E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ : এক অনন্যসাধারণ দলিল

২০১৬ মার্চ ০৭ ১৪:৫৩:৪৪
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ : এক অনন্যসাধারণ দলিল

মোঃ মুজিবুর রহমান : আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস এবং বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় উজ্জ্বল এক দিন। একটি অমর কবিতার জন্মদিন। পাশাপাশি বাঙালির জন্য জাতীয়তাবোধ ও স্বাধিকারবোধে উদ্দীপ্ত হওয়ার দিন ।   সেই  মহাকালের কালপরিক্রমায় ঘুরে আবার ফিরে এসেছে সেই ঐতিহাসিক দিনটি। বাংলাদেশের ইতিহাসে অনেকগুলি দিনের মধ্যে এ দিনটি অন্যতম এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ  দিন । তেইশ বছর আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে  বঙ্গবন্ধু ধাপে ধাপে জাতিকে স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত করে তোলেন। কারণ তিনি বুঝতে পেরেছিলেন স্বাধীনতা ছাড়া বাঙালি জাতির রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন সম্ভব নয়।

পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি হিসেবে ৭ মার্চ রেসকোর্স (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ) বঙ্গবন্ধু লক্ষ লক্ষ জনতার সামনে তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। এই ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের পর থেকে এ দেশের প্রশাসন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুর নির্দেশই চলেছে। এই ভাষণের গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য কখনোই হারাবে না। আজীবন আপোষহীন লড়াই সংগ্রামে আপোষহীন নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ আমাদের জাতীয় জীবনের অমূল্য সম্পদ ও অন্তহীন প্রেরণা। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন এ ভাষণের চেতনা ও আদর্শ আমাদের সকলের কাছে প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে ।

মানব সভ্যতার ইতিহাস ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাষণ। এ ভাষণটি বাংলা ভাষায় শ্রেষ্ঠতম ভাষণ। ভাষণটি ছিল খুবই সাজানো ও প্রাণবন্ত। আবার রাষ্ট্রনায়কসুলভ অভিব্যক্তি এতে প্রকাশ পেয়েছে। আজ থেকে ৪৫ বছর আগে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে ( বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। ভাষণে কীভাবে লড়াই করতে হবে সে বিষয়ের নির্দেশ ছিল। বিশ্বে এ ভাষণ গুরুত্বপূর্ণ ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ভাষণ হিসেবে বিধৃত। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের ১৯ নভেম্বর ১৮৬৩ তারিখের প্রদত্ত গেটিসবার্গ ভাষণ গণতন্ত্রের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে। তেমনিভাবে ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্বের স্বাধীনতাকামী মানুষের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে এবং নির্যাতিত মানুষের কাছে স্বাধীনতার বীজমন্ত্রতুল্য বলে বিবেচিত হবে। আব্রাহাম লিংকন ভাষণ দিয়েছেন আমেরিকার গৃহযুদ্ধের পটভূমিতে। আর বঙ্গবন্ধুর প্রদত্ত ভাষণ ছির স্বাধীনতা লাভের পটভূমিতে। আর আব্রাহাম লিংকনের ভাষণের পটভূমি ছিল গণতন্ত্র রক্ষা। এ ভাষণের পরিসর ছিল সীমিত। আর বঙ্গবন্ধুর ভাষণের বিষয়বস্তু ছিল আরও অনেক ব্যাপকতা । বঙ্গবন্ধুর ভাষণের পটভূমি , পরিস্থিতি ও পরিবেশ ছিল আব্রাহাম লিংকনের ভাষণের চাইতে বেশি সংকটময় ও অগ্নিগর্ভ।

উল্লেখ করা যায় , আব্রাহাম লিংকনের ভাষণের একটি লিখিত রূপ ছিল। অপরদিকে বঙ্গবন্ধুর ১৯ মিনিটের ভাষণ লিখিত ছিল না। আব্রাহাম লিংকনের ভাষণের সময়সীমা ছিল তিন থেকে চার মিনিট। আব্রাহাম লিংকনের ভাষণের শব্দসংখ্যা ছিল মাত্র ২৭২টি। আর বঙ্গবন্ধুর ভাষণের শব্দসংখ্যা ছিল ১১০৭টি। ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, আব্রাহাম লিংকন ভাষণ দিয়েছেন আমেরিকার স্বাধীনতা লাভের অনেক পরে। তখন তিনি ছিলেন ষোলতম আমেরিকার প্রেসিডেন্ট । আর বঙ্গবন্ধু ভাষণ দিয়েছেন বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে ।

একাত্তরের ৭ মার্চে বিশাল রেসকোর্স ময়দান রূপ নেয় জনসমুদ্রে। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার সব মিছিলই এসে থামে রেসকোর্স ময়দানে। ঢাকা শহর ছিল মিছিলের শহর। মিছিল আর মিছিল। জনতার ঢলে শুধু শ্লোগান আর শ্লোগান। বাঁশের লাঠির সঙ্গে লাখো কণ্ঠের শ্লোগানে কেঁপে ওঠে সেদিনের জনসমুদ্র এবং ঢাকা শহর। বাতাসে উড়ে সবুজ জমিনে বাংলার মানচিত্র আঁকা লাল সূর্যের অসংখ্য পতাকা । বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি আর হাতাকাটা কালো কোট পরে বাঙালির মহান নেতা বঙ্গবন্ধু দৃপ্ত পায়ে উঠে এলেন মঞ্চে। শ্লোগান আর মহুর্মুহু করতালির মধ্যে হাত নেড়ে অভিনন্দন জানালেন অপেক্ষামাণ জনসমুদ্রকে। তারপর শুরু করলেন তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণ। রেসকোর্স ময়দানের এই ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধু যে ডাক দেন, সেই ডাকেই বাঙালি জাতি মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকে। পরে ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী নৃশংস গণহত্যা শুরু করে।

২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ। এদিকে গোটা জাতি ছিল প্রস্তুত, ৭ মার্চের ভাষণের দিকনিদের্শনা জাতির সামনে স্পষ্ট- যা বঙ্গবন্ধু দিয়েছিল এভাবে, ‘ প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে।... প্রত্যেক গ্রামে, প্রত্যেক মহল্লায়, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোল এবং তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাক।’ ভাষণের যেসব অংশে বঙ্গবন্ধুর আদেশ, নির্দেশ, অনুরোধ ছিল সেগুলো মুক্তিযুদ্ধকালে অগ্নিমন্ত্রের মতো কাজ করেছে। আবার বিশ্ব জনমতের সমর্থন ও কূটনীতির ক্ষেত্রে এই ঐতিহাসিক ভাষণ প্রচণ্ডভাবে প্রভাবিত করেছে। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মদান, দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানি ও সমগ্র বাঙালি জাতির বিশাল ত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছিলাম বহু কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা।

বাঙালির মহান নেতা বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণে পাকিস্তানের তেইশ বছরের রাজনৈতিক শোষণ-বঞ্চনার ইতিহাস এবং বাঙালির সুস্পষ্ট অবস্থানের চমৎকার ব্যাখ্যা দিয়ে অসহযোগ আন্দোলনের পটভূমি তুলে ধরেন। তুলে ধরেন দ্বন্দ্বের স্বরূপ। পাশাপাশি বিস্তারিত কর্মসূচি ঘোষণা করে প্রতিরোধ গড়ে তোলার নির্দেশ দেন। ভাষণে তিনি প্রতিরোধ সংগ্রামের কলাকৌশল ও শত্রু মোকাবিলার কায়দা সম্পর্কেও দিকনির্দেশনা দেন, যা ছিল এক অপূর্ব ও নাতিদীর্ঘ উপস্থাপনা।

স্বাধীনতা ঘোষণার প্রশ্নে একজন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হিসেবে যাতে চিহ্নিত না হন সে বিষয়ে সচেতন ছিলেন বঙ্গবন্ধু। অন্যদিকে শত্রুপক্ষকে এমন কোনো সুয়োগ দেওয়া যাবে না যাতে তারা অপ্রস্তুত জনগণের ওপর সশস্ত্র আক্রমণ করার সুয়োগ পেয়ে যায় সে দিকেও নজর রেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষণে। এই ভাষণে বাঙালির প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রনীতি অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। তাঁর এই ভাষণে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মুক্তির কথাও উল্লেখ করেন। মানুষকে হত্যার প্রসঙ্গে এই ভাষণে বারবার উত্থাপিত হয়েছে এবং এ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু এসব ঘটনাকে চিহ্নিত করেছিলেন আমার লোক, আমার মানুষকে হত্যা হিসেবে।

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের প্রতিটি উক্তিই উদ্ধৃতিযোগ্য ও বিশ্লেষণাত্মক দৃষ্টিতে আলোচনার সুযোগ রয়েছে। জোরালো যুক্তি খুব সহজাত বিশেষত্বে বঙ্গবন্ধু বললেন, ‘ যে আমার পয়সা দিয়ে অস্ত্র কিনেছে বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য- আজ সেই অস্ত্র ব্যবহার হচ্ছে আমার দেশের গরিব-দুখী-আর্ত মানুষের মধ্যে।’ বঙ্গবন্ধু নিজস্ব ভঙ্গিতে এক পর্যায়ে উচ্চারণ করলেন,‘আর আমার বুকের ওপর গুলি চালানোর চেষ্টা করবা না। সাত কোটি মানুষের দাবায়ে রাখবার পারবা না। আমরা মরতে শিখেছি, এখন কেউ আমাদের দমাতে পারবে না।’ বঙ্গবন্ধুর ভাষণের মধ্যে কঠিনের সাথে কোমলের সহাবস্থান ছিল। এই বৈশিষ্ট্যটি বঙ্গবন্ধুর মাঝে সর্বদাই বিদ্যমান ছিল। তিনি বড় কঠিনভাবে বললেন, ‘আমরা ভাতে মারব, আমরা পানিতে মারব।’ আবার আশ্বাসবাণী হিসেবে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী উদ্দেশে উচ্চারণ করলেন,‘ তোমরা আমার ভাই- তোমরা ব্যারাকে থাক, কেউ তোমাদের কিছু বলবে না।’


রেসকোর্স ময়দানের জনসমুদ্র তখন উত্তাল। সময় তখন ফুরিয়ে যাচ্ছে। বাঙালি যেন আরও কিছু শুনতে চায়। অবশেষে অবিনশ্বর পংক্তিটি বঙ্গবন্ধু উচ্চ করলেন, যা শোনার জন্য বাঙালি জাতি উন্মুখ ছিল, ‘ এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ তখন বাংলার মাটি ও বাঙালি জাতি একাকার হয়ে গর্জন দিয়ে ওঠে লক্ষ কোটি কামানের মতো। সেদিনের ভাষণে শুধু স্বাধীনতা নয়, মুক্তির কথাও বলেছেন। যার তাৎপর্য আরও গভীর ।


রেসকোর্স ময়দানে বিশাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে নিদের্শনামূলক কাব্যময় বক্তৃতা প্রদান একমাত্র বঙ্গবন্ধুর পক্ষেই সম্ভব বিধায় আন্তর্জাতিক সাময়িকী নিউজউইক একাত্তরের ৫ এপ্রিলে প্রকাশিত তাদের প্রচ্ছদ নিবন্ধে ‘রাজনৈতিক কবি’ বলে আখ্যায়িত করেছিল। এই রাজনৈতিক কবির অমর রচনা হচ্ছে ৭ মার্চের ভাষণ। যা বাঙালির মহাকাব্য। রেসকোর্সের জনসমুদ্র সেদিন মন্ত্রমুগ্ধের মতো আবিষ্ট হয়েছিল সেই বজ্রকণ্ঠে। তাঁর ভাষণের প্রতিটি পংক্তি যেন কালজয়ী কবিতার পংক্তি। এই মহাকাব্য বাঙালি জাতির সংগ্রাম-আন্দোলনের ধারা ও লালিত স্বপ্ন থেকে উৎসারিত। এই মহাকাব্য বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার মূলমন্ত্রে উদ্দীপ্ত ও দীক্ষিত করেছিল। সাহস, প্রতিজ্ঞা ও স্বদেশপ্রেমে উদ্ধুদ্ধ হয়ে বাঙালি জাতির ঘুরে দাঁড়ানোর একটি দিন ছিল একাত্তরের ৭ মার্চ। বাংলাদেশ নামক দেশটি অবয়ব তৈরির কাজটি করেছিলেন বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের সেই ঐতিহাসিক ভাষণে।

একাত্তরের ৭ মার্চ ছিল বাঙালি জাতির জন্য একটি মাহেন্দ্রক্ষণ। আন্দোলন-সংগ্রামের পরিণত ফসল । বিশ্লেষণ করে বলা যায় যে, যখন বাঙালি জাতি পরাধীনতার দীর্ঘ প্রহর শেষে কাক্সিক্ষত স্বাধীনতার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল তখনই বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির জন্য দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণে। এ ভাষণের স্তরে স্তরে ছিল এদেশে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠির শাসনের পরিসমাপ্তির ঘোষণা ও বিবরণ। সেই সঙ্গে ছিল পৃথিবীর মানচিত্রে একটি নতুন দেশের অভ্যুদয়বার্তা । এই ভাষণ থেকে বাঙালি জাতি পায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রেরণা। সব ভেদাভেদ ভুলে সমগ্র বাঙালি জাতিকে এক করে দিয়েছিল এ ভাষণটি। বিদ্যামান রাজনৈতিক পরিবেশ-পরিস্থিতিতে এ ভাষণে ছিল বিচক্ষণ রণকৌশলের নির্দেশনা। ঐ ভাষণের পরেই বাঙালি জাতির সামনে একটি গন্তব্য নির্ধারণ হয়ে গিয়েছিল। সেই গন্তব্যটি হলো স্বাধীনতা। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণ বাঙালি জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার মন্ত্রে দীক্ষিত করেছিল। এই ঐতিহাসিক ভাষণের মধ্যে ছিল সাহস, প্রত্যয়, দূরদৃষ্টি, প্রজ্ঞা ও বাঙালির প্রতি মুক্তিসংগ্রামে অবতীর্ণ হবার দিক-নির্দেশনা।


বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণটি জাতির মাঝে বেঁচে থাকবে বাঙালির অন্যতম মহাকাব্য হিসেবে । রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় হিসেবে এ মহাকাব্যের আবেদন কোনোদিন শেষ হয়ে যাবে না। ওই ভাষণ আমাদেরকে অনুপ্রেরণা যোগাবে । আমাদের সকলকে মনে রাখতে হবে, ওই ভাষণে নিহিত সত্য শিক্ষা যত বেশি গভীরে অনুধাবন করতে শিখবো ততই আমাদের মুক্তির পথ সহজতর হবে। বঙ্গবন্ধুর দিকনির্দেশানমূলক এই ঐতিহাসিক ভাষণের শেষ অবিনশ্বর পংক্তিটি এবং অমোঘ বাণী ‘ এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ বাঙালির কাছে চির স্মরণীয় হয়ে আছে ও থাকবে। পাশাপাশি মহাকাব্যিক ভাষণ বাঙালি জাতিকে অগ্নিস্ফুলিঙ্গের ন্যায় উজ্জীবিত করে রাখবে। বঙ্গবন্ধুর ভাষণটি গণতান্ত্রিক চেতনার উজ্জ্বলতা, নিপীড়িত জাতির স্বাধিকার অর্জন এবং মুক্তিসংগ্রামের এক অনন্যসাধারণ দলিল।

ঐ অনন্যসাধারণ দলিল কালজয়ী প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। সেই সঙ্গে বাঙালি জাতি পাবে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে অবিনাশী প্রেরণা।

লেখক: কলেজ শিক্ষক, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক, এবং আর্কাইভস ৭১- এর প্রতিষ্ঠাতা


পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test