E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সোনার তরী(ছড়ার পাতা)

২০১৬ ফেব্রুয়ারি ২৫ ২২:২১:৪৯
সোনার তরী(ছড়ার পাতা)






 

সুকুমার বড়ুয়া
ঠিক আছে

অসময়ে মেহমান
ঘরে ঢুকে বসে যান
বোঝালাম ঝামেলার
যতগুলো দিক আছে
তিনি হেসে বললেন
ঠিক আছে ঠিক আছে।

রেশনের পচা চাল
টলটলে বাসি ডাল
থালাটাও ভাঙাচোরা
বাটিটাও লিক আছে
খেতে বসে জানালেন
ঠিক আছে ঠিক আছে।

মেঘ দেখে মেহমান
চাইলেন ছাতা খান
দেখালাম ছাতাটার
শুধু কটা শিক আছে
তবু তিনি বললেন
ঠিক আছে ঠিক আছে।

নাসের মাহমুদ

পৌষী ও প্রজাপতি


আগের দিনে প্রজাপতির
পাখনা ছিলো সাদা-
এই কথাটি জানিয়েছেন
পৌষীমনির দাদা ।


পৌষীমনি তুলি নিয়ে
প্রজাপতি ধরে-
প্রজাপতির পাখায় পাখায়
দিয়ছে রঙ করে,
সেই থেকে সব প্রজাপতির
এমন রঙিন পাখা-
যত্তো রঙের প্রজাপতি
সব পৌষীর আঁকা ।

আলমগীর কবির
ঠিকানা


বর্ণ আমার বাবার স্নেহ
ভায়ের আলো আশা,
বর্ণ আমার চাঁদের মতো
মায়ের ভালোবাসা।
বর্ণ আমার হলদে রোদ
ঘাস ফুলের হাসি,
বর্ণ আমার রাতের কোলে
জোনাক রাশি রাশি।

বর্ণ আমার দোেয়ল টিয়ে
প্রজাপতির ডানা,
মাতৃভাষায় বলবো কথা
ওদের ছিলো মানা!
বর্ণমালার মিছিলে তাই
হঠাৎ দেয় হানা!

রক্তে রাঙানো এ ইতিহাস
সবার আছে জানা,
বর্ণমালার ভালোবাসায়
অবহেলা না,না,না।
বর্ণমালা তো মায়ের কোল
সকলের ঠিকানা।



.আসলাম প্রধান
যার যে ভাষা


যার যে ভাষা- সেই ভাষাতেই
বলবে কথা সেই
তার অধিকার খর্ব করা
যায় না কিছুতেই !

ভাঙতে পারে পাখির বাসা
তাই বলে কি তাদের ভাষা

কাড়তে পারে কেউ ?
হোক সে বনের যত্ত বড়
কেউটে গোখুর- ফেউ !

রব্বানী চৌধুরী
বাংলা আমার মাতৃভাষা

আমের বোলে জামের বোলে
ফাগুন দিনটা দোলেমাসে
ফাগুন আসে পলাশে
সেই যে আটে ফাগুন মাসে
স্বৈরাচারী আগুন-হাসে
কাটল ভাষার গলা সে!
সালাম রফিক বরকত
বুঝল এসব হরকত
ভাষার দাবি তুলল
অ আ ক খ ভালবেসে
রক্ত দিলো হেসে হেসে
মায়ের মুখটা খুলল।
বাংলা আমার মাতৃভাষা
ভুলতে পারে ভ্রাতৃনাশা!


মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক
অবশেষে

অবশেষে নিয়াজীর শেষ হয় খেলা
অকালেই ডোবে তার দুরাচার বেলা
বাঙালির হাতে মার খেয়ে অবিরত
পরাজয় মেনে নিয়ে মাথা করে নত
ভেঙে পড়ে শোষণের সব শৃঙ্খল
যমুনায় ফিরে আসে জীবনের ঢল
আকাশে উদিত হয় আলোর দুপুর
বাঙলায় বেজে ওঠে বিজয় নূপুর
ফিরে আসে হরষিত যোদ্ধা সকল
শত্র“ সমুখে যাঁরা ছিলেন অটল
খুশির জোয়ারে নদী হয় উত্তাল
শিশিরে শোভিত হয় নতুন সকাল
পৃথিবীর মানুষেরা হয়ে উন্মুখ
বদ্বীপের বুকে দেখে বাঙলার মুখ

জুলফিকার আলী
সিম


ইরি সিম,দেশি সিম
ভিটামিনে আছে ভরা,
মোবাইলে সিম দিয়ে
হয় কথা বিনিময় করা।

গাছের সিমে পুষ্টি ভরা
মজাদার সিম ভাজি,
খেতে খেতে হাসে সবাই
স্বাদে ভরা,সিম আজি।

যোগাযোগে লাগে সর্বদা
মোবাইল সিমের নেটওয়ার্কিং,
মেসেজ,এমএমএস,ক্যামেরা সহ
ডাটা কানেকশন সেটওয়ার্কিং।

রান্নায় যেমনি রাঁধুনী আর
সিম করে পাক,
মোবাইল সিম,সারাবছর
তেমনি বিজি থাক।


তোফায়েল তফাজ্জল
ভাষার ফাগুন

এলো ভাষার ফাগুন
কৃষ্ণচূড়ার ঝোঁপে কি তাই
জ্বলে এমন আগুন ?
ভ্রমর কি তাই গুন গুনিয়ে –
ঘুরছে হয়ে হন্যে
পাখিরাও যে অগ্নি ঝরায়
তাও কি ভাষার জন্যে ?
বর্ণমালার ব্যানার নিয়ে
তাই কি শিশু ছুটছে
রক্ত মাখা বর্ণ হয়ে
পলাশও কি ফুটছে ?
পাহাড় থেকে নামছে পানি
বইছে নদীর ধারা
বইছে বাতাস – শুনবে, মূলে
ভাষারই ইশারা।
শহীদ মিনার ভরছে ফুলে
ঢেউ লেগেছে মনে
সাড়া পড়ছে সারা দেশেই
সবই এর স্মরণে।

পৃথ্বীশ চক্রবর্ত্তী
সমর্পণ


শ্যামল শোভিতা নবীন যৌবনা অপরূপা বঙ্গ
দেখাও আবার তুমি একাত্তর-বায়ান্নর রঙ্গ।
বহু-ত্যাগ আর তিতিক্ষার কথা জানলো যখন
বিশ্ব। সূর্যরূপ স্বাধীনতা আলো ছড়ালে তখন।
মুক্ত-ভানু দীপ্ত হয়ে জুড়ে নিল -এ পূর্ব আকাশ
তবুও তোমার হয়নি আজও বিড়ম্বনা হ্রাস।
সুন্দর সুন্দর বুলি আওড়ায় মুখে মুখে যারা
স্বাধীনতা রক্ষা করতে চায়না তো মোটেই তারা।
জড়-সড় তুমি তাইতো হয়েছ ভেবে দেখো মনে
কেউ যদি গো না আসে মা তবুও সাড়া দেব রণে।
বঙ্গবীণা বেঁজে উঠুক সুতীব্র সকর“ণ তানে
লোহিত জোয়ার ডাকব আবার ভয়ঙ্করী বানে।
হাসো গো জননী তুমি আবার -এ পৃথিবীর মাঝে
নাচো হে আবার নাচো হে জননী অপরূপ সাজে।
আবার না হয় বের হব আমি সবকিছু ফেলে
সহস্র কলসী রক্ত দিতে পারি প্রয়োজনে ঢেলে।
রক্ত দিয়ে হবে শ্যামল তাতে কি আর আসে যায়?
তুমি উছলিয়ে হও পরিণত আজ মেঘনায়!
খেলব আবার আনব জোয়ার ভাসাব তরঙ্গে
করতে জাগ্রত তুলতে পতাকা তীব্র মনোরঙ্গে।
মানবো না বাধা মানবো না আমি, কণ্ঠে সত্য বুলি
চলবার হলে চলতে থাকুক বক্ষমাঝে গুলি।
বঙ্গ মা-গো গর্ব আমার তোমাকে খুব ভালোবেসে
প্রয়োজনে প্রাণ সমর্পণ করে যাব হেসে হেসে।

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test