E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

হামলাকারীদের মাফ করে দিলেন ছাত্রলীগ কর্মী

২০১৭ মে ১৭ ১২:১২:৫৯
হামলাকারীদের মাফ করে দিলেন ছাত্রলীগ কর্মী

চবি প্রতিনিধি : ছাত্রলীগের মধ্যে নানা সময় অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে বা তুচ্ছ কারণেই নেতাকর্মীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা ঘটে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগেও প্রায় এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়। ঘটনার প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা মামলার আশ্রয় নেয়। কিন্তু সেসব মামলার হয় না কোনো অগ্রগতি ও নিষ্পত্তি। ফলে বাদী বিবাদী দুপক্ষকেই ভোগান্তি পোহাতে হয়।

তবে এবার হামলার শিকার হয়েও প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিলেন মোফাজ্জল হায়দার মোফা নামে চবি ছাত্রলীগের এক কর্মী। এর মধ্য দিয়ে এক অনন্য নজির স্থাপন করলেন। শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতে এ মামলা নিয়ে সংগঠনের কাউকে হয়রানি না করারও অনুরোধ জানিয়েছে এ ছাত্রলীগ কর্মী।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মোফাজ্জজল হায়দার মোফা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা ইন্সটিটিউটের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরু থেকেই তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ক্যাম্পাসে তিনি নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দিন ও চবি ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর টিপুর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি শাহ জালাল হলের সামনে তাকে কুপিয়ে জখম করে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী সুজনের অনুসারী আট ছাত্রলীগ নেতাকর্মী। এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই হাটহাজারী থানায় মোফার পক্ষে তার বন্ধু তৌহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে ৮ জনকে আসামি করে ‘হত্যা চেষ্টা’ মামলা দায়ের করে।

যদিও এখন পর্যন্ত মামলার আসামি ছাত্রলীগের সদস্য ইংরেজি বিভাগের (২০১৩-১৪) মাহমুদুল হাসান রূপক, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (২০১২-১৩) নিয়াজ মোর্শেদ, আইন বিভাগের (২০১৪-১৫) সাদাফ খান খবির, পরিসংখ্যান বিভাগের (২০১১-১২) পিয়াস সরকার, ইতিহাস বিভাগের (২০১৩-১৪) নাহিদ আলম, ছাত্রলীগের সহ সভাপতি ও ইতিহাস বিভাগের (২০১০-১১) এনামুল হক আরাফাত ও আরবী বিভাগের (২০১৩-১৪) শরীফসহ কাউকে আটক করে নি পুলিশ। তবে এদের মধ্যে প্রথম ৫ জনকে ছয়মাসের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বহিষ্কার করে।

এদিকে মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে মোফা জাগো নিউজকে বলেন, ছাত্রলীগের খুনাখুনি বন্ধ করতে ও শান্তি বজায় রাখতে স্ব-ইচ্ছায় মামলা তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ আমি চাই না কোনো মা-বাবা তাদের সন্তানের ভুলে মামলার কারণে হেনস্থা হোক। আমার কোনো ভাইয়ের শিক্ষা জীবন দুর্বিষহ হোক সেটিও চাই না। তাই আমার ওপর হামলাকারীদের ক্ষমা করে দিয়েছি।

আগামী সপ্তাহেই মামলাটি প্রত্যাহারে ও নিষ্পত্তি করতে থানায় যাবেন বলেও জানান এ ছাত্রলীগ কর্মী। মামলা প্রত্যাহার সম্পর্কে বাদী তৌহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ভুক্তভোগী যেহেতু মামলা প্রত্যাহার করতে চেয়েছে, সেক্ষেত্রে আমার কিছু বলার নেই। এটি চবি ছাত্রলীগে একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

ছাত্রলীগ কর্মী মোফাজ্জল হায়দারের এমন সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন শাখা ছাত্রলীগের স্থগিতকৃত কমিটির সভাপতি আলমগীর টিপু।

তিনি বলেন, ক্ষমা মহত্বের লক্ষণ। তার এ শুভ উদ্যোগ ছাত্রলীগে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো। পাশাপাশি যারা এ ঘটনায় জড়িত ছিল তারা ক্ষমা চেয়ে এর সুষ্ঠু সমাধান করবে বলে আশা রাখি।

অন্যদিকে, স্থগিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক এস এম ফজলে রাব্বী সুজন জানিয়েছেন, ক্ষমার মাধ্যমে সে উদার মনের পরিচয় দিয়েছে। যা সবার জন্য শিক্ষণীয়। এর মধ্যে দিয়ে যারা তাকে আহত করেছে, তারা তাদের অপরাধ বুঝতে পারবে এবং অনুশোচনা জানাবে।

(ওএস/এসপি/মে ১৭, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

০৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test