E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রাবির সমাবর্তনে অংশ নিচ্ছেন না অর্ধেক শিক্ষক!

২০১৯ নভেম্বর ৩০ ১৬:০১:১১
রাবির সমাবর্তনে অংশ নিচ্ছেন না অর্ধেক শিক্ষক!

রাবি প্রতিনিধি : বর্তমান প্রশাসনের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড, মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব, প্রশাসনে বিভাজন ও নিবন্ধন জটিলতাসহ নানাবিধ কারণে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একাদশ সমাবর্তনে অংশ নিচ্ছেন না প্রায় অর্ধেক শিক্ষক। এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

অংশ না নেয়া শিক্ষকরা জানান, বর্তমান প্রশাসনের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ স্বরূপ তারা এই সমাবর্তনে অংশ নিচ্ছেন না। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, সমাবর্তনে অংশ নেয়া না নেয়া শিক্ষকদের ব্যক্তিগত বিষয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় ১৩০০ শিক্ষক রয়েছেন। যাদের মধ্যে মাত্র ৬৫৮ জন শিক্ষক এবারের একাদশ সমাবর্তনের অংশ নিচ্ছেন। বাকি প্রায় অর্ধেক শিক্ষক নিবন্ধনই করেননি।

অন্যদিকে ২০১৫ ও ২০১৬ সালের গ্রাজুয়েটদের মধ্যে থেকে অর্ধেকেরও কম নিবন্ধন করেছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হতাশা প্রকাশ করেছে অনেকেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের আগমন সত্ত্বেও অর্ধেকেরও বেশি শিক্ষক কেন অংশগ্রহণ করছেন না এমন প্রশ্নের উত্তরে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, বর্তমান প্রশাসনের মধ্যে এক ধরণের বিভাজন রয়েছে। একটি অংশ প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সন্তুষ্ট, অন্যপক্ষ অসন্তুষ্ট। তাদের এই অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে এমনটা হয়েছে বলে মনে করছি।

এজন্য প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বকে দায়ী করে ফোকলোর বিভাগের শিক্ষক ড. আমিরুল ইসলাম কনক বলেন, বর্তমানে প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে নানা বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে শিক্ষকদের মধ্যে অনেক বিষয়ের সঙ্গে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। এ কারণে তাদের মধ্যে বড় রকমের একটা বিভক্তি দীর্ঘদিন যাবৎ লক্ষ্য করছি। এর প্রভাব পড়েছে একাদশ সমাবর্তনেও।

আরবী বিভাগের অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ বলেন, রাষ্ট্রপতি আসবেন বিষয়টা অনেক আনন্দের, সৌভাগ্যের। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্যের ‘জয় হিন্দ’ বলা নিয়ে ক্ষমা চাওয়ার জন্য দাবি তুলেছিলাম। উনি দাম্ভিকতা দেখিয়ে ক্ষমা চাননি। উপ-উপাচার্যের নিয়োগ কেলেঙ্কারির ঘটনা ফাঁস হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। আমরা মনে করি, তাদের সঙ্গে সমাবর্তনে অংশগ্রহণ করা নৈতিক দিক দিয়ে ঠিক হবে না। তিনি আরও বলেন, নিবন্ধন করেছি তবে সমাবর্তনে অংশ নিচ্ছি না।

নিবন্ধন জটিলতার বিষয়ে সমাজকর্ম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. জামিরুল ইসলাম বলেন, এবাররের সমাবর্তনে এই প্রথমবারের মতো নিবন্ধন অনলাইনে হওয়ার কারণে অনেক শিক্ষকই বিষয়টি সম্পর্কে পুরোপরি অবগত ছিলেন না। যার ফলে একটি অংশ নিবন্ধনের বাহিরে রয়ে গেছে। তবে আমাদের উচিত সব কিছুর ঊর্ধ্বে সমাবর্তনকে গুরুত্ব দেয়া এবং এটি সফল করা।

এদিকে প্রথমবারের মতো অনলাইন পদ্ধতিতে শিক্ষকদের নিবন্ধন জটিলতাকে দায়ী করে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, আমরা দেখেছি অন্যান্যবার সমাবর্তনে প্রতিটি বিভাগে একটি করে ফর্ম পাঠানো হতো। এতে যারা অংশগ্রহণে আগ্রহী তারা নিদির্ষ্ট সময়ে তা পূরণ করতেন। কিন্তু এবারের সমাবর্তনে অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষকদেরকে নিবন্ধন করতে হয়েছে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক রয়েছেন যারা অনলাইনে অভ্যস্ত নন বা ব্যবহার করেন না। যার ফলে অনেকে নিবন্ধনের বাইয়ে রয়ে গেছেন। এছাড়া নির্ধারিত সময় সর্ম্পকে অনেকেই অবগত ছিলেন না।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের প্রশাসক প্রফেসর ড. প্রভাষ কুমার কর্মকার বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষকই বর্তমানে বিদেশে অবস্থান করছেন। যার ফলে শিক্ষকদের অংশগ্রহণ গতবারের চেয়ে একটু কম মনে হচ্ছে। প্রত্যক গ্রাজুয়েটদের কাছে সমাবর্তন একটি কাঙ্ক্ষিত দিন। এতে যোগ দেয়া বা না দেয়া একান্তই তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ৩০, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test