E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বেরোবিতে ৪৪ মাসের বেতন বকেয়া

২০১৭ জুলাই ১২ ১৪:০৪:৪৩
বেরোবিতে ৪৪ মাসের বেতন বকেয়া

বেরোবি প্রতিনিধি : বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ৪৪ মাসের বেতন বকেয়া থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন ৫৯ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। ৪৪ মাস ধরে ধার-দেনা করে চললেও বর্তমানে বেতন পাওয়াটা যেন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।

ভুক্তভোগী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, ২০১৩ সালের মে মাস থেকে ৪৪ মাস ধরে বিনা বেতনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দফতরে দায়িত্ব পালন করেছেন তারা। এসময় অনেকে চড়া সুদের ঋণ, ধার-দেনা এবং দোকানে বাকি করে সংসার চালিয়েছেন। বকেয়া বেতন-ভাতা পেলে তা পরিশোধ করবেন এমন আশায়। কিন্তু ৪৫ মাস পর গত জানুয়ারি মাস থেকে বেতন পেলেও বকেয়া বেতন-ভাতা না পাওয়ায় সুদের বোঝাসহ ধার-দেনা পরিশোধ করতে পারছেন না তারা। একইসাথে দীর্ঘদিন ধরে বাকি টাকা পরিশোধ না করায় মালামাল দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে দোকানদারেরা। বাকি টাকা ফেরত পেতে প্রতিনিয়তই বিভিন্নভাবে চাপ দেওয়া হচ্ছে তাদের।

এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেন, তারা এখনো বকেয়া বেতন-ভাতা পাননি, এটা কোনভাবেই পাওনাদারদের বুঝানো সম্ভব হচ্ছে না। পাওনা পরিশোধ না করায় কেবল তারা মানবেতর জীবনযাপনই করছেন না; রীতিমত নিরাপত্তা হুমকিতে ভুগছেন বলে জানান।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের মে মাস থেকে ৪৫ মাস ধরে পদের অতিরিক্ত জনবল হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দফতরে দায়িত্ব পালন করছিলেন এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গত ২৮ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫২তম সিন্ডিকেট সভায় ৫৯ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদায়ন করা হয়। এরমধ্যে ৫ জন কর্মকর্তা এবং ৫৪ জন কর্মচারী রয়েছেন। ওই সময়ে চলতি জানুয়ারি মাসের বেতন পরিশোধ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে পদায়নের পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও পরিশোধ করা হচ্ছে না তাদের বকেয়া বেতন-ভাতা।

ভুক্তভোগী এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দ্রুত তাদের বকেয়া বেতন-ভাতা পেতে উপাচার্যের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় পাওনাদারদের দ্বারা তারা সামাজিকভাবে চরম হেয় প্রতিপন্ন হওয়াসহ আতঙ্কের মধ্যে দিনপাত করছেন। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিকভাবে দায়িত্বপালনে বাধা সৃষ্টি করছে বলেও জানান।

ওই সময়ে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. একেএম নূর-উন-নবী বকেয়া বেতন-ভাতা ধাপে ধাপে প্রদান করার আশ্বাস দেন। তবে পদায়নের পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো বকেয়া বেতন-ভাতা প্রদানে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেননি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী বলেন, ইতোপূর্বে পদায়নের সময়েই চলতি মাসের বেতনসহ বকেয়া সকল আর্থিক সুবিধাদি পেয়েছেন। কিন্তু ভুক্তভোগী এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কেবল প্রশাসনের উদাসীনতায় তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের পৃথক দুই সংগঠনের একাধিক নেতা বলেন, বকেয়া অর্থ তাদের প্রাপ্য। তবে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. একেএম নূর-উন-নবীকে বিষয়টি বারবার জানালেও বকেয়া পরিশোধে তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি। তাই আমরা এ ব্যাপারে নতুন উপাচার্য এবং ইউজিসির হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইব্রাহীম কবীর বলেন, বকেয়া বেতন-ভাতার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে(ইউজিসি) জানালে তারা এখন বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ করা যাবে না বলে জানিয়েছেন। তবে ইউজিসি বিষয়টি দেখবেন বলে জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে কথা বললে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, বকেয়া বেতন-ভাতার বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(ওএস/এসপি/জুলাই ১২, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test