E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

চলে গেলেন বাংলাদেশ ফুটবলের কিংবদন্তি আরজু

২০১৬ মার্চ ২২ ১১:২৫:৩৭
চলে গেলেন বাংলাদেশ ফুটবলের কিংবদন্তি আরজু






 

==================================================
মাহবুব আরিফ

ক্রীড়া জগতে ৫০ ও ৬০ এর দশকে যেসব রত্ন আমাদের উপমহাদেশে খেলাধুলায় তাদের নৈপুণ্যতায় কোটি কোটি মানুষকে আনন্দ দিয়েছিলো তাদের মাঝে জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত একজন কিংবদন্তির নাম জনাব ফজলুর রহমান আরজু । যে সব সংগঠকদের অক্লান্ত পরিশ্রম আর তাদের ঘামে আজকের ক্রীড়া জগত সমৃদ্ধ ক্রীড়া জগতে যাদের অবদান এ দেশের ইতিহাস হয়ে আছে, যাদের নাম কেউ কোনদিনই ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে ফেলতে পারবে না, তাদেরই একজন রাষ্ট্রীয় পুরস্কার প্রাপ্ত জনাব ফজলুর রহমান আরজু । ক্রীড়াবিদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিতে তার অবদানের কথা চির স্মরণীয়, চট্টগামের কাস্টমসে ক্রীড়া সংগঠক হিসাবে তিনি তার চাকুরীর জীবনে অসংখ ক্রীড়াবিদের কর্মসংস্থান করে দিয়ে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পেরেছিলেন | স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ স্পোর্টস কন্ট্রোল বোর্ড ঢেলে সাজানোর জন্যে অক্লান্ত পরিশ্রম কথা প্রাক্তন সচিব রশিদ সাহেব তার একটি বইয়ে বিশদ ভাবে উল্ল্যাখ করেছিলেন | সাভারের জাতীয় ক্রীড়া কমপ্লেক্সটি আরজুর স্বপ্নের একটি স্বার্থক রূপ | বাংলাদেশের ফুটবলের জগতে এই মানুষটির অবদান ছিল চির স্মরণীয় | বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন ফুটবল প্রেমিক মানুষ আর তিনি নিজেও ফুটবল খেলতেন, আরজু ছিলেন তার সব চাইতে প্রিয় একজন ফুটবল খেলোয়ার, ৫০ দশকে জেল থকে ছাড়া পেলেই রাজনীতির ফাকে তিনি ফুটবল খেলা দেখতে তিনি ঢাকার মাঠে ছুটে যেতেন |

উল্লেখযোগ্য এই যে তার জীবনের শেষ সম্বল তার হালিশহরের জায়গাটি আজ আবাসন শিল্পের এক ডেভলাপার প্রতিষ্ঠান মার্ভেলাস প্রপার্টিস চুক্তির নিয়ম ভঙ্গ করে বারী হস্তান্তরে গাফিলতি করে যাচ্ছে , তার সন্তানেরা শতচেষ্টা করেও এর কোন সুরাহা করতে পারে নাই, আজ পর্যন্ত এই মানুষটিকে তার নিজের বাড়িতে মৃত্যু বরণ করতে পারেন নাই | তার পক্ষ থেকে সরকারের কাছে তার সন্তানদের আবেদন যেন সরকার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় |

পাকিস্তানি মাকরানি খেলোয়াড়দের দাপটে যে কজন বাঙালি খেলোয়াড় ঢাকার মাঠে দাপটের সাথে রাজত্ব করেছেন তাদের মাঝে আরজু’র নাম তাদের ভুলে যাবার কথা নয় | স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন সে সময় ফুটবলকে সার্থক ভাবে সাজাতে তার অবদান ছিল অপরিসীম, আর সে কারণেই ফুটবল হয়ে উঠে বাংলাদেশের একমাত্র জনপ্রিয় খেলা, ফুটবলে জন্ম নিতে থাকে অসাধারণ সব তারকা।

আমার বাবার ক্রীড়া নৈপুণ্যের কথা শুনেছি ১৯৪৯ সালে লীগ চ্যাম্পিয়ন ইপি জিমখানা দলের হয়ে শিরোপা জয়ের পেছনে বাবার একক নৈপুণ্যের অবদান ছিল বেশি। ১৯৫১ সালে চ্যাম্পিয়ন হয় ঐতিহ্যবাহী ওয়ান্ডারার্স ক্লাব, ফজলুর রহমান আরজু তখন ওই ক্লাবের খেলোয়াড় । ১৯৫২ সালে চ্যাম্পিয়ন হয় বিজি প্রেস। ১৯৫২ সালেই পাকিস্তানের জাতীয় ফুটবলের আসর বসে ঢাকায়। ঢাকায় অনুষ্ঠিত জাতীয় ফুটবল সে সময় ব্যাপক সাড়া জাগায়। ১৯৪৯ সাল থেকে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত যারাই আরজুর খেলা দেখেছেন তাদের মুখে শুনেছি আরজু ছিলেন একজন অপ্রতিভে-দ্য ফুটবলার, বল নিয়ে তার ছুটে চলার গতিকে আটকে দেবার মত তখনকার দিনে ঢাকার মাঠে কাউকে দেখা যায়নি। ১৯৫০ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত ঢাকার লীগ শিরোপা ছিল ওয়াল্ডারার্স ক্লাবের দখলে, আর ওই সময়টার ফুটবলের মাঠে রাজত্ব করে বেড়িয়েছেন, আরজু। ১৯৫৭ সালে প্রথমবারের মতো লীগ শিরোপা লাভ করে মোহামেডান।

(লেখক :সুইডেন প্রবাসী)

(ওএস/এসসি/মার্চ২২,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test