E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

অতলান্ত পিতৃস্মৃতি পর্ব ১৩

২০১৪ জুলাই ১০ ১৭:৪৪:৩৩
অতলান্ত পিতৃস্মৃতি পর্ব ১৩

প্রবীর বিকাশ সরকার : [ভূমিকা : আমার ৫৫ বছরের জীবনে বাবার সঙ্গে কেটেছে মাত্র ২৪-২৫টি বছর! জ্ঞান হওয়ার পর থেকে যেভাবে বাবাকে দেখেছি, চিনেছি, জেনেছি এবং বুঝেছি তার মূল্যায়নই হচ্ছে এই আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস বা স্মৃতিকথা ‘অতলান্ত পিতৃস্মৃতি’---এমন করে খোলামেলা খুঁটিনাটি কোনো স্মৃতিকথা আর কোনো বাঙালি লিখেছেন তার জন্মদাতা পিতৃদেবকে নিয়ে আমার অন্তত জানা নেই।]

কয়েক ঘরে দেখলাম আহত অবস্থায় চিকিৎসা চলছে আমার পরিচিত বেশ কয়েকজন বিহারি যুবকের, তারা আল-বদর বাহিনীর সদস্য বলে সঞ্জু আমার কানে কানে বললো। বেশিক্ষণ না থেকে চলে এলাম। এর কদিন পরেই এলাচি এসে গোপনে মাকে বললো, পাকিস্তানিরা হেরে যাচ্ছে। কিছু বিহারি তোমাদেরকে মারার চিন্তাভাবনা করছে। মিথ্যে নয়। কোথাও গিয়ে পালিয়ে থাকো।

এই খবরে মা ভয় পেয়ে গেল! বাবাও ভেবে দেখলো চেনা রাজাকাররা একটা বদলা নিতেও পারে এই অবস্থায়। তাই তড়িঘড়ি করে কয়েকটি দিন আমরা ছোটরা সরকারি কলোনীর পেছনে বাবার পরিচিত এক প্রভাবশালী বন্ধু মিলন মিয়ার বাড়িতে আশ্রয় গ্রহণ করি। তারপর ফিরে আসি। এই সময় মার প্রায় সাত ভরি স্বর্ণের অলঙ্কার যেগুলো দাদু দিয়েছিল বিয়ের সময় আশ্রিত বাড়ির মালিকের কাছে গচ্ছা রেখেছিল বাবা। কিন্তু সেগুলো হারিয়ে গেছে বলে আর ফেরত দেয়নি মিলন মিয়া। স্বাধীনতার পর অনেক দেনদরবার করেও পাওয়া যায়নি। কী আর করা দুর্দিনে আশ্রয় দিয়েছিল এটা চিন্তা করে ঘটনাটির নিষ্পত্তি করে দেয় বাবা। এই স্বর্ণগুলোর বিনিময়ে হয়তো আমাদের এতগুলো জীবন রক্ষা পেয়েছে। বাবা মাকে এরকম স্বর্ণের জিনিস কোনোদিন আর গড়িয়ে দিতে পারেনি।

ডিসেম্বর মাস এলে পরে শহরে পাকিস্তানি আর্মি ও রাজাকাররা গা ঢাকা দিতে শুরু করলো। মুক্ত একটা বাতাস বইতে শুরু করলো যেন চারদিক থেকে। এমন একটা বাতাস যেন খুব শিগগিরই লতার সেই চিরচেনা গানটা বেজে উঠবে যেটা পুজোর মন্ডপে আর স্টেডিয়ামে বার্ষিক এ্যাকজিবিশনের সময় বাজতো, ‘ও পলাশ, ও শিমুল/ কেন এ মন মোর রাঙালে/ জানি না, জানি না কেন এ ঘুম মোর ভাঙালে.....।’ সেই রকম একটি অনুভূতি জাগতে শুরু করলো আমার মনে। ইতিমধ্যে বাসার পেছনে শিমুল গাছে কলি এসে গেছে, ফুটতে বেশি দেরি নেই আর। তথাপি, প্রতিদিন চলতে লাগলো গোলাগুলি, বোমা-গ্রেনেড ফাটাফাটি এখানে সেখানে। সীমান্তের দিকে বোমারু বিমানগুলো উড়ে উড়ে যেত শহর কাঁপিয়ে। ইতিমধ্যে দুই বাসার মাঝখানে একটি ঢিবি ছিল সেখানে গভীর করে ট্রেঞ্চ খুঁড়লাম আমরা। বিমানগুলোর শব্দ পেলেই আমরা ট্রেঞ্চে গিয়ে আশ্রয় নিই দুরু দুরু বুকে। তুমুল লড়াই যে চলছে তা আর বুঝতে কষ্ট হতো না। শেষ যুদ্ধটা শুরু হয়েছে বলে মনে হলো। এর মধ্যে ডিসেম্বর মাসের শুরুতেই আর একদিন আর্মি আসবে এমন গুজব কানে এলো আমাদের।

বাবা রাতের বেলা সবাইকে নিয়ে সরকারি কলোনীতে তখন থাকতেন কোতোয়ালি থানার ওসি কবির উদ্দিন বাড়ি ছিল সম্ভবত ময়নসিংহ জেলায়, তাঁর কোয়ার্টারে গিয়ে আশ্রয় নিল। ভদ্রলোক খুব ভালো মানুষ ছিলেন। বাবাকে শ্রদ্ধা করতেন আগে থেকেই। তিনি যতখানি করার সহযোগিতা করলেন। বাবা আমাদের নিয়ে মেঝেতেই শুয়ে রাত কাটালো। পরের দিন সকালে চলে এলাম। আমি ভেবেছিলাম হয়তো লুটপাট হয়ে গেছে গত রাতে, কিন্তু না, তা হয়নি। কিশোর ও তার বাবা নাকি পাহারা দিয়েছিল সারারাত জেগে জেগে। বাবা খালুকে অনুরোধ করে গিয়েছিল। এরপর বাবা প্রতীজ্ঞা করে বললো, ‘মরলে এই ঘরেই মরবো আর চোরের মতো কোথাও পালিয়ে যাবো না।’ অবশ্য আর যেতেও হয়নি। কারণ বিজয় যে আসন্ন হয়ে পড়েছিল সেটা আমরা টের পেতে শুরু করেছিলাম। ৩রা ডিসেম্বর ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। দুই পাকিস্তান সীমান্তেই ঘোরতর যুদ্ধ বেঁধে যায়। উত্তেজনাকর সংবাদ প্রতিদিন শুনতাম রেডিওতে। ৭ই ডিসেম্বর। সারাটি দিন উত্তরের দিক থেকে সকাল থেকেই গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছিল। বাবা সেদিন আর অফিসে যায়নি। কিশোরের বাবাও জজকোর্টে যাননি। আমরাও খেলতে যাইনি রেজিস্ট্রি বিল্ডিং এর মাঠে।

কিশোরের বাবা এসে বাবাকে বললেন, ‘মনে হচ্ছে মুক্তিবাহিনী নদী পেরিয়ে এপারেই চলে আসছে। দেখুন আজকে কী রকম থমথমে ভাব শহর জুড়ে। সকালে বাজারেও লোকজন কম দেখলাম। আর্মি চোখে পড়লো না খুব একটা। কিছু কিছু ভ্যান টহল দিচ্ছে শুধু।’ বাবা বললো, ‘না, নদী এখনো পার হয়নি। ওপারেই আছে। তবে শহরে প্রচুর ঢুকেছে বলে শুনলাম।’ কিশোরের বাবা বললেন, ‘হ্যাঁ, আমার শালা আলমও তাই বলছিল। বিবিরবাজারে বহু পাকিস্তানি সৈন্য গত কয়েক দিনে মরেছে। বিভিন্ন জায়গার ক্যাম্প ফেলে আর্মিরা ক্যান্টনমেন্টের দিকে পিছপা হচ্ছে।’ বিজয় কি এসে যাচ্ছে তাহলে? মনটা উড়ু উড়ু হয়ে উঠল আমার সহসা। ছেড়ে আসা দালানে নতুন ভাড়াটে দেবে বলে মালিক আমাদেরকে তুলে দিল। সেই ভাড়াটে এলো গত মাসে। এক অল্পবয়সী হুজুর মডার্ণ স্কুল না কোন্ এক স্কুলের শিক্ষক। স্ত্রী, একটি ছোট্ট ছেলে আর শালা রফিককে নিয়ে সংসার। তাঁকে আমরা মুসলিম লীগার বলে ধরে নিয়েছিলাম। কিন্তু না দুদিনেই তা ভুল প্রমাণিত হলো। তিনি খুবই সামাজিক এবং বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ ভক্ত। তাঁর শ্যালক রফিকও তাই। রফিক সাহেবকে আমরা মামা বলে ডাকতে লাগলাম। তিনি চকবাজারের রূপালি সিনেমা হলের টিকিট কাউন্টারে চাকরি করছেন আপাতত যদিওবা আইন শ্রাস্ত্রের ছাত্র। দুদিনেই জমে গেল তাঁর সঙ্গে।

তিনি বাবাকে বললেন, ‘দাদাবাবু, মনে হচ্ছে আজকে একটা কিছু ঘটবে বড় রকমের। গোলাগুলির শব্দ তো ক্রমেই বাড়ছে। এদিকেই আসছে যেন।’ বাবা মুচকি হাসলো। বললো, ‘আমারও তাই মনে হচ্ছে। কিন্তু আমার মনে হলো বাবা যেন জানতো সবই। কারণ মুক্তিযোদ্ধা গুপ্তচররাই বাবাকে আগাম খবর দিয়ে থাকবে নিশ্চয়ই আমি ধারণা করলাম। বাবাকেও ইদানীং আর তেমন চিন্তিত হতে দেখতাম না। হাসিহাসি মুখ। এটা আমাকে আরও আশ্বস্ত করলো, চঞ্চল করে তুললো। কী আশ্চর্য! মার স্বপ্নই সত্যি হলো পরের দিন ৮ তারিখ ভোরবেলা! সারারাত গোলাগুলি চললো। আমাদের বাসার পেছনেও গভীর রাতে ধুপধাপ দৌড়োদৌড়ির শব্দ পেলাম। জেলখানারোড ধরেও ছায়া ছায়া মানুষের নড়াচড়া লক্ষ করা গেল। বাবাও কয়েকবার বাইরে গিয়ে দেখলো কেউ নেই। পরে বাবার মনে হলো, বিহারিরা এদিক দিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে না তো? ঘুম না এলেও তন্দ্রা লেগেছিল সবার চোখেই।

সারাদিনের গোলাগুলির শব্দে মানসিকভাবে ক্লান্তও হয়ে পড়েছিলাম আমরা খুব। ভেবেছিলাম বিরাট কোনো যুদ্ধ হতে পারে শহর দখলকে কেন্দ্র করে। প্রতিদিনকার মতো ভোরবেলা মা খিড়কির ফাঁক দিয়ে চোখ রাখে পুকুরের দক্ষিণ পাড়ের সাব-রেজিস্ট্রি বিল্ডিং এর দিকে। আজও রাখলো এবং চমকে উঠে বিছানা থেকে নেমে এসে বাবাকে ডেকে তুললো, ‘কই শুনছেন! ওঠেন! দ্যাখেন স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়ছে সাব-রেজিস্ট্রি বিল্ডিং এর মাথায়! আমার স্বপ্ন বাস্তব হয়েছে! দেশ স্বাধীন হয়েছে! ঠাকুর ইচ্ছে পূরণ করেছে!’ মার ডাকে বাবাও ধড়ফড় করে লাফিয়ে উঠে বাইরে এসে দেখে সত্যি-সত্যিই সবুজে, লালে আর হলুদে মেশানো বাংলাদেশের একটি বড় পতাকা উড়ছে বাতাসে সাব-রেজিস্ট্রি বিল্ডিংএর মাথায় পত পত করে। জানান দিচ্ছে: কুমিল্লা শহর স্বাধীন হয়েছে! মুক্তিবাহিনীর দুই নম্বর সেক্টর কমান্ডার মেজর খালেদ মোশাররফ, এটিএম হায়দার এবং মিত্রবাহিনীর মেজর জেনারেল হিরা কিলেফার্স এর যৌথ অভিযানে কুমিল্লা সদরকে পাক-হানাদারমুক্ত করলেন। কিন্তু না কিছুক্ষণ পর পতাকাটা নামিয়ে ফেলা হলো পুলিশদের দিয়ে। পুলিশ ফাঁড়িতে থাকা কনস্টবল সেই মোহাম্মদ আলী খান বিশ্রী ভাষায় চিৎকার করে গালাগালি করছিল মুক্তিযোদ্ধাদের মা-বাবা তুলে পুকুরের এপার থেকেও তার বাজখাঁই গলা আমরা শুনতে পেলাম।

তবে পরক্ষণেই মুক্তিযোদ্ধারা এসে পড়লে ডিসির অফিসের একটি বাথরুমে সে লুকিয়ে থাকলো তিনদিন। খবর পেয়ে চার দিনের দিন তাকে ধরে নিয়ে গেল মুক্তিযোদ্ধারা এবং প্রচন্ড প্রহার করলো তাতে করে তার উপরের কয়েকটি দাঁত ভেঙ্গেই গেল। পরে ডিসি ও এসপি পুলিশ পাঠিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করিয়ে থানায় নিয়ে আটকে রাখলো যুদ্ধবন্দি হিসেবে। পরে বাবার কাছে শুনলাম কুমিল্লায় প্রথম জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্বাধীন বাংলার পতাকা একেবারেই পুলিশ ফাঁড়ির কাছেই সাব-রেজিস্ট্রি বিল্ডিং এর ছাদে উড়িয়ে ছিল এই অফিসেই কাজ করতো আমীর হোসেন নামে এক যুবক মুক্তিযোদ্ধাদের মাধ্যমেই। পতাকা নামানোর কিছুক্ষণের মধ্যেই মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতীয় বাহিনী শহরে ঢুকে পড়লো হৈ হৈ রৈ রৈ করে এমন দৃশ্য পুকুরের পাড় থেকেই আমি দেখতে পেলাম যতখানি দেখা যায়। চারদিকে ফটাফট গুলি ছুঁড়ছে মুক্তিযোদ্ধারা বিজয়ানন্দে। কিন্তু পুরো কুমিল্লা জেলা তখনো স্বাধীন হয়নি। শহরেও মানুষ খুব বেরোচ্ছে তাও মনে হলো না। জানি না কী ঘটছে! কারণ বাবা বলেছে পাকিস্তানিরা পাল্টা আঘাত হানতেও পারে। ক্যান্টনমেন্ট এখনো দখল হয়নি।

একদম বাসা থেকে বেরোতে নিষেধ করে দিল। বাবা অবশ্য অফিসে গেল এবং কাচারির কাছে যা পেল তাই কিনে নিয়ে এলো। এর মধ্যে একদিন এলাচির মা এসে বলল, ‘বিহারি রাজাকাররা ধরা পড়ার ভয়ে পালিয়ে গেছে। পাঠানরাও চলে গেছে এক সপ্তাহ আগে পশ্চিম পাকিস্তানে। সর্দারজী যাননি। তিনি ছোটছেলে ও বৃদ্ধ স্ত্রীকে নিয়ে আমাদের বাসায় এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন। দু-একদিন পর বেশ মানুষজনকে রাস্তায় চলাচল করতে দেখলাম। কিন্তু বাবার নিষেধ অবজ্ঞা করে বাইরে যেতে পারলাম না বাসার চৌহদ্দি পেরিয়ে। শীতকাল হলেও পুকুর ঘাটের পানা সরিয়ে মাছ ধরেছি। সারা পুকুরই বড় বড় ঘন কুচুরিপানাতে ভরে গিয়েছিল। মাছগুলোকে দেখেছি একটু ফাঁক পেলেই মুখ খুলে কপ্ কপ্ শব্দ করে নিঃশ্বাস নিতে। এই যুদ্ধের সময় কত মাছ যে ধরেছি বড়শি দিয়ে আমি, কিশোর আর খোকা বলে শেষ করা যাবে না। মাছ কিনতেই হয়নি বলা যায়। একমাত্র উত্তর পাড়ের আমরা আর পূর্বপাড়ার সঞ্জু, রঞ্জু ও মফিজকেই মাছ ধরতে দেখা গেছে। ৭ তারিখের পর থেকেই এলাচির মা আর বিহারিকলোনী বা রিফিউজি ক্যাম্পের লোকজন ঠান্ডা হয়ে গেছে।

প্রতিদিনই রেডিওতে শুনতাম একের পর এক জেলা, মহকুমা, থানা শত্রুমুক্ত হচ্ছে। এভাবে ১৬ তারিখে যখন ঢাকা মুক্ত হওয়ার পর রেসকোর্স ময়দানে ভারতীয় বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করলো লে.জেনারেল এএকে নিয়াজি, মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী খান প্রমুখ পাকিস্তানি ঘাতক রাঘববোয়ালরা, তখন এক ঝটকায় সারা বাংলাদেশ কেঁপে উঠল মহান বিজয়ের মহাআনন্দে। ওই দিন সন্ধ্যায় শহরে মশাল মিছিল বের হয়েছিল বলে মনে পড়ে। জয়বাংলা, জয় বাংলাদেশ, জয় বঙ্গবন্ধু বলে আকাশ-বাতাস ভরিয়ে তুলেছে শহরের আবালবৃদ্ধবনিতা। আমরাও দৌড়ে গিয়ে মধুদের বাসার মোড়ে দাঁড়িয়ে মিছিল দেখেছি। সেই বয়সে আবেগে, উত্তেজনায়, আনন্দে মুহুর্মুহু কেঁপে উঠেছি, আপ্লুত হয়েছি। কী অনির্বাচ্য এক অভিজ্ঞতা আমার জীবনে: ভারতে পালিয়ে না গিয়ে স্বাধীনতার প্রথম সূর্যোদয় দেখার রাজসিক সৌভাগ্য অর্জন করেছি, এটা বিশাল একটা ব্যাপার! এর জন্য বাবাকে কৃতজ্ঞতা জানাতেই হয়।

দেশের ভিতরে থেকে শত্রুর হাত থেকে মুক্ত হওয়া মাতৃভূমিকে প্রথম দেখার মধ্যে যে কী সুখ আর ভালোলাগা সেটা অনুভব করা সম্ভব হয়েছে একমাত্র বাবার সাহস আর দেশপ্রেমের জন্যই! সেইসঙ্গে কাকে বোঝাই, কী করে বোঝাই কী অমূল্য এক ধন পেয়েছি---যার নাম স্বাধীনতা ---আমরা আর কারো অধীন নই, কেউ আর আমাদের মাথার উপর ডান্ডা ঘোরাতে পারবে না। পাকিস্তান জমানার পৃষ্ঠা উল্টে গিয়ে নতুন স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ জমানার সূচনা হয়েছে লাগাতার রক্তক্ষয়ী এক যুদ্ধের মধ্য দিয়ে। মনে মনে বললাম, ‘স্বাগতম বীর বাংলাদেশ! অভিবাদন হে আমার জন্মদাতা জাতীয়তাবাদী পিতা তোমাকে!’...চলবে।

আলোকচিত্র : উপরে-এই সেই ছোটরা কলোনী যেখানে ছেলেবেলা খেলাধুলা করে কটেছে। স্বাধীনতার পরে এখানে একটি ফ্ল্যাটে আমরা উঠে আসব। নিচে- বিহারী কলোনী সংলগ্ন একটি বাসস্থান যা আগে ছিল পুকুর ঘাট।

লেখক : জাপানপ্রবাসী

(এএস/জুলাই ১০, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test