E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শালীহর গণহত্যা দিবস

২০১৬ আগস্ট ২০ ১৮:৫১:১৩
শালীহর গণহত্যা দিবস

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : ২১আগস্ট শালিহর গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হানাদার পাকবাহিনী গৌরীপুর উপজেলার শালিহর গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের খুঁজতে গিয়ে ঘটনাস্থলেই হত্যা করেছিল ১৩জনকে এবং ধরে নিয়ে গিয়েছিল বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাসিমের পিতা ছাবেদ আলীকে। যিনি আর কোনোদিন ফিরে আসেননি। তাদের স্বজনরা আজও খুঁজে ৭১’র সালে হারিয়ে যাওয়া আত্মীয়-স্বজনকে। সেদিন অনেক ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগও করা হয়। যাদেরকে  স্বাধীনতার ৪৫বছরেও পুনর্বাসিত করা হয়নি।

এই দিনে শহীদ হন মোহিনী কর, জ্ঞানেন্দ্র মোহন কর, যোগেশ চন্দ্র প-িত, নবর আলী, কিরদা সুন্দুরী, শচীন্দ্র চন্দ্র দাস, তারিনী মোহন দাস, খৈলাশ চন্দ্র দাস, শক্রোগ্ন দাস, রামেন্দ্র চন্দ্র দাস, কর মোহন সরকার, দেবেন্দ্রে চন্দ্র দাস, কামিনী মোহন দাস।

মুক্তিযুদ্ধের সময় বাড়িঘর আগুনে পুড়ে যাওয়ার পর জ্ঞানেন্দ্র মোহন করের ছেলে ডা: বাদল চন্দ্র কর সেখান থেকে পাক হানাদার বাহিনীর ভয়ে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার টেকেরঘাট সাব-সেক্টরে চলে যান। সেখানে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসাসেবার দায়িত্বে ছিলেন। পরবর্তীতে ডা: বাদল চন্দ্র কর তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। ডা: বাদল চন্দ্র কর ২০১৪ সালে মারা যান। তার ছেলে অমল কান্তি কর বর্তমানে তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

১৯৭১’র সালের এই দিনে ময়মনসিংহ থেকে মোহনগঞ্জগামী ট্রেন শালীহর গ্রামে এসে থেমে যায়। পাকবাহিনীর দু’টি প্লাটুন একটি দক্ষিণমুখী আরেকটি উত্তরমুখী যাত্রা করে। উত্তরে এসেই প্রথমে ছাবেদ আলীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ধরে নিয়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধা আশুতোষ রায়ের বাড়ীতে পাকবাহিনী প্রথম অগ্নি সংযোগ করে। এরপর শালীহর গ্রামের ৪০টি বাড়ীতে অগ্নিসংযোগ করে। বিসকা ঠাকুরবাড়ীর রেন্ট্রিগাছতলায় কোমড়ে দরি বেঁধে ৩শ মানুষকে আটক করে চালানো হয় নির্মম নির্যাতন। সেখানে যাঁরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিল এমন ১৩জনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়।

শালীহর বধ্যভূমিতে গ্রামবাসীকে ডেকে এনে বন্ধুকের বাট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নির্মমভাবে চালানো হয় নির্যাতন। পাকবাহিনীর আক্রমণে পুরোগ্রামটি ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হয়। শহীদদের স্মরণে প্রয়াত সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডাঃ ক্যাপ্টেন (অব.) মজিবুর রহমান ফকির এমপি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করেন।

প্রতি বছরের এবারও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও স্বজন সমাবেশ ২১ আগস্ট নানা কর্মসূচীতে দিবসটি পালনের প্রস্তুতি নিয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমা-ার আব্দুর রহিম জানান, শহীদদের স্মরণে বিশেষ প্রার্থনা, পুষ্পমাল্য অর্পণ ও আলোচনা সভা শালীহর বধ্যভূমি অনুষ্ঠিত হবে।

(এসআইএম/এএস/আগস্ট ২০, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test