E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

অতলান্ত পিতৃস্মৃতি পর্ব ১২

২০১৪ জুলাই ০৯ ১৯:২৮:৫৫
অতলান্ত পিতৃস্মৃতি পর্ব ১২

প্রবীর বিকাশ সরকার : [ভূমিকা : আমার ৫৫ বছরের জীবনে বাবার সঙ্গে কেটেছে মাত্র ২৪-২৫টি বছর! জ্ঞান হওয়ার পর থেকে যেভাবে বাবাকে দেখেছি, চিনেছি, জেনেছি এবং বুঝেছি তার মূল্যায়নই হচ্ছে এই আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস বা স্মৃতিকথা ‘অতলান্ত পিতৃস্মৃতি’---এমন করে খোলামেলা খুঁটিনাটি কোনো স্মৃতিকথা আর কোনো বাঙালি লিখেছেন তার জন্মদাতা পিতৃদেবকে নিয়ে আমার অন্তত জানা নেই।]

যুদ্ধের চূড়ান্ত সময় উপস্থিত হলো। ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলো। প্রতিদিন আকাশে যুদ্ধবিমান বিকট শব্দ তুলে ওড়াওড়ি করে। গোলাগুলি, সেল, মর্টার ছোঁড়াছুঁড়ির তো বিরাম নেই। শহর থেকে সেনা সরিয়ে পাঠানো হচ্ছে সীমান্তে। সারি সারি ট্রাক যেতে দেখতাম গ্রান্ড ট্রাঙ্ক রোড ধরে সকাল-বিকেল আমরা রেজিস্ট্রি বিল্ডিং এর মাঠে খেলার ছলে দেখে নিতাম। এক দৃষ্টিতে থাকিয়ে থাকা ছিল বিপদজনক। এটা বাবা শিখিয়ে দিয়েছিল আমাকে, আমি বন্ধুদের সবাইকে বলে দিয়েছিলাম। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলে প্রতিপরে সন্দেহের উদ্রেক হয়। যাইহোক, প্রতিদিন অনেক ট্রাককে ফিরেও আসতে দেখেছি বিধ্বস্ত হয়ে। বাবাও তখন অফিস করছে প্রায়ই অবশ্য সিভিল ড্রেস পরে।

এর মধ্যে একদিন বাবা ভীষণ দুঃখ ভারাক্রান্ত কণ্ঠে মাকে বললো, ‘প্রফুল্লবাবু আর ধীরেন্দ্রনাথ দত্তকে মার্চ মাসের শেষ দিকেই বাসা থেকে ধরে নিয়ে গিয়েছে পাকসেনারা। প্রফুল্লকুমার দে’কে দিয়ে সান্ধ্যআইন তুলে দেবার পর শহরব্যাপী ঘোষণা করিয়েছে। তারপর দুজনকেই ক্যান্টনমেন্টে আটকে রেখেছে। অত্যাচার তো করবেই হিন্দু এবং বুদ্ধিজীবী বলে কথা। মেরে ফেলে কিনা এটাই হচ্ছে ভয়।’ বলা প্রয়োজন প্রফুল্লকুমার দে ছিলেন অসাধারণ এক দেশপ্রেমিক মানুষ। সিলেটের বড় এক পরিবারে জন্ম তিনি ছিলেন কুমিল্লা পুলিশ কোর্টের ইন্সপেক্টর আর বাবা জিআরও (জেনারেল রেকর্ডিং অফিসার)। তিনি আমাদের রক্তের আত্মীয় না হলেও আমার দাদুর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন।

সেই সুবাদে আমার দাদু। সর্বদা হাসিখুশি অমায়িক বড়মাপের নীতিবান এই মানুষটি ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের মতো নিজেও দেশ না ছাড়ার প্রতিজ্ঞায় ছিলেন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সারা জীবন মানুষের উপকার করেছেন। আওয়ামী লীগের সমর্থক ছিলেন পরোক্ষভাবে। ২৬-২৭ মার্চে তাঁকে দিয়েই আর্মিরা ঘোষণার কাজটি করিয়েছিল। তারপর তাঁকে ও ভানুমামাকে ধরে নিয়ে যায়। ভানুমামা ছিলেন ভালো ফুটবল খেলোয়াড় ছাত্রজীবন থেকেই। কুমিল্লা মোহামেডানের খেলোয়াড় ছিলেন, অসামান্য সুনাম কুড়িয়েছিলেন। স্বাধীনতার পরও জনপ্রিয় খেলোয়াড় ছিলেন মোহামেডান দলের। বিদেশেও খেলেছেন। পরে পায়ে আঘাত পেয়ে কোচ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।

ভানুমামারা ছিলেন সাত ভাইবোন। বড় মেয়ে গীতামাসি স্কুলের শিক্ষক ছিলেন তারপর স্বাধীনতার পর ঠাকুর পাড়ায় অবস্থিত প্রাচীন এবং বিখ্যাত ছাত্রীবাস কামিনী হোস্টেলের সুপারিনটেন্ড হয়েছিলেন। তাঁর কথা আমার ‘তালা’ উপন্যাসে আছে। তাঁর পর ছোটভাই কানু, ভারতে ছাত্র থাকাকালীন এক বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন পাকিস্তান আমলেই। ভালো ছবি আঁকতেন তিনি। তারপর ভানুমামা, চামেলীমাসি, মমতামাসি, নমিতামাসি এবং আমার বয়সী বাবুলমামা। ভানুমামাকে আমার মুক্তযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস ‘অভিজিৎ’এ একটু অন্যভাবে রূপ দেবার চেষ্টা করেছি। মুক্তিযুদ্ধের পর জেনেছি অমানুষিক অত্যাচার করে প্রফুল্লকুমার দে ও ধীরেন্দ্রনাথ দত্তকে হত্যা করা হয়েছে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে। দেশ স্বাধীন হলে পরে অভিভাবকহীন দুর্দশাগ্রস্ত পরিবারটিকে টেনে তোলেন গীতামাসি চাকরি করে, থেকে যান চিরকুমারী। বাবা যতখানি সম্ভব সাহায্য-সহযোগিতা তো করেছেই মানসিকভাবে সাহসও যুগিয়েছে পরিবারটিকে ক্রমাগত।

অক্টোবর মাসের শেষ কি নভেম্বর মাসের প্রথম দিকেই হবে সোনাঝরা রোদালো এক দুপুরে আমি পুকুরের দক্ষিণ পাড়ে খেলাধুলা করে বাসায় ফিরে দেখি উঠোনের আমগাছ তলায় ভানুমামা বসে একটি চেয়ারে, তাঁকে দেখেই ভূত দেখার মতো চমকে উঠলাম! একি করে সম্ভব! মুখে খোঁচা-খোঁচা দাড়ি। গায়ে শুধু একটি ময়লা গেঞ্জি আর পরনে অনুরূপ ময়লা প্যান্ট। বেশ শুকিয়ে গেছে শরীর। আমাকে দেখে হাত বাড়িয়ে দিলেন। আমি কাছে গেলাম। তাঁর শুকনো বিষণ্ন মুখের দিকে তাকিয়ে আমার চোখে জল এসে গেল। কত বড়ঘরের ছেলে কী হয়েছে তাঁর বেশবাস, চেহারা ভাবতেই পারলাম না! তিনি আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, ‘কোথায় গিয়েছিলিরে?’ বললাম, ‘রেজিস্ট্রি বিল্ডিং এর মাঠে ফুটবল খেলতে বন্ধুদের সঙ্গে।’ ‘ফুটবল!’ বলে অস্ফুষ্ট শব্দ করলেন মামা। ‘তোর বাঁ পা তো দুর্বল খেলতে পারিস?’ বললাম, ‘গোলকিপার তো.......।’

এমন সময় মা এসে বললো, ‘দুপুর দুটো বেজে গেছে। রান্না হয়ে গেছে ভানুদা, আপনি স্নানটা সেরে খেয়ে বিশ্রাম নিন। পটুর বাবা এসে পড়লো বলে। পটুরে, মামাকে তোর বাবার একটি লুঙ্গি আর গামছা এনে দে তো বাবা।’ আমি তাই করলাম। এবং মামার সঙ্গে আমিও জলে নেমে সাঁতার কাটলাম কিছুক্ষণ। মামা দারুণ সাঁতার জানেন দেখে অবাক হয়ে গেলাম! ক্রীড়াবিদরা সবই পারঙ্গম মনে মনে ভাবলাম। বড় ঘরে মাটিতে বসে মামা আর আমরা দুভাই একসঙ্গে খেলাম। মা আদর করে বললো, ‘লজ্জা করবেন না ভানুদা ভালো করে খেয়ে নিন। কতদিন যে ভালো করে খেতে পাননি সেতো বুঝতে পারছি। বর্বরগুলো খুব কষ্ট দিয়েছে আপনাকে!’ মা আবেগ ধরে রাখতে না পেরে আঁচলে মুখ ঢাকলো। আমিও বুকের মধ্যে অধরা এক বেদনা অনুভব করলাম। মামাও যে অনেকদিন ভালো করে খেতে পায়নি তাঁর খাওয়া দেখে বুঝলাম। তিনি নীরবে খেয়ে উঠে পুকুরে হাত ধুয়ে আবার আমতলায় গিয়ে বসলেন উদোম শরীরে।

কিছুক্ষণ পর বাবা ফিরলো। তারপর দুজনে ঘরে বসে আলাপ করলো অনেককআষণ কি সব বিষয়ে। ভানুমামাকে দিয়ে পাকসেনারা পরিশ্রমসাধ্য কাজ করাতো জেলখানার ভিতরে। একদিন এদেশে জন্ম এক পাঞ্জাবি পুলিশ অফিসার মামাকে দেখে চিনতে পারে। বলে, ‘তুমি মোহামেডানের ভানু না? আরে তুমি এখানে কেন? যাও যাও ভাগো, তুমি পাকিস্তানের গৌরব!’ মামাকে ছেড়ে দিয়েছিল জেল থেকে। মামা ছাড়া পেয়েই বাবার অফিসে গেলে পরে বাবা তো তাঁকে দেখে আঁৎকে উঠেছিল! সামলে নিয়ে বললো, ‘তুমি আর দেরি না করে আমার বাসায় চলে যাও।’ পথ বলে দিয়েছিল বাবা। মামা সেভাবেই বাসায় এসে হাজির হয়েছিলেন। প্রায় তিন মাস মামা আমাদের ছোট্ট বাসাতেই ছিলেন। সকালে বেরিয়ে যেতেন রাতে ফিরতেন। মুক্তিযুদ্ধের কাজই যে করতেন তা আর না বললেও চলে। আমরা যাতে বিপদে না পড়ি তার জন্য মামা খুব সাবধানে চলাফেরা বা কাজ করতেন। বাবাও যে গোপনে গোপনে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতো, শহরে তাঁদের অবস্থান জানতো সেটা একদিন ধরা পড়ে গিয়েছিল আমার কাছে।

একবার সওদা কেনার জন্য বাবার অফিসে গিয়ে টাকা যখন নিচ্ছিলাম তখন দেখলাম, বাবার কাছে টাকা চাইছে একজন বোবা তরুণ। পরনে ময়লা লুঙ্গি আর পাঞ্জাবি, মাথায় টুপি, মুখে দাড়ি আছে। কখনো তাকে এর আগে দেখিনি। দেখলাম বাবা তাকে কিছু টাকা দিল এবং কানে কানে কী যেন নিচু স্বরে বললো। যুবকটিও কঠিনমুখ করে তা শুনলো। আমি জানতাম যে, বোবারা সাধারণত কানেও শোনে না! বাবা তাকে কানে কানে কী বলছে! তখন দুপুরবেলা বলে অফিসে কেউ নেই। যুদ্ধের মধ্যেও ম্যালা মামলামোকদ্দমা হচ্ছিল। বহু মামলার কাজ বাবা এগিয়ে রেখেছিল বলেই স্বাধীনতার পর রাজনৈতিক মামলাগুলো যা পাকিস্তান সরকার দায়ের করেছিল সমগ্র জেলার আওয়ামী লীগ ও বামপন্থী নেতা, বুদ্ধিজীবী আর ছাত্রনেতাদের বিরুদ্ধে---দ্রুত নিষ্পত্তি হয়েছিল।

এই ঘটনাটি আমাকে সন্দিহান করে তুললো। রাতের বেলা বাবাকে জিজ্ঞেস করলে পরে খুব স্বাভাবিক কন্ঠে বললো, ‘ওতো আমাদের এক দারোগার ছেলে মুক্তিযোদ্ধা, গুপ্তচরের কাজ করছে শহরে থেকে।’ ‘এ্যাঁ!’ বলে আর্তস্বর করে উঠলাম আমি। বলে কী! এও কি সম্ভব! মুক্তিযোদ্ধারা কি এভাবে দিনেদুপুরে কোর্টকাচারিতে ঘোরাঘুরি করতে পারে বাবা! ধরতে পারলে তো ওখানেই মেরে ফেলবে। বাবা বললো, ‘দেশমাতৃকার জন্য মরবে বলেই তো ওরা মুক্তিযোদ্ধা হয়েছে। আরও অনেক আছে। সবাইকে তো চিনি আমি। অনেক মুক্তিযোদ্ধা এখন শহরে ঘাপটি মেরে আছে। নদীর ওপারে লুকিয়ে আছে অসংখ্য। দুর্বল হয়ে পড়ছে পাকিস্তানি সেনারা। শুনছো না বিবিসি কী সংবাদ দিচ্ছে ওদের বিপর্যয় দশা নিয়ে! দেশ জুড়ে তুমুল লড়াই চলছে। আমেরিকা বিশাল আণবিক নৌবহর পাঠাবে পাকিস্তানের পক্ষে বঙ্গোপসাগরে। রাশিয়াও অনুরূপ পাঠাবে বলে মনে করছে বিদেশী সাংবাদিকরা---তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আভাস পাচ্ছেন কোনো কোনো বিদেশী রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ। তবুও মনে হচ্ছে পাকিস্তানিদের সম্পূর্ণভাবে পরাজয়ের আর বেশি বাকি নেই।

কেননা কোনো জাতি যদি একবার স্বাধীনতার জন্য লড়াইয়ে নেমে পড়ে তাকে আর ফেরানো কারো সাধ্য নেই। ইতিহাস তো তাই বলে। ভারতীয় স্বাধীনতা এসেছে এভাবেই। বাঙালি জাতির স্বাধীনতাও এভাবেই আসবে পটুবাবু দেখে নিও। শত শত বছরের পরাধীন বাঙালি জাতি এবারই স্বাধীন হবে। ঘটনাপ্রবাহ সেদিকেই তো ধাবিত হচ্ছে।’ বাবা এসব বলছিল খুব আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে। বাবা বিস্তর পড়ালেখা করে কাজেই জ্ঞানের আলোকেই আমাকে এসব বলছে বলে আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হলো না। এর মধ্যে বাবাকে আরও সাহসী হয়ে উঠতে দেখলাম। দাড়ি ফেলে দিয়েছে, মাথায় টুপিও পরে না। সাদা কাপড়েই অফিসে যাওয়া-আসা করে।

একদিন ভীষণ কৌতূহলী হয়ে বাবাকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘হিন্দু হয়েও এভাবে চলাফেরা করছো, অফিসে যাচ্ছো তোমার ভয় করে না বাবা?’ বাবা নিচু স্বরে উত্তর দিয়েছে, ‘আমি পিসি সরকার এবং খ্রিস্টান হিসেবে পরিচিত এখন সকলের কাছে। সবাই আমাকে খ্রিস্টান হিসেবেই চিনে। খ্রিস্টানদের জন্য ভয়ের কিছু নেই কারণ, পাকিস্তানের বন্ধু তো আমেরিকা, আমেরিকা খ্রিস্টানদের দেশ। খ্রিস্টানদের হত্যা করলে আমেরিকা চটে যাবে না?’ শুনে আশ্বস্ত হলাম। এবার আমার কাছে সব রহস্য এক নিমিষে জলের মতো সহজ হয়ে গেল। ভালো কূটনীতি খেলেছিল বাবা। অবশ্য এর জন্য বাবা সচ্চরিত্র, কর্মগুণ, পরোপকার অর্থাৎ একজন আদর্শ ভালো মানুষ হিসেবে যে সুনাম কুড়িয়েছিল এতটা বছর তারই সুফল কাজ করেছিল নিশ্চিত মৃত্যুকূপের মধ্যে থেকেও সপরিবারে বেঁচে যাওয়ার পেছনে।

অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে, একজনের সৎকাজ অনেকের জন্যই যে রক্ষাকবচ হতে পারে ১৯৭১ সালের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের বেঁচে যাওয়ার অলৌকিক ঘটনাই তা প্রমাণ করে। আজও একে বিস্ময়কর এক অবিশ্বাস্য ঘটনা বলে মনে হয় আমার কাছে! যত নিরানন্দ দিন যাচ্ছিল প্রতিদিন চারদিক থেকে পাকিস্তানিদের পরাজয়ের সংবাদ আসছিল বিভিন্নভাবে। আমি কিছু খবর পেতাম কিশোরের কাছে। কারণ তার আলমমামা পশ্চিম পাকিস্তানের ‘দৈনিক দি ডন’ না জানি ‘দি পাকিস্তান অবজারভারে’র সাংবাদিক ছিলেন। করাচি থাকতেন তিনি যুদ্ধের পূর্বে চলে দেশে আসেন। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে সচিত্র সংবাদ তিনি সংগ্রহ করে পাঠাতেন। বেঁটে গোলগাল মুখবিশিষ্ট ধবধবে ফর্সাদেহী মামা যুদ্ধের সময় প্রায়শ কুমিল্লায় আসতেন। তিনি বলতেন আসল খবরাখবর।

এসব শুনে ভয়ের চেয়ে বেশ খুশিখুশি একটা ভাব, চাঞ্চল্য আমাকে উদ্বেল করে তুলছিল। নভেম্বর মাসের শেষের দিকে একটা গুজব ছড়াতে শুরু করলো যে, মুক্তিবাহিনী গোমতী নদীর ওপারে অবস্থান নিয়েছে। স্বাধীন করে ফেলবে কুমিল্লা শহর। আমরা মনে মনে দারুণ উল্লসিত এবং উত্তেজিত। একদিন গোপনে সঞ্জুর সঙ্গে বিহারিকলোনীতে গেলাম। দেখতে পেলাম বিহারিদের মধ্যে একটা চাপা উত্তেজনা ও ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। পাকিস্তানি আর্মিদেরও দেখলাম ট্রাকে বসে থাকতে বন্দুক উঁচিয়ে। কালো কালো পোশাক পরে ঘোরাঘুরি করছে রাজাকার বাহিনী। ২৫ মার্চের পর এই প্রথম পা রাখলাম কলোনীতে। ...চলবে

লেখক : জাপানপ্রবাসী

(এএস/জুলাই ০৯, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test