E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রবার্ট লুই স্টিভেনসনের গল্প

২০১৪ জুন ২১ ১১:০৪:২৮
রবার্ট লুই স্টিভেনসনের গল্প

অনেক কাল আগে এক প্রতিবেশী গ্রহ থেকে এক পর্যটক পৃথিবীতে এসেছিলেন। যেখানে তিনি অবতরণ করলেন, সেখানে এক দার্শনিকের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হলো। ঠিক হলো, সেই দার্শনিক তাকে সব কিছু দেখাবেন।

প্রথমে তারা এলেন এক বনে। অতিথি বনের গাছগুলোর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘এরা কারা?’
দার্শনিক উত্তর দিলেন, ‘গাছগাছালি। এদের প্রাণ আছে বটে, তবে ততটা আগ্রহব্যঞ্জক কিছু নয়।’
অতিথি বললেন, ‘কই, আমার তো তা মনে হচ্ছে না। এদের দেখে তো বেশ সম্ভব্যই লাগছে। এরা কি কখনই কথা বলে না?’
দার্শনিক বললেন, ‘না, সেই সৌভাগ্য এদের হয়নি।’
অপরজন বললেন, ‘আমার তো মনে হচ্ছে, যেন আমি এদের গান শুনতে পাচ্ছি।’
দার্শনিক বললেন, ‘ও তো পাতার ফাঁকে বাতাসের শব্দ। আমি বরং আপনাকে বায়ুতত্ত্ব ব্যাখ্যা করে শোনাব। বেশ লাগবে শুনতে।’
অতিথি বললেন, ‘আহা, ওরা যা ভাবছে, তা যদি জানতে পারতুম।’
দার্শনিক বললেন, ‘ওরা ভাবতে পারে না।’
অতিথি উত্তর দিলেন, ‘সে যাই হোক।’ তারপর একটা গাছের গুঁড়িতে হাত রেখে বললেন, ‘আমার এই লোকগুলোকে ভারি ভালো লেগেছে।’
দার্শনিক বললেন, ‘ওরা আদৌ লোকই নয়।’
এরপর তারা এলেন এক চারণভূমিতে। সেখানে কতকগুলো গরু চরছিল।
অতিথি বললেন, ‘এই লোকগুলো কী নোংরা!’
দার্শনিক বললেন, ‘এরা আদৌ লোকই নয়।’ এই বলে তিনি বিজ্ঞানসম্মত ভাষায় গরু কী, তা ব্যাখ্যা করলেন।
অতিথি বললেন, ‘আমার কাছে সবই এক। কিন্তু ওরা মুখ তুলছে না কেন?’
দার্শনিক বললেন, ‘কারণ ওরা তৃণভোজী। ওরা ঘাস খেয়ে থাকে। ঘাস অবশ্য খুব একটা পুষ্টিকর খাদ্য নয়। কিন্তু নিজের কাজে ওরা এতই ব্যস্ত থাকে যে, ভাবার, বা কথা বলার, বা দৃশ্যাবলি দেখার, অথবা নিজেদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার সময়টুকুও পায় না।’
অতিথি বললেন, ‘ও! তবে সন্দেহ নেই যে, এও বেঁচে থাকারই একটা পথ। তবে আমার ওই সবুজ-মাথাওয়ালা লোকগুলোকে বেশি ভালো লেগেছে।’
এরপর তারা একটা শহরে এলেন। সেই শহরের পথে পথে গিজগিজ করছিল অসংখ্য নারী-পুরুষ।
অতিথি বললেন, ‘কী অদ্ভুত সব লোকজন!’
দার্শনিক বললেন, ‘এরা বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ দেশের নাগরিক।’
অতিথি বললেন, ‘তাই নাকি? দেখে তো তা মনে হয় না!’

পাঠকের মতামত:

১৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test