E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

২১ আগস্ট, ১৯৭১

সুন্দরবনে মুক্তিবাহিনী ও পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়

২০১৪ আগস্ট ২১ ০০:৫৪:১৯
সুন্দরবনে মুক্তিবাহিনী ও পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়

উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : মুক্তিবাহিনীর একটি টহলদার দল কুমিল্লার উত্তরে গাজীপুর রেলওয়ে সেতুর কাছে পাকবাহিনীর একটি দলকে এ্যামবুশ করে। এই আক্রমণে একজন লেফটেন্যান্টসহ ৬ জন পাকসেনা নিহ হয় এবং অবশিষ্ট পাকসেনারা পালিয়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধারা প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ ম্যাপ দখল করে।

পাকবাহিনীর এক কোম্পানি সৈন্য নরসিংদির নিকটস্থ মুক্তিবাহিনীর গেরিলা অবস্থানের দিকে অগ্রসর হলে পথিমধ্যে গেরিলা দল তাদের ওপর অতর্কিত আক্রমণ চালায়। প্রায় একঘন্টা গোলাগুলির পর পাকসেনারা গোলাগুলি বন্ধ করে সামনের দিকে অগ্রসর না হয়ে পিছু হটে।

সুন্দরবনে মুক্তিবাহিনী ও পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। যুদ্ধে মুক্তিসেনাদের নেতৃত্ব দেন রাইফেলস-এর ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদা।

পূর্ব পাকিস্তান সামরিক সরকার আনসার অধ্যাদেশ ১৯৪৮ বাতিল করে ‘রাজাকার অধ্যাদেশ ১৯৭১’ জারি করেন।

জাতিসংঘের মহাসচিব উ’থান্ট আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানের গোপন বিচার বন্ধ রাখার জন্য যে বিবৃতি দেন, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় পরিষদ তার সমালোচনা করে বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব এ ব্যাপারে ক্ষমতা বহিভর্’ত হস্তক্ষেপ করেছেন।
পরিষদে গৃহীত এক প্রস্তাবে বলা হয়, শেখ মুজিবুর রহমানের বিচার অনুষ্ঠান পাকিস্তান সরকারের নিজস্ব বিষয়। এ ব্যাপারে জাতিসংঘ মহাসচিবের হস্তক্ষেপ করার কোন অধিকার নেই।

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে মওলানা আবদুর রহিম জানান, হানাদার বাহিনীর তৎপরতা যথেষ্ট নয়। তিনি বাঙালীদের ওপর ৬০ ও ৭৮ নং সামরিক বিধিকে আরো নির্মমভাবে প্রয়োগের সুপারিশ করেন।

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের নিয়মিত কথিকা ‘বিশ্বজনমত’ :

.............বাংলাদেশের শহরে নগরে বাজারে বন্দরে প্রতিটি পল্লীতে আজ শত্রুহননের দুর্বার লড়াই চলছে। আর এই লড়াইয়ে কুলিয়ে উঠতে না পেরে আমাদের মৃত্যুঞ্জয়ী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে প্রচন্ড মার খেয়ে পাকিস্তানি সামরিক চক্র নতুন এক ফন্দি আঁটলো। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে তারা ভারত-পাকিস্তান সমস্যা বলে চিহ্নিত করে কাজ হাসিল করতে চেয়েছিল। তারা ভেবেছিল আমাদের দেশের এই মুক্তিযুদ্ধকে তারা যদি ভারত-পাকিস্তান বিরোধ বলে চিহ্নিত করতে পারে তাহলে বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের মুক্তিসংগ্রামের প্রতি আজ যে বিশ্ব জনমত গঠিত হয়েছে, তাকে কিছুটা প্রশমিত করা যাবে। পাকিস্তানি সামরিক চক্র এই উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের অধিকৃত এলাকার সীমান্তে এবং ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উস্কানিমূলক তৎপরতা শুরু করলো। কিন্তু বিশ্বের সচেতন মানুষ পাকিস্তানি সামরিক চক্রের এই দুরভিসন্ধিটা বুঝে নিয়েছে।
সোভিয়েত প্রধানমন্ত্রী আলেক্সী কোসিগিন পাকিস্তানি ফ্যাসিবাদী সামরিক চক্রের এই ঘৃণ্য দুরভিসন্ধির কথা জানতে পেরে বাংলাদেশে গণহত্যা, ধ্বংসযজ্ঞ ও নারী নির্যাতনের নায়ক পাকিস্তানের স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়াকে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় হুঁশিয়ারী করে দিয়ে বলেছেন : সাবধান! ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ বাধানো পাকিস্তানের পক্ষে আত্মহত্যার সামিল হবে।

তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
(ওএস/অ/আগস্ট ২১, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test