E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

হাজী দানেশ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পদচারণা

২০১৫ জানুয়ারি ১৯ ১৯:০২:৫২
হাজী দানেশ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পদচারণা

দিনাজপুর প্রতিনিধি : ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ইফতেখারুল ইসলাম রিয়েল ও সাধারণ সম্পাদক অরুন কান্তি রায়সহ ৫ ছাত্রনেতা গ্রেফতার হওয়ার পর অবশেষে ৮০ দিন পর মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস। দীর্ঘদিন পর ক্লাস শুরু হওয়ার খবরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে প্রাণ চাঞ্চল্য।

ওই ৫ ছাত্রনেতা গ্রেফতার হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির তাদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছে। সোমবার শিক্ষক সমিতির এক জরুরী সভায় তারা ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়। শিক্ষক সমিতির সদস্য সচিব অধ্যাপক এটিএম শফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, তাদের আন্দোলন ছিলো শিক্ষকদের উপর হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবি। হামলাকারীরা গ্রেফতার হওয়ায় তারা তাদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে গত রবিবার ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের পর পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ইফতেখারুল ইসলাম রিয়েল, ছাত্রনেতা জাহিদ হাসান, প্রত্যুষ রায় এবং মিল্টন জিয়াকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরন করে। এছাড়াও সংঘর্ষের সময় আহত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক অরুণ কান্তি রায় (বিশ্ববিদ্যালয় হতে বহিস্কৃত) কে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গ্রেফতার দেখানো হয়। বর্তমানে সে পুলিশ পাহাড়ায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।

উল্লেখ্য, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বরাবরাই স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করলেও গত বছরের ৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষায় ডিজিটাল নকলের ঘটনার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ভর্তি পরীক্ষায় ডিজিটাল নকলের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক অরুন কান্তি রায়, ছাত্রনেতা জাহিদ হাসান ও অনিন্দ্য দত্তকে গত ২৭ নভেম্বর বহিস্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকেই ছাত্রলীগ সভাপতি ইফতেখারুল ইসলাম রিয়েলের নেতৃত্বে ভাইস চ্যান্সেলরের অপসারন ও ৩ ছাত্রনেতার বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবীতে আন্দোলন করে আসে ছাত্রলীগ।

এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে এবং সকল হল খালি করে দেয়। ১২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খুলে দেয়ার সময় ছাত্রলীগ নেতা ইফতেখারুল ইসলাম রিয়েল ও অরুন কান্তি রায়ের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. বলরাম রায়সহ অন্যান্য শিক্ষদের উপর হামলা ও লাঞ্ছিত করা হয়। এরই প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবিতে শিক্ষক ধর্মঘট আহ্বান করে।

গত ১৮ জানুয়ারী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের পর ছাত্রলীগ নেতাসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করায় শিক্ষক সমিতি তাদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে মঙ্গলবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শুরু হবে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শুরু হওয়ার খবরে আনন্দিত শিক্ষার্থীরা। ভেটেরিনারী অনুষদের শিক্ষার্থী নাহিদ আহম্মেদ নয়ন জানান, কতিপয় দুস্কৃতিকারীর জন্য আড়াই মাসেরও বেশি সময় ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ছিলো। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ হাজার শিক্ষার্থী পড়েছিলো সেশন জটে।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক আসাদুজ্জামান জানান, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গড়া ছাত্রলীগের গৌরবোজ্জল ইতিহাস রয়েছে। ছাত্রলীগ সবসময়ই শিক্ষার সুষ্টু পরিবেশের জন্য ভূমিকা পালন করে আসছে। কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় ছাত্রলীগ নেতার ব্যক্তিস্বার্থের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থায় অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছিলো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর রুহুল আমীন জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে।

(এটি/এএস/জানুয়ারি ১৯, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test