E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

২৭ জুলাই, ১৯৭১

বিরামপুরে মুক্তিবাহিনী ও পাকবাহিনীর মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়

২০১৪ জুলাই ২৭ ০৯:৩৫:৩৫
বিরামপুরে মুক্তিবাহিনী ও পাকবাহিনীর মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়

উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : ল্যান্সনায়েক মেজবাহ উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে ললিতাবাড়ী থানার তন্তর ও মায়াঘাসিতে পাকিস্তানি সৈন্যের একটি টহলদার দলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষে ১৬ জন পাকসেনা নিহত হয়। অপরদিকে মুক্তিযোদ্ধা ল্যান্সনায়েক মেজবাহ উদ্দিন গুরুতর আহত হন।

চট্টগ্রামে ক্যাপ্টেন মাহফুজের নেতৃত্বে এক প্লাটুন মুক্তিযোদ্ধা পাকবাহিনীর হিয়াকু ঘাঁটি আক্রমণ করে। এই আক্রমণে ৪ জন পাকসেনা নিহত ও অনেকে আহত হয়। পাকসেনারা মুক্তিযোদ্ধদের ঘিরে ফেলার চেষ্টা চালালে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটে নিরাপদে নিজ ঘাঁটিতে ফিরে আসে।

সিলেটে মুক্তিবাহিনী পাকবাহিনীর ছোটলেখা চা বাগান ঘাঁটি আক্রমণ করে। পাকসেনারা পাল্টা আক্রমণ চালালে উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়। দু‘ঘন্টা যুদ্ধের পর পাকসেনারা অবস্থান ত্যাগ করে পালাতে শুরু করে। এ যুদ্ধে ৪ জন পাকসেনা গুরুতর আহত হয়। অপরদিকে মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন গুরুতর আহত হন।

মুক্তিবাহিনীর সিলেটের মনুনদী অবস্থানের ওপর পাকহায়েনার দল অতর্কিত আক্রমণ চালায়। মুক্তিযোদ্ধারা পাল্টা আক্রমণ চালালে উভয় পক্ষের মধ্যে ৪ ঘন্টা যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে ২০ জন পাকসেনা নিহত হয়। অপরদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সোহবান বাবুল শহীদ হন।

সুনামগঞ্জের বিরামপুরে মুক্তিবাহিনী ও পাকবাহিনীর মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষে ৭ জন পাকসেনা নিহত ও অনেকে আহত হয়। অপরদিকে মুক্তিবাহিনীর একজন বীর মুক্তিসেনা শহীদ হন।

সিনেটর প্রক্সমায়ার ও সিনেটর উইলিয়াম স্যাক্সবি মার্কিন সিনেটে বলেন, অবশ্যই বাংলাদেশের ট্র্র্যাজেডির অবসান হওয়া উচিত। গণহত্যা, তা যে ভ’খন্ডেই সংঘটিত হোক না কেন কখনোই সমর্থন পেতে পারে না। ধর্মীয় বিশ্বাসবোধের কারণে হাজার হাজার নরনারী-শিশু বর্বরতার শিকার হবে, তাদের ওপর ধ্বংসযজ্ঞ চলবে, কোনো সভ্য মানুষ তা মেনে নিতে পারে না।
পাকিস্তান সরকার পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের রায়ের প্রতিই কেবল বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করেননি, লাখ লাখ অধিবাসীকে মাতৃভ’মি ত্যাগে বাধ্য করেছেন। এসব হতভাগ্য মানুষের সামনে এখন অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ। পূর্বপাকিস্তানে এখনো বেসামরিক নাগরিকদের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন চলছে। অধিকাংশ মানুষ সেখানে সন্ত্রস্ত অবস্থায় রয়েছে। যে কোনো মূহুর্তে তাদের ওপর চরম ব্যবস্থা নেমে আসতে পারে বলে তারা মনে করছেন। মাতৃভ’মিকে মুক্ত করার জন্য ইতিমধ্যে হাজার হাজার তরুণ গেরিলা বাহিনীতে যোগ দিয়েছে। তারা প্রশিক্ষণ নিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। পাকিস্তান সরকার এ মূহুর্তে প্রকৃত প্রতিদ্বন্দ্বীদের সাথে সত্যিকার রাজনৈতিক মীমাংসার উদ্যোগ না নিলে কেবল পাকিস্তানে নয় গোটা অঞ্চলের ভাগ্য অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পাড়ে।

কুষ্টিয়ার ইউনাইটেড স্কুলে কুষ্টিয়ার মুজাহিদদের প্রথম দল আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ নেয়। কুষ্টিয়া জেলা শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান সৈয়দ আহমদ ও আহমদ আলী মুজাহিদদের বাংলা ও উর্দুতে শপথ বাক্য পাঠ করান।

তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
(ওএস/অ/জুলাই ২৭, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test