E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

১৪ জুন, ১৯৭১

ঢাকা পৌর কর্তৃপক্ষ শহরের ২১০ টি রাস্তার নাম পাল্টে দিয়ে ইসলামী নাম রাখে

২০১৯ জুন ১৪ ০৮:০৭:৫১
ঢাকা পৌর কর্তৃপক্ষ শহরের ২১০ টি রাস্তার নাম পাল্টে দিয়ে ইসলামী নাম রাখে

উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : পাক সেনাদের একটি দল কুমিল্লা থেকে নয়াবাজার হয়ে চৌদ্দগ্রামের দিকে অগ্রসর হলে মুক্তিযোদ্ধারা নয়াবাজারের কাছে তাদের এ্যামবুশ করে। এ অভিযানে পাক সেনাদের ৩০ জন সৈন্য হতাহত হয় এবং তাদের অগ্রগতি ব্যাহত হয় ও তারা পিছু হটে।

মুক্তিবাহিনীর ১৬ জন যোদ্ধার একটি দল কুমিল্লার বুড়িচং থানার ওপর আক্রমণ চালায়। এই সংঘর্ষে পাকসেনাদের ৮ জন নিহত হয়। অপরদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের একজন আহত ও একজন নিখোঁজ হয়। এতে বুড়িচং থানা শত্রুমুক্ত হয় এবং মুক্তিযোদ্ধাদের ঢাকা, কুমিল্লা যাবার গোপন পথ নিরাপদ হয়।

গোপালগঞ্জে মুক্তিবাহিনীর চলবল ঘাঁটির ওপর পাক হানাদারবাহিনী মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ ও টেকেরহাট এই তিনদিক দিয়ে আক্রমণ চালায়। এ আক্রমণে পাকসেনারা মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পের নিকটবর্তী রামশীল গ্রামে ঢুকে পড়ে এবং এর ভিতর দিয়ে গৌরনদী থানার বাসাইল গ্রামের দিকে অগ্রসর হয়। পথে বান্দাবাড়ি খালের কাছে হেমায়েত বাহিনীর সাথে পাকসেনাদের তুমুল সংঘর্ষ হয়। দীর্ঘ যুদ্ধের পর হানাদারবাহিনী পিছু হটে। এ যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা মকবুল শহীদ হনএবং হেমায়েত আহত হন। অপরদিকে পাকবাহিনীর ৫০-এর অধিক সৈন্য নিহত হয় এবং ১৮ জনসৈন্য মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ধরা পড়ে। এ যুদ্ধের পর হেমায়েতবাহিনী কোদালধোয়া গ্রামে তাঁদের ঘাঁটি স্থানান্তর করে।

পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ও সামরিক আইন প্রশাসক লে. জেনারেল টিক্কা খান করাচিতে বলেন, ‘বর্ষা মওসুমে সীমান্ত এলাকায় অনুপ্রবেশের ফলে উদ্ভুত যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সরকার সম্পূর্ণ তৈরি।’ তিনি বলেন, ‘ক্ষমতা হস্তান্তর প্রশ্ন সমাধানের আগে পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি বিবেচনা করে দেখতে হবে। প্রদেশের পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত এবং দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে। অনুপ্রবেশকারীরা সীমান্তে কিছু পুল উড়িয়ে দিয়েছে এবং ধ্বংসাত্মক কাজ করছে।’ তিনি শান্তি কমিটির ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ‘এটা মোটেও রাজনৈতিক সংগঠন নয়। শন্তি কমিটির সাচ্চা পাকিস্তানিরা দুস্কৃতকারীদের হাত থেকে দেশ বাঁচানোর জন্যে আমাকে পূর্ণ সহযোগিতা করছে।’

ঢাকা পৌর কর্তৃপক্ষ শহরের ২১০ টি রাস্তার নাম পাল্টে দিয়ে ইসলামী নাম রাখে। লালমোহন পোদ্দার রোডের নাম হয় আবদুর করিম গজনবী রোড, হরিচরণ রোডের নাম হয় মোহাম্মদ বিন কাশেম রোড। এভাবে শাঁখারী বাজার হয়ে যায় গুলবদন, কিষাণ ব্যানার্জী হয় আলীবর্দী, নবীন চাঁদ হয় বখতিয়ার খিলজী আর কালীচরণ রোড হয় গাজী সালাউদ্দিন রোড।

জাতীয় পরিষদের সাবেক নেতা কান আবদুস সবুর ঢাকায় বলেন, বাংলাদেশ নামের প্রতিশ্রুত সশস্ত্র প্রলোভনে সীমান্ত পার হয়ে যাওয়া খাঁটি পাকিস্তানিরা এখন নরক যন্ত্রনা ভোগ করছে।

প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য এস.বি জামান পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য জনগণকে সশস্ত্র বাহিনীর সাথে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।

তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর


(ওএস/এএস/জুন ১৪, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test