E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিক্ষিত হলেই তালেবানরা ভদ্রলোক হয়ে যাবে না!

২০২১ আগস্ট ২০ ১৫:০৯:৪৪
শিক্ষিত হলেই তালেবানরা ভদ্রলোক হয়ে যাবে না!

শিতাংশু গুহ


ঢাকা ভার্সিটির অধ্যাপক ডঃ অফিস নজরুল বলেছেন যে, ‘সুষ্ঠূ নির্বাচন হলে কাবুল বিমানবন্দর ধরণের দৃশ্য বাংলাদেশেও হতে পারে’। আসিফ নজরুল মুখ্যত: সরকারকে লক্ষ্য করে কথাটা বলেছেন। সরকারকে ঘায়েল করতে গিয়ে তিনি জঙ্গীবাদকে উস্কে দিতে চেয়েছেন। অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলতে চেয়েছেন, তালেবান বা তাঁদের বাংলাদেশী ভার্সন ইসলামী মৌলবাদী গোষ্ঠী ক্ষমতা নিলে সরকার, বা আওয়ামী লীগ বা প্রগতিশীলদের একই অবস্থা হবে, তাঁরা দেশত্যাগের জন্যে এয়ারপোর্টে আশ্রয় নেবেন? আসিফ নজরুল মৌলবাদ ঘরানার মানুষ, তাঁর কথার গুরুত্ব দেয়া দরকার। বাংলাদেশে মৌলবাদী শক্তি কি ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন দেখছে? 

অনেকে বলেন, কট্টর মৌলবাদীদের শিক্ষা দিলেই নাকি তাঁরা ভদ্রলোক হয়ে যাবেন? আসিফ নজরুল উচ্চ শিক্ষিত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, তাকে কট্টর মৌলবাদী বলা যাবেনা, তবে তাঁর বক্তব্য প্রমান করে তিনি উগ্র ইসলামী মৌলবাদ বা তালেবান ষ্টাইলের সরকারের সমর্থক। অন্যদিকে আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের কৃষি বিভাগের উপদেষ্টার দায়িত্ব নিয়েছেন, কলকাতা বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি ছাত্র সফিউল্লাহ মালিক। ডাক্তার জাফরউল্ল্যাহ তালেবানকে স্বীকৃতি দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন, তিনি উচ্চ শিক্ষিত। ঢাকার হলি আর্টিজানের সন্ত্রাসীরা অশিক্ষিত ছিলোনা। সুতরাং, শিক্ষিত হলেই তালেবানরা ভদ্রলোক হয়ে যাবে এ তত্ব সঠিক নয়।

তালেবানদের নিয়ে তসলিমা নাসরিনের কথাগুলো অপ্রিয় হলেও সত্য। তবে অভিনেত্রী, শিল্পী জয়া আহসান বলেছেন, ‘আফগানিস্তানে আজ যা হচ্ছে, তা বাংলাদেশ বা কলকাতাতেও হতে পারে’। জয়া আহসানের বক্তব্য একটি অশনিসংকেত, তাঁর সন্দেহ ঢাকা বা কলকাতায় এমন ঘটনা ঘটতে পারে? শিল্পী জয়ার বক্তব্য কি একেবারেই অমূলক? তিনি দুই বাংলায় শিল্প জগতে কাজ করেন, ব্যস্ত শিল্পী, তাঁর মনে এমত সন্দেহ কি একেবারেই অমূলক? জুনায়েদ বাবুনগরী মারা গেছেন, তাকে আফগান তালেবানের ‘বাংলাদেশ ভার্সন’ বলা যায়, তাঁর জানাজায় এত লোক কি কোন ইঙ্গিত বহন করে? বাংলাদেশের একটি গোষ্ঠী কাবুলে তালেবানদের বিজয়ে উৎফুল এতে কি কারো সন্দেহ আছে? এঁরা কারা?

আসিফ নজরুল খুশিতে তালেবানকে আহবান জানাচ্ছেন। জয়া আহসান ভয়ে ওকথা বলেছেন, তিনি চান মৌলবাদ নিপাত যাক। কারণ তিনি দেখেছেন, আফগান বিমান বাহিনীর মহিলা পাইলট সাফিয়া ফিরোজীকে কিভাবে তালেবানরা পাথর ছুঁড়ে হত্যা করেছে। কাবুলের রাস্তায় বোরখা না পড়ায় এক মহিলাকে প্রকাশ্যে হত্যার দৃশ্য তো সবাই দেখেছে। প্লেনের চাঁকা থেকে ছিটকে পরে ফুটবল খেলোয়াড় জাকি আনোয়ারীর দু:খজনক মৃত্য’র কথা আমরা জানি। কাঁটাতারের উপর দিয়ে নিজ শিশুসন্তানকে কাবুল বিমানবন্দরে ছুঁড়ে দিচ্ছেন মা, চিৎকার করে বলছেন, আমার সন্তানকে অন্তত আপনারা বাঁচান। এ যখন অবস্থা, তখন অনেকে বলছেন, ‘এই তালিবান সেই তালিবান নয়’?

লেখক : আমেরিকা প্রবাসী।

পাঠকের মতামত:

১৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test