E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

দারিদ্র্যের সাথে নিত্য লড়াই করেছেন আবদুর রহিম কচি

২০১৮ জুন ৩০ ১৬:৫৬:৪৯
দারিদ্র্যের সাথে নিত্য লড়াই করেছেন আবদুর রহিম কচি

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা :  একজন নির্লোভ সাদাসিধে মানুষ ছিলেন তিনি। তিনি ছিলেন কাজ পাগল মানুষ। সারা জীবন দারিদ্র্যের সাথে লড়াই করে গেছেন। আবৃত্তি কবিত্ব অভিনয় আর সাংবাদিকতার মধ্য দিয়ে  তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন একজন সফল সম্পাদক হিসাবে। তার পোশাকে ছিল আটপৌরে রুপ, হাতে থাকতো খবরের কাগজ, ঠোঁটে ঝুলতো সিগারেট এভাবেই যে মানুষটি সারাটা দিন কাটিয়েছেন তিনি দুপুরের আহার সেরেছেন  একটি মাত্র সিঙ্গাড়া দিয়ে । এমন মানুষটি ছিলেন আমাদের প্রেরণা, তিনি ছিলেন আমাদের পথ প্রদর্শক তিনি হতে পারেন আমাদের জন্য দৃষ্টান্ত। 

শনিবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সাপ্তাহিক দখিনায়ন সম্পাদক বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিক মুফতি আবদুর রহিম কচির প্রথম মৃত্যু বার্ষিক উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় এভাবেই তার অবয়ব তুলে ধরেন বক্তারা। তারা বলেন একজন সাহসী ও সৎ সাংবাদিক একজন সাহিত্যপ্রেমী আবৃত্তিকার, একজন কবি ও একজন সম্পাদক হিসাবে তার জুড়ি সত্যিই মেলা ভার ছিল।

তিনি নিজে লিখেছেন, তিনি অনেককে লিখিয়েছেন এবং তিনি সাংবাদিক হিসাবে অনেকেরই হাতে খড়ি দিয়েছেন। তার হাতে গড়া অনেক সাংবাদিকই এখন প্রতিষ্ঠিত সাংবাদিক হিসাবে নিজেদের পরিচিত করতে পেরেছেন। তিনি ছিলেন সংস্কৃতিমনা অসাম্প্রদায়িক মানুষ। তার মধ্যে ছিল জনগনের জন্য প্রেম ভালবাসা, ছিল সহানভূতি ও সহমর্মিতা। নিজেকে সব সময় প্রচার বিমূখ রেখেছেন তিনি। তিনি ভালবেসেছেন সমাজকে। চমৎকার বাচনভঙ্গির মুফতি আবদুর রহিম কচি ছিলেন একজন স্পষ্টবাদী মানুষ, আত্মাভিমানী মানুষ। নিজেকে তাই সব প্রচার বলয় থেকে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করেছেন।

সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের শহিদ আলাউদ্দিন মিলনায়তনে আয়োজিত স্বরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব সভাপতি অধ্যাপক আবু আহমেদ। প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক আবদুল বারীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক সভাপতি সুভাষ চৌধুরী , সাবেক সভাপতি অধ্যাপক আনিসুর রহিম, সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম কামরুজ্জামান, দেশ টিভির শরিফুল্লাহ কায়সার সুমন, ইন্ডিপেনডেন্ট টিভির মো. আবুল কাসেম, দৈনিক কল্যাণের কাজী শওকত হোসেন ময়না, জেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক শেখ হারুনার রশীদ প্রমুখ।

প্রয়াত সাংবাদিক মুফতি আবদুর রহিম কচির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে বক্তারা আরও বলেন তিনি ছিলেন নিজেই লেখক, নিজেই কম্পোজিটর, নিজেই প্রুফ রীডার। নিজেই পত্রিকা প্রকাশ করে পাঠকের কাছে নিয়ে যাবার কাজটিও তিনি নিজে করতেন। তার মধ্যে কোনো অহংকার ছিলনা, অর্থ লোভ ছিল না, বাড়তি কিছু প্রত্যাশাও করতেন না তিনি। অসুখ বিসুখ তার পথ আগলে রেখেছিল। ওষুধ কেনার টাকাও ছিল না তার। তবু হাল ছাড়েননি মুফতি আবদুর রহিম কচি। জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্তও তিনি লেখালেখি করে গেছেন। মুফতি আবদুর রহিম কচি আজ বেঁচে না থাকলেও তিনি চিরদিন থাকবেন তার কাজের মধ্যে, তিনি হয়ে থাকবেন আমাদের প্রেরণা।

(আরকে/এসপি/ জুন ৩০, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test