E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

মত প্রকাশের স্বাধীনতায় সর্বাধিক হস্তক্ষেপ হয়েছে ২০১৭ সালে

২০১৮ মে ০৩ ১৮:১২:২১
মত প্রকাশের স্বাধীনতায় সর্বাধিক হস্তক্ষেপ হয়েছে ২০১৭ সালে

স্টাফ রিপোর্টার : বিগত পাঁচবছরের মধ্যে বাক স্বাধীনতায় সর্বাধিক ৩৩৫টি হস্তক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে ২০১৭ সালে। যুক্তরাজ্য ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন আর্টিকেল ১৯ এর মত প্রকাশ বিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। ওয়ার্ল্ড প্রেসফ্রিডম ডে উপলক্ষে গতকালনিজেদের ওয়েবসাইটে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আর্টিকেল ১৯।

আর্টিকেল ১৯ বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক তাহমিনা রহমান বলেন, ‘আমাদের এই গবেষণাধর্মী প্রতিবেদনে বাংলাদেশের বাক স্বাধীনতায় বিরাজমান প্রকৃত চিত্র উঠে এসেছে, যা বিগত সময়ের তুলনায় অনেক বেশী উদ্বেগজনক। এটা নির্বাচনের বছর বিবেচনায় আমরা বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছি।’

গত বছরগুলোতে বাংলাদেশে সাংবাদিক নির্যাতনের ধরন উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। গত পাচঁ বছরে এ সংক্রান্ত শারীরিক আঘাতজনিত অপরাধের সংখ্যা কমলেও এ সংক্রান্ত আইনি অপরাধের সংখ্যা অধিক হারে বেড়েছে এবং এর প্রভাবে স্বাধীন মত প্রকাশ বাধাগ্রস্ত হয়েছে।

২০১৭ সালে ৬৫টি মানহানি মামলা, আইসিটি এ্যাক্টের ৫৭ ধারায় ৭৬ টি, ২টি আইনবর্হিভূত আটকা দেশ এবং বিভিন্ন রকমের হয়রানিমূলক মামলায় ২৪টি ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মর্যাদাহানির অভিযোগ সংক্রান্ত ৫৭ ধারার মামলায় গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার এবং ব্লগার সনাতন উল্লাসকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। গণমাধ্যম ও মানবাধিকার কর্মী সংক্রান্ত অপরাধের বিচার প্রক্রিয়াজনিত কার্যক্রম যেমন-তদন্ত, চার্জ গঠন ও গ্রেফতারের ক্ষেত্রে ধীরগতি লক্ষ্য করা গেছে।

২০১৭ সালে ১জন সাংবাদিক হত্যা, ২৮ জন মারাত্মক কশারীরিক আঘাত এবং ৭৫ জন নানা রকমের শারীরিক আঘাতের শিকার হয়েছেন। গত বছর দৈনিক সমকালের সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার প্রতিনিধি আব্দুল হাকিম শিমুল পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন শাহজাদপুর পৌরসভার মেয়র এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের সিরাজগঞ্জ জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক হালিমুল হক মিরুর ছোড়া গুলিতে প্রাণ হারান সাংবাদিক আব্দুল হাকিম শিমুল।এ হত্যার অভিযোগে শাহজাদপুর পৌরসভার মেয়র এখন কারাগারে বন্দী।

সর্বপরি, ৭০% আক্রমনের শিকার স্থানীয় পর্যায়ের সাংবাদিকরা এবং পাশাপাশি নারী সাংবাদিকরা তথ্য-প্রযুক্তি উদ্ভূত ঝুঁকির সন্মূখীন হয়ে থাকেন। ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মী, আইন-শৃংঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সদস্য এবং কোন কোন ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের প্রতি চড়াও হওয়ার তথ্য রয়েছে ।

‘বাক স্বাধীনতার ক্ষেত্রে এ জাতীয় আঘাত গণমাধ্যম কর্মীদের স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষেত্রকে সংকুচিত করে এবং যাচূড়ান্তভাবে জনগণের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে বাধা গ্রস্থ করে। বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসের এই দিনে আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আহবান রাখছি যে, এ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক মানদন্ডের আলোকে সকল অপরাধের বিচারকার্য করা হোক।’

এক নজরে মূল তথ্য :

# বিগত পাঁচ বছরের মধ্যে বাক স্বাধীনতায় সর্বাধিক ৩৩৫টি হস্তক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে ২০১৭ সালে।

#আইনি প্রক্রিয়ায় হয়রানির শিকার হওয়ার ঘটনা ২০১৩ সালে ৩৩টি ছিল, যা ২০১৭ সালে বেড়ে ১৬৯ টিতে দাঁড়িয়েছে। তবে শারীরিকভাবে হামলার ঘটনা বিগত বছরগুলোর তুলনায় ২০১৭ সালে কমেছে। ২০১৩ সালে সাংবাদিকদের ওপর শারীরিকভাবে হামলার ঘটনা ছিল ১৭৩টি, যা ২০১৭ সালে কমে হয়েছে ১১৩টি।

# প্রতিবেদন অনুয়ায়ী গত বছর আইনি প্রক্রিয়ায় সাংবাদিক হয়রানির ঘটনা ঘটেছে ৭৬টি। এরম ধ্যে মানহানির অভিযোগে ৩৫টি, মিথ্যা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ১৯টি, রাষ্ট্র বা কোনও বিশেষ ব্যক্তির সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন হওয়ার অভিযোগে ১৪টি, উসকানি দেওয়ার অভিযোগ ৩টি, অশ্লীলতার অভিযোগে ২টি এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে ২টি মামলা হয়েছে।

#২০১৭ সালে ১ জন সাংবাদিক হত্যা, ২৮ জন মারাত্মক শারীরিক আঘাত এবং ৭৫ জন সাধারণ শারীরিক আঘাত এবং ১০ জন সাংবাদিক অপহরণের শিকার হয়েছেন।

#গণমাধ্যম কর্মীদের প্রতি সংঘটিত এসব অপরাধের শতকরা ৯৩ ভাগের ক্ষেত্রে ননস্টেট এবং শতকরা ৪৯ ভাগের ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীনরা জনৈতিক দল সংশ্লিষ্ট নেতাকর্মী ও অন্যান্যদের সম্পৃক্ততা রয়েছে।

(এএইচএল/এসপি/মে ০৩, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test