E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সামগ্রিক বিবেচনায় সাংবাদিক রোজিনাকে মুক্তি দিন

২০২১ মে ২১ ১৮:৫৮:৩৮
সামগ্রিক বিবেচনায় সাংবাদিক রোজিনাকে মুক্তি দিন

রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ


আমলা নামের কিছু অতি উৎসাহী প্রজাতন্ত্রের কামলারাই সরকারের বেশি সুবিধা নিচ্ছে, দুর্নীতি করছে এবং বিভিন্ন কায়দায় সরকারকে বেকায়দায় ফেলার পায়তারা করে যাচ্ছে! যদিও এদের সংখ্যা খুবই নগণ্য। যেখানে মুক্ত গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠায় সবচেয়ে বড় অবদান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারের, যেখানে বিশ্বে এই সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টায় মগ্ন জনগণের টাকায় বেতনভুক্ত কিছু আমলারা। যা দুঃখজন, বিব্রতকর এবং অনাকাঙ্খিত।

সামগ্রিক বিবেচনায় সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের মুক্তি আমি আশা করি! তাঁকে জামিন দিন, আইন তার নিজস্ব গতিতে চলুক। যদিও আইনে তাঁকে বেল না দেয়ার কোন যৌক্তিক কারণ আমি এখনো খুঁজে পাইনি! রোজিনা বেল না পেলে গণমাধ্যম ও রাষ্ট্র বা সরকারকে তৃতীয় পক্ষ থেকে টেনে এনে সামনা-সামনি দাঁড় করাণোর চেষ্টা চলবে। যা আন্তর্জাতিক মহলে রাষ্ট্র বা সরকারের মান ক্ষুন্ন করবে বলে আমি মনে করছি।সেই সুযোগ দেয়াটা বোধহয় সরকারের একেবারেই ভালো সিদ্ধান্ত হবে না।

এছাড়া করোনা মহামারীর শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বহু বিতর্কের জন্ম দিয়েছে দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। যার কিছু কিছু বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে উঠে আসলে অভিযুক্ত অনেকের শাস্তিও নিশ্চিত করেছে সরকার। আবার অনেকেই হয়তো ক্ষমতা বলে থেকে গেছেন অন্তরালেই।

সামগ্রিকভাবে, দেশের চলমান করোনা মহামারী নিয়ন্ত্রণ ও দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে অসামান্য সাফল্য দেখিয়েছে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার। যা দেশে বিদেশে বহু প্রসংশা ও সাধুবাদ কুড়িয়েছে। আর দেশের অধিকাংশ জনগণ এসব সফলতার একক কৃতিত্ব দেশের প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনাকেই দিতে চান। অধিকাংশ দেশবাসী মনে করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসাধারণ নেতৃত্ব, সময়োপযোগী সঠিক দিক নির্দেশনা ও নির্ভুল পদক্ষেপ গ্রহণে এমন সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হরেছে বাংলাদেশ।

আবার অনেকের ধারণা করেন, সফলতা আরো বেশি প্রশংসনীয় হতে পারতো যদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পুর্ন দূর্নীতিমুক্ত হতো, এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ঠিকঠাক মেনে তারা কাজ করতো! যাহোক,স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এখন পর্যন্ত প্রকাশিত দুর্নীতি'র খবর বাদ দিলে দিন-দিন স্বাস্থ্য খাতে সরকারের সামগ্রিক সাফল্য অবশ্যই প্রসংশার দাবি রাখে। দেশের গড় আয়ু বৃদ্ধি, শিশু ও প্রসুতি মায়ের মৃত্যুহার রোধ, জন্ম নিয়ন্ত্রণ ও পরিবার পরিকল্পনা ব্যবস্থাপণা, কমিউনিটি ক্লিনিক ও গ্রামীন স্বাস্থ্যসেবা, হাসপাতাল, চিকিৎসা, গবেষণা, ঔষধ শিল্পের প্রসার ও বিভিন্ন টিকাদান পদ্ধতি ইত্যাদি বিবেচনায় দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থপনার সাফল্য অস্বীকার করার কোন সুযোগ দেশের কারোর নেই। এসব অর্জন ও সাফলতা ঢাকা পরে যেতে পারে শুধুমাত্র স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতির সীমা পরিসীমা আরো দীর্ঘ হয়ে ডালপালা গজালে।

যাহোক, রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে দেশের গণমাধ্যমের ভুমিকাও নেহাত কম নয়। দেশের অনেক সাফল্যেই সরকারের পাশাপাশি গণমাধ্যমের একটা বড় ভুমিকা রয়েছে। অস্বীকার করছি না, রাজনৈতিক কারণে অনেক গণমাধ্যম সরকারের ভালো কাজ ও সাফল্যের কথা না বলে ব্যর্থতার কথাই বেশি তুলে ধরতে আগ্রহ দেখিয়ে থাকে। যা সরকার ও দেশের জনগণের জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। ওইসব গণমাধ্যমকেও দেশ ও জনগণের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ ও পরিবেশনার ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল মনোভাবের পরিচয় দিতে হবে।

পরিশেষে, একটি কথাউ বলতে চাই, সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম গ্রেফতারের ঘটনাটির সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। দেশের প্রচলিত বিচার ব্যবস্থার মাধ্যমে মামলাটির দ্রুত সমাধান হোক এবং, বর্তমান বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে দ্রুত মুক্তি দেয়া হোক। সেই সাথে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ এই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দিকে সরকারের নজরদারি বৃদ্ধি করা হোক। আমাদের সবারই মনে রাখতে হবে সাংবাদিকতা আর গুপ্তচরের মধ্যে অনেক অনেক পার্থক্য রয়েছে। দেশ ও জনগণের স্বার্থে গণমাধ্যম ও সরকারকে মিলেমিশে কাজ করতে হবে এবং সেই পরিবেশ যেন বিনষ্ট না হয় সেটির দিকে উভয়ের নজর রাখতে হবে। আবারো বলি, Journalism is NOT spying. সামগ্রিক বিবেচনায় সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে মুক্তি দিন। .

লেখক : সাংবাদিক, কবি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test