অতলান্ত পিতৃস্মৃতি পর্ব ৭
প্রবীর বিকাশ সরকার : [ভূমিকা : আমার ৫৫ বছরের জীবনে বাবার সঙ্গে কেটেছে মাত্র ২৪-২৫টি বছর! জ্ঞান হওয়ার পর থেকে যেভাবে বাবাকে দেখেছি, চিনেছি, জেনেছি এবং বুঝেছি তার মূল্যায়নই হচ্ছে এই আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস বা স্মৃতিকথা ‘অতলান্ত পিতৃস্মৃতি’---এমন করে খোলামেলা খুঁটিনাটি কোনো স্মৃতিকথা আর কোনো বাঙালি লিখেছেন তার জন্মদাতা পিতৃদেবকে নিয়ে আমার অন্তত জানা নেই।]
এই জন্যেই বাবা বাজার-হাট করতে চাইতো না। দোকানপাটে যেতো না। মা যেতো, না হয় অফিসের কোনো কর্মচারীকে পাঠাতো। বাবা বাসা আর অফিস। আমার খুব খারাপ লাগতো। এটা তো এক ধরনের ঘুষ, অন্যায় কাজ! পুলিশ বলেই কি এটা করছেন ওরা? এই প্রশ্নটির উত্তর পেয়েছিলাম একদিন কৃষ্ণদার কাছে। শুনে থ হয়ে গিয়েছিলাম। বাবাকে নতুন করে আবিষ্কার করেছিলাম সেদিন। কীভাবে ব্যাখ্যা করে, কী ধরনের মানুষ বলবো বাবাকে সত্যিই ভেবে পাইনি! সরকারি অফিসার যারা সচিব-আমলা বলে পরিচিত তাঁরা তো আসলে জনগণের চাকর।
জনগণের পরিশোধিত করের টাকায় তাঁদের জীবন চলে। এঁরা যে খুব একটা বুদ্ধিমান তাও নয়। এঁরা স্রেফ রাষ্ট্রযন্ত্রের করণিক। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় যে এঁরাই রাষ্ট্রের কর্ণধারের মতো আচরণ করেন, মানুষকে সহজেই অবজ্ঞা করেন, দিনের পর দিন কাজের ফাইল আটকিয়ে রাখেন, অবৈধভাবে উৎকোচ গ্রহণ করেন যা সম্পূর্ণভাবেই নিয়ম-নীতি বহির্ভূত, অনুচিত এবং এই ধরনের মানসিকতা হীনমন্যতা ছাড়া আর কিছুই নয়। রাষ্ট্রের একজন কর্মচারী হিসেবে বাবার মধ্যে কোনোদিন এই ধরনের অনৈতিকতা দেখতে পাইনি। বর্ষার সময় যেদিন দেখতাম সন্ধেবেলা বৃষ্টি বা ঝড় আসবে এমন একটা আয়োজন আকাশে-বাতাসে তখন বাবার জন্য ভীষণ দুশ্চিন্তা হতো আমার। ৮টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে ছাতা আর হারিকেন হাতে নিয়ে অফিসে চলে যেতাম। গিয়ে দেখতাম কেউ নেই। বাবা একা কাজ করছে।
কৃষ্ণদা রান্না চড়িয়েছে নিজের ঘরে। বাবার কাছে বসে দরজার দিকে তাকিয়ে দেখতাম আকাশে ভয়ানক বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। ঠান্ডা বাতাস বইতে শুরু করেছে খুব জোরেসোরে। তার মানে শোঁ শোঁ শব্দ করে বৃষ্টিটা ধেয়ে আসছে। এবং দ্রুত এসেও যেতো। হুড়মুড় করে সেকি তুমুল বৃষ্টি! টিনের চাল ভেঙ্গে পড়ার মতো অবস্থা। কয়েক মিনিটের মধ্যেই অফিস প্রাঙ্গণ জলে থই থই। ভাঙা এবড়ো-থেবড়ো বারান্দায় উঠে যেতো ঘোলা জল। কৃষ্ণদা দ্রুত এসে জানালা-দরজা বন্ধ করে দিত। বিদ্যুৎ চলে গিয়ে নিকষ অন্ধকারে ডুবে যেতো সারা পৃথিবী। বাবা মোমবাতি জ্বালিয়ে ফাইলের মধ্যে ডুব। কাজকে বাবা ছুটি দিত না। বাইরে দ্রুম-দ্রাম, কড় কড়, মড় মড় বিকট শব্দে বাজ পড়ছে এখানে সেখানে। যেন প্রলয় শুরু হয়েছে। উপড়ে ফেলবে পৃথিবী এমন তান্ডব দেড়-দুই ঘন্টার জন্য। তখন ভেজা ধুলোর অদ্ভুত এক গন্ধ উঠে এসে নাকে লাগতো আমার। বাবা আমাকে বলতো, ‘কৃষ্ণর সঙ্গে গল্প করো বৃষ্টি একটু ধরুক তারপর বাসায় যাবো।’ আমি বাবার কথামতো কৃষ্ণদার ঘরে গিয়ে বিছানায় বসতাম।
ঠিক এমনি এক বর্ষারাতে কৃষ্ণদাকে আস্তে করে জিজ্ঞেস করলাম, ‘কৃষ্ণদা, সত্যি করে বলবে কী, বাবা কি আসলেই ঘুষ খায় অন্য অফিসারদের মতো?’ কৃষ্ণদা আমার দিকে বিষণ্ন দৃষ্টিতে তাকিয়ে হাসলো, ‘তোমার কী মনে হয় খোকাবাবু? আমি বললাম, ‘আমি তো জানি না। তাই জিজ্ঞেস করছি। তুমি তো নিশ্চয়ই জানো।’ একটা সিগারেট ধরিয়ে এক মুখ ধোঁয়া ছেড়ে কৃষ্ণদা বললো, ‘স্যার যদি ঘুষ নিত তাহলে এই শহরে স্যারের একটি বাড়ি, জায়গাসম্পত্তি থাকাটা কোনো ব্যাপার ছিল না। তুমি ভালো স্কুলে পড়তে পারতে। বৌদি দামি দামি শাড়ি, গয়নাগাটি পরতে পারতো। আর ঐ বিহারিক্যাম্পের পেছনে বস্তির মতো নোংরা জায়গায় একটি মাত্র ঘরে কী থাকতে তোমরা বছরের পর বছর? ওখানে কী মানুষ থাকতে পারে! বাবুর আশেপাশের কয়েকজন পুলিশ অফিসারের বিলাসী জীবনযাপন তো নিজের চোখেই দেখতে পাচ্ছো। স্যারের মতো মানুষ এই জমানায় নেইরে দাদা! স্যারের বেতন খারাপ নয়। আর উনি মিতব্যয়ী মানুষ। কাবে যান না, মদ খান না, তাস খেলেন না। কিছুই কেনাকাটা করেন না। ওই পুলিশের পোশাক, একসেট সিভিল ড্রেস আর সস্তা কিংস্টর্ক সিগারেট এই তো বিলাসিতা। তোমাদের বাসায় একটি রেডিও নেই। দুপুরে খান দুটো সিঙ্গাড়া না হয় কেক আর ওই তো চা।
অফিসের সবাই চলে যায় সন্ধ্যা ৫টা থেকে ৬টার মধ্যে, স্যার একা কাজ করেন প্রতিদিন রাত ১০টা-১১টা-১২টা পর্যন্ত। সাপ্তাহিক ছুটির দিন রবিবার সেদিনও কাজ করেন। বড় পরিশ্রমী মানুষ, এমন মানুষ আমি আমার এই জীবনে দেখিনি! তবে এটা ঠিক যে, উনি যেখানে আছেন সেখানে টাকার কোনো অভাব নেই। সেখানে মামলা আর মামলার স্তুপ। প্রচুর টাকা উনি সহজেই কামাই করতে পারেন। তাতো করতে দেখি না। কাজ করে দিলে যে যা দেয় তাই নেন। কিন্তু সে টাকা তিনি বাড়িতে নিয়ে যান না। আমি সব দেখি, সব জানি। উনি সেই টাকা দিয়ে দেন কাদের জানো? এই ধরো আমাকে, সফিককে দোকান করে দেন, কানা, বোবা, ল্যাংড়া আর গরীব বিহারিদের দেন, গরীব লোকের ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার খরচ, কারো মেয়ের বিয়ের টাকা নেই তাকে সাহায্য করেন। কতদিন পকেট থেকে টাকা বের করে আমার হাতে দিয়ে বলেন, ‘কৃষ্ণ দ্যাখ্তো বারান্দায় ছেলেমেয়ে নিয়ে বসে আছে মহিলারা ওদেরকে কিছু কিনে এনে দে। আহা মুখগুলো শুকিয়ে আছে!’ আসামীর সঙ্গে সাাৎ করার জন্য গ্রাম থেকে আগত বৌঝিদের তিনি কম সাহায্য করেন! আর সবচেয়ে যেটা উনি দীর্ঘবছর করে আসছেন সেটি হলো: অসংখ্য অভাবী কনস্টবলকে আর্থিক সাহায্য করা। কত টাকা আর সাধারণ পুলিশরা বেতন হিসেবে পায় বলো? প্রত্যেকের রয়েছে ৪-৫টি করে বালবাচ্চা। নিজের রেশনটা পর্যন্ত স্যার ওদেরকে দিয়ে দেন! এদেশের পুলিশের যে দরিদ্রদশা তা কেউ কোনোদিন দেখেও দেখে না, জেনেও না জানার ভান করে। এরা তো ঘুষ খেতে পারে না, নিলেও কত আর নিতে পারে যৎসামান্য ছাড়া তো নয়! এজন্যেই স্যারকে সবাই এখানে রাখতে চায়। স্যারের উপর নির্ভর করে থাকে।
আর স্যার যে কাজ জানেন এমন কেউ জানে নাকি! ইংরেজি দূরের কথা বাংলাও ঠিকমতো লিখতে পারে না অফিসাররা। আইনজীবীরা কী আইন জানেন, স্যার ওদেরকে ধমকিয়ে-ধামকিয়ে শেখান। এসব যাঁরা জানার তাঁরা জানে। শহরে উনার এত সম্মান কেন? চুরি, ডাকাতি, স্মাগলিং, মারামারিকাটাকাটি তো লেগেই আছে। অপরাধীদের আইনী সাহায্য-সহযোগিতা করে কে? তোমার বাবা। কত নেতাকে তিনি বাঁচিয়ে দিয়েছেন জেল-জরিমানা থেকে আমরা জানি! আসামীরা জামিন পেয়ে, লঘুশাস্তি পেয়ে খুশি হয়ে যা দেয় সেটা না নিলে আমরা চলি কি করে? এটা বাস্তবতা। এটা তোমার চিন্তা করে লাভ নেই খোকাবাবু। তুমি তোমার বাবাকে নিয়ে গর্ব করতে পারো এটাই শুধু বললাম। পড়ালেখা করে নিজের পায়ে দাঁড়াও।’ কৃষ্ণদার মুখে সেই রাতে বাবার কর্মগুণ আর চারিত্রিক গুণাগুণের পরিচয় শুনে সত্যি অভিভূত হয়ে গেলাম! পরে অবশ্য এই কথাগুলোর প্রমাণ পেয়েছিলাম বিভিন্ন জনের বক্তব্যেও। এখনো কুমিল্লা শহরের যারা প্রবীণ তাঁদের সঙ্গে দেখা হলে বাবার প্রশংসা করেন অকুন্ঠচিত্তে।
যাই হোক, পাক-ভারত যুদ্ধের পর পূর্বপাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল ও উতপ্ত হতে শুরু করেছে। শহরে মিছিল, মিটিং হচ্ছে প্রায়ই। ছাত্ররা বিুদ্ধ হয়ে উঠছে। পুলিশ বিভাগেরও দায়দায়িত্ব বেড়ে চলেছে। এভাবে ঊনসত্তর সাল এসে গেল। ভীষণ অস্থির পূর্ব পাকিস্তান। ঢাকা থেকে রাজনৈতিক উত্তাপ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। কুমিল্লাও তার ব্যতিক্রম নয়। মিছিল, মিটিং, বিােভ সমাবেশে ছাত্রদের সঙ্গে পুলিশের দাঙ্গা-হাঙ্গামা বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। বাবারও ব্যস্ততা বেড়ে গেছে। প্রায়ই রাতে যেতে হয় পেট্রোলে। ঘরে তখন আমরা মা, আমি, ছোটভাই ও ছোটবোন রীনা। মা উৎকন্ঠায় ঘুমুতে পারতো না। আমারও মাঝেমাঝে ঘুম ভেঙ্গে যেতো, ছোটভাইয়ের পাশে বাবা ঘুমুতো সেখানটা খালি। বুকটা কেমন করে উঠতো অজানা আশঙ্কায়। বাবা ভোরবেলা ফিরে এসে একটু ঘুমিয়ে আবার কোর্টে চলে যেতো। ফিরতে ফিরতে মধ্যরাত। একদিন বাবা বলল, ‘দেশের অবস্থা একদম ভালো নয়। মিছিল মিটিংএ যাবে না। আর রাতে আমাকে নিতে আসারও কোনো দরকার নেই। কারণ বিহারিদেরকে প্ররোচিত করছে সরকার। আমি হিন্দু এবং আওয়ামী লীগের সমর্থক এরা এটা ভালো করেই জানে, এদের মধ্যেও খারাপ লোক থাকতে পারে। বলা যায় না কখন কী হয়! সাবধানে চলাফেরা করতে হবে।’ বাবার এই কথায় আমার দুশ্চিন্তা আরও বেড়ে গেল। বলে কী বাবা! এসবের অর্থ তখনোও ভালো বুঝি না। আহত হলাম এই ভেবে যে, রাতে বাবাকে এগিয়ে আনার জন্য যেতে পারবো না! বাবার কথাই বিনা উত্তরে শুনতে হলো কারণ পিতৃনির্দেশ শিরোধার্য। ১৯৬৯ সাল। নিদারুণ টালমাটাল পুরো দেশ। সবাই অস্থির, সন্ত্রস্ত, তটস্থ। দিনের বেলা, সন্ধেবেলা এবং রাতের বেলা মিছিল আর মিছিল।
রাতের বেলা আকাশ কাঁপিয়ে মশাল মিছিল আসে আমরা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে দেখি। তেমন কিছু বুঝতে না পারলেও বুঝতাম মিছিলকারীরা বাঙালি জাতির স্বাধীনতা দাবি করছে। সেকি দীর্ঘ মিছিল! মনে হতো কুমিল্লা শহরের সব মানুষ নেমে পড়েছে রাস্তায়! অধিকাংশই হাইস্কুল ও কলেজের ছাত্রছাত্রী এবং কলকারখানার শ্রমিক। ঠিক এই সালেরই মাঝামাঝি সময়ে পুকুরের উত্তর পাড়ে একটি একতলা নতুন দালান উঠলো। অন্যপাশে একই মালিকের বাঁশের বেড়াও’লা টিনের ঘর আগেই উঠেছে। মার খুব ইচ্ছে ওই দালানটিতে ওঠার। আর কতকাল এই নোংরা পরিবেশে! দুর্গন্ধে টেকা দায়, স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর।। আসলে অবস্থা এরকম ছিল না আগে। ১৯৪৭ সালে ভারতভাগের পর দলবেঁধে যখন বিহারিরা এলো তাদের জন্য ক্যাম্প তৈরি করলো সরকার। তখন থেকেই নোংরা হতে শুরু করলো পরিবেশ। খালটিও ছিল সবসময় টলটলে জলে ভর্তি, মাছও ছিল প্রচুর। সে যাইহোক, মার মন উঠে গেল সন্তানদের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে। আর যেহেতু ভাড়াও তেমন বেশি নয় মা ওটাতেই উঠে যেতে চাইল। তবে বাড়ির কাজ তখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি। মেঝে পাকা করা হয়নি, প্লাস্টারও বাকি। খাবারের জল বলতে টিউবওয়েল। মা বাড়ির মালিক জুনাব আলী সাহেবের সঙ্গে কথা বলে পাকা করে ফেললো। তারপর সত্যি সত্যিই এক রোববার আমরা ওই বাসায় গিয়ে উঠলাম। ভানুমামার বাড়ি ছেড়ে আসাতে সবারই মন খারাপ হয়েছিল।
আমাদের নতুন বাসায় আসার বছর দুয়েক আগেই পাশের টিনসেডের বাড়িতে থাকেন চাঁদপুরের একজন ভদ্রলোক হরেন্দ্রচন্দ্র দাস জীবনবীমা কোম্পানির একজন রিপ্রেজেন্টিটিভ। ভরাট গলার অধিকারী দীর্ঘদেহী সর্বদা সাদা খদ্দরের ঢোলা পাঞ্জাবি-পাজামা পরা ভদ্রলোক ছিলেন খুবই মিশুক। তাঁর পাঁচ ছেলেমেয়ে। পরিবারটি ছিল খুবই সংস্কৃতবান। বড়ছেলে কালিচরণ দাস ওরফে সমাধী দাস ছিলেন ঘোর তরুণ কমিউনিস্ট কর্মী, তারপর মেয়ে রেখা, ছেলে তপন, এর পর স্বপন এবং ছোটমেয়ে শিখা আমার সমবয়সী। রেখাদি ও শিখা সত্যিই ছিল অসম্ভব সুন্দরী। ট্যাঁরা হলেও রেখাদির চোখ দুটো ছিল বড় এবং খয়েরিরঙা ফলে দারুণ আকর্ষণীয় ছিল দেখতে। স্বপন ও শিখা দুজনেই কচি-কাঁচার মেলার সদস্য। খুব দ্রুত এই পরিবারটি আমাদেরকে আপন করে নিল। আমিও এই প্রথম অন্যরকম একটি পরিবেশ পেলাম যাকে বলে সম্মানজনক এবং মনোমুগ্ধকর। দুবাড়ি মিলিয়ে আমরা সরস্বতী পুজোও করলাম ঘটা করে বছরের শেষ দিকে। দারুণ আনন্দ করলাম। বাবারও আগ্রহ ছিল দেখার মতো, যদিওবা বাবাকে আদৌ ধর্মটর্ম পালন করতে কখনো দেখিনি। কোনোদিন আমাদেরকে কোনো পুজোতে বা মন্দিরে নিয়ে যায়নি।
কোনো ধর্মগ্রন্থও পড়তে দেখিনি। অনেক বছর পরে বাবা অবসর নেয়ার পর একবার জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘তুমি ধর্মকে কিভাবে দেখো বোবা?’ বাবা হাসতে হাসতে বলেছিল, ‘ধর্ম আবার কী? ওসব নিয়ে কোনোদিন চিন্তাই করিনি। আমি ধর্ম বলতে বুঝি, এই কলম আর কাগজ।’ এই কথা শুনে অবাকই হয়েছিলাম! রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, ধর্ম দুর্বল মানুষের জন্য, শক্তিশালীর জন্য নয়। বাবাও মনে হয় সেই রকম শক্তিশালী মানুষ। তবে তথাকথিত ধর্মীয় পুরোহিত, ঠাকুরঠুকুরদের চেয়ে মানবতাবাদী সংস্কারকদের প্রতি শ্রদ্ধাভক্তি বাবার অটুটই ছিল যেমন রাজা রামমোহন রায়, শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব, শ্রীরাম ঠাকুর, শ্রীলোকনাথ ব্রহ্মচারী, স্বামী বিবেকানন্দ, শ্রীচৈতন্য, শ্রীঅরবিন্দ ঘোষ প্রমুখ। যাইহোক, এই দালানবাড়িটি খুব পছন্দ হয়েছিল আমার।
চারটি কবিশিষ্ট ইংরেজি এল প্যাটার্নের বাসা। সারাদিন প্রচুর বাতাস। দীর্ঘ খোলা বারান্দা। সামনে পুকুরের পাড় ঘেঁষে কয়েকটি চাঁপাকলা এবং কলাবতী ফুলের গাছ। তিনটি ক ছোট, একটি ক বেশ বড় সেটাতে বাবা-মা ও ছোটভাই একটি বড় খাটে ঘুমোয়। আর পূর্বদিকের কোণের কটি আমার। একটি সিঙ্গেল খাট কিনে দিয়েছিল বাবা। আর প্রথম কটি বৈঠকঘর, এর পরেরটা মালামাল রাখার স্টোর রুম। বাসার পেছনে রান্নাঘর, টিউবওয়েল এবং টয়লেট। স্নানের জন্য তো পুকুর, বেড়ার ঘের দেয়া ঘাট। শিখাদেরটা ছিল উন্মুক্ত। কিন্তু ওরা দুবোন ও পিসিমা আমাদের এখানেই স্নান করতেন। আমি তো নিজের ক পেয়ে যেন আকাশের চাঁদ পেলাম। বাবাকে মনে মনে ধন্যবাদ দিলাম আবার চমৎকার একটি বাসা ও পরিবেশ উপহার দেবার জন্য যা পুলিশ লাইনের বাসার চেয়েও ভিন্নরকম সুন্দর। বলতে গেলে আমাদের বাসা থেকে শুরু হয়েছে ভদ্রসমাজ। ...চলবে
আলোকচিত্র : ছবিতে শিখার সেজদা স্বপন কুমার দাস । বাবার প্রিয় লু বুকের ভেতরে বাংলাে মেমো।
(এএস/জুলাই ০৪, ২০১৪)
পাঠকের মতামত:
- প্রাক্–প্রাথমিকে শ্রেণি কার্যক্রম শুরুর তারিখ ঘোষণা
- অবশেষে গোপালগঞ্জে স্বস্তির বৃষ্টি, জনজীবনে প্রশান্তি
- ফরিদপুর মধুখালিতে বজ্রপাতে ১ জনের মৃত্যু
- স্কুলের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনে ভোটার তালিকায় জালিয়াতি
- ধামরাইয়ে কালবৈশাখী ঝড়ে দেয়াল চাপায় ২ জনের মৃত্যু
- ৪৭ ঘণ্টা পর শতভাগ নিয়ন্ত্রণে সুন্দরবনের আগুন, কাজ চলবে আরও ৩ দিন
- কেন্দুয়ায় কাল বৈশাখীর ছোবলে লণ্ডভণ্ড স্কুলের ঘর
- শৈলকুপায় ছাগলে ঘাস খাওয়া কেন্দ্র করে হামলায় আহত ২
- কালিয়াকৈরে বন বিভাগের অভিযানে কয়লা তৈরির ২০ চুলা ধ্বংস
- অবশেষে সালথায় স্বস্তির বৃষ্টি
- যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়ক যেন মরণ ফাঁদ
- ‘ফরিদপুর সদরে ফকির বেলায়েতের মোটরসাইকেল মার্কার গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে’
- গণমাধ্যম সাপ্তাহের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে রাজবাড়ীতে স্মারকলিপি প্রদান
- আমেরিকায় বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং মানবাধিকার
- গণমাধ্যম সপ্তাহের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে পাংশায় স্মারকলিপি প্রদান
- বেলকুচিতে জনমত জরিপে এগিয়ে বদিউজ্জামানের মোটরসাইকেল
- নদীতে গোসল করতে গিয়ে বজ্রপাতে প্রাণ গেল সনজিবের
- ‘উপজেলা নির্বাচনে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলেই শাস্তি পেতে হবে’
- ‘বিএনপি বিদেশি প্রভুদের কথায় নির্বাচন বর্জন করেছে’
- লালপুরে পৌর আ.লীগ নেতা মঞ্জু হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
- চাটমোহরে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দিলেন আতাউর রহমান
- হাজীগঞ্জে সড়কে প্রাণ গেলো বাবা-ছেলের
- একীভূত না হয়ে নিজেরাই সবল হতে চায় ন্যাশনাল ব্যাংক
- ভাইয়ের চাপাতির কোপে জখম সাবেক র্যাব সদস্য মারা গেছেন
- দুর্নীতিবাজ সভাপতির অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল প্রতিবাদ সমাবেশ
- টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জঙ্গি হামলার হুমকি
- টুঙ্গিপাড়ায় কমিউনিটি ক্লিনিকের উদ্বোধন
- ঝিনাইদহ-১ আসনের উপ-নির্বাচন স্থগিত
- কাপাসিয়ায় কালবৈশাখী ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি
- মঙ্গলবার থেকে প্রাথমিকে স্বাভাবিক রুটিনে ক্লাস
- ‘মিল্টন সমাদ্দার ইয়াবা সেবন করে শিশু ও বৃদ্ধদের পেটাতেন’
- বিদ্যুৎস্পর্শে নয়, শিশু মাইশাকে গলাটিপে হত্যা করেন মা
- নড়াইলে পাঁচ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী গ্রেফতার
- নিজেকে নিরপেক্ষ রাখার ঘোষণা দিলেন নূর মোহাম্মদ এমপি
- নিজেদের প্রার্থীর বাইরে ভোট দিলে প্রতিহত করবেন সাবেক এমপি!
- সালথায় সাপের কামড়ে যুবকের মৃত্যু
- ‘বাংলাদেশ ফেস্টিভ্যাল’ এ লন্ডন মাতাতে যাচ্ছেন জেমস
- ‘বিএনপি অগণতান্ত্রিক পন্থায় ক্ষমতায় আসতে চায়’
- রোহিঙ্গা মামলা চালাতে আর্থিক সহায়তায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান
- গাছকাটা ও লাগানোর বিষয়ে বিধিমালা করতে রুল
- ‘সম্পদ অর্জনে এমপিদের পেছনে ফেলেছেন চেয়ারম্যানরা’
- মিল্টনের আশ্রমে থাকা ব্যক্তিদের দায়িত্ব নিচ্ছে শামসুল হক ফাউন্ডেশন
- আর্জেন্টিনাকে প্রথম বিশ্বকাপ জেতানো কোচ মেনত্তি আর নেই
- মাইকিং করে চিপসের প্যাকেট ও ডাবের খোসা কিনলেন মেয়র
- চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদককে শোকজ
- সাভার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রাজীবকে শুভেচ্ছা
- গোপালগঞ্জে ২৮ হাজার টাকার জাল নোটসহ ব্যবসায়ী গ্রেফতার
- গোপালগঞ্জে ৫ বছরের শিশু ধর্ষণের অভিযোগে মাদ্রাসা ছাত্র গ্রেফতার
- বিদেশ যাওয়ার অনুমতি পেলেন বিএনপি নেতা আমান
- ‘আওয়ামী লীগ ভাঙা কলসি, বাজছে বেশি’
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- সিলেটের ভ্রমণ কাহিনী
- শুধু প্রভাবশালীদের পক্ষেই আইন!
- অম্ল-মধুর যন্ত্রণায় অপু বিশ্বাস
- লাইন ধরে খেতে হয় লিখনের জগা খিচুড়ি !
- আমার বোন শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি : চিনে নিন কে এই বরকত!
- 'ইতিহাসের ইতিহাস'
- ধনী হওয়ার আট কার্যকর উপায়
- মেয়ে পটানোর কৌশল!
- লক্ষাধিক রাখাইন জনগোষ্ঠী আড়াই হাজারে নেমে এসেছে
- উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের নতুন যাত্রা ১ বৈশাখ
- লোভী মানুষ চেনার সহজ উপায়
- আমায় ক্ষমা কর পিতা : পর্ব ১৪'তোমার সহজাত উদারতা তোমাকে আকাশের সীমানায় উন্নীত করলেও তোমার ঘনিষ্ঠ অনেকের প্রশ্নবিদ্ধ আচরণ তোমার নৃশংস মৃত্যুর পথে কোনই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি'
- বাংলা বই পড়ার ওয়েবসাইট
- শাকিবের নায়িকা শ্রাবন্তী, অপুর নায়ক জিৎ
- মঠবাড়িয়ায় ৯ বছরের শিশুকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা
- হুমায়ূনের মৃত্যুর কারণ মদের পার্টি !
- দেশে ফিরছেন তারেকস্ত্রী জোবায়দা রহমান
- বোরকা পরা মেয়ের গণধর্ষণের ভিডিও নিয়ে সিলেটে তোলপাড়
- ইউটিউবে নায়লার আত্মপ্রকাশ
- নেপালের ভূমিকম্প প্রাকৃতিক নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্টি !
- বিএনপির আন্দোলন হচ্ছে দলের অভ্যন্তরে !