E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিকদার মেডিকেলের ডাক্তারের বিরুদ্ধে সাংবাদিকের মামলা

২০১৪ মে ১৩ ২১:৩৫:১৭
শিকদার মেডিকেলের ডাক্তারের বিরুদ্ধে সাংবাদিকের মামলা

নিউজ ডেস্ক : রাজধানীর শিকদার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি শিশির মোড়লকে মারধরের ঘটনায় মামলা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার হাজারীবাগ থানায় তিনি বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন। পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য শিশির আজ সকালে হাসপাতালে গেলে চিকিৎসক সফিউল আজম ও তাঁর সহযোগীরা দফায় দফায় মারধর ও আটকে রেখে জোরপূর্বক কাগজে স্বাক্ষর রাখা হয় বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। খবর প্রথম আলো অনলাইন।

সফিউল আজম সরকারি চাকরি না ছেড়ে শিকদার মেডিকেল কলেজে চাকরি করছেন এবং একসঙ্গে একাধিক ডিগ্রি ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ আছে। অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে শিশির মোড়ল শিকদার মেডিকেলে যান। এর আগে তিনি ফোনে মন্তব্য জানতে চাইলে সফিউলই তাঁকে সশরীরে শিকদার মেডিকেলে যেতে বলেন। যাওয়ার পর একাধিক ডিগ্রির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে শিশির মোড়লকে মারধর শুরু করেন সফিউল আজম। এরপর প্রায় আড়াই ঘণ্টা শিশির মোড়লকে আটকে রেখে তাঁর কাছ থেকে কাগজে সই করিয়ে নেওয়া হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশের সহায়তায় ছাড়া পান তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাজারীবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সুখেন চন্দ্র সরকার বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি, শিশির মোড়ল কাঁদছেন। তাঁকে দিয়ে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। পরে হাসপাতালের এক কর্মকর্তা এসে ঘটনাটি শোনেন। তাঁকে নিয়ে মেডিকেলের বাইরে এলে শিশির গাড়ি নিয়ে সেখান থেকে চলে যান।’

শিশির মোড়ল এজাহারে বলেন, পেশাগত কাজে তথ্য সংগ্রহের জন্য আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেড এ শিকদার উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান তিনি। সেখানে যাওয়ার আগে গত রোববার টেলিফোনে হাসপাতালের কার্ডিয়াক বিভাগের প্রধান মো. সফিউল আজমের সঙ্গে কথা হলে তিনি শিশিরকে সশরীরে হাসপাতালে গিয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। সে অনুযায়ী তিনি আজ সকালে হাসপাতালে ফোন করে অনুমতি নেন। ফোনটি ধরেছিলেন হাসপাতালের অভ্যর্থনা ডেস্কে থাকা জনৈক সুফিয়ান।

শিশির বলেন, আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি শিকদার মেডিকেল কলেজের নিচতলায় ১০১ নম্বর কক্ষে সফিউল আজমের কাছে যান। শফিউল জানতে চান তিনি (শিশির) কেনো এসেছেন? জবাবে শিশির তাঁকে বলেন, ‘আপনি নিজের ভিজিটিং কার্ড ও সাইনবোর্ডে একাধিক পদবি ব্যবহার করছেন এবং সরকারি চাকরি ছেড়ে না দিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে পূর্ণকালীন চাকরি নিয়েছেন। আপনি কখনো সহকারী অধ্যাপক, কখনো সহযোগী অধ্যাপক আবার কখনো শুধু অধ্যাপক পদবি ব্যবহার করছেন বলে আমাদের কাছে তথ্যপ্রমাণ আছে।’ এজাহারে শিশির বলেন,

‘এ অভিযোগের কথা শুনেই তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে আমার মাথায় ঘুষি মারেন। এরপরে চড়-থাপ্পড়, কিল-ঘুষি ও লাথি মারতে শুরু করেন। চিৎকার চেঁচামেচি করে অন্যদের ডাকেন। আরো কয়েকজন সেখানে এসে আমাকে জোর করে ধরে নিয়ে পাশের একটি কক্ষে নিয়ে আটকে রাখেন। তাঁরা কক্ষে নেওয়ার সময় আমার পকেট থেকে মোবাইল ফোন, পরিচয়পত্র, মানিব্যাগ কেড়ে নেন। সেই কক্ষে নেওয়ার পর সফিউল আজম এবং হাসপাতালের স্টাফ আবু সুফিয়ান আবার দফায় দফায় মারধর করেন। তাঁরা কিল-ঘুষি-লাথি মারেন।’

এজাহারে প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি বলেন, ‘ওই চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি আমাকে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দেন। আমি তাঁদের কাছে প্রাণভিক্ষা চাইলে তাঁরা বলেন, “তোর এতো বড় সাহস। এটা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চাইতেও নিরাপদ এলাকা। এখানে তোকে মেরে ফেললেও কেউ কিছু বলতে পারবে না।” এভাবে প্রায় আড়াই ঘণ্টা তাঁরা আমাকে দফায় দফায় মারধর করেন।

শিশির বলেন, একপর্যায়ে কৌশলে একজনের সহায়তায় সহকর্মীদের ঘটনাটি জানাই। সহকর্মীরা হাজারীবাগ থানায় ফোন করলে থানার এসআই সুখেন সেখানে গিয়ে আমাকে উদ্ধার করেন। পুলিশ যাওয়ার আগে সফিউল আজম একটি স্ট্যাম্পে জোর করে আমার স্বাক্ষর নেন।’

শিশির বলেন, ‘তাঁরা আমাকে হুমকি দিয়ে ওই স্ট্যাম্পে লিখতে বাধ্য করেন যে, “আমি এখানে কয়েকজন ডাক্তারের বিষয়ে তথ্য জানতে আসি। আমি তাঁদের কাগজ দেখে সন্তুষ্ট হই। আমি সেখানে অনধিকার প্রবেশ করেছি এবং এ রকম আর কখনো করব না”।’

(ওএস/এস/মে ১৩, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test