E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাবি ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা

২০১৭ জুলাই ০১ ১৩:২৪:১১
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাবি ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা

স্টাফ রিপোর্টার : আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) দিবস। ৯৬ বছর আগে ১৯২১ সালের এই দিনে প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত এ বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। এ উপলক্ষে শনিবার সকাল সোয়া ১০টায় প্রশাসনিক ভবন সংলগ্ন মলে জাতীয় পতাকা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও হলগুলোতে পতাকা উত্তোলন, পায়রা উড়ানো, কেক কাটা এবং উদ্বোধনী সংগীতের মধ্য দিয়ে দিবসটির কর্মসূচী শুরু হয়। ভিসি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন।

সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুল সংখ্যক শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বাদ্যের তালে তালে আনন্দমুখর পরিবেশে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন। সকাল ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার আয়োজিত দুর্লভ পান্ডুলিপি প্রদর্শন করা হয়।

এ ছাড়া প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অনুষদ, বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও হল দিনব্যাপী নিজস্ব কর্মসূচী গ্রহণ করছে। বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে হল, বিভাগ ও অন্যান্য অফিস দুপুর ১২টা পর্যন্ত খোলা ছিল।

১৯১২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেন তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ। এর মাত্র তিন দিন পূর্বে ভাইসরয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আবেদন জানান ঢাকার নবাব স্যার সলিমুল্লাহ, ধনবাড়ীর নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী, শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

একই বছরের ২৭ মে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য প্রস্তাব করেন ব্যারিস্টার আর. নাথানের নেতৃত্বে ডি আর কুলচার, নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী, নবাব সিরাজুল ইসলাম, ঢাকার প্রভাবশালী নাগরিক আনন্দচন্দ্র রায়, জগন্নাথ কলেজের (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যক্ষ ললিত মোহন চট্টোপাধ্যায়, ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ ডব্লিউ.এ.টি. আচির্বল্ড, ঢাকা মাদরাসার (বর্তমান কবি নজরুল সরকারি কলেজ) তত্ত্বাবধায়ক শামসুল উলামা আবু নসর মুহম্মদ ওয়াহেদ, মোহাম্মদ আলী (আলীগড়), প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যক্ষ এইচ. এইচ. আর. জেমস, প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যাপক সি.ডব্লিউ. পিক, এবং সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ সতীশ্চন্দ্র আচার্য।

১৯১৩ সালে প্রকাশিত হয় নাথান কমিটির ইতিবাচক রিপোর্ট এবং সে বছরই ডিসেম্বর মাসে সেটি অনুমোদিত হয়। ১৯১৭ সালে গঠিত স্যাডলার কমিশনও ইতিবাচক প্রস্তাব দিলে ১৯২০ সালের ১৩ মার্চ ভারতীয়আইন সভা পাশ করে ‘দি ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যাক্ট (অ্যাক্ট নং-১৩) ১৯২০’।

লর্ড রোনাল্ডসে ১৯১৭ হতে ১৯২২ সাল পর্যন্ত বাংলার গভর্নর থাকা কালে নবাব সৈয়দ শামসুল হুদাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আজীবন সদস্য ঘোষণা করেন। সৈয়দ শামসুল হুদার সুপারিশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট মনোনীত করা হয় স্যার এ. এফ. রাহমানকে। ইতোপূর্বে আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়েকার্যরত ছিলেন তিনি।

পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে রফিকুল ইসলামের ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০ বছর গ্রন্থ’ থেকে জানা যায়, নাথান কমিটি রমনা অঞ্চলে ৪৫০ একর জায়গায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রস্তাব দেয়। এই জায়গায়তখন ছিল ঢাকা কলেজ, গভর্নমেন্ট হাউস, সেক্রেটারিয়েট ও গভর্নমেন্ট প্রেসসমূহ।

সৃষ্টির শুরুতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নানা প্রতিকূলতার মুখে পড়ে। এ ছাড়া ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। এর ফলে পূর্ব বাংলার মানুষ হতাশা প্রকাশ করে।

১৯১৭ সালের মার্চ মাসে ইম্পেরিয়াল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলে সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী সরকারের কাছে অবিলম্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিল পেশের আহ্বান জানান।

১৯২০ সালের ২৩ মার্চ গভর্নর জেনারেল এ বিলে সম্মতি দেন। এ আইনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার ভিত্তি। এ আইনের বাস্তবায়নের ফলাফল হিসেবে ১৯২১ সালের ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে।

(ওএস/এসপি/জুলাই ০১, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test