E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

হল থেকে মাদক-অস্ত্রসহ বহিরাগত আটক 

ইবিতে ছাত্রলীগ কর্মীদের বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে ইট পাটকেল নিক্ষেপ

২০১৮ মার্চ ২৮ ০১:২০:২৯
ইবিতে ছাত্রলীগ কর্মীদের বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে ইট পাটকেল নিক্ষেপ

ইবি প্রতিনিধি : বহিরাগত ক্যাডারকে ছাড়াতে ক্যাম্পাসকে রণক্ষেত্র করে তুলেছে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে প্রায় ৩ঘন্টা পুরো ক্যাম্পাসে ভাংচুর চালায় তারা। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক, কেন্দ্রীয় ক্যাফেটারিয়া, সিসিটিভি ক্যামেরা, কন্ট্রোল রুম, ল্যাম্পপোষ্ট, ক্যাম্পাসের রাস্তার দুধারের তোরণ ও স্থাপনাসহ নির্মিতব্য রবীন্দ্র-নজরুল ভবনে ব্যাপক ভাংচুর চালায় তারা। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালকে লক্ষ্য করেও ইট পাটকেল ছুড়ে উত্তেজিত ছাত্রলীগের কর্মীরা। এসময় মিছিলে তারা প্রায় অর্ধশত ককটেল বিষ্ফোরণ করে। এতে ক্যাম্পাসে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

এদিকে ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিতব্য আন্ত:বিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল ও ভলিবল ভেন্যুও প্রস্তুতি নিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়। সেটাও ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছে ছাত্রলীগের কর্মীরা। এসময় রাস্তার দুধারে স্থাপন করা প্রায় দু’শতাধিক পতাকা নষ্ট করে এবং আগুন ধরিয়ে দেয়।

এদিকে ছাত্রলীগ সভাপতিকে না জানিয়ে হল থেকে দলীয় বহিরাগত ক্যাডারদের গ্রেফতার করায় বিশ্ববিদ্যায়ের প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করে মিছিল করেছে ছাত্রলীগের সভাপতি গ্রুপের নেতাকর্মীরা। বিক্ষোভ মিছিল থেকে প্রক্টরের বিরুদ্ধে নানা রকম স্লোগান দিতে থাকে। ‘প্রক্টরের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে’, ‘হই হই রই রই মাহবুর চোর গেলি কই’, ‘এক দফা একদাবি প্রক্টরের পদত্যাগ চাই’ ‘একদফা একদাবি দালাল তুই কবে যাবি’ প্রভৃতি স্লোগান দেয় এবং গালিগালাজ করতে থাকে ছাত্রলীগ কর্মীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলের দক্ষিণ ব্লকের কয়েকটি কক্ষ হাউজ টিউটরদের জন্য সংরক্ষিত ছিল। সেখানে কোন শিক্ষক অবস্থান না করলেও হল কর্তৃপক্ষ সেই কক্ষগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ দেয়নি। পরে ছাত্রলীগ সভাপতি শাহিনুর রহমান জোরপূর্বক কক্ষগুলো দখল করে সেখানে স্থানীয় বহিরাগত ক্যাডারদের রাখে। তারা সেখান মাদকসেবন, মাদক ব্যবসা ও অস্ত্রমহড়া চালাতে থাকে বলে প্রত্যক্ষদর্শীসূত্রে জানা যায়।

মঙ্গলবার বিকেলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ইবি থানা পুলিশ ওই কক্ষ থেকে গিয়ে দেশীয় অস্ত্র ও ফেন্সিডিলসহ ৩ জনকে আটক করে। এর মধ্যে ১ জন পালিয়ে যায়। পরে ২ জনকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। ছাত্রলীগ সভাপতির হস্তক্ষেপে আটককৃত রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের নাজমুস সাকিব আকাশকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসে। পরে দানিয়েল হককে পুলিশ হেফাজতে থানায় রাখা হয়।

জানা যায়, দানিয়াল ক্যাম্পাস পার্শবর্তী পদমদী এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে।

এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহিনুর রহমান শাহিন ও সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা হালিমমের একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তারা কথা বলেননি।

প্রক্টর প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমান বলেন, গোপন তথ্যেও ভিত্তিতে আমরা দুই মাদকসেবীকে লালন শাহ হল থেকে আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করি। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কোন সম্পৃক্ততা নেই।

ছাত্রলীগের ভাংচুরের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি একটা মিটিংয়ে আছি, এবিষয়ে তেমন কিছু জানিনা তবে খোঁজ খবর নিচ্ছি।

ইবি থানার ওসি রতন শেখ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল হয়েছে এটা আমি শুনেছি কিন্তু কারা এ মিছিল করেছে সে বিষয়ে আমি কিছু জানি না।

এদিকে আটকের বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি জানান, ৩টি চাপাটি ও ৮ বোতল ফেন্সিডিলসহ দানিয়েল নামের একজন বহিরাগতকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

(এসআই/এসপি/মার্চ ২৮, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test