E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

পশু-পাখিদের রঙিন দুনিয়া!

২০১৪ এপ্রিল ১৬ ১১:০৩:০৯
পশু-পাখিদের রঙিন দুনিয়া!

ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা : সবুজ ঘাসের উপর দিয়ে কমলা বলটা গড়িয়ে যাচ্ছে৷ তার পিছনে দৌড়চ্ছে টমি৷ তুমি খুশি এই ভেবে, টমি কেমন বুদ্ধিমান! ঠিক কমলা বলটাকে খুঁজে পেয়েছে৷ সবাই জানে, ষাঁড় লাল রঙ দেখলে খেপে যায়৷ তাই বুল ফাইটে ষাঁড়ের সামনে লাল কাপড় দেখানো হয়৷ এর থেকে আমরা ধারণা করি চারপাশের পশুপাখিরা আমাদের মতোই দুনিয়ার সমস্ত রঙ দেখতে পায়৷ এক্কেবারে ভুল৷ আমরা যতগুলো রঙ দেখতে পাই কুকুর, বিড়াল, গরু, বাঁদর এবং আরও অন্যান্যরা তার সিকি ভাগও দেখতে পায় কিনা সন্দেহ৷ তাহলে কারা কী কী রঙ দেখতে পায়? কী করেই বা একটা জিনিসের সঙ্গে অন্য জিনিসের পার্থক্য বুঝতে পারে? জানার আগে জেনে নাও, কী করে প্রাণীর চোখ নানা রং দেখতে পায়৷

দুনিয়া কতটা রঙিন?

আসলে পৃথিবীটাকে যতটা রঙিন দেখি সেটা অতটাও রঙিন নয়৷ কোনও বস্ত্ততে আলো পড়ে তা প্রতিফলিত হয়৷ সেই প্রতিফলন হয় নানা তরঙ্গে৷ সেই তরঙ্গ আমাদের চোখের মধ্যে অবস্থিত 'কোন' নামক সেল বা কোষ-এ এসে পড়ে৷ নানা তরঙ্গ থেকে থেকেই আমরা আলাদা আলাদা রং দেখে থাকি৷ কুকুর, বিড়ালদের চোখে থাকে দু'টি কোন৷ এই কোন দু'টি দিয়ে তারা শুধুই হলুদ আর নীল রং বুঝতে পারে৷ সুতরাং টমি কেন কোনও কুকুরই কমলা রং বোঝে না৷ নীল আর হলুদ ছাড়া সবকিছুই তাদের কাছে ধূসর বর্ণ৷ টমি আসলে সবুজ ঘাসের মধ্যে গড়িয়ে যাওয়া একটা বল দেখতে পেয়েছে মাত্র৷ তাই দেখে সে ছুটেছে৷ ঠিক তেমনটাই ষাঁড়ের ক্ষেত্রেও৷ লাল রং তার চোখে ধূসর হয়েই ধরা দেয়৷ লালের বদলে অন্য কোনও রঙের জিনিস চোখের সামনে নড়াচড়া করলেও সে কিন্তু তাড়া করবে৷

এ তো গেল কুকুর, বিড়াল, ষাঁড়ের গল্প৷ এমন কিছু সরীসৃপ, উভচর, মাছ, পাখি আর পতঙ্গ রয়েছে যাদের চোখে চারটি কোণ৷ ফলে এরা মানুষের চেয়েও বেশি রং দেখতে পায়৷ এ ব্যাপারে ম্যান্টিস স্রিম্প আরও এগিয়ে৷ তার চোখে নাকি ১২টি কোন রয়েছে৷ সেই কোন দিয়ে সে পৃথিবীর যাবতীয় রং দেখতে পায়৷ পশু-পাখি কোন ছার, মানুষও যা দেখে উঠতে পারে না৷ এ ব্যাপারে ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির প্রফেসর জে নেইত্‍জ্র বলেছেন, চোখের মধ্যস্থিত কোন এক ধরনের অনুর সাহায্য নিয়ে থাকে৷ এর নাম পিগমেন্টস৷ এই পিগমেন্টসেই আলোর নানা তরঙ্গ আলাদা ভাবে ধরা পড়ে৷ আর এই পিগমেন্ট মানুষের আগেও ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করত৷ এতে কীসের বেশি সুবিধা? সুবিধা এটাই যে, আলোর সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম পার্থক্যও এর সাহায্যে বুঝতে পারা যায়৷ যেটাকে কাজে লাগায় ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু৷ ওরা বেশি আলোয় বাঁচতে পারে না৷ তাই সূর্যের তাপ যখন কম থাকে তখন ওরা আলোর নীচে আরামসে থাকে৷ যেই রোদের তাপ চড়ল ওমনি ওরা জলের নীচে৷ আবার বেরিয়ে আসে বিকেলের নরম কমলা আলোয়৷ সভ্যতা যত এগিয়েছে মানুষ ছাড়াও অন্যান্য প্রাণীদের চোখে তিনটি কোন তৈরি হয়েছে৷ ফলে মানুষের মতো তারাও একাধিক রং দেখতে পাচ্ছে৷ কপাল খারাপ বিড়াল, কুকুর, ইঁদুর, খরগোশ, গরুদের৷ মাত্র দু'টি কোন নিয়েই তাদের সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে৷ তাদের কাছে দুনিয়াটা শুধুই হলুদ, নীল আর ধূসর বা সাদা রঙের৷

কে কতটা রঙ চিনে

মাকড়সা- আলট্রাভায়োলেট আর সবুজ৷

মৌমাছি- আলট্রাভায়োলেট, নীল, হলুদ৷

ক্রে ফিশ- নীল, লাল৷

অক্টোপি, স্ক্যুইডস- নীল৷

মাছ- মাত্র দু'টি রং৷

ব্যাঙ- কয়েকটা রং৷

সাপ- কয়েকটা রং আর ইনফ্রারেড৷

পাখি- পাঁচ থেকে সাতটা রং৷

বিড়াল- ক্ষীণভাবে দু'টি রং৷

কুকুর- ক্ষীণভাবে দু'টি রং৷

খরগোশ- নীল আর সবুজ রং৷

কাঠবিড়ালি- নীল আর হলুদ রং৷

প্রাইমেটস এপস ও চিম্পস- মানুষ যা যা রং দেখে৷

আফ্রিকার বাঁদর- মানুষ যা যা রং দেখে৷

দক্ষিণ আমেরিকার বাঁদর- লাল রং ভালো করে দেখতে পায় না৷

(ওএস/এইচ/এপ্রিল ১৬, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test