E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আ. লীগ সভাপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সমীপে অনেক না বলা কথার মধ্যে কিছু কথা

২০২০ জুন ২৩ ১৭:৩৪:৩৪
আ. লীগ সভাপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সমীপে অনেক না বলা কথার মধ্যে কিছু কথা

শাহাব উদ্দিন চঞ্চল


এদেশের প্রচুর জনগণ মনে প্রাণে আপনাকে ভালোবাসে প্রধানমন্ত্রী বা দলের প্রধান হিসাবে নয় অনেকেই এই দল করেন না তারপরও জাতির পিতার কন্যা এবং আপনার নিজস্ব গুনাবলির কারনে পছন্দ করেন। দেশের এবং দলের অনেকে আপনাকে বোন হিসাবে কেউ আপনাকে মা- হিসাবে সম্বোধন করে থাকেন। মা-বা বোন হিসাবে সম্বোধন করা লোকের মধ্যে অনেকের অতিভক্তির ধরন দেখেই বুঝা যায় এরা স্বার্থ হাসিলের জন্য ভিন্ন ধান্ধা মাথায় নিয়ে মা আপা আন্টি মহান নেত্রী বিশ্ব নেত্রী বলে সম্বোধন করে থাকেন এরা আবার মন থেকে নয়, স্বার্থের উদ্দেশে। বিভিন্ন সময় আপনার সানিধ্যে থাকা লোকজন বা রাজনৈতিক কর্মী আপনাকে কাছে থেকে দেখেছেন বা কেউ না দেখে দুর থেকে আপনাকে বুঝতে পেরেছেন এই সকল লোকজনের মধ্যে যাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোন কিছু চাওয়ারও নেই পাওয়ারও নেই,দেশ সেবার ব্রতনিয়ে মানুষের সেবার করার জন্য বঙ্গবন্ধুর আদর্শের আওয়ামী পরিবারের জেনুইন সন্তানদের মধ্যে অনেকেই আপনাকে মন থেকে মা-বা বোন সন্মোধন করে থাকেন। তৃনমুলের অনেক আওয়ামী পরিবারে সন্তানরা আপনাকে টিভিতে দেখেছে বাপ দাদা আওয়ামীলীগের কট্টর সমর্থক ছিলেন আজ হয়তো বেঁচে নেই এই সকল পরিবারের সন্তানরা মনে করে বঙ্গবন্ধুর সাথে তাদের বাবা দাদার আদর্শিক আওয়ামী রক্তের সম্পর্ক ছিল আত্মার সম্পর্ক ছিল, তাদের সন্তানদের প্রতি আদেশ দিয়েছিলো বঙ্গবন্ধু এবং আওয়ামী পরিবারের লোক একই রক্তের একই আদর্শের সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সেই আওয়ামী অনুভুতির লোকজন আপনাকে বয়স অনুষারে শ্রদ্ধার সাথে মা-বা বোন হিসাবে দেখে অতচ এরা রাজনীতির ধারে কাছে নেই। এদের বিশ্বাস আপনি বা আওয়ামীলীগ ভুল করলেও তাদের কাছে এটা ভুল নয় বা ভুল হতে পারেনা কারন আপনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা ভুল করতে পারেন না, এটা তাদের নাড়িতে ডুকে গেছে।এদের মধ্যে আপনার সানিধ্য পাওয়া একজন সৌভাগ্যবান ১৯৮৮ সালে দক্ষিন লন্ডনের ৬০ কিংস এভিনিউতে আপনার সাথে সার্বক্ষিনিক থাকার জন্য সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম আওয়ামী পরিবারের বিশ্বস্ত লোক হিসাবে আমারা দুজনকে নিযুক্ত করে ছিলেন।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং জয়বাংলা বুকে ধারন করা পারিবারে জন্ম সেহেতু নেত্রীর পরিবর্তে এমনিতেই মন থেকে আপা বলে সন্মোধন করতে হয়েছিল। আপা হিসাবে আপনাকে দেখে আসছি কোন ধরনের ব্যক্তি স্বার্থের জন্য নয় বা কোন স্বার্থের ধান্ধা মাথায় নিয়ে নয় এটা শক্ত করে বলতে পারি। মা-বোন -আপা এই সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে আমার বলার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করিনা। আমি যা লিখছি যা বলছি মন থেকেই লিখছি মন থেকেই বলছি এবং সত্য বলছি সত্য বলার জন্য সিংহের পিঠে ছয়ার হয়েও সত্য বলেছি বলছি লিখেছি এবং লিখে যাচ্ছি। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের স্ত্রী শিলা ইসলামের মৃত্যুর পর একই রোগে আক্রান্ত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে লন্ডন থেকে দেশে নিয়ে গিয়েছিলাম তাঁর ইচ্ছা পরিবারের সদস্যদের অনুরোধ এবং নিজের বিবেকের তাগিদে একজন বন্ধু ভাই হিসাবে নিঃস্বার্থ ভাবে তাঁর পাশে থাকতে দেশে ছিলাম তাঁর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত।

চিকিৎসার সময় পাশে থেকে অনেক অজানা কথা অনেক না বলা কথা অনেক রাজনৈতিক আলোচনা করেছেন। একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে তাঁর ফোনে ওয়ার্টআপের ম্যসেইজে বঙ্গবন্ধুর ছবিতে লন্ডনের বিএনপি'র লোকজন যে ভাবে অপমান করেছে হাইকমিশনের সামনে তা দেখে বলেছিলেন ভাইজান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বলতে হবে overseas politics বন্ধ করতে তা -না হলে দেশের ভাবমুর্তি নষ্ট হয়ে যাবে এখন আর যুক্তরাজ্যে যারা আওয়ামী রাজনীতি করেন তাঁরা বেশির ভাগ আপনার আমার মত বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ধারক বাহক নয় এদের সবাইকেতো কম বেশী আপনি আমি জানি, কে কোন ধান্ধা নিয়ে আছে।

লন্ডনে বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা, আপসহীন রাজনীতিবিদ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হাই কমিশনে অবমাননা করবে এটা মেনে নেয়া যায় না।শুনেছি আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা এর প্রতিবাদ করেনা যারা প্রতিবাদ করবে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ষড়যন্ত্র করে দুরে সরিয়ে দিবে মুখ বন্ধ করে দিয়ে দায়সাড়া একটা প্রেসকন্ফারেন্স করেই দায়িত্ব শেষ তারা কিন্তু বঙ্গবন্ধু এবং আওয়ামী অনুভুতির বা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারনকারীরা নয়।একজন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকদের ব্যক্তিত্ব, রুচিবোধ, সততা, নিষ্ঠা, জ্ঞান ও প্রজ্ঞা, সৌজন্য, উদারতা, কর্মীপ্রেম, দেশপ্রেমসহ একজন আদর্শ মানুষের যত গুণাবলি থাকে, সেগুলোর সমন্বয়ের নাম বঙ্গবন্ধুর সৈনিক। অনেক না বলা কথার মধ্যে তিনি সে কথাটিও হয়তো আপনাকে বলতে পারেননি অসুস্থতার কারনে।

সত্য বলার জন্য সৎ সাহস থাকতে হয়, আপনাকে আপা হিসাবে দেখি মন থেকে আপা ডাকি এমত অবস্থায় সাহস করে রাজনৈতিক ভাবে আওয়ামী রক্তের সম্পর্কের একজন বোনকে সত্য কথাই লিখছি। তত্বাবধায়ক সরকারের একজন উপদেষ্টা ওয়ান-ইলেভেনের আগে আগে উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগ করা লেফটেন্যান্ট জেনারেল হাসান মশহুদ চৌধূরী (অব.) পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করা কালে কোন এ বিষয়ে তার একটি কথা আমার খুবই পছন্দের- "একটি বিষয়ে দুজনে যখন দুই কথা বলেন তখন নিশ্চয়ই একজনের কথা সত্য এবং একজনের কথা অসত্য, উনি সত্য না অসত্য বলছেন আমি জানিনা তবে আমি আমার থেকে যেটা বলছি সত্যটিই বলছি।আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর জাতীয় সংসদে চরম সমালোচিত হয়ে ২০০৯ সালের ২ এপ্রিল পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

সেদিন হাসান মশহুদ চৌধূরী'র সত্য ছিলেন না অসত্য ছিলেন এটাও তিনি জানেন তবে তার শক্ত হয়ে বলা কথাটা আমার খু্বই পছন্দের। তিনি সেদিন যে ভাবে শক্ত হয়ে সত্য বলেছিলেন ঠিক আজ আপনাকে বলছি আপনাকে আপা হিসাবে সত্যিই শক্ত ভাবে সন্মোধন করি সেদিন থেকে যেদিন দক্ষিন লন্ডনের ৬০ কিংস এভিনিউতে বঙ্গবন্ধুর কন্যা হয়ে আওয়ামীলীগের এক কর্মীকে বোনের আদর দিয়ে পরম মমতায় নিজ হাতে পরটা বানিয়ে খাওয়াতে গিয়ে বলেছিলেন এই চঞ্চল তোমরা বস এটা তোমাদের কাজ নয়-এটা মা-দের কাজ কথাটি আজও আমাকে অনেক ভাবায় অনেক দুরে নিয়ে যায়।

বলেছিলেন রাজনীতি করো তবে পদের জন্য রাজনীতি করোনা তুমি আমি আমরা যারা আওয়ামী লীগের ফ্রিহোল্ডার আমাদের কৌশলি হতে হবে, মাঠে সবাইকে খেলতে দাও কিন্তু যখন কেউ মাঠ ধংর্স করতে চাইবে তখন রুখে দাঁড়িও। সে দিন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম তার একমাত্র মেয়ে দেড় দুই বছরের রিমাকে নিয়ে দক্ষিন লন্ডনের সেই ৬০ কিংস এভিনিউর বাড়িতে এসেছিলেন। ১৯৬৯ এর দূর্বার গন আন্দোলনের সময় ৯ বছর বয়সে মা-হারা হয়ে জয় বাংলা শ্লোগান বুকে ধারন করে মা- হারানোর ব্যাথা ভুলে গিয়েছিলাম আজও সেই শ্লোগান ধারন করে বেঁচে আছি শত চেষ্টা করেও সরাতে পারিনা জয় বাংলা শ্লোগান বুক থেকে। দেশ বিদেশের অসংখ্য অসৎ রাজনীতিবিদ এবং ফেইক নেতাদের চাটুকারি আর মিথ্যা কথা বলার ধরন দেখে অবাক নয়নে তাকিয়ে থাকি এসব কি হচ্ছে?

আপনার সেদিনকার সেই নির্দেশ আর উপদেশের বিষয় আওয়ামী পরিবারের অনেকের সাথে শেয়ার করেছি, যারা কেবল মাত্র পদের জন্য রাজনীতি করেন তাদের উদ্দেশ্য মহৎ হয়না তাদের ভিন্ন এজেন্ডা থাকে। আপনার সেই ফেভারেইট উক্তি সাইবেরিয়ান বার্ডরা এখন আওয়ামীলীগে ভরে গেছে এই বার্ডরা এখন অপদার্থ অযোগ্য নীতিহীন কিছু আওয়ামী লীগ নেতার সাথে যুক্ত হয়ে আওয়ামী লীগের মাঠ ধংর্সের ধারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে। এই অপদার্থ অযোগ্য নীতিহীন আওয়ামীলীগ নেতারা সব সময়ই সুযোগ সন্ধানী ছিলেন, তাদের কোন সময়ই ধরা যায়নি বা ধরা গেলেও কৌশলগত কারনে হয়তো আপনি দলে রেখেছেন দলের বড় পদ দিয়েছেন অতচ এরা প্রকাশ্য বঙ্গবন্ধু বঙ্গবন্ধু মনি ভাই মনি ভাই করে হুদাই লোক দেখানো কান্না করেছে অতচ এদের আইডোলজি মুশতাকের আপনার অজান্তে এদের রূপ ভিন্ন যা আমরা অহরহ দেখছি এবং খুজে পেয়েছি অতচ দলকে তারাই এখন ঘিরে রেখেছে। এই সকল নেতারা যদি সত্যিকারের বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করতো বঙ্গবন্ধুকে ভালবাসতো তাহলে লন্ডনে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকার পরও দুতাবাসের ভিতর গিয়ে বঙ্গবন্ধুর ছবিকে অবমাননা করতে পারতোনা।

এই অপদার্থ অযোগ্য নীতিহীন নেতারা এর প্রতিবাদ করেনি দেশ বিদেশের আওয়ামীলীগে এখন আওয়ামী ফ্রিহোল্ডারদের দুরে ঠেলে দেয়া হয়েছে, আওয়ামীলীগের মাঠকে ধংর্স করার জন্য এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য আদর্শবাদী আওয়ামীলীগের দলীয় হাই কামান্ড এবং আপনার বজ্র কঠিন সিদ্ধান্ত একান্ত প্রয়োজন তা-না হলে মাঠ ধংর্স হয়ে যাবে প্রিয় আপা। আপনি জানেন কি আদর্শবাদী আওয়ামী পরিবারের সন্তানদের মুখ থেকেও জয়বাংলা শ্লোগান কেড়ে নিতে লিজহোল্ডাররা আজ সঙ্গবদ্ধ তারা আদর্শবাদী আওয়ামীলীগের দলীয় হাই কামান্ড এবং আপনার নির্দেশ অমান্য করে চলেছে অবিরাম আর ফ্রিহোল্ডাররা প্রতিবাদ করলে তারা পাত্তা দেয়না তারা মনে করে আওয়ামীলীগ এখন তাদের নামে রেজিষ্টারী করা এমনকি হাইকামান্ডের তোয়াক্কা করে না।

সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের নেই অমুল্য শব্দটি ‘আওয়ামী লীগ একটি অনুভূতির নাম, আওয়ামী লীগ একটি পরিবার, সেই পরিবারের একজন কর্তা বড় বোন আপনি আওয়ামী পরিবারের কারও কিছু হলে নিশ্চয়ই বুকে ব্যথা লাগে। পৃথিবীতে এমন দল নাই যে দলের নেতা-কর্মীরা এত রক্ত দিয়েছে, এটা কর্মীর দল। আমি নেতা নই, একজন কর্মী’। হৃদয়ের গভীর থেকে সেই অনুভুতি নিয়ে রাজনীতি করা কর্মীদেরকে আজ আপনার অজান্তে বিলিন করে দিচ্ছে।

কিছু মানুষ আছে, যারা তাদের প্রয়োজনে আপনার খুব কাছের মানুষ হয়ে যাবে আবার প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলে তাদেরকে আর আপনার ত্রি-সীমানাও খুজে পাবেন না। কিছু মানুষ আছে তারা যতোই কাছে থাকুক না কেনো, কখনোই আপন হয় না। শুধু আপন হওয়ার অভিনয় করে যায়। একটু ভুল তত্ব এবং তথ্যের কারনে হারিয়ে যায় অনেক কিছু। আওয়ামীলীগের তুনমুল কর্মীদের একমাত্র ভরসার জায়গা আপনি আপনাকে হারাতে চায় না আপনি হাররে দেশ হারবে দল হারবে। সারাবিশ্বের মত বাংলাদেশও আজ কঠিন সময় পার করছে একে একে বাংলাদেশ করোনায় আওয়ামীলীগের দুজন মন্ত্রী একজন সাবেক সিটি মেয়র না ফরার দেশে চলে গেছেন শীর্ষ নেত্রীবৃন্দ অনেকেই বয়সের ভারে ন্যুব্জ প্রায়।

এদিকে দলের অভ্যন্তরে আপনার নির্দেশ উপেক্ষা করে বিভিন্ন জেলা উপজেলায় আওয়ামীলীগের কমিটিতে আত্মীয় করনের ফলে নিবেদিত শীর্ষ নেতা কর্মীরা কেনাটাসা হয়ে নীরব হয়ে গেছেন, এই সকল শীর্ষ নেতা কর্মীবৃন্দ দলের প্রতি ত্যাগ ভালবাসার একবিন্দুও কম নেই তারপরও দলের অভ্যন্তরে তাদের কোন মতামত গ্রাহ্য নয়। একটা উদাহরন যেমন সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগ এবং সহযোগি সংগঠনের সমগ্র জেলার সকল প্রধান পদ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহনকারী একই গ্রামের একই পরিবারের ১১জন। যে গ্রাম এবং পরিবারে আওয়ামীলীগের সমগ্র জেলার প্রধান পদ পদবী ধারী আত্মীয় স্বজন সেই রিচি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হবিগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি মিয়া মো.ইলিয়াস! তাও একবার নয়, দুই দুই বার আওয়ামীলীগের নৌকাকে ভোটযুদ্ধে পরাজিত করে রিচিতে ধানের শীষের বিজয় পতাকা উড়িয়েছেন মিয়া মো.ইলিয়াস!

রিচি গ্রামের এই সব লোক দিয়ে হবিগঞ্জ আওয়ামীলীগ এবং সহযোগী সংগঠন গুলোর কমিটি করা করা হয়েছে আমার বিশ্বাস নিশ্চয়ই বিষয়টি আপনার ঘোচরে নেই। এভাবে সীমাহীন গ্রামপ্রীতি আর স্বজনপ্রীতির মধ্যে আওয়ামীলীগকে পরিকল্পিত ভাবে ধংর্স করারা পায়তারা চলছে। এদিকে আওয়ামীলীগ এবং নৌকার ঘাটি হিসাবে পরিচিত সদ্য অনুষ্ঠিত তৃনমুল আওয়ামীলীগের ওয়ার্ড কমিটিকে ভয় দেখিয়ে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাধারন সম্পাদক যে দুজনকে নির্বাচন করা হয় তারা আওয়ামীলীগের নয় অনুপ্রবেশকারী জাসদ এবং রাজাকারদের দখলে। যা ভয়ে কেউ আপনার কাছে সাহস করে বলেনি।

কমিউনিষ্ট থেকে আওয়ামীলীগে যোগদানকারী দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের এই এলাকা সিলেটের বিয়ানীবাজার আওয়ামীলীগে একই ভাবে আওয়ামী ঘরনার লোকদের বিতাড়িত করা হয়েছে সভাপতি এখন জাসদের গনবাহিনীর আতাউর রহমান খান সাধারন সম্পাদক রনাঙ্গন ৭১এর তালিকা ভুক্ত রাজাকার সন্তান দেওয়ান মকসুদুল আউয়াল। এইভাবে দল থেকে আওয়ামী পরিবারের লোকদের দুরে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে আপনার কাছে এই সব সংবাদ পৌছানো যাচ্ছেনা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে বিভিন্ন ভয়ভীতি দিয়ে মুখ বন্ধ করে রাখা হচ্ছে। হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগ এবং সহযোগি সংগঠনের প্রধান প্রধান পদ এবং আত্মীয় করনের একটি চিত্র - ভাল মন্দ আপনার উপর ছেড়ে দিলাম।আপনার সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত হবে।

নিজে -------(১) এড আবু জাহির- হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি গ্রাম- রিচি
স্ত্রী -------(২). আলেয়া জাহির -হবিগঞ্জ জেলা মহিলা আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক,গ্রাম- রিচি
ভাই --------(৩) আরব আলী - হবিগঞ্জ জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি এবং হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি, গ্রাম- রিচি
ভাগ্নে --------(৪)আতাউর রহমান সেলিম হবিগঞ্জ জেলা যুবলীগে সভাপতি, গ্রাম- রিচি
ভাতিজা -----(৫)সাইদুর রহমান হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি গ্রাম- রিচি
চাচাতো ভাই-(৬)মোতাহিরুল ইসলাম- হবিগঞ্জ পৌর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক, গ্রাম- রিচি
ভাই----------(৭)আব্দুর রহমান - সাধারন সম্পাদক হবিগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামীলীগ গ্রাম- রিচি
ভাতিজা------(৮)ফয়জুর রহমান রাব্বি-,হবিগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগ, গ্রাম- রিচি
ভাতিজা------(৯)আব্দুর রকিব রনি- হবিগঞ্জ পৌর যুবলীগ গ্রাম- রিচি
গ্রাম্য চাচা----(১০) সৈয়দ কামরুল হাসান - হবিগঞ্জ জেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি গ্রাম- রিচি
এবং
আত্মীয়-------(১১)হুমায়ুন রেজা - হবিগঞ্জ জেলা কৃষক লীগের সভাপতি গ্রাম- বানিয়াচং

তাদের অপরাজনীতির কারনে ফ্রিহোল্ডাররা কিংকর্তব্যবিমূঢ় সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে গিয়েও নীরব হয়ে যায়। কারন একটাই- এই সকল লীজহোল্ডাররা যদি আদর্শবাদী আওয়ামীলীগের হাই কামান্ডকে কৌশলে ভুল বুঝাতে পারে এবং আপনি ভুল বুঝেন তাহলে পরিনতি আরো খারাপ হবে এই ভেবে দলের বৃহত্তর স্বার্থে মুখ খুলে কথা বলে না। কেন জানি মনে হয় এরা এমন কি জাদু জানে যে শতভাগ মিথ্যা কথা বলেও তারা বহাল তবিয়তে দলে ঠিকে আছে বা থাকে। প্রতিকারের জন্য এখন তৃন মুল আওয়ামী পরিবারের লোকদের জড়ো হওয়া একান্ত জরুরী তা-না হলে প্রকৃতির কারনে যখন আপনি অবসর নেবেন তখন দল আর দল থাকবেনা আওয়ামীলীগ শুধু নামে আওয়ামীলীগ থাকবে।

আওয়ামীলীগের একজন ক্ষুদ্র কর্মী হিসাবে আজ আপনাকে অনুরোধ করছি এখনই সঠিক সময় তৃনমুলের আওয়ামী পরিবারের নীরব হয়ে বসে থাকা ফ্রিহোল্ডারদের মতামত নিন এবং সক্রিয় করার পদক্ষেপ নিন সময়টা এখন আপনার অনুকুলে। যারা দলকে ঘিরে রেখেছে এরা এমন কোন শক্তিশালী নয় যে তাদের বিহিত করা যাবে না। তারা এখন আপনার চারিদিকে পাহারা দিচ্ছে যাতে কোন ভাবে প্রগতিশীল আওয়ামীলীগ যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারনকারী এবং আপনার পরিকল্পনা বাস্তায়নকারী তাদের দুরে রেখে চলেছে যা হয়তো আপনার নজরে যাচ্ছেনা। আপনার প্রতিটি উন্নয়নের যতটুকু সাফল্য অর্জিত হওয়ার কথা ছিল তা হচ্ছেনা মিছা তত্ত্ব এবং তথ্য আপনার কাছে যাচ্ছে।

তৃনমুলের হাজার হাজার অনিয়মের খবর আপনার কাছে পৌঁছানো হচ্ছে না কারন সর্ষের মধ্যে ভূত। বয়স এবং প্রকৃতির নিয়মে আপনি যখন ক্লান্ত হয়ে পড়বেন তখন হয়তো আওয়ামী লীগে হেরে যাবে। দেশের সকল আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধতন মহলের আস্থা আপনার প্রতি থাকলেও বিভিন্ন জেলা উপজেলা থানায় এখন অনেক দুর্নীতিবাজ নেতা এমপিরা নিজস্ব বলয় ঠিক করে ফেলেছে,এই তারাই সঠিক এবং সত্য আপনার ঘোচরে যেতে দেয় না তারা দল এবং আপনার নাম ভেঙ্গে ত্রাসের রাজত্ব চালাচ্ছে কারন তাদের শরীরে আওয়ামী রক্ত নয়।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে আমি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ও সাধারণ সম্পাদক সামসুল হককে। শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে।প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সুদীর্ঘ পথ পরিক্রমায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বাঙালি জাতির ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধসহ সকল গণতান্ত্রিক এবং সাধারণ মানুষের ভাত ও ভোটের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নেতৃত্বদানের সুমহান গৌরব অর্জন করেছে। স্মরণ করছি জাতীয় চার নেতাসহ আমাদের পূর্বসূরী নেতা-কর্মীদের - যাঁদের অক্লান্ত শ্রম, মেধা ও ত্যাগের বিনিময়ে আওয়ামী লীগ গণমানুষের এক বিশাল সংগঠনে পরিণত হয়েছে। আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার পর এ ভূখন্ডে যা কিছু বিশাল অর্জন তা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই হয়েছে।

দল ক্ষমতার বাইরে থাকার পর ক্ষমতায় এসে পরিবেশ পরিস্থিতির বিবেচনায় এপর্যন্ত শুদ্ধ অশুদ্ধ যতটুকু হওয়ার হয়েছে এখন টার্নিং করার চুড়ান্ত সময়। দলকে এখন একটা জায়গায় নিয়ে আসতে হবে আপনাকে, এছাড়া দলের অন্য কারো প্রতি আর ভরসা নেই আসল কর্মীদের। অনেক নেতারা এবং তাদের পুরানো দলের সহযোগিদের নিয়ে বিভিন্ন সময় অতীতে আপনাকে বঙ্গবন্ধুকে দলকে অশ্রদ্ধা ভরে কথা বলেছিলেন তখন তারা আওয়ামীলীগে ছিলেন না এই সকল নেতাদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়িয়ে ছিলো আওয়ামী অনুভুতির লোক গুলোই প্রতিবাদ করেছিল এখন আবার সেই সব অশ্রদ্ধা করা নেতা আওয়ামীলীগে যোগ দিয়ে এই প্রতিবাদি আওয়ামী অনুভুতির নিঃস্বার্থ কর্মীদের বিতাড়িত করেছেন নিজেদের মত করে চরিত্রহীন কর্মীদের তৈরি করে তৃনমুল আওয়ামীলীগ ধংর্স করছেন।

এই সকল নেতারা এখন দলের কর্মীদের নির্যাতন করতে পিছপা হননি কিন্তু কেন প্রিয় আপা? এই সকল আওয়ামী অনুভুতির কর্মীরাতো দলের সাথে বঙ্গবন্ধুর সাথে আপনার সাথে আপনার সাথে কোন অন্যায় করেনি অতচ তাদের এই অবস্থা হবে কেন? এরাতো ত্রান চুর নয় চাঁদাবাজ নয় টেন্ডারবাজ নয় এরা বঙ্গবন্ধু আওয়ামীলীগ আর আপনার সব কাজে ঝাপিয়ে পড়া লোক তাদের প্রতি কেন এমন ভাবে ব্যবহার করা হয় বঙ্গবন্ধু আওয়ামীলীগ দেশ দল এবং আপনাকে ভালোবাসার কারনেই আওয়ামী অনুভুতির লোকদের এই অবস্থা আওয়ামীলীগে ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় হবে কেন?

প্রিয় আপা আপনি আওয়ামীলীগের সভানেত্রী আপনার প্রতি -আস্থা এবং ভরসা নিয়ে-বিনিত নিবেদন একুশ বছর ক্ষমতার বাইরে থেকে আওয়ামীলীগ এবং দেশের দেশপ্রেমিক জনগন সৃষ্টিকর্তার কৃপায় ভরসা করে আপনার পিছনে দাড়িয়েছিলো বলেই আপনি-জাতীয় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন শক্তিধর দেশের বিরোধিতা এবং হুমকির মধ্যে থেকেও মানবতাবিরোধী অপরাধের আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিচার করে শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির রায় কার্যকর করেছেন। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার করেছেন।হত্যা ক্যু'র রাজনীতি বন্ধের চেষ্টা করেছেন রাজনৈতিক কৌশলগত পন্থা অবলম্বন করে স্বৈরাচারী এরশাদ জাসদ সহ চরিত্রহীন কমিউনিষ্ট সুবিধাবাদি রাজনৈতিক শিয়ালদের সাথে নিয়ে মৌলবাদী জামায়াত-শিবিরের রগকাটা রাজনীতি বন্ধ করে স্তব্ধ করে দিয়েছেন।

আজ আবারো আপনার পিছনে দাড়িয়ে আস্থা বিশ্বাস ভরসা করে বলছি বঙ্গবন্ধুর খুনি এবং সাকা নিজামী মুজাহিদের ফাঁসির রায় কার্যকর করে দেশকে কলঙ্ক মুক্ত করতে পেরেছেন।বার বার মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসে হাজারো ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেছেন। পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর, ঢাকা মেট্রোরেলসহ দেশের মেগা প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়ন করতে চলেছেন। এবার দল থেকে হাইব্রিড অনুপ্রবেশকারী লুটেরা, দুর্নীতিবাজ মাফিয়াচক্রের হাত থেকে নিশ্চয়ই দলকে কলঙ্কমুক্ত করতে পারবেন। যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক তারা পদ ছাড়াও দলের জন্য কাজ করে।বর্তমানে আওয়ামী রাজনীতির মাঠে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের নেতাকর্মীর সংকট চলছে।

দলের নীতি-আদর্শ থেকে ক্ষমতার দাপট, প্রভাব, অর্থবিত্ত ইত্যাদি বিষয় প্রধান হয়ে উঠেছে। তৃনমুল আওয়ামীলীগে বর্তমানে ভারসাম্য নেই।মৌসুমী নেতাদের আর্বিভাব হওয়ায় ত্যাগী ও আদর্শিক নেতাদের আধিপত্যে কমে গেছে।করোনার এই ভয়াবহ সময়ে মনে প্রানে আপনার সুস্বাস্থ্য দীর্ঘায়ু প্রার্থনা করি সৃষ্টিকর্তার কাছে। দেশের অনেক অসমাপ্ত কাজ এগুলো আপনাকেই সমাপ্ত করতে হবে তা না হলে দেশ এবং দলের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।


লেখক : রাজনীতিক ও সাংবাদিক, লন্ডন ।

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test