E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সোনার তরী(শিশু কিশোর সাহিত্য)

২০১৫ নভেম্বর ১৭ ১২:৫১:০৫
সোনার তরী(শিশু কিশোর সাহিত্য)






 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

সুবলদাদা আনল টেনে আদমদিঘির পাড়ে


সুবলদাদা আনল টেনে আদমদিঘির পাড়ে,
লাল বাঁদরের নাচন সেথায় রামছাগলের ঘাড়ে।
বাঁদরওয়ালা বাঁদরটাকে খাওয়া যায় শালিধান্য,
রামছাগলের গম্ভীরতা কেউ করে না মান্য।
দাড়িটা তার নড়ে কেবল, বাজে রে ডুগডুগি।
কাৎলা মারে লেজের ঝাপট, জল ওঠে বুগ্বুগি।
রামছাগলের ভারী গলায় ভ্যাভ্যা রবের ডাকে
সুড়সুডড়ি দেয় থেকে থেকে চৌকিদারের নাকে।
হাঁচির পরে বারে বারে যতই হাঁচি ছাডড়ে
বাতাসেতে ঘন ঘন কোদাল যেন পাড়ে।
হাঁচির পরে সারি সারি হাঁচি নামার চোটে
তেঁতুলবনে ঝড়ের দমক যেন মাথা কোটে,
গাছের থেকে ইঁচড়েগুলো খসে খসে পড়বে,
তালের পাতা ডাইনে বাঁয়ে পাখার মতো নড়ে।
দত্তবাড়ির ঘাটের কাছে যেমনি হাঁচি পড়া,
আঁৎকে উঠে কাঁখের থেকে বউ ফেলে দেয় ঘড়া।
কাকেরা হয় হতবুদ্ধি, বকের ভাঙে ধ্যান,
এজলাসেতে চমকে ওঠেন হরিমোহন সেন।
টেবিলেতে তুফান ওঠে চা-পেয়ালার তলে,
বিষম লেগে শৌখিনদের চোখ ভেসে যায় জলে।
বিদ্যালয়ের মঞ্চ-’পরে টাক-পড়া শির টলে—
পিঠ পেতে দেয়া, চ’ড়ে বসে টেরিকাটার দলে।
গুঁতো মেরে চালায় তারে, সেলাম করে আদায়,
একটু এদিক-ওদিক হলে বিষম দাঙ্গা বাধায়।
লোকে বলে, কলঙ্কদল সূর্যলোকের আলো
দখল ক’রে জ্যোতির্লোকের নাম করেছে কালো।
তাই তো সবই উলট-পালট, উপর-নামন নীচে—
ভয়ে ভযয়ে নিচু মাথায় সমুখটা যায় পিছে।
হাঁচির ধাক্কা এতখানি, এটা গুজব মিথ্যে—
এই নিয়ে সব কলেজপড়া বিজ্ঞানীদের চিত্তে
অল্প কিছু লাগল ধোঁকা; রাগল অপর পক্ষে—
বললে, পড়াশুনোয় কেবল ধুলো লাগায় চক্ষে,
অন্য দেশে অসম্ভব যা পুণ্য ভারতবর্ষে
সম্ভব নয় বলিস যদি প্রায়শ্চিত্ত র্ক সে।
এর পরে দুই দলে মিলে ইঁট পাটকেল ছোঁড়া—
চক্ষে দেখায় সর্ষের ফুল, কেউ বা হল খোঁড়াা।
পুণ্য ভারতবর্ষে ওঠে বীরপুরুষের বড়াই,
সমুদ্দুরের এ পারেতে এ'কেই বলে লড়াই।
সিন্ধুপারে মৃত্যুনাটে চলছে নাচানাচি,
বাংলাদেশের তেঁতুলবনে চৌকিদারের হাঁচি।
সত্য হোক বা মিথ্যে হোক তা, আদমদিঘির পাড়ে
বাঁদর চড়ে বসে আছে রামছাগলের ঘাড়ে।

আসলাম সানী
পিতাকেই মনে পড়ে

যখন – নীল আকাশে
চন্দ্র-সূর্য ওঠে
মুক্ত হাওয়ায়-মুগ্ধ পাখিরা ছোটে
রিমঝিম ঝিম বৃষ্টি যখন ঝরে
মুজিবের কথা মনে পড়ে আমার
পিতাকেই মনে পড়ে,

ঢেউয়ের ছন্দে জীবনানন্দে
নায়ের মাঝি ছোটে
ঝিলের জলে শাপলা – শালুক
সুখ-স্বপ্নে ফোটে
হৃদয়টা দুলে ওঠে
তখন আমার মন টেকে না ঘরে
দুরন্ত আমি ছুটে যাই যেনো
মাঠ-ঘাট চরাচরে
প্রাণ যে কেমন করে
মুজিবের কথা মনে পড়ে যায়
পিতাকেই মনে পড়ে,

কৃষক মাঠে – শ্রমিক খাটে
উৎপাদনে ভরে
উন্নয়নে – অগ্রগতির
দেশটা সবাই গড়ে
তখন আমার শ্রেষ্ঠ বাঙালি
পিতাকেই মনে পড়ে,

পাহাড়ে শান্তি – সীমানা প্রাপ্তি
সমুদ্র আয়ত্তে আসে
জনকের আশা – বাঙালির ভাষা
বঙ্গদুহিতা হাসে
সোনার ছেলেরা বিশ্ব জুড়ে
বিজয় – আনন্দে ভাসে
লাল সবুজের পতাকা ওড়ে
আকাশে ও বাতাসে
বীর বাঙালি গর্বে তোমার
মনটা কেমন করে?
স্বাধীনতার মহান নেতা
পিতাকেই মনে পড়ে
বাংলার ঘরে ঘরে
বাঙালির অন্তরে।



রব্বানী চৌধুরী
রূপকাহিনীর দেশ

বাঘের পিঠে শেয়াল
কেউ করে না খেয়াল
বদলে গেছে দিনকাল
উঠছে শুধু দেয়াল!
ঘর ভরেছে ঘরানা
মন ধরেছে জরা না
রক্ত গিলে রাক্ষসেরা
সত্য বললে মরা না?
মরতে মরতে শেষ
রূপকাহিনীর দেশ!
ফয়সাল শাহ
খোকার ছড়া

পঙ্খীরাজে বীরের বেশে
খোকা যাবে চাঁদের দেশে
পরীর সাথে দেখা করে
যাবে সোজা মেঘের দেশে।
মেঘের ঘরে পরীর রানী
আদর দেবে একটুখানি
আদর পেয়ে খোকন শেষে
ফিরবে আপন সোনার দেশে
নেবে গো মা জড়িয়ে বুকে
খোকনসোনা হাসবে সুখে।


শেখর বরণ
বাংলাদেশের ছেলে

বুক উচিঁয়ে বলো, আমি বাংলাদেশের ছেলে
আমার পিতা এই বাংলার চাষী কিংবা জেলে ।

বাংলা আমার মায়ের ভাষা বাংলা আমার মা
এই বাংলাকে ছেড়ে আমি কোথাও যাবো না
বাংলায় আমি স্বপ্ন দেখি বাংলায় বুনি ঘর
এই বাংলায় জন্ম আমার শত জনমের বর
কে আমায় বলে বারবার দেশ ছেড়ে চলে যা ?

এই বাংলায় জন্মেছি যখন কোথাও যাবো না
বাংলায় আমার ভিটে-জমিন অন্নে পূর্ণা মা
মা’কে ছেড়ে কোথায় যাবো? সব পথ অচেনা
বংগভংগে হয়েছি আমি নিজ দেশে পরবাসী
প্রতিদিন তাই মূত্যু ঘটে প্রতিদিন ফিরে আসি
সেদিন থেকেই প্রার্থনা ছিলো কীর্তিমান এক নাম
জাতির জনক বংগবন্ধু শেখ মুুজিবর রহমান
দেশকে ছেড়ে যাবোনা আমি যতদিন আছে প্রাণ
গলা ছেড়ে গেয়ে যেতে চাই বাংলাদেশের গান

বুক উচিঁয়ে বলো, আমি বাংলাদেশের ছেলে।

বাবুল তালুকদার
শ্রেষ্ঠনেতা শেখ মুজিব

দুর্গম পথপাড়ি দিয়ে তুমি
করেছো স্বাধীন দেশ
বাঙালি মায়ের চোখে মুখে আজও
কুয়াশা ঝরছে বেশ।

বুলেটের আঘাতে রক্ত ঝরানো
শত্রু বাহিনীর দল
অমর হয়েছে জাতির পিতা
বাঙালির চোখে জল।

বজ্রকন্ঠে কবির কবিতা
বেজে ওঠে সারা বিশ্বে
মুক্তিয়োদ্বা বাংলার সৈনিক
জনতার মঞ্চে শীর্ষে।

বঙ্গবন্ধুর সেনা সৈন্যরা
প্রস্তুত আছে আজও
বাংলাদেশ ছেড়ে পালিয়ে বেড়ায়
রাজাকারদের নাই লাজও।

এই বাংলায় বিচার হয়েছে
রাজাকারদের ফাঁসি
মুক্তিসেনা নীরিহ মানুষের
চোখে মুখে আজ হাঁসি।

বাঙালিদের আজ শ্রেষ্ঠনেতা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব
দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে তিনি
রেখে যায় একটি সজিব।


ইউসুফ রেজা
ভিজে বিড়াল

বিড়াল নাকি ভুলেও কভু
পরের জিনিস খায় না
মাছ ভাজাটা পাতে দিলেও
উল্টাতে সে যায় না।


নেংটিরা তার ভীষণ নেওটা
অন্য কোনও দায় না,
অবৈতনিক চাকরি নিয়ে
তাই সে গেল চায়না।
ইঁদুর ছানার পাহারাদার
তাও নেবেনা মায়না।

আসলাম প্রধান
ঝগড়াটে শেয়াল

ঝগড়াটে দুই শেয়াল-
বনকে তারা দু'ভাগ করে
মাঝখানে দেয় দেয়াল
যার ভাগে যায় পুকুর নালা
পায় সে খেতে জল
যার ভাগে যায় ফলের বাগান
পায় সে খেতে ফল ।

কেউ বা মরে জল পিপাসায়
কেউ ভিটামিন বি এ
এই সুযোগে মোটা তাজা
দুই শেয়ালের পি এ !

জুলফিকার আলী
শীতের ছড়া

মাঘের আদর,শীতের চাদর,
গাঁয়ে দিয়ে খোকা,
কাঁথা কম্বল,শীতের সম্বল,
মুড়ি দিয়ে লোকা।

ঠকঠকানি শীত,গাইছে গীত,
পৌষ-মাঘের ধারায়,
পথের পাশে,কষ্টে কাশে,
শীত বাঘের তাড়ায়।

খোকা কস!খেজুরের রস,
খেতে লাগে ভালো,
পিঠাপুলির ধুম,ভাঙ্গে ঘুম,
সূর্যের ভাগে আলো।

হিমেল হাওয়ায়,পরশ পাওয়ায়,
খোকা বলল হেসে,
শীত রাণী,আদ্রে টানি,
নিয়ে চলল দেশে!

নিয়ে আমায়,শীত মামায়,
লিখল গীতের ছড়া,
শীতের দেশে,ঘুরে শেষে,
লিখলাম শীতের ছড়া।

মামুন সিরাজী
শীত বুড়ি আসছে

হিম হিম লাগছে
ঠোঁট দুটো কাঁপছে,
হাঁটু দুটো অবিরাম
ঠক ঠক বাজছে ।

হেলে দুলে হাঁটছে
শীত বুড়ি আসছে,
পাতাগুলো গাছ ছেড়ে
কোথা উড়ে যাচ্ছে?

সূর্যের তেজও যেন
আজ ভয় পাচ্ছে,
হন হন তাই বুঝি
দূরে ছুটে যাচ্ছে ।

সাকিব হোসাইন শাকিল
আমার গ্রাম

সবুজ শ্যামল গ্রামটি
আমার গাছেগাছে পাখি,
পরাণ জুড়ায় গ্রামটি দেখে
জুড়ায় দুটি আঁখি ।

ঝিলিক খ্যালে সোনা রোদ
শিশির ভেজা ঘাসে,
রঙবেরঙে প্রজাপতি
গায়যে চারিপাশে ।

রুপালি এক বিল আছে
গ্রামের শেষ প্রান্তে
শাপলা শালুক পদ্ম পাতা
যায় যে সবাই আনতে ।

প্লাস্টিকের পৃথিবী
নাসের মাহুমুদ

প্লাস্টিকের চাল বেরোবে
মেলামাইন ডাল,
একবার তা কিনলে তবে
খাবেন চিরকাল ।

প্লাস্টিকের মাছ মাংস
প্লাস্টিকের ডিমও,
প্লাস্টিকের ফল-ফলাদি
আলু বেগুন শিমও ।

কতো রকম খাবার পাবেন
প্লাস্টিকের ঠেলায়,
সামনে শীতে দেখতে পাবেন
প্লাস্টিকের মেলায়।

প্লাস্টিকে জীবন ঠেকায়
প্লাস্টিকে বাঁচায়,
লৌহমানব বন্দি হবে-
প্লাস্টিকের খাঁচায়।


কম্পন
মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক

আকাশ যখন উঠবে কেঁপে উঠবো কেঁপে আমিও
তখন তুমি আমার জন্য একটু হলেও থামিও
একটু থেমে একটু নেমে আমার এদিক তাকিও
আমার কথা ভুলে গেলেও ভুলগুলোকেই আঁকিয়ো

আঁকা আঁকির ক্যানভাসে ওই আমার ছবি রাখিও
ঐ ছবিটায় সঙ্গোপনে আমার হয়ে থাকিও
তোমার যদি কম্প ওঠে বুকের মাঝে দুঃখ ফোটে
ওষ্ঠে ফাগুন মাখিও
ইচ্ছে হলে এই আমাকে দিতে পারো ফাঁকিও।

আব্দুস সালাম
নবান্নের উৎসবে

ধান কাটতে যায় রে এখন
কাস্তে হাতে কৃষাণে
সোনা ধান হচ্ছে কাটা
মাঠে মাঠে মেশিনে।


কৃষাণীরা ধান ভানছে
রাতটা যে নিস্তব্ধ
চারিদিকে যায় রে শোনা
ধান মাড়ায়ের শব্দ।

কৃষকেরা ভরছে গোলা
হেমন্তের এই অঘ্রাণে
প্রাণটা সবার যায় রে ভরে
পিঠা পুলির সুঘ্রাণে।

পালাগানের জমবে আসর
নবান্নের উৎসবে
রাত জেগে সব দেখবে তা যে
গ্রাম বাংলার লোক সবে।

নাহার ফরিদ খান
মজার কৈশোর

এক্কা দোক্কা
সাপলুডু ছক্কা
কৈশোর বেলা ।
ছুটছি বেগে
বৈশাখী মেঘে
ভিজেছি বেশ
ঠান্ডার রেশ।
পুতুলের বিয়ে
বচসা তা নিয়ে
মিছিমিছি রান্না
তারপর কান্না।
বৈশাখী মেলাতে
নাগর দোলাতে
মজার কৈশোর
স্মৃতি গাঁথা ভোর।

রোকেয়া ইউসুফ
অবশেষে


নয়টি মাসের যুদ্ধশেষে
আসলো স্বাধীনতা
ঘুচলো জুলুম, জবর দখল
পরের অধীনতা ।
যুদ্ধ করে বীর বাঙালি
জীবন রেখে বাজি
কতক হলো শহীদ তাঁরা
কতক হলো গাজী।
চোখের জলে রক্ত সাগর
পাড়ি দিয়ে এসে
লক্ষ আশার স্বপান পূরণ
হলো অবশেষে।

মহিউদ্দিন মোহনের
“শিশুদের আঁকতে শেখা”

শিল্পী মহিউদ্দিন মোহনের অংকন ও রচনায় ”শিশুদের আঁকতে শিখা” একটি সিরিজ অংকন শিক্ষার বই।
প্লে- গ্রুপ নার্সারী থেকে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত০+১+২+৩+৪+৫+৬+৭ সিরিজে শিশু কিশোরদের অংকন শিক্ষার৮টি বই।
সম্পুর্ন নতুন শিক্ষা পদ্ধতিতে বাংলাদেশের সকল কিন্ডার গার্টেন,ফ্রি ক্যাডেট,প্রাইমারী,স্কুল,মাদ্রাসার
ছাত্র ছাত্রীদের জন্য সহজ পদ্ধতিতে রচিত একটি পূর্ণাঙ্গ সিরিজ বই।
বইটির স্পাদনা করেছেন-অব:উপজেলা শিক্ষা অফিসার-আ,ফ,ম রহমত উল্যাহ।
বইটি প্রকাশ করেছেন এম ওবায়েদুল হক জুয়েল-হক লাইব্রেরী,চৌমুহনী , নোয়াখালী।
প্রতিটি খন্ডের দাম ৯৮টাকা। বইটি সংগ্রহের মতো।

পাঠকের মতামত:

২৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test