E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

অতলান্ত পিতৃস্মৃতি দ্বিতীয় অধ্যায়, পর্ব ৪

২০১৪ জুলাই ১৪ ১৭:৪৭:১৬
অতলান্ত পিতৃস্মৃতি দ্বিতীয় অধ্যায়, পর্ব ৪

প্রবীর বিকাশ সরকার : [ভূমিকা : আমার ৫৫ বছরের জীবনে বাবার সঙ্গে কেটেছে মাত্র ২৪-২৫টি বছর! জ্ঞান হওয়ার পর থেকে যেভাবে বাবাকে দেখেছি, চিনেছি, জেনেছি এবং বুঝেছি তার মূল্যায়নই হচ্ছে এই আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস বা স্মৃতিকথা ‘অতলান্ত পিতৃস্মৃতি’---এমন করে খোলামেলা খুঁটিনাটি কোনো স্মৃতিকথা আর কোনো বাঙালি লিখেছেন তার জন্মদাতা পিতৃদেবকে নিয়ে আমার অন্তত জানা নেই।]

দেশের পরিস্থিতি ভালো নয়। অবিরাম বঙ্গবন্ধুর একাগ্র নেতৃত্বে দেশগঠন এবং গ্রামগঞ্জের উন্নয়নের কাজ এগিয়ে চলেছে। কিন্তু অপ্রতিরোধ্য গতিতে বেড়ে চলেছে অরাজকতা যার জন্য মূলত দায়ী নামী-বেনামী, সদস্য-অসদস্য আওয়ামীলীগের সঙ্গে জড়িত নেতা, কর্মী, ছাত্র। বিশৃঙ্খল জাতিকে শৃঙ্খলিত করার জন্য রক্ষী বাহিনী গঠন করা হয়েছে আরও আগেই। তারপরও আইনশৃঙ্খলা, দুর্নীতি, লুটপাট, রাষ্ট্রীয় টাকা, বিদেশী সাহায্য আত্মসাৎ ইত্যাদি অপকর্ম, সামাজিক অস্থিরতাকে দমিয়ে রাখা যাচ্ছে না।

বন্ধু মানিক তখন বেশ রাজনীতি বোঝে, কারণ তার বড়ভাই গোলাম ফারুক আওয়ামী লীগ কর্মী। তাঁর প্রভাবেই মানিক যা বোঝে বা জানে তা আমাদেরকে বোঝাতে চেষ্টা করে। সে বলে, ‘সবাই খারাপ নয় কিছু সংখ্যক আওয়ামী লীগের নেতা ও কর্মী, জাসদ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী এবং চরমপন্থী কমিউনিস্টরা এইসব অপকর্ম করে বঙ্গবন্ধুকে দুর্বল করে দিচ্ছে। জনগণের সামনে হেয় প্রতিপন্ন করছে যা আসলে উচিৎ নয়। দেশটা স্বাধীন হয়েছে মাত্র, বিশৃঙ্খলা, দুর্নীতি, খুনাখুনি সদ্য স্বাধীন যে কোনো দেশেই ঘটে থাকে কিছুকালের জন্য। ইতিহাস তাই বলে। দেশটা আমাদের---আমাদের সবাইকে দেশের উন্নয়নে নিজে থেকে এগিয়ে এসে কাজ করতে হবে। কেউ আমাদের সাহায্য করতে আসবে না, কেন আসবে? সব জাতিই কঠোর লড়াই করে নিজেদের পায়ে দাঁড়িয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর উচিৎ বিদেশ থেকে আসা একমাত্র জরুরি ওষুধপত্র ছাড়া আর সব ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা বন্ধ করে দেয়া, কারণ এতে করে মানুষ বড় বেশি পরমুখাপেক্ষী হয়ে পড়ছে। লোভ-লালসা বেড়ে যাচ্ছে মানুষের। মাঠেময়দানে একটি প্রজন্ম যদি কেবল কৃষির কাজ করে তাহলে অদূর ভবিষ্যতে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উদ্বৃত চাল বিদেশেও রপ্তানি করা যাবে। আগে খেয়ে বাঁচতে হবে তারপর উন্নয়ন। এর জন্য বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের দরকার নেই, প্রচলিত নিয়মেই আগে কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ি না কেন’, ইত্যাদি বেশ ভালো ভালো কথা বলতো মানিক। তার জাতীয়তাবাদী চেতনাবোধ ছিল খুবই স্বচ্ছ এবং প্রখর। আমরা তার কথায় চুপ থাকতাম কারণ অতশত রাজনীতি বোঝার বয়স হয়নি তখনো, আগ্রহও নেই তেমন। বঙ্গবন্ধুকে আমরা সবাই ভালোবাসতাম এই কারণে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগকেও পছন্দ করতাম। বঙ্গবন্ধুর জন্য খুব কষ্ট পেতাম আমরা।

কী না করছেন তিনি দেশটাকে ধ্বংসস্তুপ থেকে দাঁড় করাতে অথচ তাঁর আশেপাশের লোকজন একজনও ভাবছে না, মানছে না তাঁর আদেশ-নির্দেশ দেখে খুব খারাপ লাগতো। বাবাও এসব বলতো মাকে: ‘দ্যাশটা কোথায় যাচ্ছে দ্যাখো! এত চুরি, এত অন্যায় করলে তো এই জাতি একদিন আফ্রিকার আদি, বর্বর জাতিগুলোকেও ছাড়িয়ে যাবে! কী হারে যে মামলা হচ্ছে দুর্নীতিবাজদের নামে, উশৃঙ্খল ছাত্রদের নামে কী আর বলবো! রক্ষী বাহিনী আর ক’জনকে ধরবে? বঙ্গবন্ধু ক’জনকে সামলাবে? আহা, মানুষটা বড় অসহায় হয়ে পড়েছেরে! কী বলছেন শোনো: ‘চোরায় নাহি শোনে ধর্মে কাহিনী! আমার ভাগের কম্বলটা পর্যন্ত চুরি করে নিয়েছে চাটার দল!’ কী গভীর ক্ষোভ, দুঃখবোধ থেকে তিনি এসব কথা বলছেন! গভীর ষড়যন্ত্র চলছে দেশটিকে নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। আমেরিকা, পাকিস্তান এর পেছনে আছে। কখন যে কী ঘটে বলা মুশকিল। দুশ্চিন্তায় ঘুম আসে না।’

বাবার কথাগুলো যে কত বাস্তব তার প্রমাণ আমরা দেখেছি। তবে খারাপ লাগতো যখন দেখতাম মুখচেনা অনেক আওয়ামী লীগ নেতা ও কর্মীকে বিদেশ থেকে রিলিফ হিসেবে আসা গুঁড়োদুধ, খাদ্য, শার্টের কাপড়, কম্বল, ঢেউ টিন ইত্যাদি চুরি করতে, আত্মসাৎ করতে দেখে। অথচ পিতৃহারা স্বপন ও বিষ্ণুদের পরিবার কিছুই পায়নি! কত টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে কেটেছে তাদের সংসার দেখে ব্যথিত হওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। প্রতিটি স্থানীয় ও আঞ্চলিক উন্নয়নে কী পরিমাণ ঘুষের লেনদেন হতো তার হিসেব নেই। প্রায় শুনতাম রাস্তাঘাট, সেতু পুননির্মাণ, দালানভবন তৈরির নামে চুরি করছে ইঞ্জিনিয়ার আর ঠিকাদাররা বরাদ্দকৃত লক্ষ লক্ষ টাকা আর টাকা। যতই দিন ঘনিয়ে আসছে মুজিববাদী ছাত্রলীগ ও জাসদ ছাত্রলীগ মারমুখী হয়ে উঠছে। প্রতিদিন মিছিল, মিটিং, সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচেছ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে, মাঠে, ময়দানে। সংবাদপত্রগুলোতে ভালো সংবাদ একটি থাকলে মন্দ খবর দশটি।

আমাদের বাসায় রাখতো বাবা ‘দৈনিক সংবাদ’, অফিস থেকে নিয়ে আসত ‘দৈনিক বাংলা’। ‘দৈনিক সংবাদ’ বেসরকারি পত্রিকা বলে সত্য খবর, বিশেষ করে দুর্নীতির খবর ও সমালোচনা থাকতো বেশি। সরকারি গুণগান গাইত ‘দৈনিক বাংলা’ পত্রিকা আর ‘দি বাংলাদেশ টামইস’। জাসদের ‘দৈনিক গণশক্তি’ পত্রিকাটি বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র দ্বারা বিপ্লব ঘটানোর নামে তরুণ সমাজকে বিপথগামী এবং বিভ্রান্ত করছিল অত্যন্ত জোরালোভাবে। বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের প্রবক্তা প্রচন্ড প্রভাবশালী সিরাজুল ইসলাম খান ওরফে দাদাভাই বঙ্গবন্ধু সরকারের জন্য ছিল বিরাট এক বাধা। এক মহাশত্রু। তেমনি বিপ্লববাদী কমরেড ইঞ্জিনিয়ার সিরাজ শিকদারও হুমকিস্বরূপ হয়ে দেখা দিয়েছিলেন। অন্যদিকে গ্রামেগঞ্জে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দলে বিভক্ত চীন সমর্থিত বিপ্লবপন্থী দলগুলো অকাতরে জানমাল লুট করছে, বিদ্রোহ করছে। পশ্চিমবঙ্গের নকশাল সন্ত্রাসীরাও মাঝেমাঝে বাংলাদেশে ঢুকে অঘটন ঘটাচ্ছে। বাবা দুঃখ করে বললো, ‘এইসব পরিস্থিতির কারণে বিদেশেও সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ যুদ্ধজয়ী লড়াকু জাতির দেশ হিসেবে ইমেজ ধরে রাখতে পারছে না। খুবই হতাশাব্যঞ্জক অবস্থা।’

এই অরাজক অবস্থার জন্য বঙ্গবন্ধু বাধ্য হয়েই বাকশাল ঘোষণা করেছিলেন বলে বাবার বিশ্বাস। মৃত্যুর মাত্র কিছুদিন আগে বাবা খুব দুঃখ করে আমাকে বললো, ‘বঙ্গবন্ধুর অনেক ভুল ছিল। তাঁর মধ্যে স্বজনপ্রীতি ছিল খুব বেশি। শত্রুমিত্র চিনতেন না। প্রধান এবং মারাত্মক ভুল ছিল মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদকে সরিয়ে দেয়া। তাজউদ্দিন বঙ্গবন্ধুর চেয়েও দূরদর্শী ছিলেন। তিনি বাঙালিকে যেভাবে মুক্তিযুদ্ধের ন’মাস হাড়ে হাড়ে চিনেছিলেন বঙ্গবন্ধু তা জানতেন না। বঙ্গবন্ধুর ঘরেবাইরে শত্রু ছিল অগণিত সেটা তাজউদ্দিন জানতেন। তাঁকে সাবধানও করে দিয়েছিলেন তাজউদ্দিন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু তাতে কর্ণপাত করেননি। তাজউদ্দিনকে সরিয়ে দেয়ায় যে ফলাফল দাঁড়িয়েছে সেটাই দুর্নীতি ও দুঃশাসনের কুরুক্ষেত্র আজকের বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু অনেক ভুল করেছেন যেগুলো আর শোধরানোর সুযোগ ছিল না। কিন্তু দেশ ও জাতির চরম ক্ষতি হচ্ছিল যে কারণে তিনি ১৯৭৫ সালের জুন মাসে বাকশাল শাসনব্যবস্থার ঘোষণা না দিয়ে পারলেন না।’

বাবা ছাড়াও যতখানি জেনেছি মানিকের কাছ থেকে বা আওয়ামী লীগ নেতা বাহাউদ্দিন বাহার ভাইয়ের সভাতে গিয়ে তাতে বাকশালের প্রকল্প পরিকল্পনা সমাজতান্ত্রিক ধাঁচের হলেও অকল্যাণকর কিছুই ছিল না। বিশৃঙ্খল জাতিকে একটি জাতীয় কাঠামোর অধীনে এনে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য সময়ে সময়ে একনায়কতান্ত্রিক নেতৃত্বেরও প্রয়োজন অস্বীকার করা যায় না, এমন নজির ইতিহাসে আছে। ভারতের মুঘলরা কি তাই ছিল না? জার্মানিতে হিটলার না এলে জার্মান জাতিকে গিলে খেতো ইহুদিরা। স্টালিন না এলে রাশিয়াকেও তাই করতো। জাপানের এদো যুগের সামুরাই শাসক তোকুগাওয়া ইয়েয়াসু একনায়কতন্ত্র জারি করে ২০০ বছরের জন্য বহির্বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিলেন। মূলত তখন যুদ্ধবিদ্রোহে লিপ্ত থাকা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যের একটি দেশ ছিল জাপান। যে কারণে ৪০০ বছর সামুরাই বংশ নির্বিঘ্নে রাজত্ব করতে পেরেছিল। একটি শক্ত জাতীয় ভিত্তি তৈরি হয়েছিল বলেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রায় ৪ বছর কাল সর্বশক্তিসম্পন্ন সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকা, বৃটেন, নেদারল্যান্ডসকে ঠেকিয়ে রেখে পুরো এশিয়াকে দখল করতে সম হয়েছিল জাপান। জাতিগত ঐক্য ও শক্তি এমনই একটি ব্যাপার।

বঙ্গবন্ধু বুঝেশুনেই এটা করতে চেয়েছিলেন মূলত দেশীয় বুর্জোয়া, অলস, মেরুদণ্ডহীন নেতৃস্থানীয়দেরকে প্রতিহত আর ঔপনিবেশিক শাসনব্যবস্থার আমূল সংস্কার সাধন করার লক্ষ্যে। কিন্তু পাকিস্তানফেরৎ বিপথগামী সামরিক কর্মকর্তা এবং ধনিক শ্রেণী বাকশাল রুখতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছে। একটি বিশাল সম্ভাবনা হারিয়েছে বাংলাদেশ। যারা বাকশাল বোঝেনি তারাই শুধু শুধু অপপ্রচার চালিয়েছে। যে কারণে আজও জাতিগত ঐক্য আমাদের স্থাপিত হয়নি। বস্তুুত ঐ উঠতি বয়সে আমাদের বন্ধুবান্ধবদের মধ্যেও অনেকে আওয়ামী লীগ না জাসদ ভালো এই বিভ্রান্তিতে পড়তে শুরু করে। অর্থাৎ রাজনীতির উষ্ণ-উত্তাপ এসে আমাদের শান্ত কোমল মনোভূমির সবুজ বৃপত্রকেও হলুদাভ করতে শুরু করেছিল যার প্রমাণ আমি নিজেও। বাবা তো পুলিশ মানুষ তাঁর চোখকান খোলা থাকেই। তাই তাঁর বুঝতে দেরি হয়নি আমি যে রাজনীতির বই দু-চারটা পড়তে শুরু করেছি।

কেন যেন মনে হতে লাগলো, চলমান রাজনীতিটা না বুঝলে বন্ধুহীন হয়ে যাবে আমার ভুবন। প্রকৃত বন্ধু ও মানুষকে বোঝার জন্য বর্তমান বাংলাদেশের একমাত্র ব্যারোমিটার হচ্ছে---রাজনীতি। কেননা সেই বয়সেই ধারণা হয়েছিল সর্বনাশা রাজনীতি এই দেশ এই জাতি এই সমাজকে আষ্টেপৃষ্ঠে গ্রাস করবে। তাই কী হয়নি পরবর্তীকালে? বাবাকেও আমি তাই বুঝিয়ে বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বাবার এক কথা: ‘ইফ ইউ ডু পলিটিক্স ইউ ইউল বি আউট অব সাপোর্ট।’ অর্থাৎ রাজনীতি করলে ভাত পাবে না। এবং কী আশ্চর্যের ব্যাপার, সেই ঘটনাই ঘটেছিল একবার আমার কলেজ জীবনে! একাডেমিক লেখাপড়ায় মনোযোগ আমার কখনোই ছিল না। যতখানি পড়ার ততখানিই পড়তাম। আমি মানুষের আশীর্বাদ আর দোয়ায় বিশ্বাসী। তখন মনে করতাম বড়রা আমাকে আশীর্বাদ করলে আমি যে কোনো পরীক্ষা ও সমস্যায় উৎরে যাবো। তাই স্বার্থপরের মতো এই প্রথম গেলাম ছোটরার সেই আগের জায়গায়। বড়দের পা ধরে প্রণাম করলাম, বললাম, ‘সামনে ম্যাট্রিক পরীক্ষা আমার জন্য আশীর্বাদ/দোয়া করবেন।’

বহুদিন পর পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হলো। আবেগে-আনন্দে অশ্রুসিক্ত হলাম। সঞ্জু, রঞ্জু তাদের ছোট বোন মিলু, লক্ষ্মীমাসির মেয়ে আভা আমাকে গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্ত করলো যে, আমি তাদেরকে ভুলে গেছি। বড়রাও একইভাবে অভিযুক্ত করলো, তোমরা এখন বড়লোক হয়ে গেছো আমাদের মতো গরীবদের কি মনে রাখবে, ইত্যাদি ইত্যাদি। লক্ষ্মীমাসি কাছে বসিয়ে মুড়ির মোয়া, নারকেলের নাড়ু খেতে দিলেন। পেড়াওয়ালী দিদিমণি পেড়া দিলেন। দীপুর মা তো মারা গিয়েছিলেন তার বাবা আমাকে আশীর্বাদ করলেন। লুচি, জিলিপি দিলেন এই বাড়িতে পরে আগত ভাড়াটে কৃষ্ণের বাবা-মা। কৃষ্ণদের চা-মিষ্টির দোকান আছে-জেল হাজত ঘরের কাছে বহু বছর আগে থেকেই। ছোটবেলায় কতবার যে গিয়ে সবাই মিলে মিষ্টি, লুচি, সিঙ্গারা খেয়েছি! কৃষ্ণের বাবা বেশ বয়স্ক সকলের প্রিয় ‘বদ্দা’ নামেই সুপরিচিত।

এঁরা যে আসলেই কত স্নেহ করতেন আমাকে সেটা সেদিন অনুভব করেছিলাম। অনুরূপ, কিশোরের বাবা-মা, খোকার বাবা-মা, তার সবচেয়ে বড়বোন শানু আপা, বড়ভাইদের মধ্যে খালেদভাই, দৌহিদভাই খুব খুশি হলেন আমাকে পেয়ে। খুকু এক বছরের বড় ছিল আমার, শাড়ি পরে কলেজে যায় মা বলেছিল, এই প্রথম তাকে শাড়িপরা দেখে বিমোহিত হলাম। ছোট্ট করে বললো, ‘ভালো আছো?’... চলবে।

আলোকচিত্র : উপরে, ধর্মসাগর পাড়ে এসে নতুন বন্ধু পেলাম শঙ্কর কুমার সাহা এবং গোলাম মোর্শেদ মানিক। নিচে, আরেক বন্ধু স্বপন সেনগুপ্ত যে গালে হাত দিয়ে বই পড়ছে।

লেখক : জাপানপ্রবাসী

(এএস/জুলাই ১৪, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test