E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

হাজী দানেশে ভর্তি পরীক্ষায় অনিয়ম : তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি

২০১৭ নভেম্বর ১৮ ১৬:৫৩:০০
হাজী দানেশে ভর্তি পরীক্ষায় অনিয়ম : তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি

শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৮ ভর্তি পরীক্ষায় বিভিন্ন অনিয়ম,দুর্নীতি ও চরম অসংগতির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে খোদ ক্ষমতাশীল দলের শিক্ষক সংগঠন“প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরাম”।

দিনাজপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনের আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি প্রফেসর ড.আনিস খান ও সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড.বলরাম রায় স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে নভেম্বরর ৫ তারিখে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন অসংগতি পাওয়া যায়। যা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন লিখিত আবেদনটি কোন আমলে না নিয়ে তড়িঘড়ি করে ফলাফল প্রকাশ করে।

ফলাফল প্রকাশের আগে ভর্তি কমিটি’র সভায় ফলাফল উপস্থাপন করা হলে কয়েকজন সদস্য প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের লিখিত অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে ফলাফল অধিকতর যাচাই-বাছাই করে ফল প্রকাশ করার প্রস্তাব দেন। কিন্তু প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরাম সদস্যদের মতামত উপেক্ষা করে ফলাফল প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮টি অনুষদের মধ্যে ৪টি অনুষদের ডীনবৃন্দ এবং ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালকসহ উপাচার্য মনোনীত একজন কমিটি’র সদস্য রেজাল্ট শীটে স্বাক্ষর করেনি।

সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, সদস্যবৃন্দের ঐক্যমত ছাড়াই ফলাফল প্রকাশ একটি দূর্ভাগ্যজনক অধ্যায়। ভর্তি পরীক্ষায় সি-১ বাণিজ্য ইউনিটের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র এবং ওএমআর শীট এবং সিক্যুইন্স এ যথেষ্ট গড়মিল ছিলো। বেশ কিছু সি-১ বাণিজ্য ছাত্র-ছাত্রীর পরীক্ষা সি-৩ মানবিক ও বিজ্ঞান প্রশ্নপত্রে নেয়া হয়,যাতে বাণিজ্যিক ছাচ্র-ছাত্রীরা তাদের বাণিজ্য বিষয় সমূহে প্রশ্নপত্রে পায়নি।এতে পরীক্ষা হলে বাণিজ্যিক ছাত্র-ছাত্রীরা অভিযোগ করলেও তা আমলে নেয়নি কর্তৃপক্ষ।ভর্তি পরীক্ষা কমিটি’র এক চরম অব্যবস্থাপনায় অনেক মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী সঠিক ফলাফল থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আরো জানানো হয়, ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল বিশ্লেষণ করলে প্রায় সকল ইউনিটে ব্যাপক অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়। এফ ইউনিটে দুই সিফটে পরীক্ষা হয়েছে এবং প্রত্যেক শিফটে প্রায় সমান সংখ্যক্ষক ছাত্র-ছাত্রী অংশ নিয়েছে। ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, এফ-১ প্রথম শিফটে ৪৭জন (শতকরা ১৫ ভাগ) এবং এফ-২ দ্বিতীয় শিফট থেকে ৩৬৩জন (শতকরা ৮৫ভাগ) পরীক্ষা মেধায় চান্স পেয়েছে।

এমন ক্রটিপূর্ণ ফলাফল কোনক্রমেই জাতির কাছে গ্রহণযোগ্য নয়,বলে দাবী করেছেন সংবাদ সম্মেলন আয়োজকরা। উদ্দেশ্যপ্রনোদিতভাবে প্রশ্নপত্র ও সিটপ্লান প্রনয়ন করে বিশেষ গোষ্টিকে সুবিধা দেয়ার অভিযোগ তুলেছে “প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরাম”।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং ভর্তি পরীক্ষা কমিটি’র সহযোগি সদস্য সচিব হিসেবে ড.মো.খালিদ হোসেন ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সংশ্লিষ্ট সকল ধরণের অনিয়মের গোপনীয় কাজে জড়িত ছিলেন বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ তোলা হয়।

এ ধরনের সংবেদনশীল কাজে জড়িত থাকার পরেও “প্লাস মিট প্লাস” একটি ভর্তি সহায়িকা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন ও পৃষ্টপোষকতা করে ভর্তি প্রক্রিয়াটিকে প্রশ্ন বিদ্ধ করেছেন। এমতাবস্থায় শিক্ষামন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার পরিপন্থি গাইড বাণিজ্যের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রক্টরের বিরুদ্ধে আইনানুগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনেরদাবি তোলা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

এছাড়াও ভর্তি পরীক্ষার অসামঞ্জস্যতা দূরীকরণসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম রক্ষার্থে ভর্তি পরীক্ষায় সকল অনিয়মতান্ত্রিক কর্মকান্ডের জন্য পরীক্ষা কমিটি’র আহবায়ক,সদস্য সচিব ও সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্মপ্ন তদন্ত কমিটি গঠন সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানায়. খোদ ক্ষমতাশীল দলের শিক্ষক সংগঠন“প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরাম”।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, “প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরাম” এর সহ-সভাপতি প্রফেসর ড.সাইফুর রহমান, সহ-সভাপতি প্রফেসর ড.এটিএম শরিফুল ইসলাম,সহ-সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ডা.এসএম হারুন, সহ-সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড,মো.নাজিম উদ্দিন, সহ-সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড.মো.মামুনুর রশীদ ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক ড. মো.ফেরদৌস মেহবুব।

(এসএএস/এসপি/নভেম্বর ১৮, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test