অতলান্ত পিতৃস্মৃতি দ্বিতীয় অধ্যায়, পর্ব ১৩
প্রবীর বিকাশ সরকার : [ভূমিকা : আমার ৫৫ বছরের জীবনে বাবার সঙ্গে কেটেছে মাত্র ২৪-২৫টি বছর! জ্ঞান হওয়ার পর থেকে যেভাবে বাবাকে দেখেছি, চিনেছি, জেনেছি এবং বুঝেছি তার মূল্যায়নই হচ্ছে এই আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস বা স্মৃতিকথা ‘অতলান্ত পিতৃস্মৃতি’---এমন করে খোলামেলা খুঁটিনাটি কোনো স্মৃতিকথা আর কোনো বাঙালি লিখেছেন তার জন্মদাতা পিতৃদেবকে নিয়ে আমার অন্তত জানা নেই।]
বন্ধুরা যা বোঝার তো বুঝে গেলই আমার আচরণে। পুজো হলো ঘটা করে। দারুণ আনন্দ হয়েছে যেমনটি মুক্তিযুদ্ধের আগে শিখাদের সঙ্গে হয়েছিল। ‘গ’ এসেছিল দুদিন বেশ সেজেগুঁজে। দারুণ লাগছিল! মনে হচ্ছিল উদ্ভিন্ন আগুনের দুর্গা প্রতিমা! ছুঁতে গেলেই দগ্ধ হয়ে যাবে স্বয়ং শিবের আঙুল। আমি তো কোন্ ছাড়! আবার যে চোখাচোখি হয়নি কয়েকবার তা নয়, হয়েছে খুব সংগোপনে। পুজোর সময় বাবা শুধু একদিন সন্ধেবেলা বাসায় ছিল এবং উপভোগ করেছে আমাদের নাচ ব্যাস্ এই পর্যন্ত। পূজোর বাজেট থেকে বেশ কিছু পয়সা বেঁচেছিল, ঠিক বাঁচা নয়, বিষ্ণু বাঁচিয়ে ছিল কীভাবে কে জানে। জাত ব্যবসায়ীর ছেলে বলেই সম্ভব হয়েছিল। তার ল্ক্ষ্যই ছিল এটা যে, পুজোর পরে একটি পুনর্মিলনী করবে। সেই মোতাবেক এক রোববারে সকাল থেকেই মহাসমারোহে যেখানে মণ্ডপ তৈরি হয়েছিল সেখানে মাটি খুঁড়ে চুলো বানিয়ে রান্নাবান্না হলো। মুরগি, খাসি, বিভিন্ন মাছ, নিরামিষ কি না ছিল! ছেলেমেয়ে সবাই মিলে রান্না করেছি।
মাঝে মাঝে মেয়েদের উপর কাজের ভার ছেড়ে দিয়ে পার্কে গিয়ে লুকিয়ে ডোপ চললো সঙ্গে মৃতসঞ্জীবনী সুধা। সন্ধেবেলা সবাই মিলে খেলাম। পাড়ার বড়ভাই ও বন্ধুবান্ধবী সবাই এসেছিল। বাবাও যোগ দিল। ‘গ’ও এসেছিল। শাড়ি পরেই এলো। আহা, সেকি মাধুরী তার পেলব জোছনার মতো গলে গলে পড়ছিল! সামনাসামনি তার কোজাগরী রূপ দেখে বিমোহিত হলাম। কিন্তু কোনো কথা হলো না। মেঘদূতের ছিল মেঘ আর আমার বাসন্তী হাওয়া। বাতাসের মাধ্যমে বললাম, ‘এতদিন কোথায় ছিলে?’ তার কণ্ঠ থেকে উত্তর বাতাসে যেন ভেসে এলো, ‘আশেপাশেই তো ছিলাম, তুমি যে শিখার আগুনে চোখ পুড়িয়েছো তাই দেখতে পাওনি আমাকে!’ বিষয়টি দ্রুত জানাজানি হয়ে গেল আমারই দুর্বল আচরণের কারণেই। দুঃসাহসী বন্ধু বাকের ও রীপ বললো, ‘দোস্ত্ একটি কালিদাসী চিঠি লিখে দে, ওর বুকের চিলেকোঠায় পোস্ট করে আসি। বন্ধুর জন্য ‘হেমন্তের অরণ্যে পোস্টম্যান’ হয়ে কাজ করবো। সত্যি ঊর্বসী কাকে বলে! দোস্ত্ তোর দৃষ্টির প্রশংসা করতে হয়। তোর টেস্টই আলাদা মাইরি বলছি!’ রাজিও হয়েছিলাম একটি চিঠি লিখে দেবো বলে। শয়নে-স্বপনে দেখতাম মেয়েটি আমার টেবিলের চারপাশে যেন ঘুরছে। আমাদের উঠোনে এসে শাড়ির আঁচল গুঁজে এক্কাদোক্কা খেলছে আমার ছোটবোনের সঙ্গে। সর্পিল বেণী দুটো এদিক-সেদিক নড়ছে।
জানালার কাছে এসে নিচুকন্ঠে বলছে, ‘ভোর হলো দোর খোলো/ খোকাবাবু ওঠোরে/ শিউলি খোঁপার ঘ্রাণ/ মন ভরে লোটোরে।’ একদিন রাতে স্বপ্ন দেখলাম, সে বাবার সঙ্গে হেসে হেসে কথা বলছে, ‘পটুদা ভারি লাজুক, হাত বাড়িয়ে দিলেও ধরতে চায় না!’ বাবা বলছে, ‘তার হাত তো কবির হাত, সহজে পাওয়া যায় না।’ জেগেে উঠে দেখতাম কোথাও কেউ নেই! এভাবে কয়েক মাস গত হলো। সামনে পরীক্ষা। ব্যস্ততা বেড়ে গেল। ভালো রেজাল্ট না করতে পারলে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া যাবে না। তাই পাগলামি বন্ধ করে দিয়ে সবাই দিনরাত পড়ি। সকাল-বিকেল খুব একটা আমরা বেরোই না, আড্ডাও দিই না। বাবার সিলেটে যাওয়ার দেরি হয়ে গেল কোনো এক কারণে। একদিন বললো, ‘তোমরা হৈচৈ করো না তাই পাড়াটা মনে হয় বদলে গেছে। আমারও এবার কুমিল্লা ছাড়ার সময় এসে গেল। তুমিও পাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবে। আস্তে আস্তে আমাদের দূরত্বটা বাড়তে থাকবে। সাবধানে থেকো, ভালো করে পড়ালেখা করো। ভাইবোনদের দিকে নজর রেখো। তুমিই তাদের ভবিষ্যতের ভরসা। গতকাল বিকেলে শিখার ভাই স্বপন এসেছিল অফিসে একটা কাজে। তুমি বিয়েতে যাওনি বলে খুব দুঃখ করলো। ওরা তোমাকে খুব ভালোবাসে। ওরা আগামী মাসেই ঢাকা চলে যাচ্ছে বললো।’ বুকের ভেতরে হঠাৎ করে বিরহী সুরে বেহালা বেজে উঠলো। বন্ধ করে দেয়া জলসা ঘরের দরজাটা আবার খুলে দিল বাবা। বইয়ের পৃষ্ঠায় লেপ্টে থাকা মনোযোগটা ছিঁড়ে গেল। সেই রাতেই মার কাছ থেকে টাকা নিয়ে কান্দিরপাড়স্থ ফিলিপ্সের দোকানে গিয়ে ফিরোজা বেগমের রেকর্ড আছে কিনা জিজ্ঞেস করলাম। গানের লিস্ট দেখে বললো, ‘এখানে পাবেন না স্টেডিয়ামে পাবেন।’ রিক্সা নিয়ে সেখানে গিয়ে মেজর সাহেবের ইলেট্রনিক্সের দোকানে পেলাম একটি রেকর্ড। যে গানটি চেয়েছিলাম সেটি ছাড়াও আরও তিনটি গান ছিল যতখানি মনে পড়ে, ‘মোরা আর জনমে হংস মিথুন ছিলাম’, ‘আমি চাঁদ নহি---চাঁদ নহি অভিশাপ’, ‘বুলবুলি নীরব নার্গিস বনে।’ গভীর রাতে অন্ধকারে লুলুমুন্ডিতে বাজলো মিহি শব্দে, ‘গভীর নিশিথে ঘুম ভেঙে যায়/ কে যেন আমারে ডাকে/ সেকি তুমি/ সেকি তুমি.........?’ এই প্রথম সমস্ত হৃদয় দিয়ে এমন একটি বেদনা অনুভব করলাম যার কোনো রং নেই, স্বাদ নেই, গন্ধ নেই কিন্তু আগুনে পোড়া জ্বালাযন্ত্রণার মতো ধিকি ধিকি জ্বলে। সত্যিই শুধু প্রেম নয়, মানবিক সম্পর্ক নয়, বিরহ-বেদনা নয়, গভীর মনোযোগ দিয়ে শুনলে নজরুলের প্রতিটি গান অবচেতন স্বদেশপ্রেমের ঘুমও ভাঙিয়ে দেয়। গানটির যে কত রকম অর্থ হতে পারে এবার বুঝলাম।
সেদিন বাবা যা বলেছিল সেই কথার মর্ম বুঝতে আর কোনো কষ্ট হলো না। কাজী নজরুল যে সত্যিই কত বড় জীবনঘনিষ্ঠ কবি ছিলেন খুব কম মানুষই তাঁকে বুঝতে পারবে, বাবার উপলদ্ধিকে বার বার প্রণাম জানালাম। পরীক্ষা ভালোই হলো। ব্যস্ত থাকলেও ‘গ’ কিন্তু মন থেকে মুছে গেল না। এর মধ্যে সে একদিনও আসেনি। এবারও বরাবরই অঙ্ক পরীক্ষা তেমন ভালো হলো না। এর মাঝে বাবা সিলেট থেকে এলো অফিসের কাজে কুমিল্লায়। কয়েকদিন ছিল। কী মনে করে বাবার সঙ্গে সিলেটে গেলাম। নদীর তীরে বালাগঞ্জ থানার ভিতরেই বাবার থাকার ঘর। এক রাত ছিলাম বাবার সঙ্গে---সেই ছেলেবেলার পর। তারপর সপ্তাহ খানেক ছিলাম সিন্দ্রাকোণা গ্রামে। শেষবার এসেছিলাম ম্যাট্রিক পরীক্ষার আগে। ভেবেছিলাম সরমা আছে ভালোই কাটবে সময়টা। ওকে নিয়ে অনেক দূরে জগন্নাথবাড়ি যাবো। সেখানে আমার এক পিসি আছে। জায়গাটা খুব সুন্দর। বর্ষায় একবার গিয়েছিলাম। অতীত দিনের পুজোর ঘন্টার ধ্বনি শুনতে পেলাম যেন। কিন্তু সরমা ছিল না। রাঙ্গাপিসি, রেণুদি আর সরমা গেছে বিয়ানীবাজার আমাদের সবচেয়ে বড় জেঠাতো বোন প্রভাসদির বাড়িতে বেড়াতে। কবে আসে ঠিক নেই বললো জেঠিমা। কী আর করা। মনটা অস্থির হয়ে পড়লো।
বাবাকে বলে চলে এলাম কুমিল্লায়। আসার আগের দিন বাবা কাজের লোকটাকে বলে শর্ষের ইলিশ, টাকিমাছের ভর্তা, পাবদা মাছের চচ্চড়ি, মুগের ডাল ইত্যাদি রাঁধালো। চমৎকার রাঁধলো বটে! সব মাছই থানা সংলগ্ন কুশিয়ারা নদীর জলজ ফসল। কুমিল্লায় এসে বেকার হয়ে পড়লাম যদিও লেখালেখি চলছিল। প্রতিদিন আড্ডা আর আড্ডা, পার্কে না হয় কলেজের ক্যান্টিনে। মাঝে মাঝে সাহিত্যপাঠের আসরে। বাইরে থাকলে অনেক কিছুই ভুলে থাকি। রাতে বাসায় ফিরলে কেমন যেন অস্থির হয়ে পড়ি। কেবল ঘরবার করি। সিগারেট ফুঁকি। সিগারেট যে টানি সেটা বাসার সবাই জেনে গেছে। শুধু সিগারেটই নয়, ডোপ, ড্রিঙ্ক করা সম্বন্ধেও বাবা-মা অবগত। আমিও নির্ভার হলাম। মাকে বললে আমার সিগারেট কিনে নিয়ে আসে এই অবস্থা পর্যন্ত দাঁড়িয়ে গেছে। বন্ধুরা তো ভাবতেই পারে না! আসলে মার ইচ্ছে আমি যাতে বাইরে না যাই। গত বছরের শেষ দিকে অদ্ভুত ঘটনা ঘটলো। আমি, মঞ্জু পাটোয়ারী, বিষ্ণু, স্বপন ও মানিক মিলে মঞ্জুর ঘরে বাংলা মদ এবং চট্টগ্রাম থেকে বাবুলভাই নিয়ে এসেছেন বিখ্যাত ‘ভুইল্যা’----খেলাম এবং টানলাম। এমন নেশা হয়ে গেল যে, হাসলে তো হাসি, কাঁদলে কাঁদতে থাকি। প্রায় উন্মাদ। বাংলা মদ পান করার পর খাসির মাংশ খেতে দারুণ স্বাদ। মঞ্জু বললো, ‘এক স্যারের জায়গা দালালি করে বিক্রি করে দিয়ে কিছু টাকা পেয়েছি। চল্ খাসির মাংশ খেয়ে আসি। চকবাজারে রূপালি সিনেমা হলের কাছেই পুলিশ ফাঁড়ির সংলগ্ন একটি রেস্টুরেন্ট আছে। দারুণ রান্না করে!’ বলতেই হু্ররে বলে দুটি রিক্সায় চেপে রওয়ানা দিলাম আমরা। গিয়ে বসলাম অর্ডার দিয়ে।
সময়মতো চলে এলো সুবাস ছড়িয়ে গরম মাংশের থালা পরোটাসহ। খাচ্ছি বেশ হাসিখুশির সঙ্গে। মঞ্জু এটা সেটা বলে বেশ হাসাচ্ছে। হাসির দমকে মানিক দাঁড়িয়ে পড়ছে। আমি বললাম, ‘মঞ্জু বিচিয়ে দ্যাখতো থালাটিও মনে হয় খাসির মাংশ দিয়ে তৈরি।’ বলতেই এমন হাসির রোল উঠলো যে বিষ্ণু হাসতে হাসতে দোকানের বাইরে চলে গেল একটি হাড় হাতে নিয়ে। ঝালের ঝাঁঝ গিয়ে উঠেছে স্বপনের মগজে সে মাটিতে বসে মাথা চাপড়াচ্ছে। মানিক চলে গেছে বেসিনের কাছে কাশতে কাশতে। সে কী এক অবস্থা! আমিও হাসতে হাসতে প্লেটে মাথা ঠেকিয়ে ফেলেছি। দোকানের কিছু কাস্টমারও হাসছিল। আমার পাশের বেঞ্চিতে চারজন পুলিশ সিভিল ড্রেসে মাংশ খাচ্ছিল, মুখ থেকে ভুর ভুর করে বেরোচ্ছে নির্জলা বাংলা মদের স্পিরিটের দুর্গন্ধ তারাও হাসতে লাগলো কিছু না বুঝেই। যাহোক, কিছুক্ষণের মধ্যেই স্বাভাবিক হয়ে খাওয়া শেষ করলাম। হাত ধুয়ে আয়েশ করে সিগারেট ধরালাম সবাই। পুলিশগুলো এতক্ষণ পর্যন্ত বুঝতে পারেনি যে আমরা মাতাল। যেই সিগারেট ধরালাম তারা নড়েচড়ে উঠলো, মনে করেছে আমরা এখনো স্কুলের ছাত্র। একজন কঠিন মুখ করে জিজ্ঞেস করলো, ‘ছাত্র নিকি ভায়েরা?’ বিষ্ণুটা বরাবরই ঝগড়াটে এবং কারো কোনো কথারই সোজা উত্তর দেয় না, ঘাড়তেড়া, বললো, ‘সন্দেহ আছে নিকি?’ তার কথার জবাবে পুলিশগুলো কিছু বললো না। কিছুক্ষণ পরে আমার কনুইটা অনিচ্ছাসত্ত্বেও পেছনে বসা একজন পুলিশের ঘাড়ে লেগে গেল।
আমি ‘সরি’ বলার পরেও এমনভাবে কটমট করে তাকালো আমাদের দিকে যে বিষ্ণুর আর সইলো না। বলে উঠলো, ‘ভাই, এমন কইরা দেইখ্যেন না, ডর লাগে।’ এই কথা শুনে পুলিশটা দাঁড়িয়ে যাচ্ছিল আমি তার কাঁধ ধরে চাপ দিয়ে বললাম, ‘ভাই আপনারা যে গোয়াল থেকে এসেছেন আমরা সেই গোয়ালেরই লোক।’ আর যায় কোথায়? ব্যাস্ বেঁধে গেল বিষ্ণুর সঙ্গে প্রায় হাতাহাতি। সে তেড়ে উঠে বললো, ‘ওই মিয়া খারাপ কইছে নিকি, চিনছেন কার লগে লাগছেন?’ আমার দিকে আঙুল তুলে বললো, ‘আপনাগো বস কোর্টের জিআরও পরেশবাবুর পোলা।’ শুনে আর কোনো কথা না বলে বসে পড়লো লোকটি, তারপর একজন হেসে বললো, ‘আরে ভাই এটা আগে কইবেন না? আমরা কি আপনাগো পর নিকি? ওই মাইন্ক্যা চা লাগা এখানে।’ পরের দিনই রেজাল্ট পেয়ে গেলাম। সাধারণত বাবার পরিচয় কোথাও আমি দিই না। বিষ্ণুটা বলে ফেলেছে কী আর করা। রাতে বাসায় ফিরেই বাবা আমার ঘরে এসে বললো, ‘গতকাল চকবাজারে ফাঁড়ির পুলিশের সঙ্গে ঝগড়া করেছিলে কেন?’ আমি বললাম, ‘কার কাছ থেকে শুনলে?’ ‘কেন? ওরাই বললো সকালে। তোমরা নাকি অ্যাবনর্মাল ছিলে?’ আমি বললাম, ‘অ্যাবনর্মাল ছিল ওরা, আমরা ছিলাম অসুস্থ তাই কিছু কথা কাটাকাটি হয়েছে।’ বাবা আর কোনো কথা খুঁজে না পেয়ে শুধু বললো, ‘ও।’ এর পর আরও বেশ কয়েকবার অভিযোগ করেছে বাবা, ‘শাসনগাছা মদের আড্ডায় গিয়েছিলে কেন রাতের বেলা? খাও। খেতে পারো।
এতে দোষের কিছু দেখি না। তবে এমন কাণ্ডকীর্তি করো না বিশেষ করে পুলিশের সঙ্গে তাতে ওরা মনে করতে পারে গার্ডিয়ান হিসেবে আমি দুর্বল। আমি এই শহরে কী পজিশনে আছি সে তুমি ভালো করেই জানো। আমি তোমাদের সবাইকে স্বাধীনতা দিয়েছি। ব্যক্তি স্বাধীনতায় আমি নিজেও বিশ্বাসী সেটা তুমি নিজেও বোঝো। স্বাধীনতা মানে নিজের শক্তিক্ষয় আর মানুষকে হেয় করা নয় এটা স্মরণে রেখো।’ ঠিকই বলেছে বাবা। সাংঘাতিক সত্য কথা। আমি ক্ষমা চেয়ে নিলাম। বস্তুত আমরা বদলে যাচ্ছিলাম ক্রমশ। নানা কারণেই। আর্থিক দৈন্যতা, সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা, চোখের সামনে সীমাহীন সামরিক স্বৈরাচারী শাসন-শোষণ, জাতির ভবিষ্যৎহীনতা তাছাড়া হৃদয়ঘটিত বায়বীয় সমস্যা তো আছেই এই বয়সে। এইসব হতাশাজনিত মনোরোগের সহজতম আশ্রয় বা উপশম হচ্ছে নেশা। অনেক সময় পয়সা না থাকলেও দেখেছি বন্ধুদেরকে কাশের ওষুধ ফেন্সিডিল সাবাড় করে দিতে।
এক পোটলা শুকনো পাতার আর কত দাম? কাশের ওষুধ খেয়ে নেশা করার মতো এত নিচে নামার ইচ্ছে আমার ছিল না। নামিওনি কোনোদিন। এর মধ্যে ‘গ’এর সঙ্গে দু/তিনবার দেখা হয়েছে। আমাদের বাসার সামনে দিয়েই বিনম্র পায়ে হেঁটে গেছে মামার বাসায়। হয়তো অনিচ্ছাসত্ত্বেও তাকিয়েছে আমার ঘরের জানালার দিকে। আমি খাটে হেলান দিয়ে লিখতাম বাইরের দিকে তাকিয়ে। যতবারই দেখতাম মনে হতো সে বেড়ে উঠছে, পুষ্ট হচ্ছে। মেদহীন, মসৃণ উদ্ভিন্ন আগুনের প্রতিমা। আমি অবশ্য আগের মতো আর অত উচ্ছ্বাস অনুভব করি না তাকে দেখে। তবে মাঝে মধ্যে একটা বুনো ঝড় ওঠে যখন রাতে হেমন্ত মুখার্জীর গানগুলো শুনি: ‘পথ হারাবো বলেই এবার পথে নেমেছি / সোজা পথের ধাঁধায় আমি অনেক ধেঁধেছি’ কিংবা ‘তোমার আমার কারো মুখে কথা নেই’ অথবা ‘সবাই চলে গেছে শুধু একটি মাধবী তুমি এখনো তো ঠিকই ফুটে আছো, কেন?’ ... চলবে
আলোকচিত্র : বামে, ধর্মসাগর পশ্চিম পাড় তখন এত বড় বড় দালান ছিল না। এই পথটি ডিসির অফিস হয়ে সোজা চলে গেছে ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের বাড়ির সামনে নিয়ে বাদুরতলাস্থ বড় রাস্তা পর্যন্ত। ডানে, এরকমই ছিল এ পাড়ায় সরস্বতী পুজো আমাদের কৈশোর ও যৌবনের প্রথম দিকে, এখন এই পাড়ায় হিন্দু নেই বললেই চলে।
লেখক : জাপানপ্রবাসী
(এএস/জুলাই ২৩, ২০১৪)
পাঠকের মতামত:
- বরগুনায় অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
- 'বৈশ্বিক জলবায়ু হুমকি মোকাবেলায় পরিবেশ বান্ধব কল-কারখানার বিকল্প নাই'
- 'ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সেবার মান বাড়াতে করণীয় সবকিছু করা হবে'
- ফরিদপুরের মধুখালি ও বোয়ালমারি উপজেলায় সামাজিক সম্প্রীতি সভা
- ফরিদপুরে নৌ পুলিশের অভিযানে চায়না দুয়ারি ও কারেন্ট জাল জব্দ, গ্রেফতার ২
- মধুখালির ডুমাইনে নিহত দুই ভাইয়ের পরিবারের সাথে দুই মন্ত্রীর সাক্ষাৎ
- দুই বিভাগে বৃষ্টির আভাস, বাড়বে ভ্যাপসা গরম
- ‘উপজেলা ভোট ব্যর্থ হলে ৭ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত গণতন্ত্র ব্যর্থ হবে’
- নির্মাতা আরেফীনের সিনেমায় পাওলি দাম
- লঁরিয়েকে ৪-১ গোলে হারিয়ে পিএসজির জয়
- ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর গ্রেপ্তার চায় আর্জেন্টিনা
- ‘যুক্তরাষ্ট্র সরে গেলে বিশ্বকে নেতৃত্ব দেবে কে’
- পশ্চিমবঙ্গের ২০ জায়গায় তাপমাত্রা ছাড়াল ৪০ ডিগ্রি
- ‘যুদ্ধ কখনো কোনো সমাধান দিতে পারে না’
- ইউক্রেনকে গোপনে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
- শপথ নিলেন তিন বিচারপতি
- দেশে আবারও ৩ দিনের ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি
- ‘প্রচন্ড লড়াই শেষে পাকবাহিনী বরিশাল শহর দখল করে নেয়’
- সাজেকে ডাম্পট্রাক খাদে পড়ে ৬ শ্রমিক নিহত, আহত ১৩
- কেন্দুয়ায় ৩ দিনব্যাপী জালাল মেলার বর্ণাঢ্য আয়োজন
- তাপপ্রবাহে ‘অতি উচ্চঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা
- ভালোবাসার শহর পাংশার আয়োজনে পথচারীদের মাঝে শরবত বিতরণ
- বরগুনায় হিট স্ট্রোকে শ্রমিকের মৃত্যু
- ‘রেলের ভর্তুকি প্রত্যাহার করা হবে’
- মোংলায় ওএমএস এর চাল বিতরণে অনিয়ম, ২০ বস্তা চাল জব্দ
- কালুখালীতে গাঁজাসহ এক মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার
- নগরকান্দায় সামাজিক সম্প্রীতি সমাবেশ সভা, ব্যাপক তৎপরতায় থানা পুলিশ
- বৃষ্টি প্রার্থনায় টাঙ্গাইলের বিভিন্ন স্থানে ইসতিসকার নামাজ আদায়
- বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের ‘সহ-প্রচার সম্পাদক’ নির্বাচিত অনয় মুখার্জী
- বাগেরহাটে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২
- বাগেরহাটে তাপমাত্রা ৪১.৬ ডিগ্রি, জনজীবনে স্থবিরতা
- বোয়ালমারীতে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতৃবৃন্দের সাথে চেয়ারম্যান প্রার্থী মুশা মিয়ার মতবিনিময়
- পুতুল পোড়াতে গিয়ে আগুনে দগ্ধ শিক্ষার্থী
- বোয়ালমারীতে হিরু মুন্সীর কার্বণ মিল ও সীসা কারখানা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন
- ঈশ্বরদীতে হিটস্ট্রোকে স্বর্ণ শিল্পীর মৃত্যু
- ‘আবাদি অঞ্চল ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ছাড়া সর্বত্র সমান লোডশেডিং হচ্ছে’
- চট্টগ্রামে ৩ দিনব্যাপী উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত সম্মেলন উদ্বোধন করবেন সুরস্রষ্টা শেখ সাদী খান
- জামালপুরে শিশুদের নিরাপত্তায় পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা শীর্ষক সভা
- বাগেরহাটে মহানবী ও চার খলিফা সর্ম্পকে মুসলিম যুবকের ফেসবুকে কটুক্তি, ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ সমবেশ
- পুলিশের তাৎক্ষণিক তৎপরতায় বেঁচে গেল ট্রেনের হাজারো যাত্রী
- ঝিনাইদহে বৃষ্টির আশায় ইস্তিস্কার নামাজ আদায়
- বেলকুচিতে চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় সংসদ সদস্যের ভাই ও সহকারি
- টাঙ্গাইলে তীব্র তাপপ্রবাহে হাসপাতালে রোগীদের ভিড়
- কাশিয়ানীতে আমের লোভ দেখিয়ে শিশুকে ধর্ষণ
- নাগরপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলমগীর হোসেন আলোর দাফন সম্পন্ন
- গোপালগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র রাজুর ইন্তেকাল
- নেটওয়ার্ক আধুনিকায়নের লক্ষ্যে বাংলালিংক ও হুয়াওয়ের চুক্তি
- বাগেরহাটের দুই উপজেলায় বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায়
- ‘এক গাছে পাঁচবার ধান’ দেশের খাদ্য চাহিদা মেটাতে বড় সফলতা
- গাজীপুরে সর্বজনীন পেনশন স্কিম কার্যক্রম বাস্তবায়নে সমন্বয় কমিটির সভা
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- সিলেটের ভ্রমণ কাহিনী
- শুধু প্রভাবশালীদের পক্ষেই আইন!
- অম্ল-মধুর যন্ত্রণায় অপু বিশ্বাস
- লাইন ধরে খেতে হয় লিখনের জগা খিচুড়ি !
- আমার বোন শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি : চিনে নিন কে এই বরকত!
- 'ইতিহাসের ইতিহাস'
- ধনী হওয়ার আট কার্যকর উপায়
- মেয়ে পটানোর কৌশল!
- লক্ষাধিক রাখাইন জনগোষ্ঠী আড়াই হাজারে নেমে এসেছে
- উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের নতুন যাত্রা ১ বৈশাখ
- লোভী মানুষ চেনার সহজ উপায়
- আমায় ক্ষমা কর পিতা : পর্ব ১৪'তোমার সহজাত উদারতা তোমাকে আকাশের সীমানায় উন্নীত করলেও তোমার ঘনিষ্ঠ অনেকের প্রশ্নবিদ্ধ আচরণ তোমার নৃশংস মৃত্যুর পথে কোনই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি'
- বাংলা বই পড়ার ওয়েবসাইট
- শাকিবের নায়িকা শ্রাবন্তী, অপুর নায়ক জিৎ
- মঠবাড়িয়ায় ৯ বছরের শিশুকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা
- হুমায়ূনের মৃত্যুর কারণ মদের পার্টি !
- দেশে ফিরছেন তারেকস্ত্রী জোবায়দা রহমান
- বোরকা পরা মেয়ের গণধর্ষণের ভিডিও নিয়ে সিলেটে তোলপাড়
- ইউটিউবে নায়লার আত্মপ্রকাশ
- নেপালের ভূমিকম্প প্রাকৃতিক নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্টি !
- বিএনপির আন্দোলন হচ্ছে দলের অভ্যন্তরে !