E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বেরোবি উপাচার্যের দুর্নীতি : ৩৫ জনের সাক্ষ্য নিল তদন্ত দল

২০২১ মার্চ ১৫ ১৮:৩৩:৫৪
বেরোবি উপাচার্যের দুর্নীতি : ৩৫ জনের সাক্ষ্য নিল তদন্ত দল

মানিক সরকার মানিক, রংপুর : রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আলোচিত উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ’র বিরুদ্ধে দ্বিতীয় তদন্ত শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) তদন্ত টানা ১০ ঘন্টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারিসহ ৩৫ জনের স্বাক্ষ্য প্রমাণ নিয়েছে ওই তদন্ত দলটি। 

তদন্তে উপাচার্য হওয়ার পর কর্মস্থলে অনুপস্থিত, লিয়াজো অফিসে দুর্নীতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক প্রশাসনিক ও একাডেমিক পদ আকড়ে থাকা, আইন অমান্য করে বিভাগীয় প্রধান নিয়োগ, জনবল নিয়োগে ইউজিসির নির্দেশনা উপেক্ষা, নিয়োগে অনিয়ম দুর্নীতিসহ তার স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে তদন্ত করছে ইউজিসি।

প্রথম দিকে তদন্ত দলটির ৪৫টি অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করবার কথা থাকলেও সরেজমিনে তারা ১১১টি অভিযোগ নিয়েই তদন্ত করার বিষয়টি গণ মাধ্যমের কাছে নিশ্চিত করেন। এসব অভিযোগের মধ্যে উপাচার্যেও বিভিন্ন সময়ের একাডেমিক, প্রশাসনিক ও আর্থিক অনিয়ম দুর্নীতি এবং সেচ্ছাচারিতার বিষয়গুলো গুরুত্বসহ দেখা হচ্ছে বলেও জানান কমিটির প্রধান ইউজিসির অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দ। রবিবার বেলা পৌনে ১২টায় বেরোবি ক্যাম্পাসে আসেন দলটি এরপর রাত ১০টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে অবস্থান করেন তারা।

এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট কক্ষে বসে অভিযোগকারী ৭ শিক্ষক এবং রেজিষ্ট্রার আবু হেনা মোস্তফা কামাল, ভিসির ব্যক্তিগত সহকারী আমিনুর রহমান ও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারিসহ উপাচার্যপন্থী এবং বিরোধী ৩৫ জনের সঙ্গে কথা বলেন। তবে বরাবরের মতই ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত থাকেন উপাচার্য। উপাচার্যের দুর্নীতির চিত্র যাতে ভিন্নখাতে প্রবাহিত না হয়, রবিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। পরে তদন্ত কমিটির সাথে কথা বলেন ওই নেতারা।

সোমবার কমিটির প্রধান গণমাধ্যম কর্মীদেও জানান, উপাচার্যের ক্যাম্পাসে না থাকার বিষয়টি প্রধান অভিযোগ। এছাড়াও বিভিন্নজনের দায়িত্ব তিনি একাই পালন করেন। ইচ্ছেমত নিয়োগ দেন।এবকম অনেক অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। সবকিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি। তিনি জানান, তদন্ত কমিটি অনেক আগেই তদন্ত শুরু করেছে। ইতোমধ্যে অভিযোগের দালিলিক প্রমাণ দু’পক্ষের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছেন। সার্বিক বিষয় যাচাই বাছাই করে তদন্ত প্রতিবেদন দেবেন তারা।

অবিযোগকারী শিক্ষক কর্মকর্তারা জড়িত তাদেও বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ব্যাপারে অধিকার সুরক্ষা পরিষদেও সভাপতি ড. মতিউর রহমান জানান, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রী বরাবরে ৪৫টি অভিযোগ দেয়া হয়েছিল। ২০২০ এবং সবশেষ চলতি বছরের জানুয়ারিতে সবমিলিয়ে ১১১টি অভিযোগ লিখিত আকারে জানানো হয়েছিল। এসব অভিযোগের দালিলিক প্রমাণ তারা তদন্ত কমিটির কাছে উপস্থাপন করেছেন। তারা উপাচার্যের অপসারণসহ শাস্তিরও দাবি জানান।

অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান জানান, উপাচার্যেও বিরুদ্ধে আনা শতাধিক অভিযোগের মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রপতির নির্দেশনা অমান্য করে ক্যাম্পাসে ধারাবাহিক অনুপস্থিতি, ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির ঘটনা ধামাচাপা দেয়া, ইউজিসির নির্দেশনা অমান্য করে জনবল নিয়োগ, শিক্ষক ও জনবল নিয়োগে দুর্নীতি এবং নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি হয়েও অনুপস্থিত থাকা নিরাপত্তাহীন ক্যাম্পাস, ইচ্ছেমত পদোন্নতি আইন অমান্য করে একাডেমিক ও প্রশাসনিক বিভিন্ন পদ দখল ক্রয় প্রক্রিয়ায় নীতিমালা অমান্য ইত্যাদি। তিনি জানান, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এসব অভিযোগ প্রমানীত হবে।

(এম/এসপি/মার্চ ১৫, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test