E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

আফগানিস্তানে ‘নুতন অধ্যায়’

২০২১ আগস্ট ৩১ ১২:৫৩:২৫
আফগানিস্তানে ‘নুতন অধ্যায়’

শিতাংশু গুহ


প্রায় কুড়ি বছর পর আফগানিস্তানের মাটিতে কোন মার্কিন সৈন্য নেই। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কথা রেখেছেন। শেষ ফ্লাইট ছেড়ে গেছে। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, প্রায় ৬হাজার মার্কিনীকে কাবুল থেকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করা হয়েছে। পেন্টাগন আনুষ্ঠানিকভাবে দীর্ঘস্থায়ী আফগান যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা করেছে। জাতিসংঘ যারা আফগানিস্তান ছাড়তে চায় তাদের সেই সুযোগ দেয়ার জন্যে তালেবানদের প্রতি আহবান জানিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব পাশ করেছে। মার্কিন বিদেশমন্ত্রী এন্থনি ব্লিনকেন বলেছেন, এবার ‘নুতন অধ্যায়’ শুরু হবে। 

মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের সাথে সাথে তালেবানরা উৎসবে মেতে ওঠে, তাঁরা এটি ‘ঐতিহাসিক ক্ষণ’ এবং ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ বলে মন্তব্য করেন। মার্কিন সেনা নেই, এখন দেখা যাবে তালেবানের আসল চেহারা। কাবুলে এখনো কোন সরকার নেই, দ্রুত সরকার গঠন করতে না পারলে তালেবানদের মধ্যেকার দ্ধন্দ্ব প্রকাশ্য রূপ নেবে। অতীত থেকে সুশিক্ষা না নিলে তালেবানের এ বিজয় ‘মলিন’ হতে বেশি সময় নেবেনা? অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কথা ইতিমধ্যে মিডিয়ায় এসেছে। ক্ষমতার কাছাকাছি দুই গ্রূপ, স্বদেশী জঙ্গী তালেবান এবং বিদেশ, বিশেষত: কাতার থেকে আগত গ্রূপ। দেখা যাক কি হয়!

কি ঘটবে আফগানিস্তানে? উত্তর এমুহুর্তে সবার অজানা। এরআগে কাবুল বিমান বন্দরে হামলার দায় আইসিস স্বীকার করেছে। হোয়াইট হাউস বলেছে, আমরা ভুলবো না, ক্ষমা করবো না, প্রতিশোধ নেবো। কিছুটা প্রতিশোধ নিয়েছেন, দুই জঙ্গীকে ড্রোন আক্রমনে নিহত করেছেন, গোলাবারুদ বোঝাই একটি ট্রাক ধ্বংস করেছেন। তাতে কি কাজ হবে? বাইডেন প্রশাসন চাপে আছে। বাইডেনের সমর্থন এখন ৪০%-এর নীচে। কথায় বলে, ‘সিংহ যখন পিছু হটে, বানর তখন ঢিল মারে’, যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে এসেছে, তালেবানদের বীরত্ব এখন ‘নিরীহ আফগান ও নারীর’ ওপর প্রদর্শিত হবে?

ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেনারেল এইচ আর ম্যাকমাষ্টার বলেছেন, ‘সবে তো শুরু’। আমেরিকা বলেছে, তাঁরা নজর রাখছে। নজর তো সবাই রাখছে। তালেবানরা কি কট্টরপন্থী হবে না মোটামুটি একটি মধ্যপন্থা অবলম্বন করবে, সেই অনুপাতে বিভিন্ন দেশ পদক্ষেপ নেবে। তালেবানরা উৎসব করছে, আফগানরা ‘’শরিয়ার ভয়ে’ পালাচ্ছে। তালেবান মুখপাত্র বলেছেন, ৯/১১ টুইন-টাওয়ার ধ্বংসে বিন-লাদেন জড়িত থাকার কোন প্রমান নেই। এতে কি কিছু বোঝা যায়? লক্ষ্যণীয় যে, তালিবান কাবুল বিমান বন্দর বোমা-বিস্ফোরণকে ‘সন্ত্রাসী আক্রমন’ বলে মন্তব্য করেছে।

পাকিস্তান তালেবান উত্থানে উৎফুল্ল। ইমরান খানের ক্ষমতাসীন পার্টির নেত্রী নিলম বলেছেন, তালেবানরা কাশ্মীর ছিনিয়ে এনে আমাদের দেবে। জোশে তিনি আরো বলেন, ভারত পাকিস্তানকে দু’টুকরো করেছিলো, আবার তা জোড়া লাগবে। আমরা তাঁর এ বক্তব্যের নিন্দা করি ও প্রতিবাদ জানাই। কাবুল বিমানবন্দরে নিহতদের মধ্যে নাকি ২৮জন তালেবান। প্রশ্ন হচ্ছে, আমেরিকা ও উন্নত বিশ্ব এবং ভারত ‘মানবিক কারণে’ যত আফগানকে শরণার্থী হিসাবে নিজদেশে আদর-যত্ন করে ঘরে তুলছেন, তাদের মধ্যে কি তালেবান নেই? রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট পুটিন কিন্তু জানিয়ে দিয়েছেন, শরণার্থীর আড়ালে জঙ্গী থাকতে পারে, তাই তাঁরা আফগান শরণার্থীদের আশ্রয় দেবে না!

লেখক : আমেরিকা প্রবাসী।

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test