E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রাবির প্রধান ফটকের সামনে থেমে থেমে আগুন, রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়ক বন্ধ

২০২৩ মার্চ ১২ ১৬:২৮:৪৬
রাবির প্রধান ফটকের সামনে থেমে থেমে আগুন, রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়ক বন্ধ

স্টাফ রিপোর্টার : স্থানীয়দের সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের জেরে বিক্ষোভে উত্তাল ক্যাম্পাস। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রবিবার (১২ মার্চ) দুপুরে গাছের গুঁড়ি ফেলে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেন।

মহাসড়ক বন্ধ থাকায় বিকল্প পথে চলছে গাড়ি। নাটোরের দিক থেকে আসা যানবাহনগুলো শহরে প্রবেশ করতে বিকল্প পথ হিসেবে বুধপাড়া ফ্লাইওভার হয়ে ঢুকছে। আর নগরীর সাহেব বাজারের দিক থেকে কাটাখালীর দিকে আসা ছোট যানবাহনগুলো ফুলতলা বালুরঘাট হয়ে চলাচল করছে।

এছাড়া বাসগুলো সিরোইল বাসস্ট্যান্ড থেকে ছেড়ে ভদ্রা মোড় দিয়ে নতুন বাইপাস হয়ে নাটোরের দিকে যাচ্ছে।

এ সংঘর্ষের ঘটনায় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সড়কে আগুন জ্বালিয়ে অবস্থান নেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এরপর ২টার দিকে তারা ফিরে যান। তবে ২টা ২০ মিনিটের দিকে আবারও ফিরে এসে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে, এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পদক্ষেপের গাফিলতির অভিযোগ তুলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তারসহ উপ-উপাচার্য এবং প্রক্টরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

হ্যান্ডমাইকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি, প্রক্টর থাকা সত্ত্বেও পুলিশ আমাদের ওপর নির্মমভাবে গুলি চালিয়েছে। আমার ভাইদের জখম করেছে। রামেক এখন আহত রাবি শিক্ষার্থীতে ভরপুর। আমার ভাইয়েরা মেডিকেলের বেডে শুয়ে কাতরাচ্ছে। আমাদের দাবি ছিল, উপাচার্য বিনোদপুরে (ঘটনাস্থল) গিয়ে আমাদের দাবি-দাওয়া মেনে নেবেন। কিন্তু ভিসি কোনোমতেই সেখানে যেতে রাজি না। এখন আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রো-ভিসিসহ প্রক্টরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলাম। আমরা তাদের পদত্যাগ চাই।

এর আগে উপাচার্য সম্মুখ আলোচনার জন্য শিক্ষার্থীদের সাবাশ বাংলাদেশ মাঠে আসার আহ্বান করেন। কিন্তু বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিনোদপুর গিয়ে সবার সঙ্গে আলোচনায় বসতে বলেন। এতে উপাচার্য সম্মত না হলে তাকে ভেতরে রেখে চারদিক থেকে ঘিরে আন্দোলন করতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।

জানা গেছে, শনিবার বিকেলে বগুড়া থেকে ‘মোহাম্মদ’ নামের একটি বাসে রাজশাহী আসছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী। বাসের সিটে বসাকে কেন্দ্র করে চালক শরিফুল ও তার সহযোগী রিপনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় ওই শিক্ষার্থীর। সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিনোদপুর বাজারে বাস থেকে নামার সময় তাদের মধ্যে আবারও কথা কাটাকাটি হয়। এসময় বিনোদপুর বাজারের এক ব্যবসায়ী বাসচালকের পক্ষ নিয়ে কথা বলেন। তখন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হাতাহাতি হয় তার।

খবর পেয়ে সেখানে যান বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া। এসময় ব্যবসায়ীরা তার মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। ধাওয়া দিয়ে তাকে ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এতেই বড় হয় ঘটনাটি।

খবর পেয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আবাসিক হল থেকে বের হয়ে বিনোদপুর গেটের পাশে অবস্থান নেন। আর ব্যবসায়ীরা অবস্থান নেন রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কে বিনোদপুর বাজারে। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। এতে আহত হন অনেক শিক্ষার্থী। ব্যবসায়ীদের মধ্যেও আহত হন অন্তত ১০ জন।

এদিকে, বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পুলিশ। তবে রাত ১০টার পর ফের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের বাইরে বেরিয়ে পড়েন। এসময় তারা বিক্ষোভ করেন।

রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক টিটু বলেন, আন্দোলনের কারণে ঢাকা রাজশাহী সড়ক বন্ধ। প্রশাসনও আমাদের ওই সড়ক ব্যবহার করতে দিচ্ছে না। মানুষ তো আর থেমে থাকবে না। আমরা বিকল্প রুটে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার আগের রুটে ফিরে যান চলাচল শুরু হবে।

(ওএস/এসপি/মার্চ ১২, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

২৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test