E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

৩১ জুলাই, ১৯৭১

ভারতে শরণার্থীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৭১ লাখ ৩৩ হাজার ৪ জন

২০১৯ জুলাই ৩১ ০০:১৫:০৪
ভারতে শরণার্থীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৭১ লাখ ৩৩ হাজার ৪ জন

উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : ৪র্থ বেঙ্গলের ‘ডি’ কোম্পানীর যোদ্ধারা কসবার উত্তরে পাকসেনাদের গোসাই স্থান ঘাঁটি আক্রমণ করে। ২/৩ ঘন্টাব্যাপী যুদ্ধে পাকসেনাদের কয়েকটি বাঙ্কার ধ্বংস হয় ও অনেক সৈন্য হতাহত হয়। আক্রমণের প্রবল চাপে টিকতে না পেরে পাকসেনারা গোসাইস্থান পরিত্যাগ করে পিছনে পলায়ন করে।

সকালে পাকবাহিনীর একটি কোম্পানী চৌদ্দগ্রাম থেকে এবং আরেকটি কোম্পানী জগন্নাথ দিঘী থেকে ট্রাঙ্করোড হয়ে মুক্তিবাহিনীর নানকারা এ্যামবুশ অবস্থানের দিকে অগ্রসর হয়। পাকসেনারা এ্যামবুশ অবস্থানের কাছাকাছি এলে মুক্তিযোদ্ধারা অতর্কিতে গুলি চালায়। এতে রাস্তার উত্তর ও দক্ষিণে মোট ২৬ জন পাকসৈন্য হতাহত হয়। সংঘর্ষের পর মুক্তিযোদ্ধারা অবস্থান পরিত্যাগ করে হরিশ্বরদার হাটের কাছে নতুন অবস্থান নেয়।

জেড ফোর্সের মেজর মঈনুল হোসেন চৌধুরীর ব্যাটালিয়ানের ‘বি’ ও ‘ডি’ কোম্পানী যথাক্রমে ক্যাপ্টেন হাফিজ উদ্দিন আহমদ ও ক্যাপ্টেন সালাহউদ্দিন মমতাজের নেতৃত্বে ময়মনসিংহ জেলার পাকবাহিনীর কামালপুর ঘাঁটি আক্রমণ করে। এতে পাকবাহিনী আর্টিলারী ও ভারী মর্টারের সাহায্যে পাল্টা আক্রমণ চালায়। এই যুদ্ধে পাকবাহিনীর ৫৯ জন নিহত ও ৬০ জন আহত হয়। অপরদিকে মুক্তিবাহিনীর ‘ডি’ কোম্পানীর কমান্ডার ক্যাপ্টেন সালাহউদ্দিন মমতাজ সহ ৩১ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং ৬৫ জন যোদ্ধা আহত হয়। এই অভিযানে মুক্তিযোদ্ধারা পুরোপুরি সফলকাম না হলেও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এটি কামালপুরের যুদ্ধ হিসেবে খ্যাত।

মুক্তিবাহিনীর দুই কোম্পানী যোদ্ধা ব্রহ্মপুত্র নদীর পারে পাকবাহিনীর বাহাদুরাবাদ ঘাট অবস্থানের ওপর তুমুল আক্রমণ চালায়। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে একঘন্টা গুলি বিনিময় হয়। এই যুদ্ধে পাকবাহিনীর গোলাবারুদ বোঝাই একটি বার্জ পানিতে ডুবে যায়এবং ১০০ জন পাকসেনা হতাহত হয়। পরে মুক্তিযোদ্ধারা ব্রহ্মপুত্র নদ পার হয়ে ২ মাইল ভিতরে একটি চরে অবস্থান নেয়।

জাতিসংঘের মহাসচিব উ‘থান্টের কাছে প্রেরিত বার্তায় বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র দফতর জানায়, দেশের জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারকে পাশ কাটিয়ে শরণার্থী সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।

পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অত্যাচারে পূর্ব পাকিস্তানের সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে আশ্রয়গ্রহণকারী শরণার্থীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৭১ লাখ ৩৩ হাজার ৪ জন।

রাওয়ালপিন্ডিতে জনৈক সামরিক মুখপাত্র ঘোষণা করেন, পাকিস্তান সরকার শিগ্গির বেআইনী ঘোষিত আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানের দেশদ্রোহিতামূলক কর্মকান্ডের ওপর একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করবে।

গেরিলা আক্রমণের আশঙ্কায় সামরিক বাহিনী ঢাকা শহর ও শহরতলীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে।

মৌলভীবাজারে মিসিরুল্লাহ, এনামুল্লাহ, জালালউদ্দিন প্রমুখ স্থানীয় দালালরা একত্র হয়ে এলাকার ৯ জন করে সদস্য নিয়ে ৩টি সাব কমিটি গঠন করে। কমিটির কাজ নির্ধারিত হয় শান্তি কমিটির বিস্তৃতি বাড়ানো এবং মুক্তিযোদ্ধাদের ধ্বংস করতে বিভিন্ন এলাকায় দালালদের মধ্যে সমন্বয় ও উৎসাহ সৃষ্টি করা।

তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
(ওএস/এএস/জুলাই ৩১, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test