E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বর্ণমালায় মজার ছড়া / রব্বানী চৌধুরী

২০১৬ মার্চ ৩১ ২১:১১:৩৮
বর্ণমালায় মজার ছড়া / রব্বানী চৌধুরী







 

বর্ণমালায় মজার ছড়া / রব্বানী চৌধুরী


অ তে অন্ত
হাসে দন্ত
দন্ত হলো শাদা,
এই জীবনের পদে পদে
আছে অনেক বাধা।
বাধা যারা ডিঙ্গায়
হাসে তাঁরা ডিঙায়।


আ তে আত্রাই
জলে সাঁতরাই
সাঁতার জানে যারা,
নৌকা যদি ডুবে যায়
মারা যায় না তারা।


হ্রস্ব ই তে ইতি
মনের ভেতর ভীতি
থাকলে হয় না কাজ,
সাহস যাদের বুকে আছে
তাঁরাই পড়ে তাজ।
রব্বানী চৌধুরী


[দীর্ঘ] ঈ তে ঈষ
লাঙ্গল-জোয়াল হারিয়ে গেলে
চাষার বুকে বিষ!
চাষার হাসি ফুটলে
সূর্যমামা উঠলে
বাঁশবাগানে দোয়েলপাখি
খুশিতে দেয় শিস!


[হ্রস্ব] উ তে উকড়া
খোকন জানের টুকরা!
খোকন যদি কাঁদে
মা কেমনে রাঁধে?
মায়ের সাথে উপোস করে
বাড়িসুদ্ধ লোকরা!


[দীর্ঘ] ঊ তে ঊহ্য
মা বাবা হন পূজ্য।
পূজ্য দাদা পূজ্য দাদি
গুরুর সম্মান দেয় না যারা
তাদের জন্য রয় বরবাদি।


[হ্রস্ব] ঋ তে ঋণ
বীর শহিদের রক্তে এদেশ
হয়েছে স্বাধীন।
ত্রিশলক্ষ মরে
সূর্যের আলো জ্বালিয়ে গেল
প্রতি ঘরে ঘরে।


এ তে এক বুড়ো ছিল
তাঁর ছিল বুড়ি
নৌকায় চড়ে তাঁরা
গেল পুঁটিজুড়ী।
নৌকাতে ভরা ছিল
বেলুন আর চুড়ি
খোকাখুকু দেখে সেটা
করে হুড়োহুড়ি!
হুড়োহুড়ি ভালো নয়
থাকো ধীরস্থির
শান্তির পথে হেঁটে
হওয়া যায় বীর।



এ তে এন্তার
ইন্তেজারি
টিয়ে গেল
কিনতে বাড়ি।
বাড়ির মুল্য
কোটি টাকা
টিয়ের দুটো
ঠোঁটই ফাঁকা!
ফাঁকা ঠোঁটে
হয় না কাজ
সত্য কভু
রয় না রাজ!
রাজা হতে
শিক্ষা চাই
জীবনে ত্যাগ
দীক্ষা চাই।


ঐ তে ঐশ।
রাত্রি নৈশ
ঘুমে,
কে নড়ে রে
রুমে?
ইঁদুর।
চোখ দুটো যে
বিধুর,
বিড়াল মারে থাবা!
বুঝেশুনে বলবে কথা
নইলে থাকো হাবা।


ও তে ওষ্ঠ
হবে নষ্ট
ভ্রষ্টকথা হলে,
ওষ্ঠ দিয়ে
স্পষ্টকথা
সত্যবাদী বলে।


ঔ তে ঔড়ব
ফুলে সৌরভ
ফুলের গন্ধে মাতি,
বংশে যাদের
ফুটবে ফুল
চড়বে সোনার হাতি।


ক তে কাঁটা
বিঁধলে গলায়
সাহস যেন
কোথায় পলায়
ধুরুত্তি!
মাছের কাঁটা
খুব আকাঠা
যায় না সেটা
কুরুত্তি!
খেতে বসে
কাঁটা বাছি
ভাতে মাছে
আমরা আছি।


খ তে খেজুর
গাইছে বেজোড়
তিন পাখি
কোকিল ঘুঘু শালিক মিলে
রইল পড়ে দিন বাকি!
আকাশ নীলে
থাবায় চিলে
কাকতাড়ানি দিন
ধানের খেতে জ্বলছে সোনা
সূর্যটা রঙিন ।


গ তে গঙ্গা
গোয়ালনন্দ
গেন্দাফুলে
কী সুগন্ধ!
গেন্দাফুলের রঙে
সূর্য ওঠে বঙ্গে
পালতোলা ওই নায়ের আগায়
যাবো মাঝির সঙ্গে!


ঘ তে ঘোড়া
পা দু’জোড়া
শূন্যে মারে উড়া
ঘোড়ার সাথে
গাধার মিল
দেয়াটা আনকোরা।


ঙ তে কেউ জঙ্গলে যায়
কেউবা গেল মঙ্গলে
ঙ আবার খেলা করে
বাঘের বড় চঙ্গলে!
ঙ তে বেঙ কচু পাতায়
বেঙ ওঠে না কারো মাথায়!


চ তে চাচি চাঁদ দেখাতে
তুলেন আমার হাত
চাঁদের বুড়ি উঠান ভরায়
জোছনামাখা রাত।
আমেরিকা চন্দ্রে গেল
চাঁদের বুড়ি হাওয়া
চাঁদের দেশে পাথর আছে
জল গেল না পাওয়া!


ছ তে আছে ছাতিমগাছে
তিনটি ভূতের ছানা
অমাবস্যায় তারা নাকি
করতে পারে হানা!
চাঁদের আলো দেখলে তারা
নদীর পাড়ে যায়
নদীর জলে সাঁতার কাটে
ভরা পূর্ণিমায়!


[বর্গীয়] জ জাহাজ থেকে
নামল যখন ডাঙায়
সারেং ছিল সিংহমামা
চক্ষু দুটি রাঙায়!
নাবিক ছিল বাঘের ছানা
রয়েল বেঙ্গল টাইগার
বাংলাদেশের শত্রু হলে
বলল ওরা খাই ঘাড়!


ঝ তে ঝাণ্ডা হাতে নিয়ে
দেশের জন্য লড়ি
একাত্তরে বাংলাদেশে
তিরিশ লক্ষ মরি।
মরতে মরতে শেষ
শহিদমিনার দেশ!


ঞ যদি মিঞ বলে
বিড়াল করে রাগ
বিড়াল এখন চড়তে পারে
খাঁচায় পোষা বাঘ।
বাঘ বড় না বিড়াল বড়
জানতে হলে সবাই পড়ো
পড়াশুনায় জ্ঞানী হবে
লাগ ভেল্কি লাগ!


ট তে টিকা
মাথায় টিকলি
বই না পড়ে
কেউ কী শিখলি?
শিখবে না।
ধৈর্য এবং শিক্ষা ছাড়া
টিকবে না।


ঠ তে ঠোঁট
ধরলে খোঁট
শরম
ঠোঁটে-ঠোঁটে
লাগলে মারে
খড়ম!
ঠোঁটের ভাষা
মিষ্টি হলে
নরম
জ্ঞানের ভাষা
হয় না কভু
চরম।


ড তে ডালে
ডাকল কোকিল
জটলা করে
তিনটি উকিল!
উকিল তো নয় তোঁতা
মগজটা নয় ভোঁতা ।


ঢ তে ঢিল
ঢিল ঢিল
ছেলেবেলায় ঢিল মেরেছি
দেখলে বড় চিল!
চিলের ছিল মোটা ডানা
মুরগি নিতে দিতো হানা
চোখেচোখে মা রাখতেন
আজও করি ফিল!
চিলের চোখ বিলে
চিলের সাথে দোস্তি করে
দুষ্ট আজাজিলে!


মূর্ধন্য ণ, ণই
জ্ঞানের কথা জানতে হলে
পড়তে হবে বই।


ত তে তাজা তরতাজা
খবরখানা পৌঁছাও
বুড়োশালিক করবে বিয়ে
ময়নাপাখি বউ চাও!
বউ চাইতে নামল টিম
বউ কোথায়? ঘোড়ার ডিম!


থ তে থলে
সূর্য জ্বলে
সূর্যমুখী মন
এই জীবনে লেখাপড়া


দ তে দখল
থাকলে ভাষায়
শব্দফুলে
পদ্ম ভাসায়।
পদ্মফুলে ভোমরা
ইশকুলে যাও তোমরা।


ধ তে ধনেশ ধঞ্চে গাছে
শালিকপাখি মঞ্চে নাচে!
মঞ্চ ছিল হাটখোলা
সবুজঘাসে মাঠ খোলা।
মাঠের ফুলে রাঙামুখ
পলাশ দেখায় ভাঙাবুক।
ভাঙাবুকে সালাম ডাকে
বর্ণমালায় পেলাম মাকে।


ন তে নৌকা চড়ে
গেলাম নদীর ঘাটে
নদীর পারে তিনটি বউ
কলস মাথায় হাঁটে।
খালি কলস বাজে বেশি
অজ্ঞানীরা দেখায় পেশি!


প তে পড়ি
পড়তে পড়তে
মগজ ভরি!
মগজখানা ফুটো
এক কথাকে বারবার
মাথার মাঝে কুটো!
কুটতে কুটতে রাত
ঘুমে শরীর কাত
পরীক্ষা তো সামনে
শিখছি ধারাপাত।
গুরু বলেন করবে ট্রাই
চেষ্টা করার বিকল্প নাই!


ফ তে ফাঁপর
কিনতে কাপড়
যাবো সদরঘাটে
সেথায় নাকি চক্ষু-মোটা
পকেটমারে হাঁটে!
পকেটমারের রং-টা কেমন
পকেট আছে ক’টা?
এসব নিয়ে ভাবতে গিয়ে
বাজল ঘড়ি ন’টা!
যেথায় যাবে সাবধানে যাও
আগেপিছে ভেবে
জিনিষ কিনতে ভাবতে হবে
টাকা কয়টা জেবে!


ব তে বাংলা
ব তে বং
সূর্য ছড়ায়
খুশির রং।
সূর্য করে
দেশটা আলো
এগিয়ে যেতে
চেষ্টা ভালো।


ভ তে ভাষা
বাংলাভাষা
বিশ্বজোড়া নাম
সভ্যদেশে ভাষার কদর
থাকে অবিরাম।
মায়ের ভাষা
সবচে’ বড়
সবাই করে আদর
বাংলা ভাষার জন্য বিছাই
ভালোবাসার চাদর।


ম গিয়েছে মামার বাড়ি
মাকে বাড়ি আনতে
মোটর নাই রিক্সা নাই
নৌকা কি কেউ টানতে?
নৌকা তো নেই হেমন্তে
পালকি আনে মামা
পালকি বয় তিন বেহারা
গায়ে নেই রে জামা!
জামার কদর করবে
একটি জামা ছিঁড়ে গেলে
অন্য জামা ধরবে।


য তে যাত্রী
বিমান চড়ে
আসল ফিরে
নিজের ঘরে।
নিজের ঘর
নিজের গাঁও
এরচে’ খুশি
আর কী চাও!


র তে রফিক
রক্ত ঢালে,
চিল বসেছে
শক্ত ডালে!
শক্ত ডালে
স্বৈরাচারী,
দেশপ্রেমীকে
ধইরা মার-ই
দিলো;
পাকশাহিরা এই মাটিতে
চিল-শুকুন-ই
ছিলো।
চিলের সাথে সখ্য
হয় না কারো লক্ষ্য।


ল তে লন্ডন
আসল মামা
মামার গায়ে
সাতটা জামা!
জামা কোথায়?
ওভারকোট,
শীতের ঠ্যালায়
কাঁপল ঠোঁট!
ঠোঁট কাঁপে না
থাকলে টাকা
মামার পকেট
সত্যি ফাঁকা!
বিদেশ গেলেই
টাকা নয়
মিষ্টি দিলেই
কাকা নয়।


[তালব্য] শ শীতল
সোনা নয় রে পিতল!
পিতলে হয় গয়না?
কর্মকারে কয় না।


[মূর্ধন্য] ষ মিষ্টি খেতে
যেই গিয়েছে বাজারে
মিষ্টিগুলো মিষ্টি হাসে
কেমন রাজা রাজারে!
রাজার দাম তো কম না!
রাজার দেখা যায় না পাওয়া
রাজারবাগ আর রমনা!


স তে সাঁকো
দেশের ছবি আঁকো।
আঁকতে গিয়ে মাঠ
বটের গাছে বসে দেখি
বক-শালিকের হাট।
হাট নয় তো ওড়াওড়ি
রাখাল করে ঘোরাঘুরি।
ঘুরতে ঘুরতে দুপুর
বাঁশির টানে সকাল গেল
সূর্য হলো উপুড়!
সূর্যতেজে পথিক
পায় না খোঁজে গতিক
মেলল ধরে ছাতা,
বাংলা আমার সবুজ মাঠে
কচি ধানের পাতা।
পাতায় পাতায় হাসে
জন্মভূমি বাংলাদেশ
সবাই ভালোবাসে।


হ তে হঠাৎ
অনলাইনে
বাঘের মাসি
বলল খাইনে!
বাচ্চা গেল
সকাল নাইনে
তাকে এখন
খুঁজে পাইনে!
বাচ্চা খোঁজে হয়রান
বাচ্চা দেখে ক্রিকেট খেলা
কে করেছে কয় রান!


ড় হলো বড়
বড় হতে শিক্ষা করো।
শিক্ষিত যে জাতি
তাঁরাই চড়ে হাতি!


ঢ় লিখতে গাঢ়
দেশটাকে কেউ ভুলতে পারো?
পারো না।
দেশের মঙ্গল চিন্তা করো
আরও না!


য় জয়বাংলায়
আছে টুঙ্গিপাড়া
বঙ্গবন্ধু মুজিব দেন
জাতির বুকে নাড়া!
স্বাধীন দেশে ডাকে পাখি
বাংলাভাষায় মাকে ডাকি
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আজ
প্রজন্ম রয় খাড়া!

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test