E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ধন্যবাদ সজীব ওয়াজেদ জয়

২০১৮ জানুয়ারি ০৭ ১৬:৫৭:৫৩
ধন্যবাদ সজীব ওয়াজেদ জয়

কবীর চৌধুরী তন্ময়


নভেম্বর মাসের এগারো তারিখ আমার ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছি এমন- ইদানীং আওয়ামী লীগের কিছু এমপি-মন্ত্রীসহ স্থানীয় প্রভাবশালী নামক কিছু নেতা ও তার পরিবারের অনেক সদস্যকে নিয়েও সমালোচনা করছেন স্বয়ং আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী-সমর্থকগোষ্ঠী! ব্যাপারটি রীতিমতো অস্বস্তিকর হলেও এটি দলের ভেতর বাকস্বাধীনতা ও গণতন্ত্র চর্চার বহিঃপ্রকাশ বলেই আমার কাছে মনে হচ্ছে। আর যারা তথ্য-উপাত্ত দিয়ে গঠনমূলক সমালোচনা করছেন, তাদের প্রতি সম্মান-শ্রদ্ধা অনবরত! কারণ আপনারা এই দলটি ভালোবাসেন বলেই দলের ভেতরকার কোনো কোন্দল বা দলের নাম বিক্রি করে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে বট গাছওয়ালাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করছেন।

আমার স্ট্যাটাসের একটা জায়গায় আমি একটি ব্যক্তিগত ই-মেইল দিয়ে আরো বলেছি, শুধু শুধু সমালোচনার জন্য সমালোচনা না করে কারা কারা দল ও শেখ হাসিনার ইমেজ নষ্ট করছে, কারা জনগণ ও তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য জিম্মি করে সরকারের উন্নয়নের অর্জনকে বিতর্কিত করছে তাদের তালিকা তৈরি করে তথ্য-প্রমাণসহ আমাদের কাছে পাঠিয়ে দিন। এই ধরনের লোকদের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাইরে রাখার জন্য আপনারা ঐক্যবদ্ধ হোন। দলের জন্য যারা নিবেদিতপ্রাণ, তাদের প্রতি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা নিজেই নিবেদিত হয়ে এগিয়ে গিয়ে কাজ করে। তাদের মূল্যায়ন করতে তিনি অতীতেও ভুল করেননি, ভবিষ্যতেও ভুল করবেন না। শুধু প্রয়োজন সঠিক তথ্য-প্রমাণ।

আওয়ামী লীগ আগাছা পরিষ্কারে বদ্ধপরিকর। আত্মীয়করণ ব্যক্তিদের শুধু সরকার থেকে নয়, রাজনীতি থেকেও ছুড়ে ফেলে দিয়ে গ্রহণযোগ্য, কর্মীবান্ধব, জনগণমুখী ব্যক্তিকে যথাযথ মূল্যায়ন করা হবে। কোনো রকমের হতাশা নয়, শেখ হাসিনার ওপর বিশ্বাস রেখে এগিয়ে যান। সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে আবারো ক্ষমতায় আনতে নিজ নিজ উদ্যোগে কাজ করুন।

১১ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় ধানমন্ডিতে তার মায়ের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এসে আওয়ামী লীগকে সুখবর জানিয়ে বলেন, ‘একটা সুখবর জানাতে আমি এসেছি। আগামী নির্বাচন নিয়ে আমি জরিপ করেছি। দলকে জানাতে যে, আমার জরিপের রেজাল্ট এত ভালো আসছে যে, আজকে যদি নির্বাচন হয়, তাহলে বোঝা যাবে আগের চেয়েও বেশি ভোট পাবে আওয়ামী লীগ। ২০০৮ সালের চেয়েও বিপুল, ল্যান্ড স্লাইড পাবে আওয়ামী লীগ এবং এটা সায়েন্টিফিক্যালি জরিপ করে আমরা পেয়েছি। এখানে আওয়ামী লীগের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এ কথাটা জানাতে আমি এসেছি।’

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়-পরাজয় নিয়ে দলের কিছু সিনিয়র নেতার লাগামহীন বক্তব্য-বিবৃতি আর কাউয়া লীগ, হাইব্রিড নেতা এবং টাকা-পয়সা নিয়ে বিদেশ পালিয়ে যাওয়ার ভয়-আতঙ্কের মাঝে চলমান নেতাকর্মীদের জন্য এবং সর্বোপরি স্বাধীনতার পক্ষের জনগণ ও আওয়ামী ভোটারদের প্রতি নিঃসন্দেহে সজীব ওয়াজেদ জয়ের সায়েন্টিফিক্যালি জরিপে পাওয়া এই সুখবর। দলের প্রাণকর্মী তৃণমূল সজীব ওয়াজেদ জয়ের এই সুখবরে রাতারাতি চাঙ্গা হয়ে উঠেছে।

দেশের জনগণ বিশ্বাস করে শেখ হাসিনার অক্লান্ত পরিশ্রম, অর্জিত সুনাম এবং দেশের একপ্রান্ত হতে অন্যপ্রান্তের উন্নয়নে শেখ হাসিনার বিকল্প শুধুই শেখ হাসিনা। তবে সরকারের বিগত উন্নয়ন জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর ব্যবস্থা, দেশি-বিদেশি সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে জাতির আশা-আকাক্সক্ষা মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে জাতিকে অভিশাপমুক্ত করা, এখনো বিচার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা এবং দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও নিরাপদ পরিবেশের সঠিক তথ্য-উপাত্ত নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জনগণের কাছাকাছি যেতে হবে। কারণ প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষকে বিভ্রান্ত করতে যা যা করার প্রয়োজন ছিল; স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত ইসলাম ও তাদের পৃষ্ঠপোষক বিএনপি তার সবটুকু করেছে! আর এই জায়গায় সঠিক তথ্য-উপাত্ত দিয়ে কাজ করতে হবে আওয়ামী লীগকে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাতে সুকৌশলেও সরকার ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ধর্মকে ব্যবহার করে মিথ্যাচার-অপপ্রচার করতে না পারে সে ব্যাপারে সাবধান-সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।

২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পেয়েছিল ২৩০টি আসন যার মোট ভোটের ৪৮ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ ভোট এবং মোট ভোট সংখ্যা ছিল ৩ কোটি ৩৬ লাখ ৩৪ হাজার ৬২৯টি। আর তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি ৩০টি আসন জিতলেও ভোট পেয়েছিল ২ কোটি ২৭ লাখ ৫৭ হাজার ১০১টি; যা মোট প্রদত্ত ভোটের ৩২ দশমিক ৫০ শতাংশ। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছিল ঐতিহাসিক একটি নির্বাচন। যা প্রথমবারের মতো জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহারের মাধ্যমে এ নির্বাচনটি অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য, অবাধ, সুষ্ঠু হয়েছে বলে দল-মত ও দেশীয়-আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আলোচিত হয়েছে। আর সে নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগ নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসে তলাবিহীন ও দুর্নীতিগ্রস্ত বাংলাদেশকে উন্নয়নের বাংলাদেশে রূপান্তর করেছে।

আওয়ামী লীগ নবম-দশম সংসদে ক্ষমতাসীন হয়ে দেশের বেশ কিছু কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পুরোপুরি সফল হয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারে বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের রক্ত-চক্ষু উপেক্ষা করে বিচারকাজ নিয়ে এগিয়ে যাওয়া, হঠাৎ করে দেশে জঙ্গিবাদের উত্থান এবং এই অপশক্তিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং সর্বোপরি দেশীয় ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত হয়ে মিথ্যা দুর্নীতির অভিযোগ তুলে শেখ হাসিনা ও তার সরকার হতে বিশ্বব্যাংকসহ অন্যান্য দাতা সংস্থা মুখ ফিরিয়ে নেয়ার পরেও শুধু শেখ হাসিনার একক সাহসিকতা ও অদম্য বিশ্বাসের কারণে আজ শুধু পদ্মা সেতুই দৃশ্যমান নয়; পদ্মা সেতুতে যে কোনো দুর্নীতি হয়নি তাও বাংলাদেশের জনগণের মাঝে প্রমাণ করার পাশাপাশি বিশ্বের কাছে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ। আর তাই শেখ হাসিনার পুত্র ও প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় জরিপে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাচাই করে আত্মবিশ্বাস নিয়ে দৃঢ়চিত্তে বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় আসবেই। আওয়ামী লীগের প্রতি মানুষের যে বিশ্বাস এবং ভালোবাসা চলে এসেছে, আওয়ামী লীগকে ভোটে হারানোর মতো কোনো দল বাংলাদেশে নেই। এবার বিপুল ল্যান্ড স্লাইড হবে। এটা আমার জরিপে একদম স্পষ্ট। এটা নিয়ে আমার খুব একটা চিন্তা নেই।’ সর্বোপরি, আওয়ামী লীগকে তাদের নির্বাচনী পরিকল্পনায় নতুন ও আধুনিক কৌশল অবলম্বন করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসে দেশ ও জনগণের অধিকার নিশ্চিত করবে বলে সবাই আশাবাদী।

লেখক: সভাপতি, বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিষ্ট ফোরাম (বোয়াফ)।

পাঠকের মতামত:

২৩ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test