E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘সাংবাদিকদের এখন চাইলেই কেনা যায়’

২০২৩ ডিসেম্বর ১৩ ২৩:৩৮:২৬
‘সাংবাদিকদের এখন চাইলেই কেনা যায়’

স্টাফ রিপোর্টার : সাংবাদিকদের এখন চাইলেই কেনা যায় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল।

বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘মুক্তিযুদ্ধ: ইতিহাস চেতনা ও অদম্য বাংলাদেশের গল্প’ বিষয়ক আলোচনা সভায় বিশেষ আলোচকের বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবস উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত প্রায় ২৫ বছর ধরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠনে ভূমিকা রেখেছিলেন সাংবাদিকরা। তাই একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বর চূড়ান্তভাবে পরাজিত হয়ে সাংবাদিকদের নৃশংসভাবে হত্যা করেছে পাকিস্তানি সেনা ও তাদের এ দেশীয় দোসররা।

তিনি বলেন, অনেকে নিখোঁজ হয়েছেন। আজ অবধি তাদের কোনো সন্ধান মেলেনি। ভারতের কয়েকজন সাংবাদিকও সেই তালিকায় ছিলেন। তাদের পরিবার এখনও অপেক্ষায়। সে সময় (মুক্তিযুদ্ধকালে) সাংবাদিকরা ছিলেন আপসহীন। কিন্তু এখন সাংবাদিকদের হুমকি দেওয়ার কিংবা হত্যা করার দরকার পড়ে না। চাইলেই সাংবাদিক কিনে নেওয়া যায়।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক। অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, বিএফইউজের সভাপতি ওমর ফারুক, জাতীয় প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক আইয়ুব হোসেন ভূইয়া প্রমুখ।

প্রধান বক্তা মফিদুল হক বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরুতেই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি জাতীয় প্রেস ক্লাবের দোতলায় আঘাত করেছিল। তখন সাংবাদিক ফয়েজ আহমেদ সেখানে অবস্থান করেছিলেন। তিনি আহত হয়েছিলেন। পরে চিকিৎসা নিয়ে তিনি আবার মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন।

শহীদ তিনজন সাংবাদিককে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে মফিদুল হক বলেন, শহীদ সাবের অল্প বয়সে সাহিত্য দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছিলেন। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় এসে সাংবাদিকতায় যুক্ত হয়েছিলেন। সে সময়ে তিনি কারাবন্দি হয়েছিলেন। প্রেস ক্লাব ও পত্রিকার সঙ্গে আত্মিক বন্ধন কখনও তিনি ছিন্ন হতে দেননি। সারাদিন প্রেস ক্লাবে কাটাতেন। চার আনা পয়সা দিয়ে জীবন চালাতেন। প্রেস ক্লাব ছিল তার আশ্রয়, সংবাদ (দৈনিক পত্রিকা) ছিল রাতের ঘুমের স্থান। ২৫ মার্চ যখন সংবাদের অফিস পুড়ে যায়, সেখানে তিনিও পুড়ে অঙ্গার হয়েছিলেন।

তিনি আরও বলেন, বামপন্থি আদর্শে বিশ্বাসী শহীদুল্লাহ কায়সার বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে কারাবন্দি ছিলেন। আরেকজন শহীদ সিরাজউদ্দীন হোসেন। অবরুদ্ধ সময়ে ইত্তেফাক পত্রিকার হাল ধরেছিলেন। ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যার শিকার হন তিনি। মূলত বঙ্গবন্ধু যে জাতীয় জাগরণ তৈরি করেছিলেন, সেখানে সাংবাদিকদের ভূমিকা আমাদের নানাভাবে অনুপ্রাণিত করে। তারা মুক্তিযুদ্ধে সাহসী ভূমিকা রেখেছেন।

ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে দুজন পশ্চিমবঙ্গের সাংবাদিক নিখোঁজ হন। সাংবাদিকরা আপসহীন মনোভাব দেখিয়েছেন। তাই তাদের হত্যা করা হয়েছে। আমাদের সাংবাদিকতায় তাদের (মুক্তিযুদ্ধের সময়কালের) আদর্শ কতটুকু ধরে রাখতে পেরেছি?

সাইফুল আলম বলেন, গত ৫১ বছর ধরে এই দিবস পালন করছি। কিন্তু মূল ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। সামরিক, অবৈধ ও অগণতান্ত্রিক সরকার সুষম বণ্টন ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত করেছে। স্বাধীন গণমাধ্যমও বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তবুও সব প্রগতিশীল আন্দোলনে সাংবাদিকরা ভূমিকা পালন করেছেন। অনেক ইতিহাস লেখা হয়েছে। প্রকৃত ইতিহাস লিখতে হলে সময়ের প্রয়োজন।

(ওএস/এএস/ডিসেম্বর ১৩, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test