E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

পাকিস্তানীদের আমি বিশ্বাস করি না, তারা হাতে ফুল নিয়ে এগিয়ে আসলেও না

২০১৪ জুন ২৩ ১৪:১৮:২০
পাকিস্তানীদের আমি বিশ্বাস করি না, তারা হাতে ফুল নিয়ে এগিয়ে আসলেও না

হুমায়ূন আজাদ স্যার ঠিকই বলে গিয়েছেন যে- পাকিস্তানীদের আমি বিশ্বাস করি না, তারা হাতে ফুল নিয়ে এগিয়ে আসলেও না। তার এই উক্তিটি ছিল ধ্রুব সত্য। কেননা মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ মানুষ মারার পর পাকিস্তান বাংলাদেশকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ১৯৭৪ সালের ২৩-২৪শে ফেব্রুয়ারি লাহোরে অনুষ্ঠিত ইসলামী সম্মেলন সংস্থার অধিবেশনে বঙ্গবন্ধুর অংশগ্রহনের পর। যদিও ভুট্টো এই সম্মেলনেই ৭১ এর জন্য মৌখিক ক্ষামা চায়। তারপরেও এই সম্মেলনেই পাকিস্তান তার চিরশত্রু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের দেহে বন্ধুত্বের ছলে প্রবেশ করিয়ে দেয় নিরব ঘাতক ভাইরাস।

যার পরে ১৯৭৪-এর ১৩ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ফুসফুসে ক্ষত ধরা পড়ে। ক্ষতস্থান থেকে শ্বাসনালী বেয়ে অব্যাহত রক্তক্ষরণ হতে থাকায় তা বন্ধ করার জন্য দেশের চিকিৎসকদের সকল উদ্যোগ ব্যর্থ হয়। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে বিদেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু তখন দেশে রাজনৈতিক দুর্যোগ চলছে বিধায় বঙ্গবন্ধু চিকিৎসার্থে বিদেশ যেতে চাননি। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে বঙ্গবন্ধুকে আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এবং ১৯ শে মার্চ বঙ্গবন্ধু সপরিবারে মস্কো গমন করেন। মস্কোতে প্রায় ২১ দিন চিকিৎসায় আরোগ্য লাভ করে ১১ই এপ্রিলে তিনি দেশে ফিরে আসেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী প্রয়াত ডা. এম.এ.ওয়াজেদ মিয়ার লিখে যাওয়া বই থেকে আমরা জানতে পারি যে একই বছরের এপ্রিলের ১৫ তারিখ বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডিস্থ বাসভবনের ঠিকানায় লন্ডন হতে একটি চিঠি আসে। প্রেরক পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোরের একজন ব্রিগেডিয়ার। তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেছেন,

'১৯৭৪-এর ২৩-২৪শে ফেব্রুয়ারি লাহোরে অনুষ্ঠিত ইসলামী সম্মেলন সংস্থার অধিবেশনে বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতির সুযোগে তাঁর শরীরে গোপনে অনুপ্রবেশ করানোর উদ্দেশে তাঁকে ক্যান্সার জাতীয় মারাত্মক ব্যাধির ভাইরাস প্রস্তুত করার নির্দেশ দিয়েছিল পাকিস্তান সামরিক কর্তৃপক্ষ। তাঁকে বলা হয়েছিল যে, ঐ ভাইরাস এমন একটি সূঁচের ভিতরে সংরক্ষিত থাকবে যা হাতের তালুতে কিংবা আঙুলে সঙ্গোপনে রাখা যায়। উক্ত ভাইরাস ভর্তি সূঁচটি জুলফিকার আলী ভুট্টোর হাতের তালুতে কিংবা আঙুলে স্থাপন করা হবে যাতে শেখ মুজিবের সঙ্গে ভুট্টোর করমর্দন কিংবা আলিঙ্গনের সময় সেটিকে তার (শেখ মুজিবের) শরীরে ঢুকিয়ে দেওয়া যায়। একজন মুসলমান হিসেবে অপর একজন মুসলমানের ক্ষতি করার এই ঘৃণ্য প্রস্তাবে তিনি (ব্রিগেডিয়ার) অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন উল্লেখ করে চিঠিতে তিনি আরো লিখেছেন, 'সম্ভবত, অন্য কোন বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে এ জাতীয় ভাইরাস প্রস্তুত করে পাকিস্তানের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা তা শেখ সাহেবের শরীরে ঐ সময়ে অনুপ্রবিষ্ট করিয়েছেন'। পরিশেষে ব্রিগেডিয়ার সাহেব বঙ্গবন্ধুর আশু রোগমুক্তি কামনা করেছেন।'

অতএব আমাদের একথা স্মরণ রাখা জরুরী যে, স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য পাকিস্তান এমন একটি ঘৃণ্য শত্রু দেশ, যে দেশটি সর্বদাই আমাদের ধ্বংস কামনা করে থাকে।তাই আমাদেরও পাকিস্তানীদের বিশ্বাস করতে নেই, তারা হাতে ফুল নিয়ে এগিয়ে আসলেও না।

সূত্র- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ঘিরে কিছু ঘটনা, এমএ ওয়াজেদ মিয়া, (পৃষ্ঠা-১৭৮-৭৯)।

লিখেছেনঃ স্বপ্নচারী আসিফ

(অ/জুন ২৩, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test