তা তুলে একটা সেলফির মত সেলফি তুলি। একটা দৃস্টান্ত তৈরী করি। হ্যাঁ, আমরা পারি-আমরা আছি পারনা বালা দেবী আপনার ভয় নেই। আমরা আছি। রিওর কমিটমেন্ট কখনও অন্যথা হবে না। কারন রিও–রিসার্চ এন্ড আম্পাউয়ারমেন্ট অর্গানাজেশন মানুষের জন্য কাজ করে।

(ওএস/এসপি/আগস্ট ২৮, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test